ক্রমশ অন্তরালে রাজা ভূমিবল
সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারী আর সেনা-পুলিশের সংঘাতে ব্যাংককের রাজপথে প্রায় প্রতিদিনই রক্ত ঝরছে কিছুদিন ধরে। অতীতে একাধিকবার এমন সময়ে সমঝোতায় এগিয়ে এসেছেন একজন মানুষ, যাঁর মুখের কয়েকটি শব্দই পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য ছিল যথেষ্ট। সেই মানুষটি এবার একেবারেই নীরব। তিনি রাজা ভূমিবল আদুলিদেজ।
ভূমিবল-উত্তর থাইল্যান্ডের চেহারাটা কেমন হবে, চলমান সংঘাত অনেকটা তা স্থির করা নিয়েই। রাজার নিরঙ্কুশ ক্ষমতা অনেক আগেই গেলেও যে অভিজাত শ্রেণীটি দেশ চালাচ্ছে, তার মধ্যে রাজার অনুগত হিসেবে পরিচিত সেনাবাহিনী, ধনী ব্যবসায়ী ও আমলাতন্ত্রের পাশাপাশি প্রাসাদকেন্দ্রিক একটি গোষ্ঠীও রয়েছে। মোট কথা পরিস্থিতির ওপর ৮২ বছর বয়সী অসুস্থ রাজার নিয়ন্ত্রণ যে ক্রমেই কমে আসছে, তা একটু খেয়াল করলেই বোঝা যায়।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের থাইল্যান্ড বিশেষজ্ঞ চার্লস কিজ বললেন, এটা উত্তরাধিকারের চেয়েও অনেক বড় কিছু। রাজা যে রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করে আসছিলেন, এটা তারই ভেঙে পড়ার ইঙ্গিত।
১৯৭৩ ও ১৯৯২ সালে দুই দফা সক্রিয় ভূমিকা রেখে রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে ভূমিকা রেখেছিলেন রাজা ভূমিবল। সেই রাজার এহেন নিষ্ক্রিয়তা দেখে অনেক থাই হতাশ।
প্রায় ৬৪ বছর আগে সিংহাসনে বসেন রাজা ভূমিবল। অনেক আগেই তাঁর ক্ষমতা কেবল সাংবিধানিক হয়ে পড়লেও ব্যাপক সামাজিক কার্যক্রম ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞা বিশাল এক নৈতিক শক্তিতে পরিণত করেছে তাঁকে। ভূমিবলের রাজত্বকালে রাজপরিবারের ব্যবসা-বাণিজ্যেরও প্রসার হয়েছে ভালো। চলতি সংকটের সময় প্রাসাদকেন্দ্রিক একটি ‘প্রিভি কাউন্সিল’ ব্যাপক ক্ষমতা চর্চা করেছে বলে পর্যবেক্ষকেরা মনে করেন। রাজার অনুগত এই সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র আর তাঁকে ঘিরে থাকা প্রাসাদের গোষ্ঠীটি মিলিয়ে যে অভিজাত চক্র, ভুখানাঙ্গা লাল শার্টদের বিক্ষোভ তারই বিরুদ্ধে।
বর্তমান অবস্থা বহাল রাখার পক্ষে যাঁরা, তাঁরা নিজেদের রাজার প্রতি অনুগত ঘোষণা করেছেন। তাঁদের দাবি, সমাজ বদল করতে গিয়ে রাজতন্ত্রকেই ধ্বংস করতে চায় লাল শার্টরা। অন্যদিকে লাল শার্টদের বেশির ভাগেরই বক্তব্য, তারা রাজাকে শ্রদ্ধা করে ঠিকই, কিন্তু তাঁর সহায়তা নিয়ে যে ব্যবস্থাটি গড়ে উঠেছে, সেটির অবসান চায় তারা।
থাইল্যান্ডের ইতিহাস নিয়ে লেখালেখি করা ব্রিটিশ লেখক ক্রিস পার্কারের ধারণা, রাজার নামের যে রাজনৈতিকীকরণ হয়েছে, এর ফলে আপস-মীমাংসায় তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার অবসান ঘটেছে।
তা ছাড়া বৃদ্ধ রাজা গত সেপ্টেম্বর থেকে ফুসফুসের প্রদাহ ও অন্যান্য অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে থাকায় রাজতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে দেশবাসীর উদ্বেগ বেড়েছে। রাজার উত্তরাধিকারী যুবরাজ মহা ভাজিরালংকর্ন বাবার আর যে গুণই পেয়ে থাকুন, জনপ্রিয়তা পাননি।
বিশ্বের অবশিষ্ট অন্যান্য নিয়মতান্ত্রিক রাজা বা রানির সঙ্গে থাই রাজার তফাত হলো, তাঁকে ঘিরে থাকা অপরিসীম শ্রদ্ধা ও ভক্তির প্রভা আর দেশবাসীর অনেকের প্রায় অন্ধবিশ্বাস যে অবস্থা সত্যিই খুব খারাপ হলে রাজা ঠিকই এগিয়ে আসবেন তাদের বাঁচাতে। কয়েকটি প্রজন্ম তো এ রকম দেখেই বড় হয়েছে।
দিন বদলে গেছে। এখন থাইল্যান্ডের মানুষও অন্যভাবে ভাবতে শুরু করেছে। অনেকেই এখন বলছেন, রাজার ‘সন্তান’দের নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নিজের সমস্যা সমাধান করা শিখতে হবে। তা না হলে গণতন্ত্র এগোবে না।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের থাইল্যান্ড বিশেষজ্ঞ চার্লস কিজ বললেন, এটা উত্তরাধিকারের চেয়েও অনেক বড় কিছু। রাজা যে রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করে আসছিলেন, এটা তারই ভেঙে পড়ার ইঙ্গিত।
১৯৭৩ ও ১৯৯২ সালে দুই দফা সক্রিয় ভূমিকা রেখে রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে ভূমিকা রেখেছিলেন রাজা ভূমিবল। সেই রাজার এহেন নিষ্ক্রিয়তা দেখে অনেক থাই হতাশ।
প্রায় ৬৪ বছর আগে সিংহাসনে বসেন রাজা ভূমিবল। অনেক আগেই তাঁর ক্ষমতা কেবল সাংবিধানিক হয়ে পড়লেও ব্যাপক সামাজিক কার্যক্রম ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞা বিশাল এক নৈতিক শক্তিতে পরিণত করেছে তাঁকে। ভূমিবলের রাজত্বকালে রাজপরিবারের ব্যবসা-বাণিজ্যেরও প্রসার হয়েছে ভালো। চলতি সংকটের সময় প্রাসাদকেন্দ্রিক একটি ‘প্রিভি কাউন্সিল’ ব্যাপক ক্ষমতা চর্চা করেছে বলে পর্যবেক্ষকেরা মনে করেন। রাজার অনুগত এই সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র আর তাঁকে ঘিরে থাকা প্রাসাদের গোষ্ঠীটি মিলিয়ে যে অভিজাত চক্র, ভুখানাঙ্গা লাল শার্টদের বিক্ষোভ তারই বিরুদ্ধে।
বর্তমান অবস্থা বহাল রাখার পক্ষে যাঁরা, তাঁরা নিজেদের রাজার প্রতি অনুগত ঘোষণা করেছেন। তাঁদের দাবি, সমাজ বদল করতে গিয়ে রাজতন্ত্রকেই ধ্বংস করতে চায় লাল শার্টরা। অন্যদিকে লাল শার্টদের বেশির ভাগেরই বক্তব্য, তারা রাজাকে শ্রদ্ধা করে ঠিকই, কিন্তু তাঁর সহায়তা নিয়ে যে ব্যবস্থাটি গড়ে উঠেছে, সেটির অবসান চায় তারা।
থাইল্যান্ডের ইতিহাস নিয়ে লেখালেখি করা ব্রিটিশ লেখক ক্রিস পার্কারের ধারণা, রাজার নামের যে রাজনৈতিকীকরণ হয়েছে, এর ফলে আপস-মীমাংসায় তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার অবসান ঘটেছে।
তা ছাড়া বৃদ্ধ রাজা গত সেপ্টেম্বর থেকে ফুসফুসের প্রদাহ ও অন্যান্য অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে থাকায় রাজতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে দেশবাসীর উদ্বেগ বেড়েছে। রাজার উত্তরাধিকারী যুবরাজ মহা ভাজিরালংকর্ন বাবার আর যে গুণই পেয়ে থাকুন, জনপ্রিয়তা পাননি।
বিশ্বের অবশিষ্ট অন্যান্য নিয়মতান্ত্রিক রাজা বা রানির সঙ্গে থাই রাজার তফাত হলো, তাঁকে ঘিরে থাকা অপরিসীম শ্রদ্ধা ও ভক্তির প্রভা আর দেশবাসীর অনেকের প্রায় অন্ধবিশ্বাস যে অবস্থা সত্যিই খুব খারাপ হলে রাজা ঠিকই এগিয়ে আসবেন তাদের বাঁচাতে। কয়েকটি প্রজন্ম তো এ রকম দেখেই বড় হয়েছে।
দিন বদলে গেছে। এখন থাইল্যান্ডের মানুষও অন্যভাবে ভাবতে শুরু করেছে। অনেকেই এখন বলছেন, রাজার ‘সন্তান’দের নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নিজের সমস্যা সমাধান করা শিখতে হবে। তা না হলে গণতন্ত্র এগোবে না।
No comments