সমুদ্রপথে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ থেকে ৫৩,০০০ মানুষের পলায়ন
২০১৪
সালে সমুদ্রপথে আদম পাচার ও চোরাচালানের জন্য ব্যবহৃত বোটে করে প্রায় ৫৩
হাজার মানুষ বাংলাদেশ ও মিয়ানমার ছেড়ে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় পাড়ি
জমিয়েছেন। তাদের অধিকাংশই স্থান ও বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা মুসলমান। বোটগুলোর
অধিকাংশই জরাজীর্ণ। যাত্রাপথে সলিলসমাধি হয়েছে ৫৪০ জনের। উদ্বেগজনক এ
পরিসংখ্যান দিয়েছে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)। রোহিঙ্গা
মুসলমানরা মিয়ানমারের সাম্প্রদায়িক সহিংসতা এড়াতে ও বাংলাদেশে অনিশ্চিত
ভবিষ্যতের কথা ভেবে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় পালাচ্ছেন। বাংলাদেশীরাও আরও
উন্নত ভবিষ্যতের প্রত্যাশায় একই পথ ধরছেন। ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়াতেও
পাড়ি জমাচ্ছে অনেকেই। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। এর মধ্যে প্রায় ৫০
হাজার মানুষ বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা থেকে পালিয়েছেন। বাকি ৩
হাজার মানুষ মিয়ানমারের সিটওয়ে এলাকা ছেড়ে যান। এর মধ্যে শুধু গত ২ মাসেই
২১,০০০ মানুষ সমুদ্রপথে দেশ দুটিতে পাড়ি জমান। ২০১৩ সালের অক্টোবর ও
নভেম্বর মাসের তুলনায় এ হার শতকরা ৩৭ শতাংশ বেশি। এদিকে যে বোটগুলোতে তারা
সমুদ্র পাড়ি দেন, সেগুলোর অবস্থাও জরাজীর্ণ। একই সঙ্গে দীর্ঘ যাত্রাপথে
প্রয়োজনীয় পানি ও খাবারের তীব্র সংকটতো রয়েছেই। উপকূল থেকে অতিরিক্ত আরোহী
বোটে ওঠানোর জন্য কোন কোন ক্ষেত্রে আদম পাচারকারীরা দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে।
তাতে কয়েক সপ্তাহও পার হয়ে যায়। সে কারণে প্রচ- দুর্ভোগ পোহাতে হয় বোটে
থাকা আরোহীদের। অনেকেই প্রচ- অসুস্থ হয়ে পড়ে। ইউএনএইচসিআর বলছে, ২০১৪ সালে
বঙ্গোপসাগর ও আন্দামান সমুদ্রপথে পাড়ি দিতে গিয়ে বোটডুবির কবলে পড়ে ৫৪০
আরোহী প্রাণ হারিয়েছেন। ২০১২ সালের জানুয়ারি মাস থেকে এ পর্যন্ত
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা থেকে ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ সমুদ্রপথে
মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে পালিয়েছেন। আদম পাচারকারীরা প্রত্যেকের জন্য
মাথাপিছু ১,৬০০ ডলার বা বাংলাদেশী মুদ্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার টাকা নিয়ে থাকে।
এদিকে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর পর শ’ শ’ মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে
দেশ দুটির কর্তৃপক্ষ। গ্রেপ্তারকৃতদের কেউ কেউ শরণার্থীর মর্যাদা দাবি
করছে এবং কাউকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
No comments