নিষেধাজ্ঞা তুলে নিন by সারওয়ার জামিল

গণতান্ত্রিক ধারার সূতিকাগার হিসেবে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সহজেই চিহ্নিত করা যায়। অথচ গত তিন বছরের বেশি সময় ধরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতির ওপর নিষেধাজ্ঞার চাদর জড়িয়ে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একদিকে ছাত্র সংসদ দুই দশক ধরে অচল, অন্যদিকে ছাত্ররাজনীতির ওপর নিষেধাজ্ঞার খৰ।


এই দুয়ে মিলিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের কণ্ঠ একেবারে রুদ্ধই বলা যায়, যা তৈরি করেছে প্রশাসনের একচেটিয়া শিক্ষার্থীবিরোধী সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নের সুযোগ।
২০০৯ সালের ১১ মার্চ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দুপুরের এই সংঘর্ষের জের ধরে ওই দিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া একটি নোটিশ দিয়ে 'পরবর্তী নির্দেশ' না দেওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসে সাময়িকভাবে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা দেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেছিলেন, সংঘর্ষ ও প্রাণহানি ঠেকাতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এর একদিন পর ১৩ মার্চ ফের সংঘর্ষ ঘটে ওই দুই ছাত্র সংগঠনের মধ্যে। তাতে ছাত্রশিবিরের এক নেতা মারা যায়। মাসখানেক পর পরিস্থি্থতি স্বাভাবিক হলেও রাজনীতির ওপর নিষেধাজ্ঞা আর তোলা হয়নি। বরং সে সময় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে অনুমোদন করে এই নিষেধাজ্ঞা আরও শক্তিশালী করা হয়। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তবলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও ছাত্ররাজনীতির ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে। ছাত্ররাজনীতির পাশাপাশি ক্যাম্পাসে কোনো মিছিল, সমাবেশ, মাইকিং করাও নিষেধ। তিন বছরেও 'সাময়িক সময়' শেষ হয়নি।
এভাবে রাজনীতির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি রেখে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু গণতান্ত্রিক চর্চার ক্ষতিই হয় না, বরং ক্ষতিগ্রস্ত হয় মেধা, শিক্ষার পরিবেশ এবং নতুন রাজনৈতিক নেতৃত্ব গড়ে ওঠার সম্ভাবনা। কাজেই আমাদের প্রত্যাশা ও দাবি, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সরকারের আমলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতন্ত্র চর্চার স্বার্থে ছাত্ররাজনীতির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হোক।
স সারওয়ার জামিল :শিক্ষার্থী লোকপ্রশাসন বিভাগ, রাবি

No comments

Powered by Blogger.