প্যারিস চুক্তি নিয়ে খুব আশাবাদী নয় জাতিসংঘ
পেরুর রাজধানী লিমায় চলমান জলবায়ু সম্মেলনে আগামী বছরে প্যারিসে অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে স্বাক্ষরের জন্য একটি চুক্তির খসড়া তৈরি করা হবে। জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে বিভিন্ন দেশের কার্বন নিঃসরণ কমানোর প্রতিশ্রুতি থাকবে তাতে। তবে জাতিসংঘ বলছে, সেই চুক্তি হবে বেশ দুর্বল। জলবায়ু পরিবর্তনের দীর্ঘমেয়াদি প্রচেষ্টার নিছক একটি অংশ হবে এটি। খবর রয়টার্সের। গত বুধবার লিমা সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে রয়টার্স টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাতিসংঘের জলবায়ু-বিষয়ক দপ্তরের প্রধান ক্রিস্টিয়ানা ফিগেরেস বলেন, প্যারিসে অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে একেবারে অলৌকিক কিছু ঘটে যাবে, তা আশা করা ঠিক হবে না। এক বছরে বড় কিছুই ঘটবে না। ২০১০ সালে মেক্সিকোর কানকুন জলবায়ু সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির মাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণ করে। বন্যা, খরা ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ রোধ করতেই এই মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ফিগেরেস বলেন, ‘কোন দেশ কী পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ করতে পারে, এটা আমরা ইতিমধ্যেই জেনে গেছি। সব দেশের সামগ্রিক প্রচেষ্টা তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রির মধ্যে রাখার পথে নিয়ে যেতে পারবে না। প্যারিস চুক্তি নিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে না। সময়ের পথেই আমাদের যেতে হবে।’
২০০৯ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেন জলবায়ু সম্মেলনে একটি চুক্তির চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গিয়েছিল। ফিগেরেস বলছেন, ‘বিষয়টি এমন নয় যে লোকের কাছে গিয়ে বলা, নাও, এবার আমরা জলবায়ু পরিবর্তন জাদু দিয়ে রোধ করে ফেলব।’ তিনি বলেন, তিন প্রধান দূষণকারী চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন আগে থেকে কার্বন নিঃসরণে তাদের পরিকল্পনা ঘোষণা করায় একটি চুক্তির সম্ভাবনা আছে। এসব দেশের দেওয়া প্রতিশ্রুতি যেন কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়, প্যারিসে সে বিষয়ে আরও কঠোর পদেক্ষপ নেওয়ার লক্ষ্য থাকবে। সম্প্রতি জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক আন্তসরকারি প্যানেল (আইপিসিসি) বলেছে, জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করতে হলে ২১০০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের পরিমাণ শূন্যের কোঠায় নামাতে হবে। এর অর্থ হলো, তিন-চতুর্থাংশ জীবাশ্ম জ্বালানি অর্থাৎ খনিজ তেল মাটির নিচেই রাখতে হবে। জলবায়ু সম্মেলনের মধ্যেই বুধবার জাতিসংঘের আবহাওয়াবিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে, ২০১৪ সালটি ছিল সবচেয়ে উষ্ণ বছর। এটিকে একটি দুঃসংবাদ হিসেবেই দেখা হচ্ছে। ১ ডিসেম্বর লিমায় শুরু হওয়া এই সম্মেলন চলবে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
বরাদ্দের হিসাব প্রকাশ: জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক ফ্রেমওয়ার্কের (ইউএনএফসিসিসি) অর্থসংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি জলবায়ুবিষয়ক অর্থের হিসাব তুলে ধরেছে। ইউএনএফসিসিসি বলছে, ২০১১ থেকে ২০১২ সালে বিশ্বব্যাপী এ বিষয়ের বিভিন্ন প্রকল্পে ৬৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হয়েছে। এর ৯৫ শতাংশই ব্যয় হয়েছে কার্বন নিঃসরণ রোধে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে মাত্র ৫ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয়েছে। আর সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে থাকা উন্নয়নশীল দেশগুলো এ-সংক্রান্ত ব্যয়ের ৭১ শতাংশই করেছে নিজস্ব উৎস থেকে।
বরাদ্দের হিসাব প্রকাশ: জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক ফ্রেমওয়ার্কের (ইউএনএফসিসিসি) অর্থসংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি জলবায়ুবিষয়ক অর্থের হিসাব তুলে ধরেছে। ইউএনএফসিসিসি বলছে, ২০১১ থেকে ২০১২ সালে বিশ্বব্যাপী এ বিষয়ের বিভিন্ন প্রকল্পে ৬৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হয়েছে। এর ৯৫ শতাংশই ব্যয় হয়েছে কার্বন নিঃসরণ রোধে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে মাত্র ৫ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয়েছে। আর সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে থাকা উন্নয়নশীল দেশগুলো এ-সংক্রান্ত ব্যয়ের ৭১ শতাংশই করেছে নিজস্ব উৎস থেকে।
No comments