৬ মাসেও সন্ধান মেলেনি ওয়াজিউল্লাহর by আতাউর রহমান

নিখোঁজ হওয়ার ৬ মাস পরও পুরান ঢাকার বংশালের বাসিন্দা হাজি ওয়াজিউল্লাহর সন্ধান মেলেনি। ছেলেকেও বাবার মতো পরিণতি হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ফলে উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে এ পরিবারের। পরিবারের সদস্যরা জানান, গণপূর্ত অধিদফতরের সার্ভেয়ার বিভাগে চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তা ছিলেন হাজি ওয়াজিউল্লাহ। তিনি রাজধানীর বঙ্গবাজার এলাকার ঢাকা সুপার মার্কেটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। এ মার্কেটের মালিকানা নিয়ে কয়েকজনের


সঙ্গে তার বিরোধ ছিল। এ নিয়ে ওয়াজিউল্লাহকে একাধিকবার হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। এ ঘটনার জের ধরেই ওয়াজিউল্লাহকে অপহরণ করা হতে পারে। হত্যার পর লাশ গুমের আশঙ্কা করছেন পরিবারের সদস্যরা। ১৪ জুলাই শাহবাগ এলাকা থেকে তিনি নিখোঁজ হন।
ওয়াজিউল্লাহর ছেলে ওহিদুর রহমান বাবু সমকালকে জানান, মার্কেটের মালিকানার জের ধরেই তার বাবা অপহরণের শিকার হন। এ ঘটনায় তিনি মার্কেটের দাবিদার অপর পক্ষের সাতজনের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করেন। পুলিশ আসামি গ্রেফতারে গড়িমসি করে। পরে সব আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পায়। তারা মামলা তুলে নিতে তাকে নানাভাবে ভয় দেখায়। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছে। তাকে ফোনে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি ডিবিকে জানানো হয়েছে। সূত্র জানায়, ১৯৯০ সালে ওয়াকফ প্রশাসন থেকে ওয়াজিউল্লাহ গুলিস্তান ফনিক্স রোডে পুলিশ হেড কোয়ার্টারের পাশে কিছু ভূমি লিজ নেন। ওই জমিতে তিনি দোকান নির্মাণ করে ঢাকা সুপার মার্কেট নাম দেন। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর প্রভাবশালী চক্র পুরো মার্কেট দখল করে নেয়। আইনের আশ্রয় নিতে চাইলে ওয়াজিউল্লাহর পরিবারের ওপর নির্যাতন বেড়ে যায়। ২০০৯ সালে তাকে অপহরণের চেষ্টা করে সন্ত্রাসীরা। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সেনাবাহিনী কাগজপত্র যাচাই করে মার্কেট দখলমুক্ত করে ওয়াজিউল্লাসহ প্রকৃত ব্যবসায়ীদের বুঝিয়ে দেয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শেষের দিকে ওই গ্রুপটি আবারও মার্কেটটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ওয়াজিউল্লাহ মার্কেট ফিরে পেতে আদালতে যান। আদালত তার পক্ষে রায় দেন বলে পরিবারের সদস্যরা জানান। ওহিদুর রহমান বাবু জানান, আদালত থেকে রায় পাওয়ার পর তার বাবা প্রকৃত ব্যবসায়ীদের নিয়ে মার্কেট দখলমুক্ত করার পরিকল্পনা নেন। বিষয়টি টের পেয়ে তার বাবাকে অপহরণ করা হয়। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপ-পরিদর্শক নজরুল ইসলাম সমকালকে জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হল এলাকা থেকে ওয়াজিউল্লাহকে অপহরণ করা হয় বলে তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। ওই সময়কার ওই এলাকার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের কললিস্টগুলো যাচাই করা হয়েছে। এ ছাড়াও মামলার এজাহারভুক্ত সাত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.