বিশ্লেষণ-দুই কোরিয়ার একত্রীকরণ কি ত্বরান্বিত হচ্ছে?
দুই কোরিয়ার একত্রীকরণ নিয়ে আবারও জল্পনাকল্পনা শুরু হয়েছে। অনেকের মতে, উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং-ইলের মৃত্যু একত্রীকরণ প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে। তবে অধিকাংশ বিশ্লেষকের মতে, বিষয়টি এখনো অনেক দূর। তাঁরা মনে করেন, দুই অংশের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য, মাথাপিছু আয়, জনসংখ্যার অনুপাত ও উত্তর কোরিয়ার একগুঁয়ে মনোভাব এ ক্ষেত্রে এখনো মূল প্রতিবন্ধকতা। কিম জং-ইল ৬৯ বছর বয়সে গত শনিবার হূদেরাগে মারা যান।
তাঁর মৃত্যুতে উত্তর কোরিয়ার নেতৃত্ব বদল দুই কোরিয়ার একত্রীকরণ নিয়ে আলোচনা তীব্রতর করলেও, সেই সম্ভাবনা এখনো বিস্তর দূর বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ অনেকটা পরিষ্কার: এ কথা সত্যি যে, দুই কোরিয়া একত্র হলে উত্তর কোরিয়ার লাখ লাখ লোকের দারিদ্র্য দূর হবে। কিন্তু এর ফলে দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যে ধাক্কা খাবে, তা পুষিয়ে নিতে এক দশক, এমনকি তার চেয়েও বেশি সময় লেগে যাবে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক পিটার ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিকসের জ্যেষ্ঠ গবেষক মার্কাস নুল্যান্ডের মতে, এর ফলে দক্ষিণের অর্থ উত্তরে চলে যাবে। আর উত্তরের দরিদ্র জনগোষ্ঠী দক্ষিণের দিকে ধাবিত হবে। এতে অর্থনীতিতে আকস্মিক ধস নামবে।
পূর্ব জার্মানি ও পশ্চিম জার্মানির একত্র হওয়ার বিষয়টিকে স্পষ্ট নজির হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। দুই কোরিয়ার মতো দুই জার্মানিও এক সময় যুদ্ধ, রাজনৈতিক আদর্শগত ভিন্নতা আর অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে আলাদা ছিল।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই কোরিয়ার প্রেক্ষাপট আর জার্মানির প্রেক্ষাপট বিস্তর আলাদা। ১৯৯০ সালে বার্লিন দেয়ালের পতনের মাধ্যমে দুই জার্মানি যখন এক হয়, তখন পূর্ব জার্মানির জনসংখ্যা ছিল পশ্চিমের জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ। আর পূর্ব জার্মানির চেয়ে পশ্চিমের মাথাপিছু আয় ছিল চার গুণ বেশি।
পক্ষান্তরে, উত্তর কোরিয়ার বর্তমান জনসংখ্যা দুই কোটি ৫০ লাখ, যা দক্ষিণের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক। আর উত্তরের চেয়ে দক্ষিণের মাথাপিছু আয় ১৭ গুণ বেশি।
ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটি ও সোগাং ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা দেখতে পেয়েছেন, জার্মান স্টাইলে দ্রুততার সঙ্গে দুই কোরিয়া একত্র হলে, দক্ষিণ কোরিয়ার মাথাপিছু প্রবৃদ্ধির হার ২৫ বছর পরও বর্তমানের চেয়ে ২০ ভাগ কম থেকে যাবে।
সিউলে গোল্ডম্যান সসের অর্থনীতিবিদ গুহুন কোওন ২০০৯ সালে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন। তাতে বলা হয়েছিল, দুই কোরিয়া একত্র হলে ৩০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ফ্রান্স ও জার্মানি, এমনকি জাপানের অর্থনীতিকেও পেছনে ফেলা সম্ভব। আর একত্রীকরণের ফলে যেসব নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, তা সঠিক নীতি গ্রহণের মাধ্যমে মোকাবিলা করা সম্ভব। অর্থনীতিবিদ গুহুন ওই প্রতিবেদনে মতামত দিয়েছিলেন, চীনা-হংকং স্টাইলে ধাপে ধাপে দুই কোরিয়ার একত্রীকরণ সবচেয়ে ফলপ্রসূ হবে। হংকং ১৯৯৭ সালে চীনের মূল ভূখণ্ডে ফিরে আসে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি মিয়ুং বাক চীনা-হংকং স্টাইলে দুই কোরিয়ার একত্রীকরণের পক্ষে। তিনি প্রাথমিকভাবে উত্তর কোরিয়ার অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশটির অর্থনীতিকে বিশ্বমানে ফেরাতে চান।
তবে এ ধরনের প্রস্তাব গ্রহণ করাকে উত্তর কোরিয়ার নেতৃত্বকে অবমাননা বলেই গণ্য করা হয়ে থাকে। সদ্য প্রয়াত নেতা কিম জং-ইল কখনোই সেটা চাননি। আর তাঁর ছেলে ‘মহান উত্তরাধিকারী’ কিম জং-উনও তা প্রত্যাখ্যান করবেন এটাই সবার বিশ্বাস। রয়টার্স।
ওয়াশিংটনভিত্তিক পিটার ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিকসের জ্যেষ্ঠ গবেষক মার্কাস নুল্যান্ডের মতে, এর ফলে দক্ষিণের অর্থ উত্তরে চলে যাবে। আর উত্তরের দরিদ্র জনগোষ্ঠী দক্ষিণের দিকে ধাবিত হবে। এতে অর্থনীতিতে আকস্মিক ধস নামবে।
পূর্ব জার্মানি ও পশ্চিম জার্মানির একত্র হওয়ার বিষয়টিকে স্পষ্ট নজির হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। দুই কোরিয়ার মতো দুই জার্মানিও এক সময় যুদ্ধ, রাজনৈতিক আদর্শগত ভিন্নতা আর অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে আলাদা ছিল।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই কোরিয়ার প্রেক্ষাপট আর জার্মানির প্রেক্ষাপট বিস্তর আলাদা। ১৯৯০ সালে বার্লিন দেয়ালের পতনের মাধ্যমে দুই জার্মানি যখন এক হয়, তখন পূর্ব জার্মানির জনসংখ্যা ছিল পশ্চিমের জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ। আর পূর্ব জার্মানির চেয়ে পশ্চিমের মাথাপিছু আয় ছিল চার গুণ বেশি।
পক্ষান্তরে, উত্তর কোরিয়ার বর্তমান জনসংখ্যা দুই কোটি ৫০ লাখ, যা দক্ষিণের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক। আর উত্তরের চেয়ে দক্ষিণের মাথাপিছু আয় ১৭ গুণ বেশি।
ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটি ও সোগাং ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা দেখতে পেয়েছেন, জার্মান স্টাইলে দ্রুততার সঙ্গে দুই কোরিয়া একত্র হলে, দক্ষিণ কোরিয়ার মাথাপিছু প্রবৃদ্ধির হার ২৫ বছর পরও বর্তমানের চেয়ে ২০ ভাগ কম থেকে যাবে।
সিউলে গোল্ডম্যান সসের অর্থনীতিবিদ গুহুন কোওন ২০০৯ সালে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন। তাতে বলা হয়েছিল, দুই কোরিয়া একত্র হলে ৩০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ফ্রান্স ও জার্মানি, এমনকি জাপানের অর্থনীতিকেও পেছনে ফেলা সম্ভব। আর একত্রীকরণের ফলে যেসব নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, তা সঠিক নীতি গ্রহণের মাধ্যমে মোকাবিলা করা সম্ভব। অর্থনীতিবিদ গুহুন ওই প্রতিবেদনে মতামত দিয়েছিলেন, চীনা-হংকং স্টাইলে ধাপে ধাপে দুই কোরিয়ার একত্রীকরণ সবচেয়ে ফলপ্রসূ হবে। হংকং ১৯৯৭ সালে চীনের মূল ভূখণ্ডে ফিরে আসে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি মিয়ুং বাক চীনা-হংকং স্টাইলে দুই কোরিয়ার একত্রীকরণের পক্ষে। তিনি প্রাথমিকভাবে উত্তর কোরিয়ার অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশটির অর্থনীতিকে বিশ্বমানে ফেরাতে চান।
তবে এ ধরনের প্রস্তাব গ্রহণ করাকে উত্তর কোরিয়ার নেতৃত্বকে অবমাননা বলেই গণ্য করা হয়ে থাকে। সদ্য প্রয়াত নেতা কিম জং-ইল কখনোই সেটা চাননি। আর তাঁর ছেলে ‘মহান উত্তরাধিকারী’ কিম জং-উনও তা প্রত্যাখ্যান করবেন এটাই সবার বিশ্বাস। রয়টার্স।
No comments