মহাজোট সরকারের চার বছর- বেড়েছে হত্যাকাণ্ড ও নারী নির্যাতনের ঘটনা by আনোয়ার পারভেজ
মহাজোট সরকারের চার বছরে বগুড়ায় ৩৫২টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বেশির ভাগ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে শহর ও শহরতলি এলাকায়। এর মধ্যে ২০১২ সালে জেলায় কয়েকটি আলোচিত হত্যাকাণ্ডসহ ৯০টি খুনের ঘটনা ঘটেছে।
হত্যার সঙ্গে বেড়েছে নারী নির্যাতনের ঘটনাও। বিগত চার বছরে জেলায় ৭২১টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ২০১২ সালে নারী নির্যাতনের ঘটনার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। বগুড়া জেলা পুলিশের অপরাধ বিভাগ থেকে পাওয়া বিগত চার বছরের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানতে চাইলে বগুড়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, শহর এবং গ্রামে ঘটা এসব হত্যাকাণ্ডের কারণগুলো আলাদা। শহর এলাকায় খুনের প্রধান কারণ আধিপত্য বিস্তার, জমি দখল, মাদক ও বালু ব্যবসা, টেন্ডারবাজির ভাগ-বাঁটোয়ারা এবং রাজনৈতিক বিরোধ। আর গ্রামাঞ্চলে ঘটা হত্যাকাণ্ডের অন্যতম কারণ জমি নিয়ে বিরোধ এবং পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহ। শহরে ঘটে যাওয়া বেশির ভাগ হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছে পেশাদার খুনিরা। বিগত বছরগুলোর তুলনায় ২০১২ সালে জেলায় অপরাধ কমলেও বছরের শেষ সময়ে এসে দু-তিনটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা পুলিশের সব অর্জনকে কিছুটা ম্লান করে দিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চার বছরে মোট ৩৫২টি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে ২০১২ সালে ৯০, ২০১১ সালে ৮৫, ২০১০ সালে ৮২ এবং ২০০৯ সালে ৯৫ জন খুন হয়। ২০১২ সালের আলোচিত হত্যাকাণ্ডের প্রায় সবই ঘটেছে বগুড়া শহরে। এর মধ্যে ২৯ নভেম্বর শহর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক সুজানুর রহমান, ১৭ ডিসেম্বর শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক খায়রুল আনাম, ১৯ ডিসেম্বর যুবলীগের কর্মী শামিম হোসেন, ২৫ এপ্রিল শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আশীষ কুমার রায়, ৫ এপ্রিল কাহালুর স্কুলছাত্র নাঈমুর রহমান, ১০ আগস্ট কিশোর অমিত ও রাহাত এবং ১২ অক্টোবর গাবতলী উপজেলার বাশার সরকার, ২২ জুন কলেজছাত্র নিরঞ্জন চক্রবর্তী হত্যাকাণ্ড বেশ আলোচিত ছিল। এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ খুনিদের গ্রেপ্তারে খুব একটা সফল হয়নি। এ ব্যাপারে বগুড়ার এসপি বলেন, আলোচিত এসব খুনের অধিকাংশ ঘটনায় পেশাদার খুনিরা অংশ নিয়েছে। এরা খুন করার পরপরই আত্মগোপনে চলে যায়। তবে বেশকিছু পেশাদার খুনি পুলিশের গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চার বছরে ৭২১টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। ২০১২ সালে নারী নির্যাতনের ঘটনা আগের বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। ২০১১ সালে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছিল ১২৯টি। ২০১২ সালে ঘটেছে ২০২টি। এ ছাড়া ২০১০ সালে ১৭৩টি ও ২০০৯ সালে ২১৭টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। চার বছরে নারীর প্রতি অ্যাসিড-সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ২২টি। এর মধ্যে ২০১২ সালে তিনটি, ২০১১ সালে সাতটি, ২০১০ সালে পাঁচটি এবং ২০০৯ সালে সাতটি অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে বগুড়ার সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, বেশির ভাগ নারী নির্যাতনের ঘটনা তদন্ত করার পর তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এ কারণে নারী নির্যাতনের মামলার সংখ্যা বেশি হলেও প্রকৃত নারী নির্যাতনের চিত্র কিছুটা ভিন্ন।
আইন সহায়তাদানকারী সংস্থা বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) বগুড়ার সমন্বয়ক আশরাফুন্নাহার বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতনের অনেক ঘটনা থানা বা আদালত পর্যন্ত গড়ায় না। সামাজিকভাবে এসব ঘটনা মীমাংসা করে দেওয়া হয়।
পুলিশ সূত্র আরও জানায়, গত চার বছরে পুলিশের ওপর আক্রমণ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাধা দেওয়ার মতো অপরাধও বেড়েছে। এ সময়ের মধ্যে পুলিশের ওপর আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে ১৭টি। এ ছাড়া চার বছরে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ৪৫টি, চুরির ঘটনা ৪২৮টি এবং ডাকাতি ও দস্যুতার মামলা রেকর্ড হয়েছে ৭৮টি। বেড়েছে মামলার সংখ্যাও। চার বছরে জেলাজুড়ে নিয়মিত অপরাধ ছাড়াও বিভিন্ন ঘটনায় আট হাজার ৩২টি মামলা হয়েছে। অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে মামলা হয়েছে ৬২টি।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে শহরে হত্যাকাণ্ডসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় মানুষ শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
বগুড়া পৌরসভার মেয়র এ কে এম মাহবুবুর রহমান বলেন, ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন নেতার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ফলে শহরবাসী আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। বিগত চার বছরে বগুড়া শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিক থেকে বিবেচনা করলে মহাজোটের সরকারের সফলতার চেয়ে ব্যর্থতার পাল্লা বেশি ভারী হবে।
জানতে চাইলে বগুড়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, শহর এবং গ্রামে ঘটা এসব হত্যাকাণ্ডের কারণগুলো আলাদা। শহর এলাকায় খুনের প্রধান কারণ আধিপত্য বিস্তার, জমি দখল, মাদক ও বালু ব্যবসা, টেন্ডারবাজির ভাগ-বাঁটোয়ারা এবং রাজনৈতিক বিরোধ। আর গ্রামাঞ্চলে ঘটা হত্যাকাণ্ডের অন্যতম কারণ জমি নিয়ে বিরোধ এবং পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহ। শহরে ঘটে যাওয়া বেশির ভাগ হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছে পেশাদার খুনিরা। বিগত বছরগুলোর তুলনায় ২০১২ সালে জেলায় অপরাধ কমলেও বছরের শেষ সময়ে এসে দু-তিনটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা পুলিশের সব অর্জনকে কিছুটা ম্লান করে দিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চার বছরে মোট ৩৫২টি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে ২০১২ সালে ৯০, ২০১১ সালে ৮৫, ২০১০ সালে ৮২ এবং ২০০৯ সালে ৯৫ জন খুন হয়। ২০১২ সালের আলোচিত হত্যাকাণ্ডের প্রায় সবই ঘটেছে বগুড়া শহরে। এর মধ্যে ২৯ নভেম্বর শহর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক সুজানুর রহমান, ১৭ ডিসেম্বর শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক খায়রুল আনাম, ১৯ ডিসেম্বর যুবলীগের কর্মী শামিম হোসেন, ২৫ এপ্রিল শহর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আশীষ কুমার রায়, ৫ এপ্রিল কাহালুর স্কুলছাত্র নাঈমুর রহমান, ১০ আগস্ট কিশোর অমিত ও রাহাত এবং ১২ অক্টোবর গাবতলী উপজেলার বাশার সরকার, ২২ জুন কলেজছাত্র নিরঞ্জন চক্রবর্তী হত্যাকাণ্ড বেশ আলোচিত ছিল। এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ খুনিদের গ্রেপ্তারে খুব একটা সফল হয়নি। এ ব্যাপারে বগুড়ার এসপি বলেন, আলোচিত এসব খুনের অধিকাংশ ঘটনায় পেশাদার খুনিরা অংশ নিয়েছে। এরা খুন করার পরপরই আত্মগোপনে চলে যায়। তবে বেশকিছু পেশাদার খুনি পুলিশের গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চার বছরে ৭২১টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। ২০১২ সালে নারী নির্যাতনের ঘটনা আগের বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। ২০১১ সালে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছিল ১২৯টি। ২০১২ সালে ঘটেছে ২০২টি। এ ছাড়া ২০১০ সালে ১৭৩টি ও ২০০৯ সালে ২১৭টি নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। চার বছরে নারীর প্রতি অ্যাসিড-সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ২২টি। এর মধ্যে ২০১২ সালে তিনটি, ২০১১ সালে সাতটি, ২০১০ সালে পাঁচটি এবং ২০০৯ সালে সাতটি অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে বগুড়ার সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, বেশির ভাগ নারী নির্যাতনের ঘটনা তদন্ত করার পর তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এ কারণে নারী নির্যাতনের মামলার সংখ্যা বেশি হলেও প্রকৃত নারী নির্যাতনের চিত্র কিছুটা ভিন্ন।
আইন সহায়তাদানকারী সংস্থা বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) বগুড়ার সমন্বয়ক আশরাফুন্নাহার বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতনের অনেক ঘটনা থানা বা আদালত পর্যন্ত গড়ায় না। সামাজিকভাবে এসব ঘটনা মীমাংসা করে দেওয়া হয়।
পুলিশ সূত্র আরও জানায়, গত চার বছরে পুলিশের ওপর আক্রমণ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাধা দেওয়ার মতো অপরাধও বেড়েছে। এ সময়ের মধ্যে পুলিশের ওপর আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে ১৭টি। এ ছাড়া চার বছরে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ৪৫টি, চুরির ঘটনা ৪২৮টি এবং ডাকাতি ও দস্যুতার মামলা রেকর্ড হয়েছে ৭৮টি। বেড়েছে মামলার সংখ্যাও। চার বছরে জেলাজুড়ে নিয়মিত অপরাধ ছাড়াও বিভিন্ন ঘটনায় আট হাজার ৩২টি মামলা হয়েছে। অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে মামলা হয়েছে ৬২টি।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে শহরে হত্যাকাণ্ডসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় মানুষ শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
বগুড়া পৌরসভার মেয়র এ কে এম মাহবুবুর রহমান বলেন, ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন নেতার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ফলে শহরবাসী আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। বিগত চার বছরে বগুড়া শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিক থেকে বিবেচনা করলে মহাজোটের সরকারের সফলতার চেয়ে ব্যর্থতার পাল্লা বেশি ভারী হবে।
No comments