মুঠোফোন ৪০ পেরিয়ে by রাজীব হাসান
প্রথম দিকে আকার ছিল প্রমাণ সাইজের থান
ইটের কাছাকাছি। ছোট হতে হতে বুড়ো আঙুলের সমান। ফ্যাশন যে চক্রাকারে ঘোরে,
সেটা প্রমাণ করতেই যেন মুঠোফোনের আকার আবার বড় হতে শুরু করেছে।
এরই মধ্যে অবশ্য একটা চক্র পূরণ করে ফেলেছে মুঠোফোন। চার দশক পূর্ণ হয়েছে
এই প্রযুক্তির। আসুন, এই ফাঁকে দেখে নিই মুঠোফোনের বিবর্তন।
সূত্র:গার্ডিয়ান
১৯৭৩
আজকের মুঠোফোনের আদিপিতার নাম ডায়নাট্যাক। ‘ডায়নামিক অ্যাডাপটিভ টোটাল এরিয়া কভারেজ’ সংক্ষেপ করে এই নাম। ১৯৭৩ সালে ফোনটি বানিয়েছিল মটোরোলা। দেখতে জুতার মতো ছিল বলে অনেকে এটিকে ‘শু ফোন’ বলত। মটোরোলার তখনকার ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন কুপার এই সেট ব্যবহার করে প্রথম ফোনকলটি করেন।
১৯৮৩
১০ বছর পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বাজারে আসে প্রথম বাণিজ্যিক মুঠোফোন মটোরোলা ডায়নাট্যাক ৮০০০এক্স। প্রায় ৮০০ গ্রাম ওজনের ফোনটি দিয়ে কথা বলা যেত ৩০ মিনিট। স্ট্যান্ডবাই সময় আট ঘণ্টা। ৩০টি নম্বর মনে রাখতে পারত ফোনটি। এখনকার অর্থমূল্য অনুযায়ী ফোনটির দাম নয় হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার।
১৯৯৩
স্মার্টফোন শব্দটা তখনো ভবিষ্যতের গর্ভে, এই সময় আইবিএম সাইমন নামের এমন একটা ফোন বাজারে ছাড়া হয়েছিল, যেটি একাধারে ফোন, পেজার, ফ্যাক্স ও পিডিএর কাজ করত। সম্ভবত বিশ্বের প্রথম এই স্মার্টফোনে একটি বর্ষপঞ্জি, অ্যাড্রেস বুক, ক্যালকুলেটরও ছিল। তখনকার বাজারমূল্য ৮৯৯ ডলারে বিক্রি হয়েছিল ফোনটি।
১৯৯৬
প্রথম ফ্লিপ বা ঢাকনাওয়ালা ফোন বাজারে ছাড়ে মটোরোলা। স্টারট্যাক নামের ফোনটি ছিল সে সময়য়ের সবচেয়ে ছোট ফোন। ছয় কোটি স্টারট্যাক বিক্রি হয়েছিল সে সময়। ৮৮ গ্রাম ওজনের এই ফোনটি মুঠোবার্তাও আদান-প্রদান করতে পারত। তখনকার বাজারমূল্য ছিল এক হাজার ডলার।
১৯৯৯
নকিয়ার রাজত্ব জেঁকে বসতে শুরু করল এই সময়টায়। বাজারে এল নকিয়া ৭১১০, যেটি সেই সময়ের প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় বিস্ফোরণ। এই ফোনে প্রথম যুক্ত হলো ওয়্যারলেস অ্যাপ্লিকেশন প্রটোকল বা ওয়াপ। এর কারণে ফোনের মাধ্যমে ওয়েবসাইট দেখতে পারল ব্যবহারকারীরা। একই সময়ে স্যামসাং নিয়ে এল এসপিএইচ এম১০০। টাইমের সর্বকালের সেরা ১০০ গেজেটের তালিকায় ঠাঁই করে নেওয়া এই ফোনে প্রথম যুক্ত হলো এমপিথ্রি-সুবিধা।
২০০২
নকিয়া ৭৬৫০ প্রথম নকিয়া স্মার্টফোন, যাতে যুক্ত হলো ক্যামেরা। এই ফোনেই প্রতিষ্ঠানটি প্রথম সিমবিয়ান অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করল। ফোনটির পর্দাও ছিল রঙিন। ছিল জয়স্টিক। কাছাকাছি সময়ে সনি এরিকসন বাজারে ছাড়ে পি৮০০। টাচস্ক্রিন-সুবিধা ছিল এতে। ছিল ব্লুটুথ ও ভিজিএ ক্যামেরাও।
২০০৩
এ বছর জুনে রিসার্চ ইন মোশন বাজারে ছাড়ে ব্ল্যাকবেরি কোয়ার্ক ৬২১০, সর্বকালের অন্যতম জনপ্রিয় একটি স্মার্টফোন। এটাই ব্ল্যাকবেরির প্রথম পরিপূর্ণ মুঠোফোন। এর আগের ব্ল্যাকবেরি ৫৮১০-এর ফোনের সুবিধা থাকলেও তাতে হেডসেট ব্যবহার করতে হতো।
২০০৭
কয়েক মাসের তুমুল আগ্রহ আর উন্মাদনা শেষে বাজারে এল আইফোন। এসেই ঘটিয়ে দিল বিপ্লব। ২৯ জুন বাজারে এসেছিল প্রথম আইফোনটি, এরপর বাকিটুকু সত্যিই ইতিহাস। প্রথম আইফোনটি কেনার জন্য অ্যাপল স্টোরের সামনে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ছিল মানুষের মিছিল। পুরোপুরি টাচস্ক্রিন-সুবিধা ও নানা অ্যাপের জন্য ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠা আইফোনের ৪ গিগাবাইট মডেলের দাম ছিল ৪৯৯ ডলার। পরে আইফোন তাদের নতুন মডেলে রাজত্ব কেবলই বাড়িয়েছে।
২০১০
অ্যাপলের বাজারে হুমকি হিসেবে আবির্ভাব স্যামসাংয়ের। এ বছর মার্চে বাজারে আসা গ্যালাক্সি এস সিরিজের ফোন হু হু করে জনপ্রিয়তা পেতে থাকে।গুগলের অ্যানড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চালিত এই সেটে ছিল বড় টাচস্ক্রিন পর্দা, ওয়াইফাই, ৫ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা এবং বাজারের অন্য যেকোনো স্মার্টফোনের চেয়ে দ্রুতগতির গ্রাফিকস প্রসেসর। ২০১১ সালের জানুয়ারির মধ্যে বিশ্বজুড়ে এক কোটি গ্যালাক্সি এস বিক্রি হয়।
২০১৩
মার্চে নিউইয়র্কে স্যামসাং গ্যালাক্সি সিরিজের নতুন ফোন এস৪ অবমুক্ত করে। এপ্রিলে একই সঙ্গে ১৫৫টি দেশে বিক্রি শুরু হয়। দুই মাসের মধ্যেই এক কোটি গ্যালাক্সি এস৪ বিক্রি করেছে স্যামসাং। যেটি তাদের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হারের রেকর্ড। এ বছর মার্চে নতুন ফোন দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে ব্ল্যাকবেরি। ব্ল্যাকবেরি ১০ ফোনটি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি ভীষণ আশাবাদীও।
১৯৭৩
আজকের মুঠোফোনের আদিপিতার নাম ডায়নাট্যাক। ‘ডায়নামিক অ্যাডাপটিভ টোটাল এরিয়া কভারেজ’ সংক্ষেপ করে এই নাম। ১৯৭৩ সালে ফোনটি বানিয়েছিল মটোরোলা। দেখতে জুতার মতো ছিল বলে অনেকে এটিকে ‘শু ফোন’ বলত। মটোরোলার তখনকার ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন কুপার এই সেট ব্যবহার করে প্রথম ফোনকলটি করেন।
১৯৮৩
১০ বছর পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বাজারে আসে প্রথম বাণিজ্যিক মুঠোফোন মটোরোলা ডায়নাট্যাক ৮০০০এক্স। প্রায় ৮০০ গ্রাম ওজনের ফোনটি দিয়ে কথা বলা যেত ৩০ মিনিট। স্ট্যান্ডবাই সময় আট ঘণ্টা। ৩০টি নম্বর মনে রাখতে পারত ফোনটি। এখনকার অর্থমূল্য অনুযায়ী ফোনটির দাম নয় হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার।
১৯৯৩
স্মার্টফোন শব্দটা তখনো ভবিষ্যতের গর্ভে, এই সময় আইবিএম সাইমন নামের এমন একটা ফোন বাজারে ছাড়া হয়েছিল, যেটি একাধারে ফোন, পেজার, ফ্যাক্স ও পিডিএর কাজ করত। সম্ভবত বিশ্বের প্রথম এই স্মার্টফোনে একটি বর্ষপঞ্জি, অ্যাড্রেস বুক, ক্যালকুলেটরও ছিল। তখনকার বাজারমূল্য ৮৯৯ ডলারে বিক্রি হয়েছিল ফোনটি।
১৯৯৬
প্রথম ফ্লিপ বা ঢাকনাওয়ালা ফোন বাজারে ছাড়ে মটোরোলা। স্টারট্যাক নামের ফোনটি ছিল সে সময়য়ের সবচেয়ে ছোট ফোন। ছয় কোটি স্টারট্যাক বিক্রি হয়েছিল সে সময়। ৮৮ গ্রাম ওজনের এই ফোনটি মুঠোবার্তাও আদান-প্রদান করতে পারত। তখনকার বাজারমূল্য ছিল এক হাজার ডলার।
১৯৯৯
নকিয়ার রাজত্ব জেঁকে বসতে শুরু করল এই সময়টায়। বাজারে এল নকিয়া ৭১১০, যেটি সেই সময়ের প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় বিস্ফোরণ। এই ফোনে প্রথম যুক্ত হলো ওয়্যারলেস অ্যাপ্লিকেশন প্রটোকল বা ওয়াপ। এর কারণে ফোনের মাধ্যমে ওয়েবসাইট দেখতে পারল ব্যবহারকারীরা। একই সময়ে স্যামসাং নিয়ে এল এসপিএইচ এম১০০। টাইমের সর্বকালের সেরা ১০০ গেজেটের তালিকায় ঠাঁই করে নেওয়া এই ফোনে প্রথম যুক্ত হলো এমপিথ্রি-সুবিধা।
২০০২
নকিয়া ৭৬৫০ প্রথম নকিয়া স্মার্টফোন, যাতে যুক্ত হলো ক্যামেরা। এই ফোনেই প্রতিষ্ঠানটি প্রথম সিমবিয়ান অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করল। ফোনটির পর্দাও ছিল রঙিন। ছিল জয়স্টিক। কাছাকাছি সময়ে সনি এরিকসন বাজারে ছাড়ে পি৮০০। টাচস্ক্রিন-সুবিধা ছিল এতে। ছিল ব্লুটুথ ও ভিজিএ ক্যামেরাও।
২০০৩
এ বছর জুনে রিসার্চ ইন মোশন বাজারে ছাড়ে ব্ল্যাকবেরি কোয়ার্ক ৬২১০, সর্বকালের অন্যতম জনপ্রিয় একটি স্মার্টফোন। এটাই ব্ল্যাকবেরির প্রথম পরিপূর্ণ মুঠোফোন। এর আগের ব্ল্যাকবেরি ৫৮১০-এর ফোনের সুবিধা থাকলেও তাতে হেডসেট ব্যবহার করতে হতো।
২০০৭
কয়েক মাসের তুমুল আগ্রহ আর উন্মাদনা শেষে বাজারে এল আইফোন। এসেই ঘটিয়ে দিল বিপ্লব। ২৯ জুন বাজারে এসেছিল প্রথম আইফোনটি, এরপর বাকিটুকু সত্যিই ইতিহাস। প্রথম আইফোনটি কেনার জন্য অ্যাপল স্টোরের সামনে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ছিল মানুষের মিছিল। পুরোপুরি টাচস্ক্রিন-সুবিধা ও নানা অ্যাপের জন্য ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠা আইফোনের ৪ গিগাবাইট মডেলের দাম ছিল ৪৯৯ ডলার। পরে আইফোন তাদের নতুন মডেলে রাজত্ব কেবলই বাড়িয়েছে।
২০১০
অ্যাপলের বাজারে হুমকি হিসেবে আবির্ভাব স্যামসাংয়ের। এ বছর মার্চে বাজারে আসা গ্যালাক্সি এস সিরিজের ফোন হু হু করে জনপ্রিয়তা পেতে থাকে।গুগলের অ্যানড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চালিত এই সেটে ছিল বড় টাচস্ক্রিন পর্দা, ওয়াইফাই, ৫ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা এবং বাজারের অন্য যেকোনো স্মার্টফোনের চেয়ে দ্রুতগতির গ্রাফিকস প্রসেসর। ২০১১ সালের জানুয়ারির মধ্যে বিশ্বজুড়ে এক কোটি গ্যালাক্সি এস বিক্রি হয়।
২০১৩
মার্চে নিউইয়র্কে স্যামসাং গ্যালাক্সি সিরিজের নতুন ফোন এস৪ অবমুক্ত করে। এপ্রিলে একই সঙ্গে ১৫৫টি দেশে বিক্রি শুরু হয়। দুই মাসের মধ্যেই এক কোটি গ্যালাক্সি এস৪ বিক্রি করেছে স্যামসাং। যেটি তাদের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হারের রেকর্ড। এ বছর মার্চে নতুন ফোন দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে ব্ল্যাকবেরি। ব্ল্যাকবেরি ১০ ফোনটি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি ভীষণ আশাবাদীও।
No comments