লোডশেডিংয়ের পাশাপাশি বিদ্যুতের দামও বাড়লঃ ভাত দেবার মুরোদ নেই কিল মারার গোঁসাই
প্রায় প্রতিদিনই ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখানো হচ্ছে, রাজধানীতে প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল মেলা উদ্বোধন করছেন, অন্যদিকে উত্পাদন বাড়াতে না পারলেও বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানো হয়েছে। ফলে লোডশেডিংয়ের দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে মানুষকে বাড়তি বিদ্যুত্ বিল শুধতে হবে এখন থেকে।
মঙ্গলবার বিকালে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সারা দেশে শহরাঞ্চলে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে। ১ মার্চ থেকেই বিদ্যুতের দাম বেড়েছে আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ৪ থেকে ৭.৬২ শতাংশ, ক্ষুদ্র শিল্পে ৮.২১ থেকে ৯.৩৮ শতাংশ, বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ৫.২৮ থেকে ৬.৫৮ এবং বৃহত্ শিল্পে ৯.২৪ থেকে ৯.৯৩ শতাংশ হারে। এর ফলে পিডিবিসহ বিতরণ সংস্থা চারটির বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিতে দেশের ৬২ শতাংশ গ্রাহককে এখন থেকে বছরে ৩৬৯ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করতে হবে। বাদবাকি ৩৮ শতাংশ পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক গত বছর থেকেই ৬.৫৭ শতাংশ বেশি হারে বিদ্যুত্ বিল পরিশোধ করছেন। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে বেড়েছে ডিমান্ড ও সার্ভিস চার্জও। বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধিতে শিল্প-কারখানায় উত্পাদন ব্যয় বাড়বে। যার ধাক্কায় বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম আরেক ধাপ লাফিয়ে বেড়ে যাবে। এতে করে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় কতটা বাড়বে সেটা অংক কষে হিসাব করে দেখাবেন অর্থনীতিবিদরা। কিন্তু গ্রীষ্মের শুরুতে লোডশেডিং বাড়ার আগেই বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি যে মানুষের দুর্ভোগ বাড়াবে, সেটা চোখ বুজে বলা যায়। তবে এতে করে বিদ্যুত্ বিতরণ কোম্পানিগুলোর আয় বাড়বে, কোনো কোনোটি লাভজনক হবে—এটা নিশ্চিত। বলা হয়েছে, বিদ্যুত্ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) আয় বাড়বে প্রতি মাসে ১১৪ কোটি টাকা, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) ১৩২ কোটি টাকা, ঢাকা ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) ৯৭ কোটি টাকা আর ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) আয় বাড়বে ২৬ কোটি টাকা। ফলে তিনটি কোম্পানি লাভজনক পর্যায়ে চলে আসবে। এর মধ্যে ডেসকো আগে থেকেই লাভজনক ছিল, এখন তার লাভ আরও বাড়বে আর ডিপিডিসি ও ওজোপাডিকো নতুন করে লাভের মুখ দেখবে। অন্যদিকে পিডিবি’র লোকসানের পরিমাণ কমে আসবে। বিদ্যুত্ চুরি, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনাসহ সিস্টেম লস কমানো না গেলে পিডিবি’র লাভজনক হওয়া দিল্লি হুনজ দূর অস্ত্ই বলা যায়।
বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির পক্ষে যুক্তি হিসেবে বিইআরসি চেয়ারম্যান ভোক্তা ও উত্পাদক উভয়ের স্বার্থ বিবেচনা করেই দাম বাড়ানোর কথা বলেছেন। ভোক্তা সাধারণের স্বার্থের বিষয়টা মোটেই পরিষ্কার নয়। তবে তিনি এর সঙ্গে বিদ্যুত্ বিতরণ কোম্পানিগুলোর সেবার মান বাড়ার আশাও ব্যক্ত করেছেন। গ্রাহকদের বিশ্বাস অর্জনের জন্য এই কথার সঙ্গে কাজের সমন্বয় হওয়াটা খুবই জরুরি। এদিকে সবার দৃষ্টি থাকবে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে এক্ষেত্রে মানুষের অভিজ্ঞতা বড়ই তিক্ত। আরেকটা কথা না বলে পারা যায় না, বিদ্যুতের উত্পাদন বৃদ্ধি ও ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে সরকারের একাধিক ঘোষণা ও পরিকল্পনা গ্রহণ করার ব্যাপারে আগ্রহ যতটা দেখা যায় বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ঠিক তার উল্টো ঘটনাই যেন স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। ফলে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সব পরিকল্পনাই আটকে থাকছে কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে। অবশ্য অব্যাহত গ্যাস ও কয়লা সঙ্কট সব কিছু ভেস্তে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। তাই বিরাজমান বিদ্যুত্ সঙ্কট আগামী দু-তিন বছরের আগে কাটবে না, এমন ধারণা দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে দেশে বিদ্যুত্ উত্পাদনে আশাবাদী না হলেও ভারত থেকে বিদ্যুত্ আমদানির প্রকল্প বেশ দ্রুতই এগিয়ে চলছে বলে জানিয়েছেন তারা।
এভাবে বিদ্যুত্ সঙ্কট কতটা দূর হবে কেউই সেটা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। অর্থাত্ আগের গ্রীষ্মে লোডশেডিং বাড়লেও এখন থেকে বাড়তি বিদ্যুত্ বিল গুনতে হবে সবাইকে। এতে করে সাধারণ ও সীমিত আয়ের মানুষের দুর্ভাগ কোথায় গিয়ে ঠেকবে সেটা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাবে না। নিয়মিত বিদ্যুত্ না পেলেও গ্রাহকদের বর্ধিত হারে বিল পরিশোধ করতে হবে। একেই সম্ভবত বলে ভাত দেবার মুরোদ নেই কিল মারার গোঁসাই। মহাজোট সরকারের চেহারা এখন তেমনটাই হয়ে উঠেছে—অস্বীকার করার জোঁ নেই।
বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির পক্ষে যুক্তি হিসেবে বিইআরসি চেয়ারম্যান ভোক্তা ও উত্পাদক উভয়ের স্বার্থ বিবেচনা করেই দাম বাড়ানোর কথা বলেছেন। ভোক্তা সাধারণের স্বার্থের বিষয়টা মোটেই পরিষ্কার নয়। তবে তিনি এর সঙ্গে বিদ্যুত্ বিতরণ কোম্পানিগুলোর সেবার মান বাড়ার আশাও ব্যক্ত করেছেন। গ্রাহকদের বিশ্বাস অর্জনের জন্য এই কথার সঙ্গে কাজের সমন্বয় হওয়াটা খুবই জরুরি। এদিকে সবার দৃষ্টি থাকবে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে এক্ষেত্রে মানুষের অভিজ্ঞতা বড়ই তিক্ত। আরেকটা কথা না বলে পারা যায় না, বিদ্যুতের উত্পাদন বৃদ্ধি ও ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে সরকারের একাধিক ঘোষণা ও পরিকল্পনা গ্রহণ করার ব্যাপারে আগ্রহ যতটা দেখা যায় বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ঠিক তার উল্টো ঘটনাই যেন স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। ফলে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সব পরিকল্পনাই আটকে থাকছে কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে। অবশ্য অব্যাহত গ্যাস ও কয়লা সঙ্কট সব কিছু ভেস্তে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। তাই বিরাজমান বিদ্যুত্ সঙ্কট আগামী দু-তিন বছরের আগে কাটবে না, এমন ধারণা দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে দেশে বিদ্যুত্ উত্পাদনে আশাবাদী না হলেও ভারত থেকে বিদ্যুত্ আমদানির প্রকল্প বেশ দ্রুতই এগিয়ে চলছে বলে জানিয়েছেন তারা।
এভাবে বিদ্যুত্ সঙ্কট কতটা দূর হবে কেউই সেটা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। অর্থাত্ আগের গ্রীষ্মে লোডশেডিং বাড়লেও এখন থেকে বাড়তি বিদ্যুত্ বিল গুনতে হবে সবাইকে। এতে করে সাধারণ ও সীমিত আয়ের মানুষের দুর্ভাগ কোথায় গিয়ে ঠেকবে সেটা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাবে না। নিয়মিত বিদ্যুত্ না পেলেও গ্রাহকদের বর্ধিত হারে বিল পরিশোধ করতে হবে। একেই সম্ভবত বলে ভাত দেবার মুরোদ নেই কিল মারার গোঁসাই। মহাজোট সরকারের চেহারা এখন তেমনটাই হয়ে উঠেছে—অস্বীকার করার জোঁ নেই।
No comments