হংকংয়ে গণতন্ত্রের লড়াই by মুহাম্মদ খায়রুল বাশার
বিশ্ব ইতিহাসের দশটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ ও
সঙ্ঘাতের মধ্যে দু’টি ছিল বিশ্বযুদ্ধ। অপর আটটির মধ্যে পাঁচটি চীনে সংঘটিত
অথবা চীনে শুরু হয়েছিল। ওই সব যুদ্ধ ও সঙ্ঘাতে বিপুলসংখ্যক মানুষের
প্রাণহানি ও রক্তবন্যা বয়ে গিয়েছিল বিশ্ব ইতিহাসের দশটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ ও
সঙ্ঘাতের মধ্যে দু’টি ছিল বিশ্বযুদ্ধ। অপর আটটির মধ্যে পাঁচটি চীনে সংঘটিত
অথবা চীনে শুরু হয়েছিল। ওই সব যুদ্ধ ও সঙ্ঘাতে বিপুলসংখ্যক মানুষের
প্রাণহানি ও রক্তবন্যা বয়ে গিয়েছিল। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে সংঘটিত
তাইপিং বিপ্লবে ২০ মিলিয়ন তথা দুই কোটি লোক নিহত হয়। এক দশক পর হান চাইনিজ ও
মুসলিমদের মধ্যকার সঙ্ঘাতে আরো আট থেকে ১২ মিলিয়ন, অর্থাৎ প্রায় এক কোটি
২০ লাখ লোক নিহত হয়। বিংশ শতাব্দীতে মাও সেতুংয়ের (মাও জেদং) শাসনামলে ২০
মিলিয়ন থেকে ৩০ মিলিয়ন, অর্থাৎ প্রায় ৩০ কোটি মানুষ মৃত্যুবরণ করে। কিছু
লোককে হত্যা করা হয়। বর্বরতা ও অদক্ষতার কারণে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষের ফলে বেশির
ভাগ মানুষ মৃত্যুবরণ করে।
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃবৃন্দ নিঃসন্দেহে নিজেদের স্বার্থে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে থাকতে চান, কিন্তু দেশের ভয়ানক ইতিহাসের কথা স্মরণ করলে কেন তারা হংকংয়ের বিক্ষোভকারীদের কোনো সুযোগ না দেয়ার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, তার সঠিক ব্যাখ্যা পাওয়া যাবে। হংকংয়ের বিক্ষোভকারীরা দেশটিতে সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। চীনা প্রেসিডেন্ট বিন জিন পিং এবং তার সহকর্মীরা মনে করে, দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার একমাত্র পথ হচ্ছে গোটা দেশের ওপর পার্টির নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা। তাদের আশঙ্কা, পার্টির নিয়ন্ত্রণ শিথিল হলেই দেশ বিশৃঙ্খলা ও বিপর্যয়ের পথে চলে যাবে। তাদের এই বক্তব্য সঠিক যে, স্বৈরতন্ত্র স্বল্প সময়ের জন্য দেশকে স্থিতিশীল করতে পারে। কিন্তু চীনাদের নিজস্ব ইতিহাস দেখানো সত্ত্বেও সেখানের স্বৈরশাসন দীর্ঘ দিন চলতে পারে না। একটি স্থিতিশীল সরকারের একমাত্র নিশ্চয়তা দিতে পারে জনগণ। জনগণকে তাদের সরকারের কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্ট হতে হবে। চীনে কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি জনগণের অসন্তোষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
১৯৯৮ সালে সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ হংকংকে চীনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তারপর থেকে চীনের অধীন ‘এক দেশ দুই পদ্ধতি’ নীতিতে হংকংয়ের প্রশাসন পরিচালিত হচ্ছে। কিন্তু ২০১৭ সালের পরবর্তী নির্বাচনে যেকোনো নাগরিককে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ দেয়ার দাবি করছে গণতন্ত্রপন্থীরা। হংকংয়ের নতুন প্রশাসক নির্বাচন প্রশ্নে গত মাসে চীনের একটি সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে হংকংয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদের জন্য ২০১৭ সালে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থীদের আগে বেইজিং মনোনীত করবে। হংকংয়ের জনগণ চীনের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনি। তারা যেকোনো নাগরিককে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ দেয়ার দাবিতে সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে আন্দোলন শুরু করে। পরবর্তীকালে তাদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ গণবিক্ষোভে রূপ নেয়। বিক্ষোভকারীরা হংকংয়ের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থান করে রাস্তা অবরোধ করে রাখে। ১ অক্টোবর ছিল চীনের ৬৫তম জাতীয় দিবস। ১৯৪৯ সালের ১ অক্টোবর কমিউনিস্ট চীনের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘটে। চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকংয়ের বর্তমান প্রধান নির্বাহী লিউং চুন-ইং। আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে না নেয়ায় গোটা হংকং এখন উত্তাল। হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থীরা প্রধান নির্বাহীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে তার সাথে আলোচনায় বসতে সম্মত হলেও আন্দোলনকারীদের ওপর পিপার ¯েপ্র, কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ, হামলা ও পুলিশের শক্তি প্রয়োগের প্রতিবাদে আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে হংকংয়ের জনগণ প্রবলভাবে ফুঁসে উঠেছে। প্রতিবাদকারীরা চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি গণতন্ত্রের প্রতিশ্রুতির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য হচ্ছে, ১৯৯৭ সালে ব্রিটেন হংকংকে চীনের অধীনে হস্তান্তর করার সময় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
হংকংয়ে গণতন্ত্রের দাবিতে বিক্ষোভকারীরা তাদের আন্দোলনকে ‘ছাতা বিপ্লব’ নাম দিয়েছে। পুলিশের পিপার ¯েপ্র থেকে নিজেদের রক্ষায় আন্দোলনকারীরা ঢাল হিসেবে ছাতা ব্যবহার করেন। আর এই ছাতা বিপ্লবে অংশগ্রহণ করেন সব ধরনের মানুষ। এতে ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, ব্যাংকার ও মিশনারিরা অংশগ্রহণ করেছেন। বৃষ্টি এবং কাঁদানে গ্যাস ও পিপার ¯েপ্র থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যই তারা ছাতা বিপ্লবে অংশ নেন।
কিছু কিছু বিক্ষোভকারীর কাছে গণতন্ত্র হচ্ছে নীতির বিষয়। প্রধান ভূখণ্ড চীনের বাইরের মধ্যম শ্রেণীর তথা মধ্যবিত্ত জনগণ বাসস্থান, শিক্ষা এবং তাদের চাকরিসংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়ে উদ্বিগ্ন। তারা প্রতিনিধিত্ব চায়, কারণ এখন যেভাবে হংকংকে শাসন করা হচ্ছে তাতে তারা খুশি নয়। তাদের মোটিভেশন যে দিকেই থাকুক না কেন, প্রতিবাদকারীরা কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। তারা কেবল সাম্প্রতিক সময়ে গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরশাসকদের ক্ষমতাচ্যুত করা যেমন কায়রো, কিয়েভের ঘটনাকেই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে নাÑ তাদেরকে ২৫ বছর আগে তিয়েন আনমেন স্কোয়ারে ছাত্রদের গণ-অভ্যুত্থানে গণহত্যা চালানোর বিষয়টির কথাও মনে করিয়ে দিচ্ছে। ওই সব বিক্ষোভে চীনের গুলি বর্ষণের কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছিল এবং শৃঙ্খলা ফিরে এসেছিল। কিন্তু চীনা শাসকদের ব্যাপারে বিশ্বব্যাপী অবিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্বব্যাপী সনাতনী ব্যবসা-বাণিজ্য তথা সার্বিক ক্ষেত্রে একটি অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। এটা শুধু বর্হিবিশ্বে নয়Ñ চীনা জনগণের মধ্যেও শাসকদের ব্যাপারে অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে।
হংকংয়ে কমিউনিস্ট পার্টি কমিউনিস্টদের সমন্বয় এবং ঔপনিবেশিক কৌশল ব্যবহার করছে। প্রতিবাদকারীদের সরকারি মুখপাত্র ‘রাজনৈতিক চরমপন্থী’ এবং ‘কালো হাত’ আখ্যায়িত করে বলা হচ্ছে চীনাবিরোধী বিদেশীরা তাদেরকে বিভ্রান্তির পথে পরিচালিত করছে। তিয়েন আনমেন স্কোয়ারের প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছিল। এতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি সরকারের দীর্ঘ দিনের অনিচ্ছার বিষয়টিই প্রতিফলিত হয়েছে। হংকং অথবা চীনের যেকোনো স্থানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তারা আগ্রহী নয়। পার্টির নেতৃবৃন্দ দেখেছেন, হংকং হচ্ছে একটি আন্তর্জাতিক নগরী সেখানকার মানুষ ব্রিটিশরা হংকংকে চীনের কাছে হস্তান্তর করার আগ পর্যন্ত উল্লেখযোগ্যভাবে স্বাধীনতা ভোগ করত। চীনের অপর একটি অংশের শহরগুলোতে সমালোচকদেরকে বিদেশীদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলার অভিযোগ এনে নাগরিকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়। তারা মনে করে, পার্টির হংকং নীতির সাথে দীর্ঘ দিন ধরে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত মি. ঝি-ই হংকংয়ের ব্যাপারে বেশি জানেন। একই সময়ে পার্টিকে ছোটখাটো আঞ্চলিক সমস্যা কাটিয়ে ওঠার জন্য ঔপনিবেশিক ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করতে দেখা গেছে। কমিউনিস্ট পার্টি ব্রিটিশদের তীব্র সমালোচনা করলেও টাইকনদের সমর্থন কিনে নিত। টাইকনদের মাধ্যমে তারা সেখানে আর কাউকে মাধা উঁচু করে দাঁড়াতে দিত না। মি. ঝি গণতন্ত্রের ব্যাপারে তার যে দৃষ্টিভঙ্গি সেটার ওপর তাদের সমর্থন নিশ্চিত করার জন্য হংকংয়ের ৭০ জন সুপার ধনাঢ্য ব্যক্তির সাথে বেইজিংয়ে বৈঠক করেন। হংকংয়ে পার্টির সমর্থকেরা যুক্তি প্রদর্শন করেন যে, ব্যবসায়ীদের এক দিকে নিয়ে আসা স্থিতিশীলতার জন্য ভালো। সরকার নানাভাবে চেষ্টা করেও বিক্ষোভকারীদের রাস্তা থেকে সরাতে পারেনি। শক্তি প্রয়োগ ও হামলা চালানোর কারণে হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থীরা প্রধান নির্বাহীর আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। পরবর্তীকালে আবার আলোচনার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। সরকার কি আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধানে আসবে, নাকি শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে সঙ্কট সমাধান করবে। মি. ঝি মনে করেন, পার্টির জন্য স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার একমাত্র পথ হচ্ছে পার্টির নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে আরো উচ্চকণ্ঠ হওয়া। এটা সম্ভব যে, তিনি আরো শক্তি প্রয়োগের কর্তৃত্ব দেবেন। ওই ধরনের পদক্ষেপ হবে হংকংয়ের জন্য একটি বিপর্যয়। এবং এতে মি. ঝি-এর সমস্যারও কোনো সমাধান হবে না। চীনের প্রধান ভূখণ্ডও অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে। পার্টি নেতৃবৃন্দ মূল ভূখণ্ডের জনগণকে হংকংয়ের ঘটনাবলি জানা থেকে বিরত রাখার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। হংকংয়ের ঘটনাবলি মূল ভূখণ্ডের জনগণকে প্রভাবিত করার ভয়ে নেতৃবৃন্দ শঙ্কিত। কমিউনিস্ট পার্টির জন্য সমস্যা হচ্ছে, মূল ভূখণ্ডের কিছু লোকের মধ্যে পরিপূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আকাক্সার বিষয়টি যখন ফুটে উঠেছে এবং প্রায়ই সেখানে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে, তখন অনেক লোক বর্তমানে যেভাবে দেশ শাসন করা হচ্ছে তার প্রতি তাদের অসন্তুষ্টির কথা জানিয়ে দিয়েছে। অত্যাচার, নির্যাতন, শক্তিপ্রয়োগ ইত্যাদিতে তো হংকংয়ে প্রতিবাদ বন্ধ করতে সক্ষম হবে; কিন্তু অন্য শহরগুলোতেও দ্রুত বিক্ষোভ শুরু হবে।
মি. ঝি-এর ক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক ক্ষমতা তিনি কুক্ষিগত করে রেখেছেন। তিনি এটা স্পষ্ট করেছেন যে, তিনি পশ্চিমা ধাঁচের গণতন্ত্র সহ্য করবেন না। ভবিষ্যতে সেখানে কী ঘটবে তা অত্যন্ত অস্পষ্ট। চীনা প্রেসিডেন্ট ঝি জিনপিং এখন চাপের মুখে। হংকংয়ের বিশেষ মর্যাদাকে হয়তো আরো বাড়িয়ে দেয়া হবে। চীনে কোনো কোনো শহরে দেখা দিচ্ছে সরাসরি বিদ্রোহ। ইতোমধ্যে ঝিনজিয়াংয়ে ঝি-কে সঙ্কটে পড়তে হয়েছে। এরপর একটি গণতান্ত্রিক ও স্বৈরশাসিত দ্বীপ তাইওয়ান রয়েছে। তাইওয়ানকে চীন তার ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করে। হংকংয়ে কী হবে? সেখানে তিন ধরনের ফলাফল হতে পারে। প্রথমত, বিক্ষোভকারীরা সামান্য কিছু ছাড় দিয়ে গণতন্ত্রের ক্ষেত্র লাভ করতে পারে। দ্বিতীয়ত, হংকং একই অবস্থায় থেকে যেতে পারে। তৃতীয়ত, বেইজিং এক দেশ দুই নীতি ব্যবস্থাটি বন্ধ করে দিতে পারে। হংকংয়ের খোলানীতির কারণে আর্থিক ও রাজনৈতিকভাবে হংকং চীনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ইউক্রেনে রাশিয়া যা করেছে সে রকম হংকংয়ে চীনের দখলদার বাহিনী পাঠানোর প্রয়োজন নেই। ১৯৯৭ সাল থেকে শহরটিতে পিপলস লিবারেশন আর্মি মোতায়েন রয়েছে, আর গত ১৭ বছর ধরে হংকং চীনের একটি অভিন্ন অংশ হিসেবে রয়েছে। হংকং ঐতিহাসিকভাবে মুক্ত স্বাধীন থাকতে চায়। মূল ভূখণ্ডে সে ধরনের অভিজ্ঞতা শুরু করার জন্য হংকং হচ্ছে একটি আদর্শ স্থান। মি. ঝি এই সুযোগ পাওয়ায় বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারলে তিনি অতীতের সব সম্রাট ও পার্টিপ্রধানদের চাইতেও দেশের জন্য বেশি কাজ করতে পারবেন।
No comments