নিষিদ্ধ জালে মারা পড়ছে মা–কচ্ছপ by এম জসীম উদ্দীন
(তালতলীর নলবুনিয়া সমুদ্রসৈকতে পিটিয়ে মারা একটি কচ্ছপ। গত বুধবার তোলা ছবি l প্রথম আলো) বরগুনার
তালতলী উপজেলার বঙ্গোপসাগর তীরের সোনাকাটা, আশারচর, নলবুনিয়াচরসহ সংলগ্ন
সৈকতে ডিম দিতে এসে প্রতিনিয়ত মারা পড়েছে মা-কচ্ছপ। চিংড়ি ও অন্যান্য
মাছ ধরার ছোট ফাঁসের অবৈধ জালে আটকা পড়ে এসব কচ্ছপ মারা পড়ছে।
জলপাই রঙের (অলিভ রিডলে) বৃহৎ এসব সামুদ্রিক কচ্ছপ ডিম পাড়ার জন্য দক্ষিণ উপকূলের বিভিন্ন সৈকতে আসে। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) তালিকা অনুযায়ী, এ প্রজাতির কচ্ছপের অবস্থা সংকটাপন্ন। সৈকতে আসার পর নিষিদ্ধ খুঁটিজাল, ভাসাজাল, চিংড়ি ধরার জাল, বেড়জালসহ ছোট ফাঁসের জালে আটকা পড়ে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তালতলীর সখিনা এলাকার একজন জেলে জানান, বেহুন্দি ও ফাঁস জালে আটকা পড়ার পর জেলেরা পিটিয়ে এসব কচ্ছপ মেরে ফেলেন। অনেক সময় তা কিনারে এনে এক-দেড় হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। বিক্রি করতে না পারলে চরে ফেলে রাখেন।
বঙ্গোপসাগরের মোহনার তালতলী উপজেলার আশারচর, নলবুনিয়া এলাকায় শুঁটকিপল্লি গড়ে ওঠায় সংলগ্ন প্রায় ৫০ কিলোমিটার বঙ্গোপসাগর মোহনাজুড়ে এসব নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে শুঁটকি করার জন্য। মাৎস্য বিজ্ঞানীরা জানান, জুলাই থেকে আগস্টে কচ্ছপ ডিম দেয়। মা-কচ্ছপ বালুচরে গর্ত করে ডিম পাড়ে এবং ৪৫ থেকে ৭০ দিন পরে বালুর উত্তাপে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটে। প্রতিটি মা-কচ্ছপ একসঙ্গে ৫০ থেকে ১৮০টি ডিম পাড়ে।
সম্প্রতি সরেজমিনে আশারচর ও নলবুনিয়া বনসংলগ্ন চরে দেখা যায়, মৃত দুটি কচ্ছপ চরে আটকা পড়ে আছে। এর মধ্যে একটি পচে বিকৃত হয়ে গেছে। আরেকটি ঠোঁট ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত নিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
মাছ পরিবহনের কাজে নিয়োজিত একটি ট্রলারের জেলে মামুন জানান, গত জানুয়ারির শেষ দিকে একই এলাকায় চারটি মৃত কচ্ছপ বালুচরে পড়ে থাকতে দেখেছেন তিনি। দুলাল মিয়া নামের এক মৎস্য ব্যবসায়ী জানান, গত ডিসেম্বর মাস থেকে এ পর্যন্ত জালে আটকা পড়ে ও বিভিন্নভাবে কমপক্ষে ৪০টি কচ্ছপের মৃত্যু হয়েছে। আশার চরের একটি মাছ ট্রলারের মাঝি আকরাম গনি বলেন, ‘আমরা ইচ্ছে করে কচ্ছপ মারি না। বড় কচ্ছপ জালে আটকা পড়লে জাল ছিঁড়ে ফেলে। তাই সেগুলো মেরে ফেলি। এসব কচ্ছপের ওজন ৩০ থেকে ৪০ কেজি কিংবা তারও বেশি। কেউ কেউ আবার এগুলো বিক্রির জন্যও পিটিয়ে মেরে ফেলেন।’
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক এ কে এম নওশাদ আলম বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন অনুযায়ী, চিংড়ি ও অন্যান্য জালে টিইডি (টার্টেল এক্সক্লুসিভ) থাকা বাধ্যতামূলক। জালের এই ফাঁকা পকেট (টিইডি) দিয়ে কচ্ছপগুলো নিরাপদে বেরিয়ে যেতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশের বেশির ভাগ জেলে তা ব্যবহার করছেন না বলে এই প্রজাতির কচ্ছপের অস্তিত্ব সংকটাপন্ন হচ্ছে।’
পরিবেশ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কর্মকর্তা সুকুমার বিশ্বাস বলেন, যেসব অঞ্চলকে ইকোলজিক্যাল ক্রিটিক্যাল এরিয়ার (ইসিএ) আওতায় আনা হয়েছে, সেসব অঞ্চলে কচ্ছপ সংরক্ষণের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের কমিটি রয়েছে। বরগুনা এর আওতায় নয়, তাই এখানে এগুলো সংরক্ষণের দায়িত্ব বন বিভাগের।
পটুয়াখালী-বরগুনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মিহির কুমার দো বলেন, ‘সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও সংলগ্ন চরে যেসব কচ্ছপ ডিম পাড়তে আসে, তাদের নিরাপত্তার জন্য আমাদের নিয়মিত টহল অব্যাহত আছে। কেউ যদি এসব কচ্ছপ মারা বা ধরার চেষ্টা করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জলপাই রঙের (অলিভ রিডলে) বৃহৎ এসব সামুদ্রিক কচ্ছপ ডিম পাড়ার জন্য দক্ষিণ উপকূলের বিভিন্ন সৈকতে আসে। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) তালিকা অনুযায়ী, এ প্রজাতির কচ্ছপের অবস্থা সংকটাপন্ন। সৈকতে আসার পর নিষিদ্ধ খুঁটিজাল, ভাসাজাল, চিংড়ি ধরার জাল, বেড়জালসহ ছোট ফাঁসের জালে আটকা পড়ে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তালতলীর সখিনা এলাকার একজন জেলে জানান, বেহুন্দি ও ফাঁস জালে আটকা পড়ার পর জেলেরা পিটিয়ে এসব কচ্ছপ মেরে ফেলেন। অনেক সময় তা কিনারে এনে এক-দেড় হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। বিক্রি করতে না পারলে চরে ফেলে রাখেন।
বঙ্গোপসাগরের মোহনার তালতলী উপজেলার আশারচর, নলবুনিয়া এলাকায় শুঁটকিপল্লি গড়ে ওঠায় সংলগ্ন প্রায় ৫০ কিলোমিটার বঙ্গোপসাগর মোহনাজুড়ে এসব নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে শুঁটকি করার জন্য। মাৎস্য বিজ্ঞানীরা জানান, জুলাই থেকে আগস্টে কচ্ছপ ডিম দেয়। মা-কচ্ছপ বালুচরে গর্ত করে ডিম পাড়ে এবং ৪৫ থেকে ৭০ দিন পরে বালুর উত্তাপে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটে। প্রতিটি মা-কচ্ছপ একসঙ্গে ৫০ থেকে ১৮০টি ডিম পাড়ে।
সম্প্রতি সরেজমিনে আশারচর ও নলবুনিয়া বনসংলগ্ন চরে দেখা যায়, মৃত দুটি কচ্ছপ চরে আটকা পড়ে আছে। এর মধ্যে একটি পচে বিকৃত হয়ে গেছে। আরেকটি ঠোঁট ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত নিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
মাছ পরিবহনের কাজে নিয়োজিত একটি ট্রলারের জেলে মামুন জানান, গত জানুয়ারির শেষ দিকে একই এলাকায় চারটি মৃত কচ্ছপ বালুচরে পড়ে থাকতে দেখেছেন তিনি। দুলাল মিয়া নামের এক মৎস্য ব্যবসায়ী জানান, গত ডিসেম্বর মাস থেকে এ পর্যন্ত জালে আটকা পড়ে ও বিভিন্নভাবে কমপক্ষে ৪০টি কচ্ছপের মৃত্যু হয়েছে। আশার চরের একটি মাছ ট্রলারের মাঝি আকরাম গনি বলেন, ‘আমরা ইচ্ছে করে কচ্ছপ মারি না। বড় কচ্ছপ জালে আটকা পড়লে জাল ছিঁড়ে ফেলে। তাই সেগুলো মেরে ফেলি। এসব কচ্ছপের ওজন ৩০ থেকে ৪০ কেজি কিংবা তারও বেশি। কেউ কেউ আবার এগুলো বিক্রির জন্যও পিটিয়ে মেরে ফেলেন।’
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক এ কে এম নওশাদ আলম বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন অনুযায়ী, চিংড়ি ও অন্যান্য জালে টিইডি (টার্টেল এক্সক্লুসিভ) থাকা বাধ্যতামূলক। জালের এই ফাঁকা পকেট (টিইডি) দিয়ে কচ্ছপগুলো নিরাপদে বেরিয়ে যেতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশের বেশির ভাগ জেলে তা ব্যবহার করছেন না বলে এই প্রজাতির কচ্ছপের অস্তিত্ব সংকটাপন্ন হচ্ছে।’
পরিবেশ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কর্মকর্তা সুকুমার বিশ্বাস বলেন, যেসব অঞ্চলকে ইকোলজিক্যাল ক্রিটিক্যাল এরিয়ার (ইসিএ) আওতায় আনা হয়েছে, সেসব অঞ্চলে কচ্ছপ সংরক্ষণের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের কমিটি রয়েছে। বরগুনা এর আওতায় নয়, তাই এখানে এগুলো সংরক্ষণের দায়িত্ব বন বিভাগের।
পটুয়াখালী-বরগুনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মিহির কুমার দো বলেন, ‘সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও সংলগ্ন চরে যেসব কচ্ছপ ডিম পাড়তে আসে, তাদের নিরাপত্তার জন্য আমাদের নিয়মিত টহল অব্যাহত আছে। কেউ যদি এসব কচ্ছপ মারা বা ধরার চেষ্টা করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
No comments