হারাতে বসেছে অ্যাংলো ইন্ডিয়ান সংস্কৃতি
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার হাত ধরে উপমহাদেশে অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানরা (মিশ্র ব্রিটিশ ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তি) একটি পৃথক জাতিসত্তা হিসেবে নিজেদের শক্ত স্থানে দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু কালের পরিক্রমায় তাদের ভিত নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। তারা হারাতে বসেছে নিজস্ব সংস্কৃতি।
পরিস্থিতি এমন যে কেবল উপমহাদেশেই নয়, বরং ব্রিটেনেও এই জাতিসত্তা এখন বিলুপ্তির পথে। এমন অবস্থায় এই গোষ্ঠীর ২০০০ লোক কলকাতায় এক পুনর্মিলনীতে অংশ নিতে চলেছেন।
ভারতীয় মুদ্রা রুপি গ্রহণকারী ব্রিটেনের প্রথম পানশালাটি পশ্চিম লন্ডনের সাউথহল এলাকায়। এখানকার রেলস্টেশনে রয়েছে পাশাপাশি ইংরেজি ও পাঞ্জাবি ভাষায় লেখা প্রতীকী চিহ্ন। এলাকার প্রধান সড়কের পাশ ঘেঁষে সারা বছর দেখা যায় খাবারের ছোট ছোট দোকান, পাওয়া যায় রংবেরঙের শাড়ি, শোনা যায় ‘ভাঙড়া’ গান।
বিশেষজ্ঞ ক্রিস গ্রিফিথস ছিলেন স্থানীয় অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানদের একজন। বলছিলেন তাঁর অনুভূতির কথা, ‘এটি আমার নিজ শহর। ভারতীয় বংশোদ্ভূত লোকজন-অধ্যুষিত এই স্থানে আমি আমার জীবনের প্রথম ২০টি বছর পার করেছি। কিন্তু আমি ছিলাম সংখ্যালঘু ১০ ভাগ শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশের একজন। তবে সেখান থেকে চলে আসার আগে আমার অ্যাভিনিউয়ে আমিই ছিলাম একমাত্র সাদা চামড়ার মানুষ।’
ক্রিস গ্রিফিথস আরও বলেন, ‘আমার মা ছিলেন কলকাতার কাছে জমশেদপুর থেকে উঠে আসা মানুষ। আর বাবা ছিলেন ব্রিটেনের ওয়েলসের বাসিন্দা। তবে আমরা সহোদরেরা সাদা চামড়া ও নীল রঙা চোখ নিয়ে জন্মেছি। বিশ্বজুড়েই অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানরা বিলুপ্তির মতো যে বড় সমস্যার সম্মুখীন, আমরা তারই লক্ষণাত্মক (সিম্পটোমেটিক)।’
গ্রিফিথস বলেন, ব্রিটেন ও কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোতে এই গোষ্ঠীর লোকেরা তাদের ‘ভারতীয় কৃষ্টি’ হারাচ্ছে। অন্যদিকে, ভারতে তারা হারাচ্ছে ‘ইংরেজ কৃষ্টি’। আবার অধিকাংশ অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানই যতটা না ভারতীয় কৃষ্টির অধিকারী, তার চেয়ে বেশি ইংরেজ কৃষ্টির। তারা ব্রিটিশদের অনুকরণে পোশাক পরে, ইংরেজি ভাষায় কথা বলে, খ্রিষ্টধর্ম-কর্ম মেনে চলে। খাবার-দাবারেও তাদের পছন্দ ভারতীয়দের থেকে আলাদা।
অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, গত কয়েক দশকে অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানের সংজ্ঞাই পাল্টে গেছে। বর্তমান সময়ে যেকোনো মিশ্র ব্রিটিশ-ভারতীয় বংশপরিচয়কেই অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান বলা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে এই গোষ্ঠীর পরিচয় নিহিত আছে আজ থেকে ৩০০ বছর আগে উপমহাদেশে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলের মধ্যে।
সর্বশেষ ১৯৪৭ সালে যখন ব্রিটিশরা উপমহাদেশ ছেড়ে চলে যায়, তখন রেখে যায় তিন লাখ পশ্চিমা ধাঁচের মিশ্র জনগোষ্ঠী। ব্রিটিশদের চলে যেতে দেখে এরা খুশি হয়নি। গত শতকের পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে এরা কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ‘জন্মভূমি’ ব্রিটেনে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়তে শুরু করে।
ভারতে এ মুহূর্তে ঠিক কতসংখ্যক অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান রয়েছে, সে বিষয়ে ১৯৪১ সালের পর আর গণনা হয়নি। অবশ্য এই সংখ্যা সোয়া লাখ বলে ধারণা করা হয়। এদের অধিকাংশই থাকে কলকাতা ও মাদ্রাজে। আর বিয়ে করছে ভারতীয়দের এবং মিশে যাচ্ছে ভারতীয় সংস্কৃতিতে। আর এভাবেই হারিয়ে ফেলা হচ্ছে বহু বছরের পুরোনো নিজস্ব সংস্কৃতি। বিবিসি।
ভারতীয় মুদ্রা রুপি গ্রহণকারী ব্রিটেনের প্রথম পানশালাটি পশ্চিম লন্ডনের সাউথহল এলাকায়। এখানকার রেলস্টেশনে রয়েছে পাশাপাশি ইংরেজি ও পাঞ্জাবি ভাষায় লেখা প্রতীকী চিহ্ন। এলাকার প্রধান সড়কের পাশ ঘেঁষে সারা বছর দেখা যায় খাবারের ছোট ছোট দোকান, পাওয়া যায় রংবেরঙের শাড়ি, শোনা যায় ‘ভাঙড়া’ গান।
বিশেষজ্ঞ ক্রিস গ্রিফিথস ছিলেন স্থানীয় অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানদের একজন। বলছিলেন তাঁর অনুভূতির কথা, ‘এটি আমার নিজ শহর। ভারতীয় বংশোদ্ভূত লোকজন-অধ্যুষিত এই স্থানে আমি আমার জীবনের প্রথম ২০টি বছর পার করেছি। কিন্তু আমি ছিলাম সংখ্যালঘু ১০ ভাগ শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশের একজন। তবে সেখান থেকে চলে আসার আগে আমার অ্যাভিনিউয়ে আমিই ছিলাম একমাত্র সাদা চামড়ার মানুষ।’
ক্রিস গ্রিফিথস আরও বলেন, ‘আমার মা ছিলেন কলকাতার কাছে জমশেদপুর থেকে উঠে আসা মানুষ। আর বাবা ছিলেন ব্রিটেনের ওয়েলসের বাসিন্দা। তবে আমরা সহোদরেরা সাদা চামড়া ও নীল রঙা চোখ নিয়ে জন্মেছি। বিশ্বজুড়েই অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানরা বিলুপ্তির মতো যে বড় সমস্যার সম্মুখীন, আমরা তারই লক্ষণাত্মক (সিম্পটোমেটিক)।’
গ্রিফিথস বলেন, ব্রিটেন ও কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোতে এই গোষ্ঠীর লোকেরা তাদের ‘ভারতীয় কৃষ্টি’ হারাচ্ছে। অন্যদিকে, ভারতে তারা হারাচ্ছে ‘ইংরেজ কৃষ্টি’। আবার অধিকাংশ অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানই যতটা না ভারতীয় কৃষ্টির অধিকারী, তার চেয়ে বেশি ইংরেজ কৃষ্টির। তারা ব্রিটিশদের অনুকরণে পোশাক পরে, ইংরেজি ভাষায় কথা বলে, খ্রিষ্টধর্ম-কর্ম মেনে চলে। খাবার-দাবারেও তাদের পছন্দ ভারতীয়দের থেকে আলাদা।
অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, গত কয়েক দশকে অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানের সংজ্ঞাই পাল্টে গেছে। বর্তমান সময়ে যেকোনো মিশ্র ব্রিটিশ-ভারতীয় বংশপরিচয়কেই অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান বলা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে এই গোষ্ঠীর পরিচয় নিহিত আছে আজ থেকে ৩০০ বছর আগে উপমহাদেশে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলের মধ্যে।
সর্বশেষ ১৯৪৭ সালে যখন ব্রিটিশরা উপমহাদেশ ছেড়ে চলে যায়, তখন রেখে যায় তিন লাখ পশ্চিমা ধাঁচের মিশ্র জনগোষ্ঠী। ব্রিটিশদের চলে যেতে দেখে এরা খুশি হয়নি। গত শতকের পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে এরা কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ‘জন্মভূমি’ ব্রিটেনে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়তে শুরু করে।
ভারতে এ মুহূর্তে ঠিক কতসংখ্যক অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান রয়েছে, সে বিষয়ে ১৯৪১ সালের পর আর গণনা হয়নি। অবশ্য এই সংখ্যা সোয়া লাখ বলে ধারণা করা হয়। এদের অধিকাংশই থাকে কলকাতা ও মাদ্রাজে। আর বিয়ে করছে ভারতীয়দের এবং মিশে যাচ্ছে ভারতীয় সংস্কৃতিতে। আর এভাবেই হারিয়ে ফেলা হচ্ছে বহু বছরের পুরোনো নিজস্ব সংস্কৃতি। বিবিসি।
No comments