বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো by জামান সরদার
কোরীয় উপদ্বীপ ও এর আশপাশের প্রতিরক্ষা বিষয়ক সর্বসাম্প্রতিক খবর ছিল ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে জাপানের দ্বিতীয় গোয়েন্দা উপগ্রহ উৎক্ষেপণ। দেশটির মহাকাশ সংস্থা 'জাক্সা' সাড়ম্বরে ঘোষণা করে, দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রত্যন্ত দ্বীপ তানেগাশিমা থেকে 'সফলভাবে' প্রেরিত রাডার-নিয়ন্ত্রিত উপগ্রহটি 'সঠিকভাবে' কাজ করছে। উদ্দেশ্য পরিষ্কার_ উত্তর কোরিয়ায় গোয়েন্দা নজরদারি। কিন্তু সেটা যে কাজের কাজ কিছুই করতে পারেনি, উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং ইলের
মৃত্যু তার একটি প্রমাণ। বস্তুত কাজে আসছে না দক্ষিণ কোরীয় ও মার্কিন গোয়েন্দা ব্যবস্থাও। যে কারণে কিমের মৃত্যু পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের জন্য কেবল বড় সংবাদই নয়, বড় ধরনের বিস্ময়ও। বিস্ময়ের কারণ এই নয় যে, এত বড় খবরটি উত্তর কোরিয়া কীভাবে দু'দিন সাফল্যের সঙ্গে চেপে রাখতে পারল। বরং যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দারা যে আসলে ঘোড়ার ঘাস কাটেন, সেটা দেখে। অগি্নশর্মা নিউইয়র্ক টাইমস মঙ্গলবার তাদের প্রধান শিরোনাম করেছে_ কিমের মৃত্যুতে ব্যাপক গোয়েন্দা ব্যর্থতা (ইন কিম'স ডেথ অ্যান এক্সটেনসিভ ইনটেলিজেন্স ফেইলিয়ার)।
পশ্চিমা লবির প্রধান মুখপত্রটি লিখেছে, কিম জং ইল শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় তার দেশের একটি ট্রেনে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তার ৪৮ ঘণ্টা পরও দক্ষিণ কোরিয়া অন্ধকারে ছিল। ওদিকে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যমের ঘোষণার পরই কেবল মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের ঘুম ভাঙে। নিউইয়র্ক টাইমসের বিস্ময়_ টেলিফোনে উত্তর কোরীয় কর্মকর্তাদের ভয়ার্ত কথাবার্তা কিংবা একটি ট্রেনের পাশে সেনাবাহিনীর অগোছালো সমাবেশ দেখেও কি দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা কিছু আঁচ করতে পারল না! তাহলে পরমাণু অস্ত্র নিয়ে আর কী খবর সংগ্রহ করবে দেশ দুটি!
মজার ব্যাপার হচ্ছে, স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ১০টার দিকে যখন উত্তর কোরীয় টেলিভিশনে ঘোষণা আসে যে, সেদিন দুপুরে একটি বিশেষ ঘোষণা দেওয়া হবে; দক্ষিণ কোরিয়া তখনও নির্বিকার ছিল। অথচ ১৯৯৪ সালে কিম ইল সুংয়ের মৃত্যুর পরও কমিউনিস্ট রাষ্ট্রটি একইভাবে দেশবাসীকে বিশেষ ঘোষণার জন্য প্রস্তুত করেছিল। বলা বাহুল্য নয়, সেবারও পশ্চিমা গোয়েন্দা ও সংবাদমাধ্যম সিনিয়র কিমের মৃত্যুর খবর জেনেছিল ৭২ ঘণ্টা পর।
পরমাণু সজ্জিত 'ব্যর্থ রাষ্ট্র'টি সম্পর্কে খাস খবর_ যুক্তরাষ্ট্র ও তার এশীয় মিত্ররা এবারই প্রথম 'ব্যর্থ' হয়নি। কিমের তৃতীয় পুত্র যে উত্তরসূরি হতে যাচ্ছে_ পিয়ংইয়ংয়ের ঘোষণার আগে তাদের জানা ছিল না। এই তরুণ জেনারেল সম্পর্কেও সামান্যই তথ্য রয়েছে সিউল বা ওয়াশিংটনের কাছে। উত্তর কোরিয়ার পরমাণু সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি শুরুর খবর যুক্তরাষ্ট্র জেনেছে পাক্কা দেড় বছর পর। তাও পিয়ংইয়ং নিজ থেকে এক আমেরিকান বিজ্ঞানীকে সেটা দেখানোর পর। জর্জ বুশ যখন ইরাকে 'গণবিধ্বংসী অস্ত্র' খুঁজতে মরিয়া, তখন কিম জং ইল সিরিয়ায় নিউক্লিয়ান রিঅ্যাক্টর তৈরি করছেন এবং এই কাজে কোরীয় কর্মকর্তারা প্রায় নিয়মিত সেখানে যাতায়াত করছেন। মোসাদ পরে এই তথ্য আবিষ্কার করে এবং ২০০৭ সালে বিমান হামলা চালিয়ে স্থাপনাটি ধ্বংস করে দেয়। এখন মার্কিন বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এই যদি হয় গোয়েন্দা নজরদারির অবস্থা; সীমান্ত থেকে মাত্র ৩৫ মাইল দূরে অবস্থিত সিউল কীভাবে উত্তর কোরিয়ার হামলা থেকে মুক্ত থাকবে?
মার্কিন ম্যাগাজিন আটলান্টিক ভালো কথা বলেছে। বছরের পর বছর ধরে পশ্চিমা মিডিয়া ও গোয়েন্দারা কিম জং ইলের ব্যাপারে যেসব খবর দিয়েছে, তাতে মনে হয়েছে, তিনি একটু ক্ষেপাটে, কৌতুককর। কিন্তু তিনি যে তার সমালোচকদের চেয়ে অনেক বেশি স্মার্ট_ মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তা প্রমাণ হলো।
পশ্চিমা লবির প্রধান মুখপত্রটি লিখেছে, কিম জং ইল শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় তার দেশের একটি ট্রেনে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তার ৪৮ ঘণ্টা পরও দক্ষিণ কোরিয়া অন্ধকারে ছিল। ওদিকে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যমের ঘোষণার পরই কেবল মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের ঘুম ভাঙে। নিউইয়র্ক টাইমসের বিস্ময়_ টেলিফোনে উত্তর কোরীয় কর্মকর্তাদের ভয়ার্ত কথাবার্তা কিংবা একটি ট্রেনের পাশে সেনাবাহিনীর অগোছালো সমাবেশ দেখেও কি দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা কিছু আঁচ করতে পারল না! তাহলে পরমাণু অস্ত্র নিয়ে আর কী খবর সংগ্রহ করবে দেশ দুটি!
মজার ব্যাপার হচ্ছে, স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ১০টার দিকে যখন উত্তর কোরীয় টেলিভিশনে ঘোষণা আসে যে, সেদিন দুপুরে একটি বিশেষ ঘোষণা দেওয়া হবে; দক্ষিণ কোরিয়া তখনও নির্বিকার ছিল। অথচ ১৯৯৪ সালে কিম ইল সুংয়ের মৃত্যুর পরও কমিউনিস্ট রাষ্ট্রটি একইভাবে দেশবাসীকে বিশেষ ঘোষণার জন্য প্রস্তুত করেছিল। বলা বাহুল্য নয়, সেবারও পশ্চিমা গোয়েন্দা ও সংবাদমাধ্যম সিনিয়র কিমের মৃত্যুর খবর জেনেছিল ৭২ ঘণ্টা পর।
পরমাণু সজ্জিত 'ব্যর্থ রাষ্ট্র'টি সম্পর্কে খাস খবর_ যুক্তরাষ্ট্র ও তার এশীয় মিত্ররা এবারই প্রথম 'ব্যর্থ' হয়নি। কিমের তৃতীয় পুত্র যে উত্তরসূরি হতে যাচ্ছে_ পিয়ংইয়ংয়ের ঘোষণার আগে তাদের জানা ছিল না। এই তরুণ জেনারেল সম্পর্কেও সামান্যই তথ্য রয়েছে সিউল বা ওয়াশিংটনের কাছে। উত্তর কোরিয়ার পরমাণু সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি শুরুর খবর যুক্তরাষ্ট্র জেনেছে পাক্কা দেড় বছর পর। তাও পিয়ংইয়ং নিজ থেকে এক আমেরিকান বিজ্ঞানীকে সেটা দেখানোর পর। জর্জ বুশ যখন ইরাকে 'গণবিধ্বংসী অস্ত্র' খুঁজতে মরিয়া, তখন কিম জং ইল সিরিয়ায় নিউক্লিয়ান রিঅ্যাক্টর তৈরি করছেন এবং এই কাজে কোরীয় কর্মকর্তারা প্রায় নিয়মিত সেখানে যাতায়াত করছেন। মোসাদ পরে এই তথ্য আবিষ্কার করে এবং ২০০৭ সালে বিমান হামলা চালিয়ে স্থাপনাটি ধ্বংস করে দেয়। এখন মার্কিন বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এই যদি হয় গোয়েন্দা নজরদারির অবস্থা; সীমান্ত থেকে মাত্র ৩৫ মাইল দূরে অবস্থিত সিউল কীভাবে উত্তর কোরিয়ার হামলা থেকে মুক্ত থাকবে?
মার্কিন ম্যাগাজিন আটলান্টিক ভালো কথা বলেছে। বছরের পর বছর ধরে পশ্চিমা মিডিয়া ও গোয়েন্দারা কিম জং ইলের ব্যাপারে যেসব খবর দিয়েছে, তাতে মনে হয়েছে, তিনি একটু ক্ষেপাটে, কৌতুককর। কিন্তু তিনি যে তার সমালোচকদের চেয়ে অনেক বেশি স্মার্ট_ মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তা প্রমাণ হলো।
No comments