ড. ইউনূসের পারিবারিক প্রতিষ্ঠানকে গ্রামীণ ব্যাংকের ঋণ- অবৈধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক by সৈয়দ সামসুজ্জামান নীপু
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পারিবারিক প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়ে গ্রামীণ ব্যাংক একটি ‘অবৈধ’ কাজ করেছে বলে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। শুধু ঋণই দেয়াই হয়নি, বোর্ড সভায় অনুমোদন করে ঋণের সুদের হারও ১৬ শতাংশের জায়গায় ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। পরে ঋণের অর্থও মওকুফ করে দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এখন এই মওকুফকৃত অর্থ আদায়ের বিষয়ে গ্রামীণ ব্যাংককে সরকার নির্দেশনা প্রদান করতে পারে। গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ‘প্যাকেজেস কর্পোরেশন’ নামক প্রতিষ্ঠানকে এই ঋণ দেয়া হয়েছিল। এটি নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ইউনূসের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান বলে বিবেচিত। প্রতিষ্ঠানটি এখনো বিদ্যমান রয়েছে। গত ২০ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এই মতামত অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ প্রণীত মন্ত্রিসভা বৈঠকের প্রতিবেদনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মোট পাঁচটি বিষয়ে মতামত চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পত্র দেয়া হয়। এ বিষয়গুলো ছিলÑ বিধিবহির্ভূতভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা বিষয়ে বিশদ তথ্যাদি। অবৈধভাবে সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোয় তহবিল স্থানান্তর। বিনা অনুমতিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিদেশ সফর ও পুরস্কার-সম্মানী-রয়্যালটি গ্রহণ। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অতিরিক্ত সময়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বেতনভাতা ব্যতীত অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ এবং স্বল্পসুদে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ড. ইউনূসের পারিবারিক প্রতিষ্ঠানের জন্য ঋণ গ্রহণসহ সব আর্থিক অনিয়ম ও প্রশাসনিক অনিয়মসংক্রান্ত তথ্যাদি।
এর পর ব্যাংকিং বিভাগ থেকে তিনটি সম্পূরক প্রশ্ন বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পাঠিয়ে এ বিষয়ে খোঁজ নেয়ার অনুরোধ করা হয়। এই বিষয়গুলো হলোÑ গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠাকরণ এবং অবৈধভাবে এসব প্রতিষ্ঠানে তহবিল স্থানান্তরের পর প্রতিষ্ঠানগুলো এখন কী অবস্থায় রয়েছে? এসব প্রতিষ্ঠানে গ্রামীণ ব্যাংকের যে বিনিয়োগ আছে বা যে ঋণের গ্যারান্টি দেয়া হয়েছে তা কি পরিশোধ হয়েছে? পরিশোধ না হলে আদায়ের জন্য কী ব্যবস্থা নেয়া যায় এবং প্যাকেজেস কর্পোরেশন নামক প্রতিষ্ঠানটি কি আছে, না গুটিয়ে ফেলা হয়েছে?
বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ তিনটি বিষয়ের বিশদ তথ্য পাঠানোর জন্য গ্রামীণ ব্যাংকের কাছে চলতি বছরের মাঝামাঝিতে একটি চিঠি পাঠানো হয়। এই চিঠির জবাবে গ্রামীণ ব্যাংক যে বক্তব্য দিয়েছে তার ওপর মতামত দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে একটি সারসংক্ষেপ গত সপ্তাহে ব্যাংকিং বিভাগের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয় বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
সূত্র জানায়, স্বল্পসুদে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ড. ইউনূসের পারিবারিক প্রতিষ্ঠানের জন্য ঋণ গ্রহণ-বিষয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়েছেÑ গ্রামীণ ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল থেকে বা গ্রাহকদের আমানতের টাকা থেকে প্যাকেজেস কর্পোরেশনকে সরাসরি কোনো অর্থ ঋণ হিসেবে প্রদান করা হয়নি। তবে দাতাদের অর্থায়নে গঠিত ‘সোস্যাল ভেঞ্চার কেপিটাল ফান্ড’ (এসভিসিএফ) তহবিল থেকে দাতাদের সম্মতিতে প্যাকেজেস কর্পোরেশনকে ঋণ দেয়া হয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালকমণ্ডলীর ৭৬তম সভায় প্যাকেজেস কর্পোরেশনকে শুরু থেকে ২০০৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মূলধন ঋণ ও চলতি ঋণের সুদের হার ১০, ১২, ও ১৬ শতাংশের পরিবর্তে ৫ শতাংশে পুনঃনির্ধারণ করে হিসাব নিষ্পত্তি করার অনুমোদন দেয়া হয়। গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ থেকে আরো বলা হয়েছে, ‘বোর্ড সভার সিদ্ধান্তের আলোকে প্যাকেজেস কর্পোরেশনের মূলধন ঋণ ও চলতি ঋণের সুদের হার পরিবর্তিত হারে ধরে প্রতিষ্ঠানটির নিকট সাত লাখ ২২ হাজার ১৬৭ টাকা পাওনা নির্ধারণ করা হয়। এই পাওনা ২০০৬ সালের ১৭ এপ্রিল চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করে দেয়া হয়।’ গ্রামীণ ব্যাংকের বক্তব্যে একে একটি ‘নিষ্পত্তিকৃত’ বিষয় হিসেবে উল্লেখ করে মওকুফকৃত অর্থ পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নেয়া যথাযথ হবে কি না সে ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। এরপর বলা হয়েছে, প্যাকেজেস কর্পোরেশন নামে প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব এখনো বিদ্যমান রয়েছে।
গ্রামীণ ব্যাংকের এই ব্যাখ্যা মানতে নারাজ বাংলাদেশ ব্যাংক। গ্রামীণ ব্যাংকের এই কর্মকাণ্ডকে অবৈধ হিসেবে উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতামতে বলা হয়েছে, ‘‘আমানতকারীদের স্বার্থের পরিপন্থী না হলেও গ্রামীণ ব্যাংক দাতাদের অর্থায়নে গঠিত ‘এসভিসিএফ’ তহবিল হতে প্যাকেজেস কর্পোরেশনের অনুকূলে স্টাডিজ, ইনোভেশন, ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড এক্সপেরিমেন্টেশন (এসআইডিই) প্রকল্পের উদ্দেশ্যের বাইরে অবৈধভাবে ঋণ প্রদান করে ব্যাংকের স্বার্থ ক্ষুন্ন করেছে। তাই এসভিএসএফ তহবিল অদ্যাবধি গ্রামীণ ব্যাংকে বিদ্যমান থাকলে প্যাকেজেস কর্পোরেশনকে উক্ত ঋণের মওকুফকৃত আসল পরিশোধে উদ্যোগী হওয়ার ক্ষেত্রে গ্রামীণ ব্যাংক এই প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করতে পারে।’’ বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে অর্থ আদায়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেয়ার জন্য সরকারকে অনুরোধও করা হয়েছে।
ব্যাংকিং বিভাগের এক কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে বলেছেন, সরকারের নির্দেশ পাওয়া গেলে এই অর্থ আদায়ের জন্য শিগিগিরই গ্রামীণ ব্যাংককে নির্দেশ প্রদান করা হবে। আর এই অনিয়মের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
সূত্র জানায়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ প্রণীত মন্ত্রিসভা বৈঠকের প্রতিবেদনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মোট পাঁচটি বিষয়ে মতামত চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পত্র দেয়া হয়। এ বিষয়গুলো ছিলÑ বিধিবহির্ভূতভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা বিষয়ে বিশদ তথ্যাদি। অবৈধভাবে সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোয় তহবিল স্থানান্তর। বিনা অনুমতিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিদেশ সফর ও পুরস্কার-সম্মানী-রয়্যালটি গ্রহণ। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অতিরিক্ত সময়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বেতনভাতা ব্যতীত অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ এবং স্বল্পসুদে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ড. ইউনূসের পারিবারিক প্রতিষ্ঠানের জন্য ঋণ গ্রহণসহ সব আর্থিক অনিয়ম ও প্রশাসনিক অনিয়মসংক্রান্ত তথ্যাদি।
এর পর ব্যাংকিং বিভাগ থেকে তিনটি সম্পূরক প্রশ্ন বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পাঠিয়ে এ বিষয়ে খোঁজ নেয়ার অনুরোধ করা হয়। এই বিষয়গুলো হলোÑ গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠাকরণ এবং অবৈধভাবে এসব প্রতিষ্ঠানে তহবিল স্থানান্তরের পর প্রতিষ্ঠানগুলো এখন কী অবস্থায় রয়েছে? এসব প্রতিষ্ঠানে গ্রামীণ ব্যাংকের যে বিনিয়োগ আছে বা যে ঋণের গ্যারান্টি দেয়া হয়েছে তা কি পরিশোধ হয়েছে? পরিশোধ না হলে আদায়ের জন্য কী ব্যবস্থা নেয়া যায় এবং প্যাকেজেস কর্পোরেশন নামক প্রতিষ্ঠানটি কি আছে, না গুটিয়ে ফেলা হয়েছে?
বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ তিনটি বিষয়ের বিশদ তথ্য পাঠানোর জন্য গ্রামীণ ব্যাংকের কাছে চলতি বছরের মাঝামাঝিতে একটি চিঠি পাঠানো হয়। এই চিঠির জবাবে গ্রামীণ ব্যাংক যে বক্তব্য দিয়েছে তার ওপর মতামত দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে একটি সারসংক্ষেপ গত সপ্তাহে ব্যাংকিং বিভাগের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয় বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
সূত্র জানায়, স্বল্পসুদে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ড. ইউনূসের পারিবারিক প্রতিষ্ঠানের জন্য ঋণ গ্রহণ-বিষয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়েছেÑ গ্রামীণ ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল থেকে বা গ্রাহকদের আমানতের টাকা থেকে প্যাকেজেস কর্পোরেশনকে সরাসরি কোনো অর্থ ঋণ হিসেবে প্রদান করা হয়নি। তবে দাতাদের অর্থায়নে গঠিত ‘সোস্যাল ভেঞ্চার কেপিটাল ফান্ড’ (এসভিসিএফ) তহবিল থেকে দাতাদের সম্মতিতে প্যাকেজেস কর্পোরেশনকে ঋণ দেয়া হয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালকমণ্ডলীর ৭৬তম সভায় প্যাকেজেস কর্পোরেশনকে শুরু থেকে ২০০৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মূলধন ঋণ ও চলতি ঋণের সুদের হার ১০, ১২, ও ১৬ শতাংশের পরিবর্তে ৫ শতাংশে পুনঃনির্ধারণ করে হিসাব নিষ্পত্তি করার অনুমোদন দেয়া হয়। গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ থেকে আরো বলা হয়েছে, ‘বোর্ড সভার সিদ্ধান্তের আলোকে প্যাকেজেস কর্পোরেশনের মূলধন ঋণ ও চলতি ঋণের সুদের হার পরিবর্তিত হারে ধরে প্রতিষ্ঠানটির নিকট সাত লাখ ২২ হাজার ১৬৭ টাকা পাওনা নির্ধারণ করা হয়। এই পাওনা ২০০৬ সালের ১৭ এপ্রিল চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করে দেয়া হয়।’ গ্রামীণ ব্যাংকের বক্তব্যে একে একটি ‘নিষ্পত্তিকৃত’ বিষয় হিসেবে উল্লেখ করে মওকুফকৃত অর্থ পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নেয়া যথাযথ হবে কি না সে ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। এরপর বলা হয়েছে, প্যাকেজেস কর্পোরেশন নামে প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব এখনো বিদ্যমান রয়েছে।
গ্রামীণ ব্যাংকের এই ব্যাখ্যা মানতে নারাজ বাংলাদেশ ব্যাংক। গ্রামীণ ব্যাংকের এই কর্মকাণ্ডকে অবৈধ হিসেবে উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতামতে বলা হয়েছে, ‘‘আমানতকারীদের স্বার্থের পরিপন্থী না হলেও গ্রামীণ ব্যাংক দাতাদের অর্থায়নে গঠিত ‘এসভিসিএফ’ তহবিল হতে প্যাকেজেস কর্পোরেশনের অনুকূলে স্টাডিজ, ইনোভেশন, ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড এক্সপেরিমেন্টেশন (এসআইডিই) প্রকল্পের উদ্দেশ্যের বাইরে অবৈধভাবে ঋণ প্রদান করে ব্যাংকের স্বার্থ ক্ষুন্ন করেছে। তাই এসভিএসএফ তহবিল অদ্যাবধি গ্রামীণ ব্যাংকে বিদ্যমান থাকলে প্যাকেজেস কর্পোরেশনকে উক্ত ঋণের মওকুফকৃত আসল পরিশোধে উদ্যোগী হওয়ার ক্ষেত্রে গ্রামীণ ব্যাংক এই প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করতে পারে।’’ বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে অর্থ আদায়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেয়ার জন্য সরকারকে অনুরোধও করা হয়েছে।
ব্যাংকিং বিভাগের এক কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে বলেছেন, সরকারের নির্দেশ পাওয়া গেলে এই অর্থ আদায়ের জন্য শিগিগিরই গ্রামীণ ব্যাংককে নির্দেশ প্রদান করা হবে। আর এই অনিয়মের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
No comments