বিষাক্ত বর্জ্যবাহী জাহাজ-নীতিমালা না থাকার পরিণাম
পরিবেশের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর এজভেস্টরস ও টক্সিক কেমিক্যাল নিয়ে 'এশিয়া ইউনিয়ন' নামে একটি স্ক্র্যাপ জাহাজ বাংলাদেশে এসেছে। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি এবং পরিবেশ অধিদফতর জাহাজটির বন্দর সীমায় প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করলে এটি অনায়াসেই বন্দরে ভিড়ে যেত এবং জাহাজ ভাঙা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত হতো।
এতে শিল্পের উন্নতি হলেও পরিবেশের ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখা দিত। এ ধরনের ক্ষতিকর বর্জ্যবাহী জাহাজ আমদানি করার সাহস কী করে পান আমদানিকারকরা? বলা হচ্ছে, দেশের জাহাজ ভাঙা ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পের দ্রুত উন্নতি ঘটলেও এ ক্ষেত্রে এখনও বাস্তবসম্মত নীতিমালা প্রণীত হয়নি বলে আমদানিকারকরা অতীতে বিষাক্ত বর্জ্যবাহী জাহাজ ভেঙে অনায়াসে পার পেয়ে গেছে। এ কারণেই এজবেস্টরস ও বিষাক্ত কেমিক্যালবাহী জাহাজ নিয়ে বাংলাদেশের বন্দরে ভেড়ার মতো সাহস দেখাতে পেরেছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। তাই স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানির নীতিমালা জরুরি ভিত্তিতে প্রণীত হওয়া দরকার। এ বছরের প্রথম দিক থেকে দু'জন মন্ত্রী একাধিকবার এ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে মঙ্গলবার সমকালে এ সংক্রান্ত প্রকাশিত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। অবশ্য আগামী এক মাসের মধ্যেই এই নীতিমালা আলোর মুখ দেখবে বলে জোর দিয়ে বলা হচ্ছে। আমরা অবশ্যই স্ক্র্যাপ জাহাজের উপাদান ব্যবহার করে নতুন জাহাজ নির্মাণ করার পক্ষে। আমাদের শিপ বিল্ডার্সরা ইতিমধ্যে স্ক্র্যাপ জাহাজ দিয়ে নতুন সমুদ্রগামী জাহাজ নির্মাণ করে আমাদের শিল্পসম্ভারের জগতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছেন। এ জন্য তারা অবশ্যই জাতির অকুণ্ঠ সমর্থন পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু তাই বলে স্ক্র্যাপ জাহাজের আড়ালে ক্ষতিকর বর্জ্যবাহী জাহাজ আমদানি কোনোমতেই সমর্থনযোগ্য নয়। কারণ এতে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ে। ক্ষতিকর এজবেস্টরস ও বিষাক্ত কেমিক্যালবাহী জাহাজ 'এশিয়া ইউনিয়নের' বাংলাদেশের বন্দরে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দিয়ে পরিবেশ অধিদফতর ভালো কাজই করেছে। এ ধরনের কোনো জাহাজ যাতে ভবিষ্যতেও আর বাংলাদেশের কোনো বন্দরে ভিড়তে না পারে তারা সেটা অবশ্যই নিশ্চিত করবেন। সরকার এক মাসের মধ্যে স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানির নীতিমালা প্রণয়ন করে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে নৈরাজ্য দূর করে স্থিতিশীলতা আনয়নে সাহায্য করবে, এটাই সংশ্লিষ্ট সবাই আশা করে।
No comments