সৌন্দর্যবর্ধনের পরও এমন দশা! by মতিউর রহমান
মানিকগঞ্জ শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত শত বছরের পুরনো খালের সৌন্দর্য কোনোভাবেই ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না। সৌন্দর্যবর্ধনের বিপরীতে ঐতিহ্যবাহী খালটি এখন ময়লা-আবর্জনার ভাগাড় আর মশার অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে। ময়লা-আবর্জনার দুষণের গন্ধের মাত্রা এতটাই বেশি, খালের পাশ দিয়ে নাকে রুমাল দিয়ে ছাড়া চলা এখন দুষ্কর। অথচ এ খালের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে এরই মধ্যে ৬ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। কিন্তু অবৈধভাবে দখলদারদের কাছ থেকে ৬ বছরেও খাল দখলমুক্ত করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। শতবর্ষী এ খালের উৎপত্তি কালীগঙ্গা নদী থেকে। শহরের বেউথা কালীগঙ্গা মোহনা থেকে খালের যোগসূত্র শেষ হয়েছে শহরের পৌর এলাকা টপকিয়ে সদর উপজেলার পালড়া হয়ে ফের কালীগঙ্গায়। এক সময় খালটি ছিল বেশ প্রশস্ত। প্রায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এ খালটি শুধু মানিকগঞ্জ শহরের ঐতিহ্যের নিদর্শনই নয়, শহরটিকে জলাবদ্ধতার হাত থেকেও রক্ষা করছে। ষাট দশকেও এ খালে নৌকাবাইচ হয়েছে। ব্যবসায়ীরা দূর-দূরান্ত থেকে নৌকায় করে বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী আনা-নেয়া করত। কিন্তু দখলদারিত্বের কারণে বর্তমানে খালটি ড্রেনে পরিণত হয়েছে। জানা গেছে, পৌরবাসীর দাবি ঐতিহ্যবাহী খালটিকে আগামী প্রজন্মের কাছে ধরে রাখাসহ খালটি রক্ষায় এবং এর সৌন্দর্যবর্ধনে মানিকগঞ্জ পৌরকর্তৃপক্ষ যেন উদ্যোগ নেয়। গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে একটি প্রকল্প হাতে নেয় হয়। এ প্রকল্পে ৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে সাতটি প্যাকেজের মাধ্যমে খালটির বান্দুটিয়া থেকে শুরুণ্ডি পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় সিসি ব্লক দিয়ে খালের দুইপাড় বাঁধানো হয়। খালের সৌন্দর্যবর্ধনে শহরবাজার ব্রিজ এলাকা থেকে সরকারি মহিলা কলেজ এলাকা পর্যন্ত খালের দক্ষিণপাড়ে পাঁচ ফুট প্রশস্ত ফুটপাত ও বেশ কয়েকটি বসার আসন নির্মাণ করা হয়। কিন্তু মহিলা কলেজ এলাকায় খালপাড় দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং বহুতল ভবন গড়ে ওঠায় ফুটপাত আর সামনের দিকে এগোতে পারেনি। খাল তীরবর্তী অংশে গড়ে ওঠা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ির শৌচাগারের মলমূত্র পাইপের মাধ্যমে খালে ফেলায় আশপাশে দুগর্ন্ধ ছড়াচ্ছে এবং পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এছাড়া পুরো খালের ভেতরে কচুরিপানায় ভরে গেছে।
যারা দখল করেছেন : সরেজমিন এবং সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শহরের খালপাড় সেতু এলাকা থেকে সরকারি মহিলা কলেজ এলাকা পর্যন্ত স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, সাবেক জনপ্রতিনিধি, আইনজীবীর মতো প্রভাবশালীরা তাদের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও বহুতল ভবনের পেছনের অংশ বর্ধিত করে খালের আয়তন ছোট করে ফেলেছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন কবির চৌধুরী, রফিকুল ইসলাম, আরশেদ আলী, কাইয়ুম খান, আজিজুর রহমান, খসরু আলমগীর, জাহাঙ্গীর হোসেন, ফরিদ হোসেন, জুবায়ের আহম্মেদ, আমজাদ হোসেন, টিপু মিয়া, দিপু মিয়া, মিজান মোল্লা, মনিরুল ইসলাম, জাহানারা বেগম, লাল মিয়া, নাসির হোসেন, কালা মিয়া, রজ্জব আলী, আবুল হোসেন, আতাউর রহমান ভূঁইয়া, হাসিব উদ্দিন সেলিম, শাহিন মিয়া, সুকুমার দে, জালাল উদ্দিন, বিমান গোস্বামী ও আবদুস সালাম। এছাড়া উত্তর সেওতা জামে মজসিদের পাশে মহিদ মিয়া, পুলিশ সুপারের বাসভবনের পাশে আলমগীর হোসেন খালের ওপর বাড়ির বর্ধিত অংশ নির্মাণ করেছেন। সরকারি মহিলা কলেজের পাশে হোসেন আলী ও জয়ন্ত সরকার নামে দুজন ব্যক্তি খালের জায়গায় কাঁচা ঘরবাড়ি নির্মাণ করেছেন। অপরদিকে বাজার ব্রিজের উত্তর দিক থেকে দেবেন্দ্র কলেজের ব্রিজ পর্যন্ত খালের ওয়াকওয়েটি বেশিরভাগ স্থান প্রভাবশালীদের দখলে। এর মধ্যে দেবেন্দ্র কলেজ ব্রিজের কাছে সুইটহেভেন ও মলিনা গ্র্যান্ড সুইটের রান্না-বান্নার কাজ করার জন্য ওয়াকওয়েটি পুরোপুরি দখল হয়ে গেছে। তাদের প্রতিষ্ঠানের ফেলা আবর্জনার গন্ধে চলাচল এখন দুষ্কর। এছাড়া বৈশাখী হোটেলের সামনে ওয়াকওয়েটি দখল করে ওই হোটেলের রান্নাঘর নির্মাণ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে দখল করে ক্রেতাদের জন্য দুটো বসার স্থান তৈরি করা হয়েছে। অগ্রণী ব্যাংকের পেছনে একটি মোটরসাইকেল মেরামতের দোকানের মালিক রীতিমতো ওয়াকওয়েটি দখল করে আছে।
সচেতন নাগরিকদের বক্তব্য : স্থানীয় বাসিন্দা ও খান বাহাদুর আওলাদ হোসেন ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, খাল দখল করে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ির শৌচাগারের মলমূত্র পাইপের মাধ্যমে খালে ফেলা হচ্ছে। এতে আশপাশে দুগর্ন্ধ ছড়াচ্ছে এবং পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। চলাচল করা কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে। স্থানীয় পরিবেশবিদ ও উন্নয়নকর্মী অ্যাডভোকেট দীপক কুমার ঘোষ জানান, খালটি রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসতে হবে। দখলদারদের উচ্ছেদসহ দুষণমুক্ত করারও দাবি জানান।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য : মানিকগঞ্জ পৌর মেয়র রমজান আলী জানান, জেলা শহরের সৌন্দর্য বাড়াতে খালটি রক্ষা প্রকল্প গ্রহণ করে খালের দুইপাড় বাঁধা ও ফুটপাত নির্মাণ করা হয়েছে। তবে কতিপয় লোকজন খালের অংশ বিশেষ দখল করে প্রকল্পের সৌন্দর্য ম্লান করে দিয়েছে। ওইসব লোকজন আবার আদালতের আশ্রয়ও নিয়েছেন। মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে খালের পাড় দখলমুক্ত করা যাচ্ছে না।
যারা দখল করেছেন : সরেজমিন এবং সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শহরের খালপাড় সেতু এলাকা থেকে সরকারি মহিলা কলেজ এলাকা পর্যন্ত স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, সাবেক জনপ্রতিনিধি, আইনজীবীর মতো প্রভাবশালীরা তাদের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও বহুতল ভবনের পেছনের অংশ বর্ধিত করে খালের আয়তন ছোট করে ফেলেছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন কবির চৌধুরী, রফিকুল ইসলাম, আরশেদ আলী, কাইয়ুম খান, আজিজুর রহমান, খসরু আলমগীর, জাহাঙ্গীর হোসেন, ফরিদ হোসেন, জুবায়ের আহম্মেদ, আমজাদ হোসেন, টিপু মিয়া, দিপু মিয়া, মিজান মোল্লা, মনিরুল ইসলাম, জাহানারা বেগম, লাল মিয়া, নাসির হোসেন, কালা মিয়া, রজ্জব আলী, আবুল হোসেন, আতাউর রহমান ভূঁইয়া, হাসিব উদ্দিন সেলিম, শাহিন মিয়া, সুকুমার দে, জালাল উদ্দিন, বিমান গোস্বামী ও আবদুস সালাম। এছাড়া উত্তর সেওতা জামে মজসিদের পাশে মহিদ মিয়া, পুলিশ সুপারের বাসভবনের পাশে আলমগীর হোসেন খালের ওপর বাড়ির বর্ধিত অংশ নির্মাণ করেছেন। সরকারি মহিলা কলেজের পাশে হোসেন আলী ও জয়ন্ত সরকার নামে দুজন ব্যক্তি খালের জায়গায় কাঁচা ঘরবাড়ি নির্মাণ করেছেন। অপরদিকে বাজার ব্রিজের উত্তর দিক থেকে দেবেন্দ্র কলেজের ব্রিজ পর্যন্ত খালের ওয়াকওয়েটি বেশিরভাগ স্থান প্রভাবশালীদের দখলে। এর মধ্যে দেবেন্দ্র কলেজ ব্রিজের কাছে সুইটহেভেন ও মলিনা গ্র্যান্ড সুইটের রান্না-বান্নার কাজ করার জন্য ওয়াকওয়েটি পুরোপুরি দখল হয়ে গেছে। তাদের প্রতিষ্ঠানের ফেলা আবর্জনার গন্ধে চলাচল এখন দুষ্কর। এছাড়া বৈশাখী হোটেলের সামনে ওয়াকওয়েটি দখল করে ওই হোটেলের রান্নাঘর নির্মাণ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে দখল করে ক্রেতাদের জন্য দুটো বসার স্থান তৈরি করা হয়েছে। অগ্রণী ব্যাংকের পেছনে একটি মোটরসাইকেল মেরামতের দোকানের মালিক রীতিমতো ওয়াকওয়েটি দখল করে আছে।
সচেতন নাগরিকদের বক্তব্য : স্থানীয় বাসিন্দা ও খান বাহাদুর আওলাদ হোসেন ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, খাল দখল করে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ির শৌচাগারের মলমূত্র পাইপের মাধ্যমে খালে ফেলা হচ্ছে। এতে আশপাশে দুগর্ন্ধ ছড়াচ্ছে এবং পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। চলাচল করা কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে। স্থানীয় পরিবেশবিদ ও উন্নয়নকর্মী অ্যাডভোকেট দীপক কুমার ঘোষ জানান, খালটি রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসতে হবে। দখলদারদের উচ্ছেদসহ দুষণমুক্ত করারও দাবি জানান।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য : মানিকগঞ্জ পৌর মেয়র রমজান আলী জানান, জেলা শহরের সৌন্দর্য বাড়াতে খালটি রক্ষা প্রকল্প গ্রহণ করে খালের দুইপাড় বাঁধা ও ফুটপাত নির্মাণ করা হয়েছে। তবে কতিপয় লোকজন খালের অংশ বিশেষ দখল করে প্রকল্পের সৌন্দর্য ম্লান করে দিয়েছে। ওইসব লোকজন আবার আদালতের আশ্রয়ও নিয়েছেন। মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে খালের পাড় দখলমুক্ত করা যাচ্ছে না।
No comments