পবিত্র কোরআনের আলো-আহলে কিতাবের মধ্যেও ভালো মানুষ আছেন যাঁরা সত্যের ওপর দাঁড়ানো
১১১. লাইঁয়্যাদ্বুর্রূকুম ইল্লা- আযান, ওয়া ইন উক্বা-তিলূকুম ইউওয়াল্লূকুমুল আদবা-রা ছুম্মা লা-ইউনসারূন।
১১২. দ্বুরিবাত আ'লাইহিমুয্ যিল্লাতু আইনামা ছুকি্বফূ ইল্লা বিহাবলিম্ মিনাল্লাহি ওয়া হাবলিম্ মিনান্নাছি ওয়া বাঊ বিগাদ্বাবিম্ মিনাল্লাহি ওয়া দ্বুরিবাত আ'লাইহিমুল মাছকানাতু; যা-লিকা বিআন্নাহুম কা-নূ ইয়াক্ফুরূনা বিআ-ইয়াতিল্লাহি ওয়া ইয়াক্বতুলূনাল আম্বিয়া-য়া বিগাইরি হাক্কিন; যা-লিকা বিমা- আ'সাও ওয়াকা-নূ ইয়া'তাদূন।
১১২. দ্বুরিবাত আ'লাইহিমুয্ যিল্লাতু আইনামা ছুকি্বফূ ইল্লা বিহাবলিম্ মিনাল্লাহি ওয়া হাবলিম্ মিনান্নাছি ওয়া বাঊ বিগাদ্বাবিম্ মিনাল্লাহি ওয়া দ্বুরিবাত আ'লাইহিমুল মাছকানাতু; যা-লিকা বিআন্নাহুম কা-নূ ইয়াক্ফুরূনা বিআ-ইয়াতিল্লাহি ওয়া ইয়াক্বতুলূনাল আম্বিয়া-য়া বিগাইরি হাক্কিন; যা-লিকা বিমা- আ'সাও ওয়াকা-নূ ইয়া'তাদূন।
১১৩. লাইছূ ছাওয়া-আন মিন আহলিল কিতা-বি উম্মাতুন ক্বা-য়িমাতুন ইয়াত্লূনা আ-ইয়াতিল্লাহি আ-না-য়াল্লাইলি ওয়া হুম ইয়াছজুদূন। [সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১১১-১১৩]
অনুবাদ : ১১১. এরা তোমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না, সামান্য কিছু কষ্ট দেওয়া ছাড়া। তারা যদি কোনো সময় তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হয় তবে নিশ্চিত পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে; এরপর তাদের আর কোনোরকম সাহায্য করা হবে না।
১১২. যেখানেই তারা থাকবে সেখানেই তাদের ভাগ্যে জুটবে অপমান ও লাঞ্ছনা, তবে আল্লাহ ও মানুষের সম্পর্ক সূত্রে যারা পরিত্রাণ পাবে, সেটা ভিন্ন কথা। এরা ক্রোধের পাত্র হবে, এদের ওপর দারিদ্র্য চেপে বসবে। এর কারণ এই যে, এরা আল্লাহর সত্য ও ন্যায়কে অস্বীকার করেছে এবং অন্যায়ভাবে নবীদের হত্যা করেছে। আর এটা এ কারণেও যে, এরা পাপাচার করছে এবং সীমা লঙ্ঘন করছে।
১১৩. এরা সবাই আবার একরকম নয়। আহলে কিতাবদের মধ্যে এমন সম্প্রদায়ও আছে, যারা সত্য ও ন্যায়ের ওপর অবিচল দাঁড়িয়ে আছে। যারা সারা রাত আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং তারা আল্লাহর উদ্দেশ্যে সেজদা করে।
ব্যাখ্যা : এই আয়াতগুলোতে আহলে কিতাব তথা ইহুদি ও খ্রিস্টানদের প্রসঙ্গে বলা হয়েছে। ইহুদি এবং খ্রিস্টানরা ইসলাম এবং রাসুল মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে ছিল দোদুল্যমান। তারা কখনো রাসুল (সা.)-এর কাছে আপস করার জন্য আসত, আবার কখনো মুশরেক কোরাইশদের সঙ্গে হাত মিলানোর চেষ্টা করত, আবার কখনো নিজেরাই মুসলমানদের মোকাবিলা করার হুমকি দিত। ১১১ নম্বর আয়াতে এ ব্যাপারে এক ধরনের ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তারা মুসলমানদের সামান্য কষ্ট দেওয়া ছাড়া বড় ধরনের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। আর তারা যদি কখনো মুসলমানদের বিরুদ্ধে সামনাসামনি যুদ্ধে লিপ্ত হয়, তবে নিশ্চিত পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে। মুসলমানদের বিরুদ্ধে লড়বার সাহস তাদের নেই, তারা যুদ্ধের ময়দান থেকে পলায়ন করবে। এরপর তাদের সাহায্য করার আর কেউ থাকবে না।
১১২ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, তারা যেখানেই যাক, সেখানেই অপমানিত হবে। অবশ্য সেই সব লোক অপমান থেকে বাঁচতে পারবে যারা আল্লাহর সঙ্গে এবং মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্কের সূত্র গড়ে তুলবে। অর্থাৎ তারা যদি এক আল্লাহর ইবাদতে মশগুল হয় এবং মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত না হয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসে। এভাবে মুসলমানদের সঙ্গে সুসম্পর্ক এবং সত্য ও ন্যায়ের প্রতি আনুগত্য করার মধ্য দিয়ে আহলে কিতাবের লোকেরাও নিরাপত্তা লাভ করতে পারে। তবে আহলে কিতাবের খুব কম লোকই নিরাপত্তার সুযোগ নিয়েছিল, তাদের প্রধান অংশই মুসলমানদের সঙ্গে শত্রুতায় লিপ্ত হয়েছিল। এই আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে তাদের অপমানিত করা হবে এবং দারিদ্র্যের মধ্যেও নিপতিত করা হবে। কারণ অতীতেও তারা আল্লাহর আয়াতের প্রতি অবাধ্যতা দেখিয়েছে এবং আল্লাহর নবীদের অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে। আর শেষ নবীর আগমনকে কেন্দ্র করেও তারা পাপিষ্ঠের মতো আচরণ করছে এবং সীমা লঙ্ঘন করছে। ১১৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, তবে আহলে কিতাব সবাই সমান নয়। তাদের মধ্যে এমনও কেউ কেউ আছে যারা রাতভর আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে সিজদা করে, অর্থাৎ নামাজ আদায় করে। এখানেও মানুষকে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোণের বাইরে দেখার দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইহুদিরা বা খ্রিস্টানরা রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে খারাপ আচরণ করছে বলেই সব ইহুদি বা সব খ্রিস্টান খারাপ এমন মনে করা উচিত নয়। তাদের মধ্যেও ভালো মানুষ আছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ : ১১১. এরা তোমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না, সামান্য কিছু কষ্ট দেওয়া ছাড়া। তারা যদি কোনো সময় তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হয় তবে নিশ্চিত পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে; এরপর তাদের আর কোনোরকম সাহায্য করা হবে না।
১১২. যেখানেই তারা থাকবে সেখানেই তাদের ভাগ্যে জুটবে অপমান ও লাঞ্ছনা, তবে আল্লাহ ও মানুষের সম্পর্ক সূত্রে যারা পরিত্রাণ পাবে, সেটা ভিন্ন কথা। এরা ক্রোধের পাত্র হবে, এদের ওপর দারিদ্র্য চেপে বসবে। এর কারণ এই যে, এরা আল্লাহর সত্য ও ন্যায়কে অস্বীকার করেছে এবং অন্যায়ভাবে নবীদের হত্যা করেছে। আর এটা এ কারণেও যে, এরা পাপাচার করছে এবং সীমা লঙ্ঘন করছে।
১১৩. এরা সবাই আবার একরকম নয়। আহলে কিতাবদের মধ্যে এমন সম্প্রদায়ও আছে, যারা সত্য ও ন্যায়ের ওপর অবিচল দাঁড়িয়ে আছে। যারা সারা রাত আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং তারা আল্লাহর উদ্দেশ্যে সেজদা করে।
ব্যাখ্যা : এই আয়াতগুলোতে আহলে কিতাব তথা ইহুদি ও খ্রিস্টানদের প্রসঙ্গে বলা হয়েছে। ইহুদি এবং খ্রিস্টানরা ইসলাম এবং রাসুল মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে ছিল দোদুল্যমান। তারা কখনো রাসুল (সা.)-এর কাছে আপস করার জন্য আসত, আবার কখনো মুশরেক কোরাইশদের সঙ্গে হাত মিলানোর চেষ্টা করত, আবার কখনো নিজেরাই মুসলমানদের মোকাবিলা করার হুমকি দিত। ১১১ নম্বর আয়াতে এ ব্যাপারে এক ধরনের ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তারা মুসলমানদের সামান্য কষ্ট দেওয়া ছাড়া বড় ধরনের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। আর তারা যদি কখনো মুসলমানদের বিরুদ্ধে সামনাসামনি যুদ্ধে লিপ্ত হয়, তবে নিশ্চিত পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে। মুসলমানদের বিরুদ্ধে লড়বার সাহস তাদের নেই, তারা যুদ্ধের ময়দান থেকে পলায়ন করবে। এরপর তাদের সাহায্য করার আর কেউ থাকবে না।
১১২ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, তারা যেখানেই যাক, সেখানেই অপমানিত হবে। অবশ্য সেই সব লোক অপমান থেকে বাঁচতে পারবে যারা আল্লাহর সঙ্গে এবং মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্কের সূত্র গড়ে তুলবে। অর্থাৎ তারা যদি এক আল্লাহর ইবাদতে মশগুল হয় এবং মুসলমানদের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত না হয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসে। এভাবে মুসলমানদের সঙ্গে সুসম্পর্ক এবং সত্য ও ন্যায়ের প্রতি আনুগত্য করার মধ্য দিয়ে আহলে কিতাবের লোকেরাও নিরাপত্তা লাভ করতে পারে। তবে আহলে কিতাবের খুব কম লোকই নিরাপত্তার সুযোগ নিয়েছিল, তাদের প্রধান অংশই মুসলমানদের সঙ্গে শত্রুতায় লিপ্ত হয়েছিল। এই আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে তাদের অপমানিত করা হবে এবং দারিদ্র্যের মধ্যেও নিপতিত করা হবে। কারণ অতীতেও তারা আল্লাহর আয়াতের প্রতি অবাধ্যতা দেখিয়েছে এবং আল্লাহর নবীদের অন্যায়ভাবে হত্যা করেছে। আর শেষ নবীর আগমনকে কেন্দ্র করেও তারা পাপিষ্ঠের মতো আচরণ করছে এবং সীমা লঙ্ঘন করছে। ১১৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, তবে আহলে কিতাব সবাই সমান নয়। তাদের মধ্যে এমনও কেউ কেউ আছে যারা রাতভর আল্লাহর কিতাব পাঠ করে এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে সিজদা করে, অর্থাৎ নামাজ আদায় করে। এখানেও মানুষকে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোণের বাইরে দেখার দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইহুদিরা বা খ্রিস্টানরা রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে খারাপ আচরণ করছে বলেই সব ইহুদি বা সব খ্রিস্টান খারাপ এমন মনে করা উচিত নয়। তাদের মধ্যেও ভালো মানুষ আছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments