অগ্রগতি বজায়রাখার জন্য আবার প্রার্থী হয়েছি by মহিউদ্দিন চৌধুরী
বিশেষ সাক্ষাৎকার মহিউদ্দিন চৌধুরী ও মঞ্জুর আলম আগামী ১৭ জুন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন। মেয়র পদে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও মঞ্জুর আলম। মহিউদ্দিন চৌধুরী তিনবারের নির্বাচিত মেয়র। নাগরিক কমিটির ব্যানারে প্রার্থী হলেও তিনি আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী।
অন্যদিকে তিনবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর মঞ্জুর আলম একাধিকবার ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন। চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলনের প্রার্থী মঞ্জু পেয়েছেন বিএনপির সমর্থন। দুই প্রার্থীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বিশ্বজিৎ চৌধুরী
প্রথম আলো আপনি তো তিন মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন, আবার নির্বাচন করছেন কেন?
মহিউদ্দিন চৌধুরী দেখুন, চট্টগ্রাম ভৌগোলিকভাবে একটি চমৎকার অবস্থানে আছে। একদিকে এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, অন্যদিকে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা। এখন এ নগরকে যদি আমরা সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে চাই, তাহলে আমাদের নানা মেয়াদের কিছু পরিকল্পনা নেওয়া দরকার। আমিও স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি কিছু পরিকল্পনা নিয়েছি। আপনারা দেখেছেন, কিছু পরিকল্পনা ইতিমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে, কিছু কাজ চলছে, আর কিছু পরিকল্পনা প্রস্তাব আকারে দেওয়া আছে সরকারের কাছে। এগুলোর ব্যাপারে আমি আশা করছি, সরকারের সাড়া পাব...। বাস্তবায়ন করতে পারব। কাজের ধারাবাহিক অগ্রগতির জন্য আমি আবার প্রার্থী হয়েছি।
প্রথম আলো নগরের সেবামূলক কাজকর্ম আগের মতো সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালিত হচ্ছে না বলে অনেকের অভিযোগ...।
মহিউদ্দিন চৌধুরী নগরে জনসংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে, জনসংখ্যার চাপের সঙ্গে এর সমস্যাও বাড়ছে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি সেবাকার্যক্রমকে উন্নত করতে, সময়োপযোগী করে তুলতে।
প্রথম আলো আপনার সাম্প্রতিক বিভিন্ন উদ্যোগ যেমন পরিবেশের কথা চিন্তা না করে বিভিন্ন জায়গায় বিপণিকেন্দ্র, লালদীঘিতে সুইমিংপুল, স্কুলের জায়গায় প্লট তৈরি ইত্যাদি সচেতন মানুষ ও নগর পরিকল্পনাবিদেরা সমর্থন করতে পারেননি।
মহিউদ্দিন চৌধুরী আমি মেয়র থাকাকালে দরিদ্র নগরবাসীর হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়াইনি, কিন্তু নগরের উন্নয়নের জন্য তো টাকা লাগবে। সে জন্য আমি কিছু আয় সৃষ্টিকারী কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। ভেবে দেখুন, আমি যখন প্রথম সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিই, তখন এই করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মোট বেতন-ভাতা ছিল সাড়ে চার লাখ টাকা, আজকের দিনে বেতন-ভাতার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ছয় কোটি টাকা। এই টাকার সংস্থান কীভাবে হচ্ছে? মনে রাখতে হবে, চট্টগ্রাম আসলে শিল্পনগর নয়, এটি একটি বাণিজ্যনগর। সুতরাং এখানে সিঙ্গাপুর-ব্যাংকক মার্কেট বা চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্সের মতো যে আধুনিক মার্কেট আমি গড়ে তুলেছি, তাতে সমস্যা কী? এখানে দেশি-বিদেশি ক্রেতারা আকৃষ্ট হবে...অর্থনীতির চাকা সচল হবে, তাতে আপত্তির কী আছে? আজকের দিনে রিয়াজউদ্দিন বাজারের মতো পুরোনো ধাঁচের মার্কেট থাকার কোনো যুক্তি আছে?
প্রথম আলো কিন্তু মার্কেট তৈরি করতে গিয়ে শহরের সৌন্দর্য নষ্ট করা...পরিবেশের ক্ষতি...।
মহিউদ্দিন চৌধুরী কোথায় সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে?
প্রথম আলো চাক্তাই রিংরোডে সারি সারি দোকান নির্মাণ করেছেন আপনি; নদীর তীর ঘেঁষে এভাবে দোকানপাট তৈরি হলে সৌন্দর্য ব্যাহত হয় না?
মহিউদ্দিন চৌধুরী দেখুন, এটা আমি অস্থায়ীভাবে তৈরি করেছিলাম, মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ হলেই ভেঙে ফেলতাম। কিন্তু তার আগে সচেতন নাগরিকেরা আপত্তি করেছেন, আমি তাঁদের কথা মেনে নিয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে ভেঙে ফেলেছি। আমি তো মানুষের কথা শুনছি, আমার তো জবাবদিহি আছে। কিন্তু আপনারা আমার এগুলো দেখেন, অন্য কিছু তো দেখেন না, কর্ণফুলীর মোহনায় বসুন্ধরা গ্রুপ যে বিশাল একটি জেটি তৈরি করছে, এতে কি পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে না? এখানে কনটেইনার ইয়ার্ড করলে পরিবেশ নষ্ট হবে না? রাস্তার ওপর অস্থায়ী কিছু দোকানপাট নিয়ে এত কথা, এগুলো বলছেন না কেন?
প্রথম আলো গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় থেকে এখানকার আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে আপনার দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে? করপোরেশন নির্বাচনে তার প্রভাব পড়বে না?
মহিউদ্দিন চৌধুরী না, পড়বে না। রাজনীতি করতে গেলে দলের ভেতর নানা মত-মতান্তর থাকে, সেগুলো আবার মিটেও যায়। শুধু দল কেন, একটা পরিবারের মধ্যেও কি দ্বন্দ্ব থাকে না? দ্বন্দ্ব থাকবে, আবার মিটেও যাবে—এটাই নিয়ম। আমাদের দ্বন্দ্ব অনেকটাই মিটে গেছে, বাকিটাও থাকবে না আশা করি।
প্রথম আলো দলের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গেও আপনার কিছুটা দূরত্ব আছে বলে শোনা যায়...।
মহিউদ্দিন চৌধুরী দেখুন, আমি রাজনীতি করি চট্টগ্রামে। আমার রাজনীতি চট্টগ্রাম নিয়ে, চট্টগ্রামের উন্নয়ন নিয়ে। আমি চাইলে কেন্দ্রে গিয়ে রাজনীতি করতে পারতাম, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হতে পারতাম। কিন্তু আমি তা করিনি। আমি চট্টগ্রামের নেতা—এটাই আমার পরিচয়।
প্রথম আলো অনেকে বলছেন, আপনার বিপক্ষে মঞ্জুর আলম দুর্বল প্রার্থী...। আপনি সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন?
মহিউদ্দিন চৌধুরী আমি তা মনে করি না। কাউকে আমি দুর্বল মনে করি না। কে সবল কে দুর্বল, তা যাচাই করার মালিক জনগণ।
প্রথম আলো আপনাকে ধন্যবাদ।
মহিউদ্দিন চৌধুরী ধন্যবাদ।
প্রথম আলো আপনি তো তিন মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন, আবার নির্বাচন করছেন কেন?
মহিউদ্দিন চৌধুরী দেখুন, চট্টগ্রাম ভৌগোলিকভাবে একটি চমৎকার অবস্থানে আছে। একদিকে এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, অন্যদিকে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা। এখন এ নগরকে যদি আমরা সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে চাই, তাহলে আমাদের নানা মেয়াদের কিছু পরিকল্পনা নেওয়া দরকার। আমিও স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি কিছু পরিকল্পনা নিয়েছি। আপনারা দেখেছেন, কিছু পরিকল্পনা ইতিমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে, কিছু কাজ চলছে, আর কিছু পরিকল্পনা প্রস্তাব আকারে দেওয়া আছে সরকারের কাছে। এগুলোর ব্যাপারে আমি আশা করছি, সরকারের সাড়া পাব...। বাস্তবায়ন করতে পারব। কাজের ধারাবাহিক অগ্রগতির জন্য আমি আবার প্রার্থী হয়েছি।
প্রথম আলো নগরের সেবামূলক কাজকর্ম আগের মতো সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালিত হচ্ছে না বলে অনেকের অভিযোগ...।
মহিউদ্দিন চৌধুরী নগরে জনসংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে, জনসংখ্যার চাপের সঙ্গে এর সমস্যাও বাড়ছে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি সেবাকার্যক্রমকে উন্নত করতে, সময়োপযোগী করে তুলতে।
প্রথম আলো আপনার সাম্প্রতিক বিভিন্ন উদ্যোগ যেমন পরিবেশের কথা চিন্তা না করে বিভিন্ন জায়গায় বিপণিকেন্দ্র, লালদীঘিতে সুইমিংপুল, স্কুলের জায়গায় প্লট তৈরি ইত্যাদি সচেতন মানুষ ও নগর পরিকল্পনাবিদেরা সমর্থন করতে পারেননি।
মহিউদ্দিন চৌধুরী আমি মেয়র থাকাকালে দরিদ্র নগরবাসীর হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়াইনি, কিন্তু নগরের উন্নয়নের জন্য তো টাকা লাগবে। সে জন্য আমি কিছু আয় সৃষ্টিকারী কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। ভেবে দেখুন, আমি যখন প্রথম সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিই, তখন এই করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মোট বেতন-ভাতা ছিল সাড়ে চার লাখ টাকা, আজকের দিনে বেতন-ভাতার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ছয় কোটি টাকা। এই টাকার সংস্থান কীভাবে হচ্ছে? মনে রাখতে হবে, চট্টগ্রাম আসলে শিল্পনগর নয়, এটি একটি বাণিজ্যনগর। সুতরাং এখানে সিঙ্গাপুর-ব্যাংকক মার্কেট বা চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্সের মতো যে আধুনিক মার্কেট আমি গড়ে তুলেছি, তাতে সমস্যা কী? এখানে দেশি-বিদেশি ক্রেতারা আকৃষ্ট হবে...অর্থনীতির চাকা সচল হবে, তাতে আপত্তির কী আছে? আজকের দিনে রিয়াজউদ্দিন বাজারের মতো পুরোনো ধাঁচের মার্কেট থাকার কোনো যুক্তি আছে?
প্রথম আলো কিন্তু মার্কেট তৈরি করতে গিয়ে শহরের সৌন্দর্য নষ্ট করা...পরিবেশের ক্ষতি...।
মহিউদ্দিন চৌধুরী কোথায় সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে?
প্রথম আলো চাক্তাই রিংরোডে সারি সারি দোকান নির্মাণ করেছেন আপনি; নদীর তীর ঘেঁষে এভাবে দোকানপাট তৈরি হলে সৌন্দর্য ব্যাহত হয় না?
মহিউদ্দিন চৌধুরী দেখুন, এটা আমি অস্থায়ীভাবে তৈরি করেছিলাম, মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ হলেই ভেঙে ফেলতাম। কিন্তু তার আগে সচেতন নাগরিকেরা আপত্তি করেছেন, আমি তাঁদের কথা মেনে নিয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে ভেঙে ফেলেছি। আমি তো মানুষের কথা শুনছি, আমার তো জবাবদিহি আছে। কিন্তু আপনারা আমার এগুলো দেখেন, অন্য কিছু তো দেখেন না, কর্ণফুলীর মোহনায় বসুন্ধরা গ্রুপ যে বিশাল একটি জেটি তৈরি করছে, এতে কি পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে না? এখানে কনটেইনার ইয়ার্ড করলে পরিবেশ নষ্ট হবে না? রাস্তার ওপর অস্থায়ী কিছু দোকানপাট নিয়ে এত কথা, এগুলো বলছেন না কেন?
প্রথম আলো গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় থেকে এখানকার আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে আপনার দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে? করপোরেশন নির্বাচনে তার প্রভাব পড়বে না?
মহিউদ্দিন চৌধুরী না, পড়বে না। রাজনীতি করতে গেলে দলের ভেতর নানা মত-মতান্তর থাকে, সেগুলো আবার মিটেও যায়। শুধু দল কেন, একটা পরিবারের মধ্যেও কি দ্বন্দ্ব থাকে না? দ্বন্দ্ব থাকবে, আবার মিটেও যাবে—এটাই নিয়ম। আমাদের দ্বন্দ্ব অনেকটাই মিটে গেছে, বাকিটাও থাকবে না আশা করি।
প্রথম আলো দলের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গেও আপনার কিছুটা দূরত্ব আছে বলে শোনা যায়...।
মহিউদ্দিন চৌধুরী দেখুন, আমি রাজনীতি করি চট্টগ্রামে। আমার রাজনীতি চট্টগ্রাম নিয়ে, চট্টগ্রামের উন্নয়ন নিয়ে। আমি চাইলে কেন্দ্রে গিয়ে রাজনীতি করতে পারতাম, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হতে পারতাম। কিন্তু আমি তা করিনি। আমি চট্টগ্রামের নেতা—এটাই আমার পরিচয়।
প্রথম আলো অনেকে বলছেন, আপনার বিপক্ষে মঞ্জুর আলম দুর্বল প্রার্থী...। আপনি সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন?
মহিউদ্দিন চৌধুরী আমি তা মনে করি না। কাউকে আমি দুর্বল মনে করি না। কে সবল কে দুর্বল, তা যাচাই করার মালিক জনগণ।
প্রথম আলো আপনাকে ধন্যবাদ।
মহিউদ্দিন চৌধুরী ধন্যবাদ।
No comments