‘আগে রাজনীতিবিদরা উচ্চ আদালতে বিচার পেতেন, এখন উচ্চ ও নিম্ন আদালতে তফাৎ নেই’
দুই
ঘণ্টার আলোচনায় প্রশ্নটি এসেছে বারবারই। বিচার বিভাগ পৃথকীকরণে জনগণের কি
লাভ হলো? হতাশাজনক উত্তরই দিলেন বেশিরভাগ আলোচক। পৃথকীকরণের সাত বছর পরও
উল্লেখযোগ্য কোন পরিবর্তন খুঁজে পাননি তারা। আইনের শাসন আর গণতন্ত্রের
অনুপস্থিতির কথাও উঠে এসেছে আলোচনায়। বৃটিশ আমলের আইনে আমূল পরিবর্তনের
তাগিদ দিয়েছেন আলোচকরা। জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘পৃথকীকরণের সাত
বছর’ শীর্ষক আলোচনার আয়োজন করে হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠন।
সাপ্তাহিক সম্পাদক গোলাম মোতুর্জার সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উত্থাপন করেন
সংবিধান ও আইন বিশ্লেষক মিজানুর রহমান খান। মূল প্রবন্ধে মিজানুর রহমান খান
বলেন, বিচার বিভাগ পৃথককরণ নীতি থেকে ক্ষমতাসীন সরকারি দল ধীরে ধীরে পিছু
হটছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। ১৯৯৯ সালে দেয়া মাসদার হোসেন মামলার রায়ের ১২
দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নের বর্তমান অবস্থা বিশ্লেষণ করলে এ সত্যের প্রমাণ
পাওয়া যাবে। তবে পৃথককরণের ফলে কি সুফল মিলেছে সে বিষয়ে একটি গবেষণা হওয়া
প্রয়োজন। তিনি বলেন, মোবাইল কোর্টের নামে একশ’র বেশি আইনের অধীনে বিচার
বিভাগ ভাগ করে দেয়া হয়েছে। অথচ এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সংসদ বা তার বাইরে
কোন আলোচনা হয়নি। সবটাই করা হচ্ছে গোপনে। আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেন, পাকিস্তান আমলে
বেশিরভাগ মামলায় রাজনীতিবিদরা নিম্ন আদালতে ন্যায় বিচার না পেলেও উচ্চ
আদালতে বিচার পেতেন। এখন নিম্ন ও উচ্চ আদালতে কোন তফাৎ নেই। আলোচনায় স্বাগত
বক্তব্য রাখেন হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এডভোকেট শফিকুর রহমান।
আলোচনায় অংশ নেন মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান বিচারপতি আমিরুল কবির
চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর সালেহউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন
আহমেদ, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার ইকতেদার আহমেদ, আইনজীবী হাসান
তারিক চৌধুরী, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম, সাবেক জেলা জজ একেএম
ইশতিয়াক হোসেন।
No comments