পুলিশ সেজে বাংলাদেশীকে ব্ল্যাকমেইল, অতঃপর...
পুলিশ সেজে কুয়েত প্রবাসী এক বাংলাদেশীকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করে এক বেদুইন। উদ্দেশ্য ছিল কিছু অর্থ হাতিয়ে নেয়া। আর এতে তার সহযোগিতা করে খোদ এক পুলিশ কর্মকর্তা। তবে শেষ রক্ষা হয় নি। ভেস্তে যায় তাদের পরিকল্পনা। ঘটনার শিকার বাংলাদেশী শহিদের এক বন্ধুর বুদ্ধিমত্তায় ফেঁসে গেছে ওই পুলিশ কর্মকর্তা। আর পুলিশ সেজে ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করা ওই বেদুইনকেও অবশেষে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে কুয়েতের অপরাধ তদন্ত বিভাগ। পুলিশ সাজা এবং বাংলাদেশীকে ব্ল্যাকমেইল ও অপহরণের অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। এর আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল অসাধু ওই পুলিশকেও। জিজ্ঞাসাবাদে শহিদকে অপহরণ করে আনা হয়েছিল একথা জানতো না বলে জামিন পেয়েছে সে। আল-আনবা দৈনিকের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে আরব টাইমস অনলাইন। এর আগে খবর প্রকাশিত হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার, পুলিশ সাজতে এক অপরাধীকে সহায়তা, এক বাংলাদেশীকে ব্ল্যাকমেইল এবং ৫০০ কুয়েতি দিনার না দিলে তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর হুমকি দেয়ার অপরাধে ফরওয়ানিয়া পুলিশ স্টেশনে এক পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদিকে পুলিশ সাজা ওই বেদুইন শহিদ গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে সব অভিযোগ প্রাথমিকভাবে অস্বীকার করে। পরে তাদের কথোপকথোনের একটি রেকর্ড শোনানো হলে অপরাধ স্বীকার করে সে। নিরাপত্তা সূত্রগুলো জানিয়েছে, জেলিব আল শুইউখ এলাকার একটি রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছিল শহিদ। এমন সময় পিকআপ গাড়ি চালিয়ে অপরিচিত এক ব্যক্তি তার পাশে থামে। নিজেকে পুলিশ কর্মকর্তা দাবি করে তার পরিচয়পত্র দেখতে চায়। এরপর সে শহিদকে ভয় ভীতি দেখিয়ে বলে যে তাকে পুলিশ খুঁজছে আর ৫০০ কুয়েতি দিনার না দিলে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেবে। শহিদের কাছে অর্থ না থাকায় সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি তাকে জেলিব আল শুইউখ পুলিশ স্টেশনের পরিবর্তে ফারওয়ানিয়া পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যায়। সেখানে শহিদকে এক আসল পুলিশ কর্মকর্তার সামনে হাজির করা হয়। সে শহিদকে বন্ধুদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করার পরামর্শ দেয়। শহিদ ওই পুলিশকে এক বন্ধুর ফোন নম্বর দেয়। তার বন্ধু ওই পুলিশ আর তার সহযোগীকে ৪৫০ দিনার দিতে সম্মত হয়। তারা সাদ আল আবদুল্লাহ এলাকার একটি স্থানে সাক্ষাতেও সম্মত হয়। শহিদের ওই বন্ধু মোবাইলে পুলিশের সঙ্গে হওয়া কথোপকথন রেকর্ড করে রাখে এবং নির্ধারিত স্থানে ঘুষ দিতে যাবার আগে নিরাপত্তা সদস্যদের অবহিত করে। ঘুষ নেবার আগেই ভয় পেয়ে সেখান থেকে ওই বেদুইন পালিয়ে যায়। এরপর শহিদ ও তার বন্ধু জেলিব আল শুইউখ পুলিশ স্টেশনে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করতে যান। কিন্তু সেখানে তাদের প্রত্যাখ্যান করা হয়। পরে তারা একজন আইনজীবীর শরণাপন্ন হন। তিনি আদালতে মামলা দায়ের করেন। নিরাপত্তা সদস্যরা তাদের তদন্তে ফারওয়ানিয়া পুলিশ স্টেশনের সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে পুরো ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হন।
No comments