সরকারকে সঠিক পথে চলতে সাহায্য করে প্রতিবাদ by মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন
দেশের রাজনীতিতে এক রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সব কিছুতে দেখা যাচ্ছে এক সর্বগ্রাসী সঙ্কট। সঙ্কট উত্তরণে সরকার কারো কোনো কথাই আমলে নিচ্ছে না। বরং প্রতিদিন সরকারের প থেকে দেয়া হচ্ছে হতাশাজনক বক্তব্য। ২৫ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন-‘খালেদা জিয়াকেও ছাড় দেয়া হবে না। তার এক দিন পর মন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেনÑ ‘খালেদা জিয়ার মামলা কিছুতেই বিলম্ব করা যাবে না। অর্থাৎ দ্রুত খালেদা জিয়াকে জেলে নিতে হবে। খালেদা জিয়াকে জেলে নেয়া রাজনৈতিক সঙ্কটের সমাধান নয় বরং এটি হবে জ্বলন্ত আগুনে পেট্রল ঢেলে দেয়ার শামিল। মইন-ফখরুদ্দীনের জরুরি সরকারও খালেদা-হাসিনাকে জেলে নিয়েছিল। কিন্তু পরে যে তাদের ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচির’ মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিলÑ এটি সবারই জানা। কাজেই সরকারের বোধোদয় হতে হবে, খালেদা জিয়াকে জেলে নেয়ার মতো বিপজ্জনক রাজনৈতিক খেলা বন্ধ করতে হবে; বেরিয়ে আসতে হবে দোষারোপের রাজনীতি থেকেও।
একে অন্যকে দোষারোপের বৃত্ত থেকে রাজনৈতিক নেতানেত্রীরা কিছুতেই বেরিয়ে আসতে পারছেন না। বরং এতে যোগ হচ্ছে নতুুন নতুন বিতর্ক। সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিরা বলছেন- ‘নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি ভুল করেছে, বিএনপি পচে গেছে’, ‘বিএনপিকে আমরা ফরমালিন দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছি ইত্যাদি।’ তাদের কাছে বিনীত প্রশ্ন, বিএনপি না হয় পচেছে? কিন্তু আওয়ামী লীগ? ৫ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচন করে আওয়ামী লীগও কি ঠিক আছে? পচন তো আওয়ামী লীগেও ধরেছে। পচন ধরেছে বলেই তো আওয়ামী লীগার আওয়ামী লীগারকে মারছে। আওয়ামী লীগের একজন আরেকজনকে নৃশংসভাবে মেরে পেট কেটে, ইট বেঁধে লাশ নদীতে ফেলে দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, নিষ্ঠুরভাবে লাশ আগুন দিয়েও পুড়িয়ে দিচ্ছে। এসব কি কোনো সুস্থ রাজনৈতিক দলের কাজ? এমন নৃশংস রাজনীতির পৃষ্ঠপোষকতা করে রাষ্ট্র কী পাবে?
আসলে ৫ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনের পর বাংলাদেশ নামে রাষ্ট্রটির কাঠামোতে পচন শুরু হয়েছে। সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু ও পপাতহীন নির্বাচন না হলে, দেশে সুস্থ রাজনৈতিক ধারা ফিরে আসবে না।
আমরা দেশে সুস্থ রাজনীতি চাই, আমরা চাই আওয়ামী লীগ-বিএনপি পচনের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসুক। বেরিয়ে আসুক বাংলাদেশও। রাজনীতিতে কেউ কারো শত্র“ নয়, প্রতিপ মাত্র; এ অনিবার্য বাস্তবতা মেনেই রাজনীতি করতে হয়। বিএনপি যদি পচে যায় সেটি আওয়ামী লীগের জন্য হিতকর নয়। অনুরূপ আওয়ামী লীগও যদি পচে যায় সেটি বিএনপির জন্যও মঙ্গলজনক নয়। এ দু’টি দল বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারসাম্য। ৫ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনের পর বাংলাদেশের রাজনীতির ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। এই ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে সব দলের অংশগ্রহণে দেশে দ্রুত একটি নির্বাচনের প্রয়োজন। এ অনিবার্য বাস্তবতা বর্তমান শাসক দলকে মেনে নিতে হবে। নয়তো রাষ্ট্র সঠিকভাবে চলবে না, গুম-খুনও বন্ধ হবে না; বন্ধ হবে না রাজনীতির পচনও।
বাস্তবতা হলো বিএনপিকে ছাড়া আওয়ামী লীগ যেমন অচল, তেমনি আওয়ামী লীগকে ছাড়াও বিএনপি অচল। এ অনিবার্য সত্য উভয় দলকেই মানতে হবে, তা হলেই দেশে সঙ্ঘাত বন্ধ হবে; নয়তো কোনো নেতানেত্রীর পইে দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না।
সরকারের কোনো মত ও সিদ্ধান্ত পছন্দ না হলে প্রতিবাদ অবশ্যই হবে এবং সে প্রতিবাদ জরুরিও। এটি সরকারকে সঠিক পথে চলতে সাহায্য করে। কিন্তু যৌক্তিক প্রতিবাদ সহ্য করার মতো ক্ষমতা বর্তমান মতাসীন দলে দেখা যায় না। তারা বিরোধী দলকে রাজপথে দাঁড়াতে দিতেও রাজি নয়। সরকারের অব্যাহত দমন নীতির কারণে প্রধান বিরোধী দল রাজপথ থেকে বিতাড়িত হয়ে ঘরোয়া সভা-সমাবেশের পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে, কিন্তু সেখানেও সরকারের বাধা। কিছু দিন আগে বেগম খালেদা জিয়ার দু’টি ঘরোয়া সমাবেশ সরকার প করে দিয়েছে। প্রধান বিরোধী দল যদি রাজনীতি করার সুযোগ না পায়, তা হলে দেশ কিভাবে চলবে? কিভাবে রাজনীতি ঠিক হবে; কিভাবে দেশে গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে?
সরকারের অব্যাহত দমন-পীড়নের ফল দেশ এখন ভোগ করছে, ভোগ করছে মতাসীন দলও। তাদের দলের অন্তর্কোন্দল ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। এটি নিয়ন্ত্রণ করার শক্তিও যেন তারা হারিয়ে ফেলেছে। এভাবে চলতে থাকলে নিজেরা মারামারি করেই আওয়ামী লীগ রসাতলে যাবে। কাজেই পরিত্রাণ চাইলে রাজনীতিকে সঠিক পথে চলতে দিতে হবে। বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধ করতে হবে, তাদের রাজনৈতিক কর্মকা করার সুযোগ দিতে হবে, রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানের বাস্তবধর্মী উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে, দেশের তি আর না বাড়িয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ তৈরি করতে দ্রুত সংলাপে বসার ব্যবস্থা করতে হবে।
বাংলাদেশ ঐক্যের দিক থেকে পৃথিবীতে একটা নিদর্শন ছিল। কিন্তু এটি ভেঙে চুরমার হয়েছে। এখন জাতি হিসেবে সব দিক দিয়ে আমরা বিভক্ত। গণতান্ত্রিক শাসনের একটি সঙ্কটময় সময় এখন বাংলাদেশ অতিক্রম করছে। এই সঙ্কট এখন প্রান্তসীমায় এসে পৌঁছেছে। দেশে এক অশান্ত ও বেদনাবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের বিকল্প নেই, কেননা যে কারণেই হোক, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ব্যাহত হলে দেশ ও জনগণ যে অপূরণীয় তির সম্মুখীন হবে এটি বলাই বাহুল্য।
অন্য সব দাবি নিয়ে বিতর্ক থাকলেও বিরোধী দলের নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি একান্তই গণতান্ত্রিক দাবি। এই দাবির সাথে সর্বস্তরের মানুষের সম্পৃক্ততা রয়েছে। মানুষ চায় সব দলের অংশগ্রহণে দেশে দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। কিন্তু এর কোনো বাস্তব লণ দৃশ্যমান হচ্ছে না। তাই মানুষের শঙ্কাও দূর হচ্ছে না। আস্থা ফিরে পাচ্ছে না ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা। ব্যবসায় ও বিনিয়োগে নেমে এসেছে স্থবিরতা। তবে আশার কথা হলো, বিরোধী দল সরকারকে সময় দিচ্ছে; তারা রাজনৈতিক কর্মসূচি দেয়ার েেত্র দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিচ্ছে। এর ফলে তারা রাজনৈতিকভাবেও এগিয়ে যাচ্ছে। পান্তরে একতরফা নির্বাচন করে মতাসীন দল রাজনীতিতে পিছিয়ে পড়েছে। গুম-খুন ও অপহরণের দায় তাদের নিতে হচ্ছে।
সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব যেকোনো নাগরিকের জীবনের নিরাপত্তা দেয়া। কোনো নাগরিক গুম হলে, খুন হলে দোষীদের গ্রেফতার করা এবং বিচারে সোপর্দ করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সরকার যদি তা করতে অপারগ বা ব্যর্থ হয় তা হলে বুঝতে হবে সরকারের লোক তা করেছে বলে বিচার করতে অনিচ্ছুক। নয়তো সরকার অপরাধী শনাক্ত করতে বা অপরাধটির বিচার করতে অম বা অসমর্থ। যদি এর যে কোনোটি সত্য হয় তা হলে সেই সরকারের মতায় থাকার নৈতিক অধিকার থাকে কোথায়? মানুষের নিরাপত্তা ও জীবন যদি রাষ্ট্র কেড়ে নেয় তা হলে সে রাষ্ট্রের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসন থাকে কোথায়? রাষ্ট্রের মালিক জনগণ, রাষ্ট্রের ভিত্তিও জনগণ। জনগণকে সার্বণিক আতঙ্কে রেখে রাষ্ট্র সঠিকভাবে চলতে পারে না। জনগণের নিরাপত্তা ও সব মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের এবং এ শপথ নিয়েই তারা মতাসীন হন। মতায় এসে কোনো খুনকে সামান্যতম পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করার কোনো অধিকার সরকারের নেই।
belayet_1@yahoo.com
একে অন্যকে দোষারোপের বৃত্ত থেকে রাজনৈতিক নেতানেত্রীরা কিছুতেই বেরিয়ে আসতে পারছেন না। বরং এতে যোগ হচ্ছে নতুুন নতুন বিতর্ক। সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিরা বলছেন- ‘নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি ভুল করেছে, বিএনপি পচে গেছে’, ‘বিএনপিকে আমরা ফরমালিন দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছি ইত্যাদি।’ তাদের কাছে বিনীত প্রশ্ন, বিএনপি না হয় পচেছে? কিন্তু আওয়ামী লীগ? ৫ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচন করে আওয়ামী লীগও কি ঠিক আছে? পচন তো আওয়ামী লীগেও ধরেছে। পচন ধরেছে বলেই তো আওয়ামী লীগার আওয়ামী লীগারকে মারছে। আওয়ামী লীগের একজন আরেকজনকে নৃশংসভাবে মেরে পেট কেটে, ইট বেঁধে লাশ নদীতে ফেলে দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, নিষ্ঠুরভাবে লাশ আগুন দিয়েও পুড়িয়ে দিচ্ছে। এসব কি কোনো সুস্থ রাজনৈতিক দলের কাজ? এমন নৃশংস রাজনীতির পৃষ্ঠপোষকতা করে রাষ্ট্র কী পাবে?
আসলে ৫ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনের পর বাংলাদেশ নামে রাষ্ট্রটির কাঠামোতে পচন শুরু হয়েছে। সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু ও পপাতহীন নির্বাচন না হলে, দেশে সুস্থ রাজনৈতিক ধারা ফিরে আসবে না।
আমরা দেশে সুস্থ রাজনীতি চাই, আমরা চাই আওয়ামী লীগ-বিএনপি পচনের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসুক। বেরিয়ে আসুক বাংলাদেশও। রাজনীতিতে কেউ কারো শত্র“ নয়, প্রতিপ মাত্র; এ অনিবার্য বাস্তবতা মেনেই রাজনীতি করতে হয়। বিএনপি যদি পচে যায় সেটি আওয়ামী লীগের জন্য হিতকর নয়। অনুরূপ আওয়ামী লীগও যদি পচে যায় সেটি বিএনপির জন্যও মঙ্গলজনক নয়। এ দু’টি দল বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারসাম্য। ৫ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনের পর বাংলাদেশের রাজনীতির ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। এই ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে সব দলের অংশগ্রহণে দেশে দ্রুত একটি নির্বাচনের প্রয়োজন। এ অনিবার্য বাস্তবতা বর্তমান শাসক দলকে মেনে নিতে হবে। নয়তো রাষ্ট্র সঠিকভাবে চলবে না, গুম-খুনও বন্ধ হবে না; বন্ধ হবে না রাজনীতির পচনও।
বাস্তবতা হলো বিএনপিকে ছাড়া আওয়ামী লীগ যেমন অচল, তেমনি আওয়ামী লীগকে ছাড়াও বিএনপি অচল। এ অনিবার্য সত্য উভয় দলকেই মানতে হবে, তা হলেই দেশে সঙ্ঘাত বন্ধ হবে; নয়তো কোনো নেতানেত্রীর পইে দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না।
সরকারের কোনো মত ও সিদ্ধান্ত পছন্দ না হলে প্রতিবাদ অবশ্যই হবে এবং সে প্রতিবাদ জরুরিও। এটি সরকারকে সঠিক পথে চলতে সাহায্য করে। কিন্তু যৌক্তিক প্রতিবাদ সহ্য করার মতো ক্ষমতা বর্তমান মতাসীন দলে দেখা যায় না। তারা বিরোধী দলকে রাজপথে দাঁড়াতে দিতেও রাজি নয়। সরকারের অব্যাহত দমন নীতির কারণে প্রধান বিরোধী দল রাজপথ থেকে বিতাড়িত হয়ে ঘরোয়া সভা-সমাবেশের পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে, কিন্তু সেখানেও সরকারের বাধা। কিছু দিন আগে বেগম খালেদা জিয়ার দু’টি ঘরোয়া সমাবেশ সরকার প করে দিয়েছে। প্রধান বিরোধী দল যদি রাজনীতি করার সুযোগ না পায়, তা হলে দেশ কিভাবে চলবে? কিভাবে রাজনীতি ঠিক হবে; কিভাবে দেশে গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে?
সরকারের অব্যাহত দমন-পীড়নের ফল দেশ এখন ভোগ করছে, ভোগ করছে মতাসীন দলও। তাদের দলের অন্তর্কোন্দল ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। এটি নিয়ন্ত্রণ করার শক্তিও যেন তারা হারিয়ে ফেলেছে। এভাবে চলতে থাকলে নিজেরা মারামারি করেই আওয়ামী লীগ রসাতলে যাবে। কাজেই পরিত্রাণ চাইলে রাজনীতিকে সঠিক পথে চলতে দিতে হবে। বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধ করতে হবে, তাদের রাজনৈতিক কর্মকা করার সুযোগ দিতে হবে, রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানের বাস্তবধর্মী উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে, দেশের তি আর না বাড়িয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ তৈরি করতে দ্রুত সংলাপে বসার ব্যবস্থা করতে হবে।
বাংলাদেশ ঐক্যের দিক থেকে পৃথিবীতে একটা নিদর্শন ছিল। কিন্তু এটি ভেঙে চুরমার হয়েছে। এখন জাতি হিসেবে সব দিক দিয়ে আমরা বিভক্ত। গণতান্ত্রিক শাসনের একটি সঙ্কটময় সময় এখন বাংলাদেশ অতিক্রম করছে। এই সঙ্কট এখন প্রান্তসীমায় এসে পৌঁছেছে। দেশে এক অশান্ত ও বেদনাবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের বিকল্প নেই, কেননা যে কারণেই হোক, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ব্যাহত হলে দেশ ও জনগণ যে অপূরণীয় তির সম্মুখীন হবে এটি বলাই বাহুল্য।
অন্য সব দাবি নিয়ে বিতর্ক থাকলেও বিরোধী দলের নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি একান্তই গণতান্ত্রিক দাবি। এই দাবির সাথে সর্বস্তরের মানুষের সম্পৃক্ততা রয়েছে। মানুষ চায় সব দলের অংশগ্রহণে দেশে দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। কিন্তু এর কোনো বাস্তব লণ দৃশ্যমান হচ্ছে না। তাই মানুষের শঙ্কাও দূর হচ্ছে না। আস্থা ফিরে পাচ্ছে না ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা। ব্যবসায় ও বিনিয়োগে নেমে এসেছে স্থবিরতা। তবে আশার কথা হলো, বিরোধী দল সরকারকে সময় দিচ্ছে; তারা রাজনৈতিক কর্মসূচি দেয়ার েেত্র দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিচ্ছে। এর ফলে তারা রাজনৈতিকভাবেও এগিয়ে যাচ্ছে। পান্তরে একতরফা নির্বাচন করে মতাসীন দল রাজনীতিতে পিছিয়ে পড়েছে। গুম-খুন ও অপহরণের দায় তাদের নিতে হচ্ছে।
সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব যেকোনো নাগরিকের জীবনের নিরাপত্তা দেয়া। কোনো নাগরিক গুম হলে, খুন হলে দোষীদের গ্রেফতার করা এবং বিচারে সোপর্দ করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সরকার যদি তা করতে অপারগ বা ব্যর্থ হয় তা হলে বুঝতে হবে সরকারের লোক তা করেছে বলে বিচার করতে অনিচ্ছুক। নয়তো সরকার অপরাধী শনাক্ত করতে বা অপরাধটির বিচার করতে অম বা অসমর্থ। যদি এর যে কোনোটি সত্য হয় তা হলে সেই সরকারের মতায় থাকার নৈতিক অধিকার থাকে কোথায়? মানুষের নিরাপত্তা ও জীবন যদি রাষ্ট্র কেড়ে নেয় তা হলে সে রাষ্ট্রের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসন থাকে কোথায়? রাষ্ট্রের মালিক জনগণ, রাষ্ট্রের ভিত্তিও জনগণ। জনগণকে সার্বণিক আতঙ্কে রেখে রাষ্ট্র সঠিকভাবে চলতে পারে না। জনগণের নিরাপত্তা ও সব মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের এবং এ শপথ নিয়েই তারা মতাসীন হন। মতায় এসে কোনো খুনকে সামান্যতম পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করার কোনো অধিকার সরকারের নেই।
belayet_1@yahoo.com
No comments