রাস্তাজুড়ে অবৈধ তোরণ -ভাঙার পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ আদায় করুন
একটি আধুনিক রাজধানী শহরে নাগরিকদের যেসব
সুযোগ-সুবিধা থাকার কথা, সড়কগুলো যতটা প্রশস্ত হওয়ার কথা, ঢাকায় তা
কখনোই ছিল না, এখনো নেই। অস্বাভাবিক যানজটে নগরজীবন প্রায় নিশ্চল হয়ে
পড়লেও এসব নিয়ে নগর কিংবা রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকেরা আদৌ ভাবিত বলে মনে হয়
না। ভিভিআইপি সড়ক ছাড়া রাজধানীর অধিকাংশ রাস্তা বহুদিন ধরেই খানাখন্দে
ভরা, কোনো কোনো অংশ যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী বললেও অত্যুক্তি হবে না।
তারপরও নগরের সড়কগুলোতে নতুন উপদ্রব হিসেবে দেখা দিয়েছে যত্রতত্র তোরণ
নির্মাণ। যেকোনো উপলক্ষ এলেই ক্ষমতাসীন দলের একশ্রেণির নেতা-কর্মী সড়কের
মোড়ে মোড়ে তোরণ নির্মাণ করে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটান। এর পেছনে যেমন
আত্মপ্রচারের অসুস্থ প্রতিযোগিতা আছে, তেমনি আছে চাঁদাবাজির মওকাও। >>ঢাকার রাস্তাজুড়ে অবৈধ তোরণ>>
সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের দাবি, তোরণগুলো নির্মাণ করা হয়েছে
বেআইনিভাবে। কিন্তু যানজটপূর্ণ সড়কগুলোতে এভাবে অবৈধ তোরণ কীভাবে নির্মিত
হলো? এত দিনেও কেন ভেঙে দেওয়া হলো না? সিটি করপোরেশন ঈদের পরিচ্ছন্নতা
কাজ শেষ হওয়ার পরে তোরণ ভাঙার যে যুক্তি খাড়া করেছে, তা একেবারেই
অগ্রহণযোগ্য। এসব তোরণের বেশির ভাগ কয়েক মাস আগে এমনকি কোনো কোনোটি
কয়েক বছর আগে নির্মিত হলেও সিটি করপোরেশন নির্বিকার। আওয়ামী লীগের সাধারণ
সম্পাদক কয়েক মাস আগে দলীয় নেতা-কর্মীদের ব্যানার ও পোস্টারে নেতাদের ছবি
ছাপা নিয়ে কড়া বক্তব্য রাখলেও কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
জনমানুষের চলাচলে অসুবিধা হবে বলে বিরোধী দলকে সড়কে মিছিল-সমাবেশ করতে
দেওয়া হয় না, অথচ ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা এ রকম অবৈধ কাজ বছরের পর বছর
চালাচ্ছেন কীভাবে? আইন কেন এ ক্ষেত্রে অন্ধ? অবিলম্বে সড়কের ওপর
নির্মিত সব তোরণ ভেঙে দিতে হবে। যাঁরা এসব তোরণ নির্মাণ করেছেন, তাঁদের
কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে। উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের
অনির্বাচিত কর্তৃপক্ষ সেই কাজটি করতে পারবে কি?
No comments