ভাষাসৈনিক ও চা-শ্রমিক নেতা মফিজ আলী by মোস্তাফিজুর রহমান
সাংবাদিক, ভাষাসৈনিক, প্রবীণ চা-শ্রমিক নেতা, লেখক, রাজনীতিবিদ, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সঙ্ঘের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মফিজ আলীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী ছিল ১০ অক্টোবর। ২০০৮ সালের ৩০ আগস্ট কুলাউড়ার কৃষক সমাবেশ থেকে বাড়ি ফেরার পথে সন্ধ্যায় দণি ধূপাটিলার নিজবাড়ির সম্মুখে দুর্ঘটনাজনিত কারণে মস্তিষ্কে রক্তরণে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও আমলা দালাল পুঁজিবিরোধী আপসহীন বিপ্লবী নেতা ছিলেন।
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার ধূপাটিলা গ্রামের একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯২৭ সালের ১০ ডিসেম্বর মফিজ আলীর জন্ম। প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে ছাত্রজীবনে বিএ পর্যন্ত অধ্যয়ন করেছেন। মৌলভীবাজার সরকারি হাইস্কুল থেকে ১৯৪৯ সালে তিনি মেট্রিক পাস করেন। মদন মোহন কলেজ থেকে আইএ পাস করে এমসি কলেজে ভর্তি হন। ছাত্র আন্দোলনে সম্পৃক্ততার দরুন কলেজ থেকে বহিষ্কার করায় ডিগ্রি পরীা দিতে পারেননি। প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী আতাউর রহমান খানের কাছে আবেদন জানানো সত্ত্বেও কলেজে আবার ভর্তি হতে পারেননি। ছাত্রজীবন থেকেই মফিজ আলী ছিলেন সাংবাদিক। তিনি
পাকিস্তানের ডন, ইত্তেফাক, সংবাদ, জনতা, আজাদ, গণশক্তিসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ পাঠিয়েছেন ও কলাম লিখেছেন। ষাটের দশকে তিনি দৈনিক সংবাদ-এর নিজস্ব প্রতিবেদক ছিলেন। ছাত্রজীবনে তার প্রকাশিত পুস্তিকার নাম পাকিস্তানে সাম্রাজ্যবাদী শোষণের নমুনা। পঞ্চাশের দশকে সাপ্তাহিক ইত্তেফাকে তার লেখা প্রবন্ধের মধ্যে রয়েছে ‘রাষ্ট্রভাষা ও আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন’, ‘মে দিবসের ইতিহাস’ এবং ঈদ সংখ্যায় ছোটগল্প ‘একটি গামছা’। মৃত্যুর আগে মফিজ আলীর লেখা চা-শ্রমিকদের ওপর দীর্ঘ প্রতিবেদন ঢাকা থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক সেবায় প্রকাশ হয়েছিল। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সংগ্রামী দিনগুলোতে মফিজ আলী সিলেট এমসি কলেজের ছাত্র। কমলগঞ্জে সভা-সমাবেশ করা তখন ছিল অসম সাহসের ব্যাপার। তবুও সরকারের রক্তচুকে উপেক্ষা করে ভাষা আন্দোলনে সাহসী নেতৃত্ব দেন। একই সাথে তিনি সব ুদ্র জাতিসত্তার ভাষার অধিকারের জন্য আন্দোলন করেছিলেন।
৯২(ক) ধারা জারির পর তাকে ১৯৫৪ সালে গ্রেফতার করে সিলেট জেলে প্রেরণ করা হয়। তিনি ছয় মাস পর মুক্তি পান। মওলানা ভাসানীর গঠিত কৃষক সমিতির শুরু থেকেই তিনি এতে যুক্ত ছিলেন। এর বৃহত্তর সিলেট জেলা কমিটির প্রথমে সহসম্পাদক এবং পরবর্তীকালে সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৬০ সালে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য পদ লাভ করেন। ওই বছরই তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করার দুই বছর পর মুক্তি দেয়া হয়। ১৯৬৩ সালে তিনি শ্রীমঙ্গলে বালিশিরার কৃষক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। এই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে ছালিক ও গনু মিয়া নামের দু’জন কৃষক মারা যান। ১৯৫৪, ’৬০, ’৬৪, ’৬৫, ’৬৭, ’৬৯ ও ’৭২ সালে রাজনৈতিক কারণে বিভিন্ন মামলায় তিনি দীর্ঘ ছয় বছর কারাবরণ করেছেন। চা-শ্রমিকদের দুঃখ-দুর্দশা দেখে তিনি ১৯৬৪ সালে পূর্ব পাকিস্তান চা-শ্রমিক সঙ্ঘ দাঁড় করান। এ কারণে চা বাগান মালিকেরা মফিজ আলীকে গ্রেফতার করাতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। অনেক নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করে তিনি চা-শ্রমিকদের নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়েছেন। লোভলালসার ঊর্ধ্বে থেকে দেশের শ্রমিক, কৃষক, মেহনতি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য তিনি আপসহীন সংগ্রাম করে গেছেন।
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার ধূপাটিলা গ্রামের একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯২৭ সালের ১০ ডিসেম্বর মফিজ আলীর জন্ম। প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে ছাত্রজীবনে বিএ পর্যন্ত অধ্যয়ন করেছেন। মৌলভীবাজার সরকারি হাইস্কুল থেকে ১৯৪৯ সালে তিনি মেট্রিক পাস করেন। মদন মোহন কলেজ থেকে আইএ পাস করে এমসি কলেজে ভর্তি হন। ছাত্র আন্দোলনে সম্পৃক্ততার দরুন কলেজ থেকে বহিষ্কার করায় ডিগ্রি পরীা দিতে পারেননি। প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী আতাউর রহমান খানের কাছে আবেদন জানানো সত্ত্বেও কলেজে আবার ভর্তি হতে পারেননি। ছাত্রজীবন থেকেই মফিজ আলী ছিলেন সাংবাদিক। তিনি
পাকিস্তানের ডন, ইত্তেফাক, সংবাদ, জনতা, আজাদ, গণশক্তিসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ পাঠিয়েছেন ও কলাম লিখেছেন। ষাটের দশকে তিনি দৈনিক সংবাদ-এর নিজস্ব প্রতিবেদক ছিলেন। ছাত্রজীবনে তার প্রকাশিত পুস্তিকার নাম পাকিস্তানে সাম্রাজ্যবাদী শোষণের নমুনা। পঞ্চাশের দশকে সাপ্তাহিক ইত্তেফাকে তার লেখা প্রবন্ধের মধ্যে রয়েছে ‘রাষ্ট্রভাষা ও আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন’, ‘মে দিবসের ইতিহাস’ এবং ঈদ সংখ্যায় ছোটগল্প ‘একটি গামছা’। মৃত্যুর আগে মফিজ আলীর লেখা চা-শ্রমিকদের ওপর দীর্ঘ প্রতিবেদন ঢাকা থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক সেবায় প্রকাশ হয়েছিল। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সংগ্রামী দিনগুলোতে মফিজ আলী সিলেট এমসি কলেজের ছাত্র। কমলগঞ্জে সভা-সমাবেশ করা তখন ছিল অসম সাহসের ব্যাপার। তবুও সরকারের রক্তচুকে উপেক্ষা করে ভাষা আন্দোলনে সাহসী নেতৃত্ব দেন। একই সাথে তিনি সব ুদ্র জাতিসত্তার ভাষার অধিকারের জন্য আন্দোলন করেছিলেন।
৯২(ক) ধারা জারির পর তাকে ১৯৫৪ সালে গ্রেফতার করে সিলেট জেলে প্রেরণ করা হয়। তিনি ছয় মাস পর মুক্তি পান। মওলানা ভাসানীর গঠিত কৃষক সমিতির শুরু থেকেই তিনি এতে যুক্ত ছিলেন। এর বৃহত্তর সিলেট জেলা কমিটির প্রথমে সহসম্পাদক এবং পরবর্তীকালে সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৬০ সালে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য পদ লাভ করেন। ওই বছরই তাকে গ্রেফতার করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করার দুই বছর পর মুক্তি দেয়া হয়। ১৯৬৩ সালে তিনি শ্রীমঙ্গলে বালিশিরার কৃষক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। এই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে ছালিক ও গনু মিয়া নামের দু’জন কৃষক মারা যান। ১৯৫৪, ’৬০, ’৬৪, ’৬৫, ’৬৭, ’৬৯ ও ’৭২ সালে রাজনৈতিক কারণে বিভিন্ন মামলায় তিনি দীর্ঘ ছয় বছর কারাবরণ করেছেন। চা-শ্রমিকদের দুঃখ-দুর্দশা দেখে তিনি ১৯৬৪ সালে পূর্ব পাকিস্তান চা-শ্রমিক সঙ্ঘ দাঁড় করান। এ কারণে চা বাগান মালিকেরা মফিজ আলীকে গ্রেফতার করাতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। অনেক নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করে তিনি চা-শ্রমিকদের নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়েছেন। লোভলালসার ঊর্ধ্বে থেকে দেশের শ্রমিক, কৃষক, মেহনতি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য তিনি আপসহীন সংগ্রাম করে গেছেন।
No comments