বীভৎস ছবি হাতে শিশুরা মানববন্ধনে
(শিশুর রক্তাক্ত মুখের ছবি দিয়ে তৈরি ব্যানার শিশুদেরই হাতে ধরিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে সিলেট শিশু একাডেমী। ছবিটি গতকাল সকালে নগরের রিকাবীবাজার এলাকা থেকে তোলা l প্রথম আলো) বীভৎস
ও রক্তাক্ত মুখের ছবি-সংবলিত ব্যানার শিশুদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে মানববন্ধন
করিয়েছে বাংলাদেশ শিশু একাডেমী। ব্যানারের ছবি দেখে কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া
কয়েকজন শিশু ভয়ে আঁতকে ওঠে। আর এভাবেই পৌনে এক ঘণ্টা রাস্তায় দাঁড়িয়ে
মানববন্ধন করেছে শিশুরা। এ নিয়ে অনেক অভিভাবক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া
জানিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে সিলেট নগরের রিকাবীবাজার এলাকায় ওই
মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
দেশব্যাপী চলমান রাজনৈতিক সহিংসতার প্রতিবাদ জানিয়ে বেলা ১১টায় মানববন্ধন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কর্মসূচি আধা ঘণ্টা পর শুরু হয়। কর্মসূচিতে অভিভাবকদের সঙ্গে আড়াই শতাধিক শিশু অংশ নেয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম নির্ধারিত সময়ের অনেক পর দুপুর সোয়া ১২টায় কর্মসূচিস্থলে উপস্থিত হন।
কয়েকজন ক্ষুব্ধ অভিভাবক জানান, শিশুর রক্তাক্ত ও বীভৎস মুখের আলোকচিত্র ব্যবহার করে মানববন্ধনের একাধিক ব্যানার তৈরি করা হয়েছে। এসব ব্যানারে শিশুর রক্তাক্ত মুখ, পেট্রলবোমায় দগ্ধ হওয়া ব্যক্তির বীভৎস শরীর এবং বার্ন ইউনিটে ব্যান্ডেজ লাগানো অবস্থায় চিকিৎসাধীন শিশুর আলোকচিত্র রয়েছে। এসব আলোকচিত্র দেখে অনেক শিশু শিহরিত হয়েছে।
কর্মসূচিতে বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর প্রশিক্ষণার্থীরা ছাড়াও বাগবাড়ি সরকারি শিশু পরিবার, শিশুদের সাংস্কৃতিক সংগঠন পাঠশালা, চারুবাক, চারুপাঠ, মুক্তাক্ষর, শ্রুতি, গ্রিন ডিজেবলসহ কয়েকটি সংগঠনের আড়াই শতাধিক শিশু উপস্থিত ছিল। শিশুদের হাতে ধরা ডিজিটাল ব্যানারে ‘আমাকে মেরো না, প্লিজ!’, ‘প্লিজ স্টপ পেট্রলবোম’, ‘আমি মায়ের কাছে যাব’, ‘আমাকে পুড়িয়ে মারলে কেন, আমার কী অপরাধ’, ‘শিশুহত্যা বন্ধ করো’—জাতীয় স্লোগানের পাশাপাশি বীভৎস সব ছবি ছিল। কিছু ছবিতে অন্য দেশের বাচ্চাদের মুখাবয়ব ছিল বলে কয়েকজন অভিভাবক সন্দেহ পোষণ করেছেন। কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন শিশু একাডেমীর জেলা সংগঠক সাইদুর রহমান ভূইঞা। মানববন্ধনে সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার সুব্রত চক্রবর্তী, শিশু একাডেমীর সাবেক জেলা সংগঠক মাহবুবুজ্জামান চৌধুরী, জেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রাজিয়া বেগম, জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা মনোরঞ্জন দে, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। কর্মসূচি চলাকালে শিশু একাডেমীর সংগীত বিভাগের প্রশিক্ষণার্থীরা ‘প্রতিটি শিশুকে দাও নিশ্চয়তা, যেন সে সমাজে পায় মর্যাদা’ শীর্ষক একটি দলীয়সংগীত পরিবেশন করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, ‘প্রধান অতিথি না আসায় আয়োজকেরা শিশুদের রোদের মধ্যে রাস্তায় প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখে। নির্যাতিত শিশুদের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে ওই শিশুরাই আয়োজকদের দ্বারা নির্যাতন ও কষ্টের শিকার হলো।’ দুজন শিশু বলে, ‘রক্তর ছবি। ডর লাগে।’ এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যানারে বীভৎস ছবির বিষয়টি আমার চোখে পড়েনি। আর মানববন্ধন কর্মসূচিতে তো কিছুটা সময় দাঁড়িয়েই থাকতে হয়।’
বীভৎস ছবি-সংবলিত ব্যানার দিয়ে মানববন্ধন করা প্রসঙ্গে শিশু একাডেমীর জেলা সংগঠক সাইদুর রহমান ভূইঞা প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে শিশুরা রক্তাক্ত হচ্ছে—এটির প্রতিবাদ জানাতেই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে। বাস্তবতা বোঝাতেই ব্যানারে সেসব ছবি রাখা হয়েছে। তবে ছোট বাচ্চাদের হাতে এসব ব্যানার দেওয়া হয়নি, যারা কিছুটা বড়—তাদের হাতেই ব্যানার দেওয়া হয়েছে।’ অন্য দেশের শিশুদের ছবি থাকার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ভুলবশত কাজটি হয়েছে।
তবে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘জাতীয় শিশুনীতি, ২০১১’-তে শিশুর সুরক্ষা হিসেবে শিশুদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার, প্রলোভন বা জোরপূর্বক জড়িত করা যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
শিশুদের দিয়ে এ ধরনের মানববন্ধন করানো কতটা সঠিক—তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিশুকিশোর সংগঠন খেলাঘরের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তাজুল ইসলাম বাঙালি। তিনি বলেন, ‘এটা একেবারেই অনুচিত কাজ। ব্যানারে বীভৎস ছবি দেখে শিশুদের কোমল মনে স্থায়ী একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।’
দেশব্যাপী চলমান রাজনৈতিক সহিংসতার প্রতিবাদ জানিয়ে বেলা ১১টায় মানববন্ধন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কর্মসূচি আধা ঘণ্টা পর শুরু হয়। কর্মসূচিতে অভিভাবকদের সঙ্গে আড়াই শতাধিক শিশু অংশ নেয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম নির্ধারিত সময়ের অনেক পর দুপুর সোয়া ১২টায় কর্মসূচিস্থলে উপস্থিত হন।
কয়েকজন ক্ষুব্ধ অভিভাবক জানান, শিশুর রক্তাক্ত ও বীভৎস মুখের আলোকচিত্র ব্যবহার করে মানববন্ধনের একাধিক ব্যানার তৈরি করা হয়েছে। এসব ব্যানারে শিশুর রক্তাক্ত মুখ, পেট্রলবোমায় দগ্ধ হওয়া ব্যক্তির বীভৎস শরীর এবং বার্ন ইউনিটে ব্যান্ডেজ লাগানো অবস্থায় চিকিৎসাধীন শিশুর আলোকচিত্র রয়েছে। এসব আলোকচিত্র দেখে অনেক শিশু শিহরিত হয়েছে।
কর্মসূচিতে বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর প্রশিক্ষণার্থীরা ছাড়াও বাগবাড়ি সরকারি শিশু পরিবার, শিশুদের সাংস্কৃতিক সংগঠন পাঠশালা, চারুবাক, চারুপাঠ, মুক্তাক্ষর, শ্রুতি, গ্রিন ডিজেবলসহ কয়েকটি সংগঠনের আড়াই শতাধিক শিশু উপস্থিত ছিল। শিশুদের হাতে ধরা ডিজিটাল ব্যানারে ‘আমাকে মেরো না, প্লিজ!’, ‘প্লিজ স্টপ পেট্রলবোম’, ‘আমি মায়ের কাছে যাব’, ‘আমাকে পুড়িয়ে মারলে কেন, আমার কী অপরাধ’, ‘শিশুহত্যা বন্ধ করো’—জাতীয় স্লোগানের পাশাপাশি বীভৎস সব ছবি ছিল। কিছু ছবিতে অন্য দেশের বাচ্চাদের মুখাবয়ব ছিল বলে কয়েকজন অভিভাবক সন্দেহ পোষণ করেছেন। কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন শিশু একাডেমীর জেলা সংগঠক সাইদুর রহমান ভূইঞা। মানববন্ধনে সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার সুব্রত চক্রবর্তী, শিশু একাডেমীর সাবেক জেলা সংগঠক মাহবুবুজ্জামান চৌধুরী, জেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রাজিয়া বেগম, জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা মনোরঞ্জন দে, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। কর্মসূচি চলাকালে শিশু একাডেমীর সংগীত বিভাগের প্রশিক্ষণার্থীরা ‘প্রতিটি শিশুকে দাও নিশ্চয়তা, যেন সে সমাজে পায় মর্যাদা’ শীর্ষক একটি দলীয়সংগীত পরিবেশন করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, ‘প্রধান অতিথি না আসায় আয়োজকেরা শিশুদের রোদের মধ্যে রাস্তায় প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখে। নির্যাতিত শিশুদের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে ওই শিশুরাই আয়োজকদের দ্বারা নির্যাতন ও কষ্টের শিকার হলো।’ দুজন শিশু বলে, ‘রক্তর ছবি। ডর লাগে।’ এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যানারে বীভৎস ছবির বিষয়টি আমার চোখে পড়েনি। আর মানববন্ধন কর্মসূচিতে তো কিছুটা সময় দাঁড়িয়েই থাকতে হয়।’
বীভৎস ছবি-সংবলিত ব্যানার দিয়ে মানববন্ধন করা প্রসঙ্গে শিশু একাডেমীর জেলা সংগঠক সাইদুর রহমান ভূইঞা প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে শিশুরা রক্তাক্ত হচ্ছে—এটির প্রতিবাদ জানাতেই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে। বাস্তবতা বোঝাতেই ব্যানারে সেসব ছবি রাখা হয়েছে। তবে ছোট বাচ্চাদের হাতে এসব ব্যানার দেওয়া হয়নি, যারা কিছুটা বড়—তাদের হাতেই ব্যানার দেওয়া হয়েছে।’ অন্য দেশের শিশুদের ছবি থাকার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ভুলবশত কাজটি হয়েছে।
তবে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘জাতীয় শিশুনীতি, ২০১১’-তে শিশুর সুরক্ষা হিসেবে শিশুদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহার, প্রলোভন বা জোরপূর্বক জড়িত করা যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
শিশুদের দিয়ে এ ধরনের মানববন্ধন করানো কতটা সঠিক—তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিশুকিশোর সংগঠন খেলাঘরের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তাজুল ইসলাম বাঙালি। তিনি বলেন, ‘এটা একেবারেই অনুচিত কাজ। ব্যানারে বীভৎস ছবি দেখে শিশুদের কোমল মনে স্থায়ী একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।’
No comments