হরতালোচনা by মাতৃক ইসলাম
'হরতালে রিকশাভাড়া দ্বিগুণ হতে হবে কেন, আমি কোনো কারণ বুঝি না'_ মামুনের কথায় বিরক্তি ও ক্ষোভ যথেষ্ট। অন্যরা কিছু বলল না, তবে তারাও বিরক্ত। মাঝে মধ্যে তারা মগবাজারে শফিকের অফিসে বসে। আজ হরতালে অফিস শেষের আগেই বেরিয়ে গেছে। মামুন : হরতালে তো ভাড়া কম হওয়া উচিত, রাস্তা ফাঁকা, ভিআইপি রোড উন্মুক্ত।
রাসেল : হুম, একই সঙ্গে আর কোনো যানবাহনও নাই, এই তো সুযোগ। শফিক : এ দেশে বিপদে পড়া মানুষের
রাসেল : হুম, একই সঙ্গে আর কোনো যানবাহনও নাই, এই তো সুযোগ। শফিক : এ দেশে বিপদে পড়া মানুষের
মাথায় কাঁঠাল ভাঙতে সবাই মজা পায়। জাহিদ : তাই কী? সারাবছর এরা গাধার খাটুনি খাটে। দু'একটা হরতালে একটু বেশি আয় করতে অপরাধ কই?
শফিক : (আড়চোখে রাসেলকে দেখে নিয়ে) কিন্তু রিকশাওয়ালারা মনে হয় হরতালকে ঠিক সাপোর্ট করল না।
মামুন : ব্যাপারটা কি তাই? সাপোর্ট কি কেউ করে? ভাংচুরের ভয়ে গাড়ি-বাস নামায় না, দোকানপাট খোলে না। দলগুলো বলুক তো দেখি যে, হরতাল আহ্বান করলাম কিন্তু কেউ যদি সমর্থন না করে তবে তাদের ওপর কোনো জোরজবরদস্তি করা হবে না।
রাসেল : তবে একটা ব্যাপার, হরতাল সমর্থক এবং বিরোধী, মিছিল করল দু'দলই। পুলিশ কেন শুধু সমর্থক দলের মিছিলে লাঠিচার্জ করে আর পিকেটার বলে ধরে নিয়ে যায়! ডাবল স্ট্যান্ডার্ড হয়ে গেল না!
শফিক : হরতালকারীরা তো গাড়ি ভাঙে, দোকানপাট ভাঙে, সরকারি দল তা করে না।
মামুন : পুরো রাস্তা বন্ধ করে মিছিল করে।
শফিক : সেটা অন্য কথা, মিছিল তো কেউ বাড়ির ছাদে করবে না!
মামুন : হুঁ, কিন্তু সরকার নিজেই বলছে_ রাজপথের আন্দোলন বন্ধ করে সংসদে আসুন, আবার নিজেই পুলিশের সহযোগিতায় রাজপথে।
শফিক : তোমরা যে এত হরতাল হরতাল বলছ, টিভি দেখে তো তেমন কোনো বিরাট হরতাল মনে
হলো না।
মামুন : (সশব্দে হাসতে হাসতে) বিটিভির দর্শক, অফিস-বাসা-মগবাজার_ হরতালের তুই বুঝবি কী?
জাহিদ : হরতালে যে মানুষের এত ক্ষতি হয়, তা পূরণ হবে কী দিয়ে?
মামুন : পূরণ হওয়ার দরকার কি? মানুষের ক্ষতি না হলে রাজনীতিবিদদের লাভ হবে কীভাবে?
শফিক : রাজনীতিবিদদের দোষারোপ তোমাদের বাতিকে পরিণত হয়েছে। সব দোষ যেন সরকারের, পুলিশের আর রাজনীতিবিদদের। আর সবাই কচি খোকা, দুগ্ধপোষ্য শিশু।
রাসেল : সত্যিই যদি হরতাল কেউ না চায়, তবে তা বন্ধ করা যাচ্ছে না কেন? জনগণই যদি সব ক্ষমতার উৎস হয়, তাহলে জনগণ চাইলে কেন তা বন্ধ হবে না?
জাহিদ : জনগণের ভোট দেওয়া ছাড়া আর কী ক্ষমতা আছে? সেই ভোটটাও তো তারা ঠিকমতো দিতে পারে না। কোথায় গিয়ে বলবে যে তারা আর হরতাল চায় না?
মামুন : ঠিক বলেছিস। আমরা যে হরতাল আসলেই আর চাই না এ কথা বলার জায়গা কই! আমাদের মুখপাত্র সাংবাদিক ভাইয়েরা নিজেরাই তো আজ যেন উদ্ভ্রান্ত।
রাসেল : তাহলে আমাদের কথা বলবে কে? আমাদের পথ দেখাবে কারা? নেতা ছাড়া মানুষ সংগঠিত হবে কী করে?
জাহিদ : এটা ভালো বলেছিস। ধনতন্ত্রের একটি মৌলিক চাহিদা হলো পুঁজির কেন্দ্রীকরণ। সেটা হিউম্যান ক্যাপিটালও হতে পারে।
শফিক : তুই আবার তোর ওই সমাজতান্ত্রিক প্যাচপ্যাচানি শুরু করলি!
রাসেল : তবে যে যা-ই বলুক, হরতাল হবেই। জনগণ নেতা তৈরি করে তার প্রয়োজনেই। আর নেতাও হরতাল আহ্বান করে তার প্রয়োজনে। নেতার প্রয়োজন মানে দলের প্রয়োজন, দলের প্রয়োজন মানে তার সমর্থকদের প্রয়োজন, সমর্থকদের প্রয়োজন মানে দেশের প্রয়োজন, আর তার মানেই হলো হরতাল মানুষের প্রয়োজনে।
জাহিদ : এই যদি হয়, তবে আমাদের কী হবে?
মামুন : কী আর হবে, রিকশা-বাস না পেলে এখন হেঁটে বাসায় যেতে হবে, ভাড়া যা লাগে লাগুক। বেতনের টাকা আর চোখে দেখতে হবে না, বাড়ি আর গাড়ি ভাড়া দিয়েই সব শেষ।
জাহিদ : কিছু না পেলে এখন হেঁটে মোহাম্মদপুরে যাব কীভাবে!
শফিক : (আকর্ণ হেসে) এখন থেকে পুঁজির কেন্দ্রীকরণ নিয়ে না ভেবে বরং ক্যালরির পুঁজিকরণ নিয়ে ভাবো।
শফিক : (আড়চোখে রাসেলকে দেখে নিয়ে) কিন্তু রিকশাওয়ালারা মনে হয় হরতালকে ঠিক সাপোর্ট করল না।
মামুন : ব্যাপারটা কি তাই? সাপোর্ট কি কেউ করে? ভাংচুরের ভয়ে গাড়ি-বাস নামায় না, দোকানপাট খোলে না। দলগুলো বলুক তো দেখি যে, হরতাল আহ্বান করলাম কিন্তু কেউ যদি সমর্থন না করে তবে তাদের ওপর কোনো জোরজবরদস্তি করা হবে না।
রাসেল : তবে একটা ব্যাপার, হরতাল সমর্থক এবং বিরোধী, মিছিল করল দু'দলই। পুলিশ কেন শুধু সমর্থক দলের মিছিলে লাঠিচার্জ করে আর পিকেটার বলে ধরে নিয়ে যায়! ডাবল স্ট্যান্ডার্ড হয়ে গেল না!
শফিক : হরতালকারীরা তো গাড়ি ভাঙে, দোকানপাট ভাঙে, সরকারি দল তা করে না।
মামুন : পুরো রাস্তা বন্ধ করে মিছিল করে।
শফিক : সেটা অন্য কথা, মিছিল তো কেউ বাড়ির ছাদে করবে না!
মামুন : হুঁ, কিন্তু সরকার নিজেই বলছে_ রাজপথের আন্দোলন বন্ধ করে সংসদে আসুন, আবার নিজেই পুলিশের সহযোগিতায় রাজপথে।
শফিক : তোমরা যে এত হরতাল হরতাল বলছ, টিভি দেখে তো তেমন কোনো বিরাট হরতাল মনে
হলো না।
মামুন : (সশব্দে হাসতে হাসতে) বিটিভির দর্শক, অফিস-বাসা-মগবাজার_ হরতালের তুই বুঝবি কী?
জাহিদ : হরতালে যে মানুষের এত ক্ষতি হয়, তা পূরণ হবে কী দিয়ে?
মামুন : পূরণ হওয়ার দরকার কি? মানুষের ক্ষতি না হলে রাজনীতিবিদদের লাভ হবে কীভাবে?
শফিক : রাজনীতিবিদদের দোষারোপ তোমাদের বাতিকে পরিণত হয়েছে। সব দোষ যেন সরকারের, পুলিশের আর রাজনীতিবিদদের। আর সবাই কচি খোকা, দুগ্ধপোষ্য শিশু।
রাসেল : সত্যিই যদি হরতাল কেউ না চায়, তবে তা বন্ধ করা যাচ্ছে না কেন? জনগণই যদি সব ক্ষমতার উৎস হয়, তাহলে জনগণ চাইলে কেন তা বন্ধ হবে না?
জাহিদ : জনগণের ভোট দেওয়া ছাড়া আর কী ক্ষমতা আছে? সেই ভোটটাও তো তারা ঠিকমতো দিতে পারে না। কোথায় গিয়ে বলবে যে তারা আর হরতাল চায় না?
মামুন : ঠিক বলেছিস। আমরা যে হরতাল আসলেই আর চাই না এ কথা বলার জায়গা কই! আমাদের মুখপাত্র সাংবাদিক ভাইয়েরা নিজেরাই তো আজ যেন উদ্ভ্রান্ত।
রাসেল : তাহলে আমাদের কথা বলবে কে? আমাদের পথ দেখাবে কারা? নেতা ছাড়া মানুষ সংগঠিত হবে কী করে?
জাহিদ : এটা ভালো বলেছিস। ধনতন্ত্রের একটি মৌলিক চাহিদা হলো পুঁজির কেন্দ্রীকরণ। সেটা হিউম্যান ক্যাপিটালও হতে পারে।
শফিক : তুই আবার তোর ওই সমাজতান্ত্রিক প্যাচপ্যাচানি শুরু করলি!
রাসেল : তবে যে যা-ই বলুক, হরতাল হবেই। জনগণ নেতা তৈরি করে তার প্রয়োজনেই। আর নেতাও হরতাল আহ্বান করে তার প্রয়োজনে। নেতার প্রয়োজন মানে দলের প্রয়োজন, দলের প্রয়োজন মানে তার সমর্থকদের প্রয়োজন, সমর্থকদের প্রয়োজন মানে দেশের প্রয়োজন, আর তার মানেই হলো হরতাল মানুষের প্রয়োজনে।
জাহিদ : এই যদি হয়, তবে আমাদের কী হবে?
মামুন : কী আর হবে, রিকশা-বাস না পেলে এখন হেঁটে বাসায় যেতে হবে, ভাড়া যা লাগে লাগুক। বেতনের টাকা আর চোখে দেখতে হবে না, বাড়ি আর গাড়ি ভাড়া দিয়েই সব শেষ।
জাহিদ : কিছু না পেলে এখন হেঁটে মোহাম্মদপুরে যাব কীভাবে!
শফিক : (আকর্ণ হেসে) এখন থেকে পুঁজির কেন্দ্রীকরণ নিয়ে না ভেবে বরং ক্যালরির পুঁজিকরণ নিয়ে ভাবো।
No comments