হরতাল-অবরোধের আগুন বাজারে by হামিদ বিশ্বাস
বিরোধী
জোটের টানা হরতাল-অবরোধে ঢাকা থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন সারা দেশ। ভেঙে পড়েছে
পণ্য পরিবহনব্যবস্থা। অব্যাহত গাড়ি ভাঙচুরের কারণে কমে গেছে সড়ক-মহাসড়কে
যান চলাচল। পরিস্থিতির কারণে রাত ৯টার পর দূরপাল্লার গাড়ি না চালাতে
নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। এমন অবস্থায় সারা দেশে পণ্যবাজারে চলছে অস্থিরতা।
সরবরাহ সমস্যার কারণে দাম বাড়ছে বিভিন্ন পণ্যের। রাজধানীসহ দেশের
পণ্যবাজারে চলা অস্থিরতায় ভুগছেন সাধারণ ক্রেতারা। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে
আছেন নিম্ন আয়ের ক্রেতারা। একদিকে কর্মহীন সময় অন্যদিকে পণ্যের উচ্চমূল্যে
দিশাহারা তারা। হরতাল-অবরোধে পরিবহন ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে পণ্য
পরিবহন হলেও এর প্রভাব পড়ছে দামে। এদিকে পণ্যবাহী ট্রাক ঢাকায় আসতে না
পারায় মজুত কমে আসছে অনেক পণ্যের। ফলে দাম বাড়ছে হু হু করে। বর্তমানে প্রায়
সব পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। বিষয়টি খোদ সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন
অব বাংলাদেশও (টিসিবি) স্বীকার করেছে। টিসিবির হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা
যায়, ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারিতে সব পণ্যের দাম চড়া। সর্বনিম্ন ১ টাকা
থেকে ৫ টাকা বেড়েছে বিভিন্ন পণ্যে। আর খুচরা ও পাইকারি বাজারে এ চিত্র আরও
ভয়াবহ। বাজার ঘুরে দেখা যায়, পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজি দরে, যা
কিছুদিন আগেও ছিল ২৮ থেকে ৩০ টাকা। এক হালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ টাকা।
মাছ বিক্রেতা সুমন বলেন, আতঙ্কে মাছ আসা কমে গেছে। তাই দাম বাড়তি। এছাড়া
প্রায় সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। নাজিরশাইল ও মিনিকেট চালের দাম ৪ টাকা
বেড়ে যথাক্রমে ৫৫ ও ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৪১ টাকার বিআর-২৮ চাল বিক্রি
হচ্ছে ৪৪ টাকায়। এছাড়া গুটি স্বর্ণা চালের দাম ৩ টাকা বেড়ে ৩৫ টাকায় বিক্রি
হচ্ছে। চালের দাম কেন বেড়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে কাওরান বাজারে পাইকারি
চাল বিক্রেতা বাহার মিয়া বলেন, চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ কম। এ কারণে দাম
বেড়েছে। চাল ছাড়াও বেড়েছে মাংসের দাম। প্রতি কেজি ফার্মের মুরগি ১০ টাকা
বেড়ে ১৩৫-১৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। দেশী মুরগির দর কেজিপ্রতি ৩০ টাকা বেড়ে
৩৫০ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। খাসির মাংস ৩০ টাকা বেড়ে ৬০০ টাকা। গরুর মাংসের দর
বেড়ে ২৮০ থেকে ৩৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। কাওরান বাজারের আল্লাহর দান
মাংস বিতানের সোলেমান হক বলেন, অবরোধের কারণে ঢাকার বাইরে থেকে গরু আসতে
সমস্যা হচ্ছে। সে কারণে দাম কিছুটা বেড়েছে। হালিপ্রতি ডিমের দাম ২ টাকা
বেড়ে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খোলা সয়াবিনের দাম প্রতি কেজিতে ২৫ টাকা বেড়ে ১০০ টাকায় করে বিক্রি হচ্ছে। তেল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, মজুত কমে যাওয়ায় কেউ কেউ বেশি দামে বিক্রি করছে। এছাড়া রসুনের দাম ২০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চায়না আদা আগে ১৬০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে হচ্ছে ২০০ টাকায়। বাজারে ঘুরে দেখা যায়, আগে কেজিপ্রতি কাঁচামরিচ ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হলেও অবরোধে মাঝেমধ্যে ৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা যায়। মওসুমি সবজির মধ্যে আলু ১৮ থেকে ২৫, বেগুন ৩০ থেকে ৪৫, কাঁচা পেপে ১৫ থেকে ২০, মিষ্টি কুমড়া ১৫ থেকে ৩০, শশা ৩০ থেকে ৪০, শিম ২০ থেকে ৩৫, মটরশুঁটি ৪০ থেকে ৫০, গাজর ২০ থেকে ৩০, টমেটো ৩৫ থেকে ৫০, প্রতিটি ফুলকপি ২০ থেকে ২৫, বাঁধাকপি ১৫ থেকে ২০, লাউ ৩০ থেকে ৪৫ এবং মুলা ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেজিপ্রতি মসুরের (দেশী উন্নত) ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ ও সাধারণ ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়। মুদি দোকানি বাবুল জানান, অবরোধের আগে ডালের দাম ছিল ১১০ টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ১২৫ টাকা। মজুত করে রাখা যায় এমন পণ্যের দাম বাড়লেও শীতের সবজি এবং কাঁচা পণ্য উৎপাদন স্তরেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে বাজারে সঙ্কট থাকলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক। মমিন উদ্দিন নামের রাজশাহীর একজন কৃষক জানান, ১৮ হাজার ফুলকপির চারা লাগিয়েছিলেন। সবই তার গলার ফাঁস হয়েছে। তিনি জানান, টমেটো বাজারজাতের শুরুতে প্রতি মণ ছিল ১৪০০ টাকা। এখন তা মাত্র ২০০ টাকায় নেমে এসেছে। তাও বিক্রি হচ্ছে না। এছাড়া শীতকালীন সব পণ্য সরবরাহ পরিস্থিতি নাজুক বলে জানান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মনজুর আহমেদ। শফিক গাজী বেপারি। যাত্রাবাড়ী আড়তের একজন পাইকারি ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫টি ফুলকপির ট্রাক আসতো। কিন্তু অবরোধ শুরু হওয়ার পর থেকে তা বন্ধ হয়ে যায়। সে কারণে বাজারে পণ্যসঙ্কট দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে ৮০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে তার। টমেটোর পাইকারি ব্যবসায়ী লাল মিয়া বলেন, অবরোধের কারণে আতঙ্ক। পণ্য আসে না। আবদুল জলিল জানান, চলমান অবরোধে ৮০ ভাগ পণ্য আসা কমে গেছে।
খোলা সয়াবিনের দাম প্রতি কেজিতে ২৫ টাকা বেড়ে ১০০ টাকায় করে বিক্রি হচ্ছে। তেল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, মজুত কমে যাওয়ায় কেউ কেউ বেশি দামে বিক্রি করছে। এছাড়া রসুনের দাম ২০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চায়না আদা আগে ১৬০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে হচ্ছে ২০০ টাকায়। বাজারে ঘুরে দেখা যায়, আগে কেজিপ্রতি কাঁচামরিচ ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হলেও অবরোধে মাঝেমধ্যে ৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা যায়। মওসুমি সবজির মধ্যে আলু ১৮ থেকে ২৫, বেগুন ৩০ থেকে ৪৫, কাঁচা পেপে ১৫ থেকে ২০, মিষ্টি কুমড়া ১৫ থেকে ৩০, শশা ৩০ থেকে ৪০, শিম ২০ থেকে ৩৫, মটরশুঁটি ৪০ থেকে ৫০, গাজর ২০ থেকে ৩০, টমেটো ৩৫ থেকে ৫০, প্রতিটি ফুলকপি ২০ থেকে ২৫, বাঁধাকপি ১৫ থেকে ২০, লাউ ৩০ থেকে ৪৫ এবং মুলা ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেজিপ্রতি মসুরের (দেশী উন্নত) ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ ও সাধারণ ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়। মুদি দোকানি বাবুল জানান, অবরোধের আগে ডালের দাম ছিল ১১০ টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ১২৫ টাকা। মজুত করে রাখা যায় এমন পণ্যের দাম বাড়লেও শীতের সবজি এবং কাঁচা পণ্য উৎপাদন স্তরেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে বাজারে সঙ্কট থাকলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক। মমিন উদ্দিন নামের রাজশাহীর একজন কৃষক জানান, ১৮ হাজার ফুলকপির চারা লাগিয়েছিলেন। সবই তার গলার ফাঁস হয়েছে। তিনি জানান, টমেটো বাজারজাতের শুরুতে প্রতি মণ ছিল ১৪০০ টাকা। এখন তা মাত্র ২০০ টাকায় নেমে এসেছে। তাও বিক্রি হচ্ছে না। এছাড়া শীতকালীন সব পণ্য সরবরাহ পরিস্থিতি নাজুক বলে জানান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মনজুর আহমেদ। শফিক গাজী বেপারি। যাত্রাবাড়ী আড়তের একজন পাইকারি ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫টি ফুলকপির ট্রাক আসতো। কিন্তু অবরোধ শুরু হওয়ার পর থেকে তা বন্ধ হয়ে যায়। সে কারণে বাজারে পণ্যসঙ্কট দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে ৮০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে তার। টমেটোর পাইকারি ব্যবসায়ী লাল মিয়া বলেন, অবরোধের কারণে আতঙ্ক। পণ্য আসে না। আবদুল জলিল জানান, চলমান অবরোধে ৮০ ভাগ পণ্য আসা কমে গেছে।
No comments