ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই সেরা by ড. সৌমিত্র শেখর

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ইতিহাস এ দেশের শিক্ষিতদের জানা। বিশ্ববিদ্যালয়টি যে এই দেশ এবং জাতির কল্যাণে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে, সেটাও ইতিহাস হয়ে আছে। বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের সূতিকাগার, মুক্তিযুদ্ধের বীজতলা হিসেবে কাজ করা,


এমনকি বিগত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে ছাত্র-গণআন্দোলনের মাধ্যমে দেশকে অগণতান্ত্রিক শাসনযুক্ত করার পেছনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। ভাষা রক্ষার জন্য আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাকে যদি 'মানদণ্ড' হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তাহলে র‌্যাংকিংয়ে বিশ্বের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু অনেকে বলবেন, এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার মধ্যে পড়ে না। অনেকেই হয়তো তাঁদের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করবেন না। তবে আগেই বলেছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার একটি বিশেষ প্রেক্ষাপট আছে, যা আর দশটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সঙ্গে মিলানো যাবে না, মিলবেও না। আদৌ কি তা অস্বীকার করা যাবে? গত ৫ ফেব্রুয়ারির কালের কণ্ঠে আতাউস সামাদ 'সেরার তালিকায় নেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়' শিরোনামে লেখার শেষ অনুচ্ছেদে লিখেছেন, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে যাতায়াত করতে ভয় করে।' প্রিয় পাঠক, দেখুন, পৃথিবীর কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এতটা উন্মুক্ত নয়, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়-সংশ্লিষ্ট না হয়েও যে কেউ পূর্ব অনুমতি ছাড়া ক্যাম্পাসের ভেতর দিয়ে যাতায়াত করে কিংবা করতে পারে, গাড়ি হাঁকাতে পারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করার আটটি উন্মুক্ত পথ আছে এবং তা দিন-রাত চবি্বশ ঘণ্টা খোলা থাকে_পৃথিবীর আর কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমনটি নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কি ইচ্ছা করলেই এ পথগুলো বন্ধ করে দিয়ে একটি বা দুটি পথ খোলা রাখতে পারে? পারে না। কারণ, এসব প্রবেশপথ বন্ধ করলে ঢাকার যানজট চরমতম হবে এবং এর প্রভাব পড়বে ঢাকাজুড়ে। আতাউস সামাদের মতো সমাজের দায়িত্বশীল অনেকেই নিজ পরিবারে 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রছাত্রী সমিতি' গড়ার স্বপ্ন দেখেন, কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয়টির অনাকাঙ্ক্ষিত জঞ্জালমুক্তির জন্য কার্যকর কিছু করেন না। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চৈঃস্বরে মাইক বাজিয়ে প্রতিনিয়তই বক্তৃতা হচ্ছে এবং সেসব সভায় বক্তব্য রাখছেন বাম ও অবামপন্থী জাতীয় পর্যায়ের নেতারা। পৃথিবীর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতাদের এমন অবাধ ও স্বল্প মর্যাদাকর গমনাগমন চোখে পড়বে না। স্বাধীনতার চার দশক পরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে জাতীয় পর্যায়ের নেতারা যেভাবে যথেচ্ছ পদচারণে মত্ত হন, তাতে 'ক্যাম্পাসের স্বাধীনতা' ক্ষুণ্ন হয় এবং লেখাপড়া ও গবেষণার পরিবেশ বিঘি্নত হয় বলে মনে করি। শিক্ষাক্ষেত্র আর পল্টনের মাঠ এক নয়। পল্টনের মাঠে সভা করতেও পূর্বানুমতির প্রয়োজন হয়। অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইক বাজিয়ে সভা করার ক্ষেত্রে সেই সামান্য অনুমতিটুকু নেওয়ার ধারও কেউ ধারেন না। এই প্রতিকূল ও শিক্ষাবিরুদ্ধ পরিবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ এবং গবেষণায় ব্রত আছেন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকমণ্ডলী।
ঢাকার একটি কলেজ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া একজন ছাত্রকে প্রথম বর্ষে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, কলেজে দ্বাদশ শ্রেণীতে তুমি মাসিক বেতন কত দিতে? সে বলেছিল, মাসে ৯০০ টাকা। এর পরই জিজ্ঞেস করেছিলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাসে কত বেতন দাও? সে বলেছিল, ২০ টাকা; এবং যোগ করেছিল_ভর্তি ফি ১০০ টাকা। সত্যিই তাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রপ্রতি মাসে ২০ টাকা বেতন নেওয়া হয়। ২০ টাকা মাসিক চার্জে হলে আবাসন সুবিধা দেওয়া হয়। যারা দূর থেকে ক্যাম্পাসে আসে, তাদের নামমাত্র মূল্যে যাতায়াত সুবিধা দেওয়া হয়। ক্যাফেটেরিয়ায় ২০ টাকায় দুপুরের খাওয়া চলে। এক টাকায় এক কাপ চা পাওয়া যায় এখানে। এ কথাগুলো শুনে অনেকে শায়েস্তা খাঁর আমলের কথা ভাবতে পারেন। কিন্তু না, এটা এ বছরের হিসাব; বাংলাদেশের খোদ রাজধানীতে অবস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব। একজন-দুজন নয়, হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী এই সুবিধার আওতায় আছে। পৃথিবীর কোনো উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, এমনকি বাংলাদেশের কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন নামমাত্র মূল্যে উচ্চশিক্ষা প্রদান করা কি হয়? এখন পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আটটি ইনস্টিটিউট আছে, আছে ৬৭টি বিভাগ; আরো কিছু বিভাগ খোলার প্রক্রিয়া চলমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের সংখ্যা এক হাজার ৩০০-রও বেশি। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিবছর পাঁচ হাজারের বেশি গ্র্যাজুয়েট বের হচ্ছে; এবং তারা এ দেশের সেবায় আত্মনিয়োগ করে ব্যক্তিগত জীবনে অপেক্ষাকৃত ভালোই আছে। যে বিশ্ববিদ্যালয় শ্রেণীকক্ষে শিক্ষকদের প্রত্যক্ষ পাঠদানের মাধ্যমে বছরে পাঁচ হাজার গ্র্যাজুয়েট তৈরি করে, এমন বিশ্ববিদ্যালয় পৃথিবীতে কয়টি আছে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসের পরিধি গুলিস্তান রেলওয়ে হাসপাতাল থেকে নিউ মার্কেটের পেছন হয়ে ফার্মগেটের গ্রিন সুপার মার্কেট এবং আইবিএ হোস্টেল পর্যন্ত। এত বিস্তৃত ক্যাম্পাস দেশ-বিদেশে কি খুব একটা দেখা যাবে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে ১৩টি ছাত্র হল, চারটি ছাত্রী হল, একটি গবেষক-ছাত্রী হল এবং একটি আন্তর্জাতিক ছাত্র হোস্টেল। বর্তমান শিক্ষাবর্ষের (জুলাই ২০১০_জুন ২০১১) একাডেমিক ক্যালেন্ডারে প্রদত্ত হিসাব অনুযায়ী দেখা যায়, এই হলগুলোতে আবাসিক-অনাবাসিক মিলিয়ে সাড়ে ৪৬ হাজার ছাত্রছাত্রী রয়েছে। এ এক বিস্ময়কর ঘটনা! এর মধ্যে বিভিন্ন ছাত্র হলে ১২ হাজার ছাত্র অবস্থান করছে; ছাত্রী হলগুলোতে অবস্থান করছে সাড়ে পাঁচ হাজার ছাত্রী। বাংলাদেশের মতো অপেক্ষাকৃত রক্ষণশীল সংস্কৃতির দেশে এতগুলো মেয়ে সম্মান ও নিরাপত্তার সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলগুলোতে বাস ও অধ্যয়ন করছে এবং করে চলেছে_পাশ্চাত্যের কোন মানদণ্ডে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই দায়িত্ববোধ পরিমাপ করা হবে, আমি জানি না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আরেকটি গর্বের বিষয় হলো, এর ছাত্র ভর্তিপ্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা। প্রতিবছর হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর ভর্তিচাপ অত্যন্ত স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করছেন এই প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকমণ্ডলী। নিয়মের বাইরে নিজেদের সন্তান-সন্ততিদের জন্যও এক চুল বিচ্যুত হচ্ছেন না তাঁরা। দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কথা ছেড়েই দিলাম, বিদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবছর এত বিপুল ভর্তিচাপ সামলে শিক্ষাকার্যক্রম চালু রাখে?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য যেহেতু শিক্ষা প্রসারের পাশাপাশি দেশ ও জাতি গঠন ছিল, সেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তুলনা করার জন্য বিশেষ কিছু মানদণ্ড বিবেচনায় রাখতে হবে। যদি বলি, নামমাত্র খরচ অথচ বিশ্বমানের শিক্ষক ও শিক্ষা পাওয়া যায় কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে? উত্তর_অবশ্যই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশের কোনো কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নাকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়েও ভালো? এমন কথা যাঁরা বলেন, তাঁরা শিক্ষার পেছনে খরচের হিসাবটি কি মাথায় রাখেন? সরকারি অর্থের বাইরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তো আর কোনো আয়ের উৎস নেই। আয়ের উৎস খোঁজা হলে কিছু নামসর্বস্ব ছাত্র সংগঠনের অছাত্রনেতার নেতৃত্বে আন্দোলনের হুমকি আসে। বেতন সামান্য বাড়ানোর প্রস্তাবেই আপত্তি ওঠে। দুপুরের খাবারের দাম ২০ টাকার বদলে ২২ টাকা করার প্রস্তাব হলেই মিছিল করে কোনো কোনো ছাত্র সংগঠন। শ্রেণীকক্ষের আধুনিকায়নে বা গবেষণাগারের উন্নয়নে ছাত্রদের কাছ থেকে সামান্য অর্থও প্রত্যাশা করা যায় না কিছু সংগঠনের বিরোধিতার কারণে। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে দেয়ালে লিখে রেখেছে : 'এক টাকাও বাড়ানো যাবে না'। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যে মানসম্পন্ন শিক্ষা সমুন্নত রাখতে পেরেছে, এ কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ কি দিতে হয় না? সর্বাধুনিক শিক্ষা চাইব, কিন্তু সেই শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ক্রয়ের কোনো ফি বা অর্থ দিতে অপারগতা প্রকাশ করব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে বৃহত্তর সমাজের এবং কিছু ছাত্র সংগঠনের এই দ্বিচারিতার মধ্যেও কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করছে শ্রেষ্ঠ শিক্ষাটুকু দিতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অনবরত লড়াই করতে হয় অভ্যন্তরীণ ও বহিস্থ প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে। মনে হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করা আর ছোটখাটো কোনো দেশ পরিচালনা করা একই কথা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শুধু সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের আগ্রহ আর শিক্ষকমণ্ডলীর ঐকান্তিকতায় আজও শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
নিশ্চয়ই সমস্যা আছে। সমস্যা আছে শিক্ষকদের দলবাজিতে, গবেষণায় মনোযোগ কমিয়ে বেসরকারি বা দেশের বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনায় সময় দেওয়ায়, যথাসময়ে পরীক্ষার ফল প্রকাশ না করায়। কালের কণ্ঠের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নূরে আলম দুর্জয় গত জানুয়ারি মাসে 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : জ্ঞানচর্চা কার্যক্রম' শিরোনামে সিরিজ প্রতিবেদন লিখে দেখিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞানচর্চা কার্যক্রমের কিছু সমস্যা। কালের কণ্ঠেই গত ১০ ফেব্রুয়ারি দেবব্রত চক্রবর্তী বিষ্ণু একটি পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে আশঙ্কা প্রকাশ করে লিখেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষক ছুটি নিয়ে বিদেশে গিয়ে আর ফিরে আসছেন না, শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অবদান রাখতে পারছেন না, শিক্ষক নিয়োগের সময় মেধা নয়, দলীয় আনুগত্যকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, অনেক শিক্ষক আবার স্নেহধন্য ছাত্রদের বেশি নম্বর দিয়ে শিক্ষক বানানোর পথ সুগম করে দিচ্ছেন ইত্যাদি। এই অভিযোগগুলো মিথ্যা, তা বলা যাবে না। আশার কথা হলো এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ কারণেই অনন্য যে শিক্ষকরাই এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন দিন-রাত। অর্থাৎ, শিক্ষকদেরই সত্য আর ন্যায় বোধ মিথ্যার বিরুদ্ধে অহর্নিশ সংগ্রামরত। নূরে আলম দুর্জয় তাঁর প্রতিবেদন লেখার সময় আমার মন্তব্যও সংযোজন করেছেন : "চার বছর ধরে বাংলা বিভাগ থেকে কোনো জার্নাল বের হয় না। বিভাগের শিক্ষক ড. সৌমিত্র শেখর কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বাংলা বিভাগের সাহিত্য পত্রিকাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুর দিকের একটি। কিন্তু বিভাগের কারো কারো একঘেয়েমির কারণে চার বছর ধরে বের হচ্ছে না। এটা অনভিপ্রেত এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য অন্তরায়।' তিনি বলেন, 'স্কুল-কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্থক্যটা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণাকর্ম জোরালো থাকবে, যেটা জার্নালে প্রতিফলিত হবে। কিন্তু এখানে তার উল্টোটা হচ্ছে।" (২৫ জানুয়ারি, ২০১১)। লোকে বলে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা হয় না। কিন্তু তারা দেখে না, পাটের জন্মরহস্য উদ্ঘাটন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই গর্বের সংবাদ জেনেও নিজের বিভাগে গবেষণাপত্র বা জার্নাল কেন নিয়মিত বের হচ্ছে না, এ সম্পর্কে সমালোচনামূলক কথা বলতে কিন্তু আমি কুণ্ঠিত হইনি। এই যে আত্মসমালোচনা করার মানসিকতা, এই মানসিকতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরই আছে; অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কারো হয়তো নেই। মহামূল্যবান এই মানসিকতাই। যত দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন ছাত্র বা শিক্ষক এই মানসিকতা লালন করবেন, তত দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে পেছনে ফেলা যাবে না। পরিপ্রেক্ষিত বিচার করে বলতেই হবে, সেরা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, এখনো সেরা।
লেখক : অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
scpcdu@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.