প্রধান দুই দলের প্রকাশ্যে আলোচনায় বাধা কোথায়? by ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন
আগামী নির্বাচন কিভাবে অনুষ্ঠিত হবে- সেই বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, তলে তলে বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তাঁর এই বক্তব্য এমন এক সময়ে গণমাধ্যমে এসেছে, যখন সবাই এমন একটি খবরই প্রত্যাশা করছিল।
কিন্তু পরদিন বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের নেত্রী খালেদা জিয়া তাঁর প্রতিক্রিয়া জানালেন। আমরা জানতে পারলাম, এ ধরনের কোনো আলোচনা কারো সঙ্গে হচ্ছে না। শুধু তা-ই নয়, তিনি বললেন, তলে তলে আলোচনা নয়, তলে তলে ষড়যন্ত্র চলছে। বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলাম আরো ব্যাখ্যামূলক বক্তব্য উপস্থাপন করলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে। তিনি একে বিভ্রান্তিমূলক বলে আখ্যায়িত করলেন।
প্রশ্ন হচ্ছে, আলোচনা যদি শুরু হয়ে থাকে তা তলে তলে হবে কেন? আমরা মনে করি, জাতীয় কোনো বিষয় নিয়ে যদি আলোচনা হয়, তাহলে সেটা প্রকাশ্যে হওয়া উচিত। তবে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরির জন্য হয়তো একটা পর্যায় থাকতে পারে। সেখানে সব কিছুই প্রকাশ্যে হওয়াটা জরুরি নয়। এই মুহূর্তে জাতীয়ভাবে ব্যাপক আলোচিত বিষয় হচ্ছে, আগামী নির্বাচন কোন ধরনের সরকারের অধীনে হবে। ইতিপূর্বে কয়েকটি নির্বাচন যেমন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়েছে, সেই রীতিই থাকবে নাকি সংশোধিত সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে হবে- এটা প্রশ্নবোধক তো অবশ্যই। কারণ দেশের দুই বৃহৎ দল এই পরিপ্রেক্ষিতে দুই মেরুতে অবস্থান করছে। চিন্তার এই ফারাক কমিয়ে আনতে হবে জাতীয় স্বার্থে। এটা শুধু দুটি দলের সুবিধার জন্যই নয় কিংবা রাজনৈতিক দলগুলোর জন্যই জরুরি নয়; যাঁরা নির্বাচন পরিচালনা করবেন তাঁদের জন্যও জরুরি।
হাতে তো সময় বেশি নেই। একটি বছর দেখতে দেখতে চলে যাবে। এই সময়ের মধ্যেই সব প্রস্তুতি শেষ করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মতো প্রশাসনের বিষয়টিও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রশাসনও সেভাবে কাজ করতে প্রস্তুতি নিতে পারবে।
অন্যদিকে বিএনপি যেমন বলছে, তাদের বাদ দিয়ে নির্বাচন হতে পারে না। তেমনি আওয়ামী লীগও মনে করে, বিএনপির মতো বড় একটি দলকে বাদ দিয়ে নির্বাচন হলে সেটা গ্রহণযোগ্য হবে না। এ ক্ষেত্রে দুই দলের মধ্যে মতের কোনো বড় রকম পার্থক্য আছে বলে আমি মনে করি না। যেহেতু বড় একটি ইস্যুতে দুই পক্ষই সহমত পোষণ করে, সে কারণেও আলোচনার প্রয়োজনীয়তা এখন আরো বেড়ে গেছে।
সেই আলোচনা যদি অপ্রকাশ্যে হয়, তাহলে সেটা ঠিক হবে না। এর ফল কী দাঁড়ায়, এটা আমরা আগেও দেখেছি। আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল ও বিএনপির তৎকালীন মহাসচিব আবদুল মান্নান ভুঁইয়ার মধ্যে আলোচনা হয়েছিল। সেটা হয়েছিল অপ্রকাশ্যে। অপ্রকাশ্যে আলোচনা হওয়ার কারণে মানুষের মধ্যে এক ধরনের ধূম্রজাল তৈরি হয়েছিল। কেউ কিছু জানতে পারেনি আলোচনার বিষয়ে। ফলপ্রসূ কিছুই পাওয়া যায়নি সে সময়। আলোচনা অর্থবহ হতে হবে। এখন তো যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তা থেকে রক্ষা পেতে হলে সদিচ্ছার প্রসঙ্গটি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছার অভাব আছে- এমন কথা যাতে আমাদের বলতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের বিশ্বাসকে কেন্দ্র করে নিশ্চয়ই তারা এগিয়ে আসবে। আর এই মুহূর্তে তাদের যতই দূরত্ব থাক না কেন, আমরা আশা করি তাদের এই দূরত্ব ক্রমশ কমে আসবে।
যাঁরা বলেন, দুই নেত্রীর একত্রে বসা দরকার, আমি মনে করি, এর জন্য একটা ক্ষেত্র তৈরি হওয়া প্রয়োজন। শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনা করতে হলে বেশ কিছু ধাপ পেরিয়ে যেতে হবে। সেই ধাপগুলোই তো এখনো শুরু হয়নি। সুতরাং দুই নেত্রীর আলোচনা হলেও এখনই তেমন কোনো পরিবেশ তৈরি হয়নি। তাঁরা বসতে পারেন মোটামুটি চূড়ান্ত সময়ে।
আরেকটা বিষয়- আওয়ামী লীগ বলছে সংসদে গিয়ে আলোচনা করার জন্য। আমি মনে করি, প্রস্তাব হিসেবে এটা মন্দ নয়। বিরোধী দলের উচিত সরকারি দলের এই আহ্বানে সাড়া দেওয়া।
গ্রন্থনা : মোস্তফা হোসেইন
প্রশ্ন হচ্ছে, আলোচনা যদি শুরু হয়ে থাকে তা তলে তলে হবে কেন? আমরা মনে করি, জাতীয় কোনো বিষয় নিয়ে যদি আলোচনা হয়, তাহলে সেটা প্রকাশ্যে হওয়া উচিত। তবে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরির জন্য হয়তো একটা পর্যায় থাকতে পারে। সেখানে সব কিছুই প্রকাশ্যে হওয়াটা জরুরি নয়। এই মুহূর্তে জাতীয়ভাবে ব্যাপক আলোচিত বিষয় হচ্ছে, আগামী নির্বাচন কোন ধরনের সরকারের অধীনে হবে। ইতিপূর্বে কয়েকটি নির্বাচন যেমন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়েছে, সেই রীতিই থাকবে নাকি সংশোধিত সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে হবে- এটা প্রশ্নবোধক তো অবশ্যই। কারণ দেশের দুই বৃহৎ দল এই পরিপ্রেক্ষিতে দুই মেরুতে অবস্থান করছে। চিন্তার এই ফারাক কমিয়ে আনতে হবে জাতীয় স্বার্থে। এটা শুধু দুটি দলের সুবিধার জন্যই নয় কিংবা রাজনৈতিক দলগুলোর জন্যই জরুরি নয়; যাঁরা নির্বাচন পরিচালনা করবেন তাঁদের জন্যও জরুরি।
হাতে তো সময় বেশি নেই। একটি বছর দেখতে দেখতে চলে যাবে। এই সময়ের মধ্যেই সব প্রস্তুতি শেষ করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মতো প্রশাসনের বিষয়টিও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রশাসনও সেভাবে কাজ করতে প্রস্তুতি নিতে পারবে।
অন্যদিকে বিএনপি যেমন বলছে, তাদের বাদ দিয়ে নির্বাচন হতে পারে না। তেমনি আওয়ামী লীগও মনে করে, বিএনপির মতো বড় একটি দলকে বাদ দিয়ে নির্বাচন হলে সেটা গ্রহণযোগ্য হবে না। এ ক্ষেত্রে দুই দলের মধ্যে মতের কোনো বড় রকম পার্থক্য আছে বলে আমি মনে করি না। যেহেতু বড় একটি ইস্যুতে দুই পক্ষই সহমত পোষণ করে, সে কারণেও আলোচনার প্রয়োজনীয়তা এখন আরো বেড়ে গেছে।
সেই আলোচনা যদি অপ্রকাশ্যে হয়, তাহলে সেটা ঠিক হবে না। এর ফল কী দাঁড়ায়, এটা আমরা আগেও দেখেছি। আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল ও বিএনপির তৎকালীন মহাসচিব আবদুল মান্নান ভুঁইয়ার মধ্যে আলোচনা হয়েছিল। সেটা হয়েছিল অপ্রকাশ্যে। অপ্রকাশ্যে আলোচনা হওয়ার কারণে মানুষের মধ্যে এক ধরনের ধূম্রজাল তৈরি হয়েছিল। কেউ কিছু জানতে পারেনি আলোচনার বিষয়ে। ফলপ্রসূ কিছুই পাওয়া যায়নি সে সময়। আলোচনা অর্থবহ হতে হবে। এখন তো যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তা থেকে রক্ষা পেতে হলে সদিচ্ছার প্রসঙ্গটি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছার অভাব আছে- এমন কথা যাতে আমাদের বলতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের বিশ্বাসকে কেন্দ্র করে নিশ্চয়ই তারা এগিয়ে আসবে। আর এই মুহূর্তে তাদের যতই দূরত্ব থাক না কেন, আমরা আশা করি তাদের এই দূরত্ব ক্রমশ কমে আসবে।
যাঁরা বলেন, দুই নেত্রীর একত্রে বসা দরকার, আমি মনে করি, এর জন্য একটা ক্ষেত্র তৈরি হওয়া প্রয়োজন। শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনা করতে হলে বেশ কিছু ধাপ পেরিয়ে যেতে হবে। সেই ধাপগুলোই তো এখনো শুরু হয়নি। সুতরাং দুই নেত্রীর আলোচনা হলেও এখনই তেমন কোনো পরিবেশ তৈরি হয়নি। তাঁরা বসতে পারেন মোটামুটি চূড়ান্ত সময়ে।
আরেকটা বিষয়- আওয়ামী লীগ বলছে সংসদে গিয়ে আলোচনা করার জন্য। আমি মনে করি, প্রস্তাব হিসেবে এটা মন্দ নয়। বিরোধী দলের উচিত সরকারি দলের এই আহ্বানে সাড়া দেওয়া।
গ্রন্থনা : মোস্তফা হোসেইন
No comments