স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা ক্রমেই দুর্বল হচ্ছে by অমিতোষ পাল
স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী করার অঙ্গীকার পূরণের দিকে নজর দেয়নি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গত চার বছরে কুমিল্লা ও রংপুর পৌরসভাকে সিটি করপোরেশনে উন্নীত করা ছাড়া আর তেমন কিছুই করা হয়নি।
স্থানীয় সরকারের চারটি স্তরের মধ্যে উপজেলা ও জেলা পরিষদকে ঠুঁটো জগন্নাথ করে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দুটি সিটি করপোরেশন চলছে অনির্বাচিত ব্যক্তিদের দিয়ে। একমাত্র ইউনিয়ন পরিষদ চলছে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নেতৃত্বে। জনগণের ক্ষমতায়নের কথা সংবিধানে নিশ্চিত করার নির্দেশনা থাকলেও সেটা বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ নেই।
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. বদিউল আলম মজুমদার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সরকারের ওয়াদা ছিল, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করা, স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা, কৃষি ও পল্লীজীবনে গতিশীলতা আনা। সেটা তারা করতে পারেনি। বরং দুর্বল করেছে। উপজেলা ব্যবস্থাকে অকার্যকর করে রেখেছে। নির্বাচন না করে জেলা পরিষদে প্রশাসক বসানোর মাধ্যমে সংবিধানকে লঙ্ঘন করেছে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনও তারা করেনি। এমনকি বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গঠিত স্থানীয় সরকার কমিশনকে বাতিল করা হয়েছে। এসবের মাধ্যমে কিভাবে জনস্বার্থের উন্নয়ন ঘটবে, তা বোধগম্য নয়। এখন আমাদের মন্ত্রিরা বলছেন, তাঁরা যেসব অঙ্গীকার পূরণ করতে পারেননি, আগামী টার্মে সেগুলোকে অগ্রাধিকার দেবেন।'
উল্লেখ্য, সংবিধানে বলা হয়েছে, '...প্রশাসনের সকল পর্যায়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হইবে।' সংবিধানে আরো উল্লেখ রয়েছে, 'আইন অনুযায়ী নির্বাচিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠানসমূহের ওপর প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক প্রশাসনিক একাংশের স্থানীয় শাসনের ভার প্রদান করা হবে।' কিন্তু বাস্তবে এসব বিষয়ে তেমন নজর লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
রাজধানীর মানুষকে উন্নত সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে ২০১১ সালের নভেম্বরে ঢাকা সিটি করপোরেশনকে ভেঙে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নামে দুটি পৃথক সেবা সংস্থা করা হলেও সেখানে এখন পর্যন্ত নির্বাচন হয়নি। দুটি করপোরেশনই চলছে মেয়রের পরিবর্তে আমলা প্রশাসক দিয়ে। অথচ বিভাজনের তিন মাসের মধ্যেই নির্বাচন দিয়ে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে মেয়র নির্বাচনের বিধান ছিল। সেটাকে সংশোধন করে প্রশাসকের স্থায়িত্ব তিন মাস নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে প্রতি তিন মাস পর পর প্রশাসকও পরিবর্তন হচ্ছে। এ দুটি সিটি করপোরেশন তৈরির পর থেকে রাজধানীর কোনো ওয়ার্ডে এখন আর কাউন্সিলর নেই। ফলে জনগণ নানাভাবে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। অথচ নাগরিক সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতেই ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দুই ভাগ করা হয়েছিল।
অন্যদিকে ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হলেও নির্বাচিত চেয়ারম্যানদের এক প্রকার ক্ষমতাশূন্য করে রাখা হয়েছে। তাঁরা এলাকার উন্নয়নকাজে তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারেন না। এ নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানরা নানা আন্দোলন করেছেন। ১৭টি দপ্তরের সভাপতি করার দাবি জানালেও তার বাস্তবায়ন করা হয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদেরই সেখানে সভাপতি হিসেবে রাখা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে যারা কেবল আইন প্রণয়নের জন্য নির্বাচিত হন, সেই সংসদ সদস্যরাই সব উন্নয়নকাজ তদারকি করছেন। অথচ এমনও উপজেলা চেয়ারম্যান রয়েছেন, যাঁরা সংসদীয় আসনের চেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষের ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। আবার তিন মাসের মধ্যে ২০১১ সালে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদেরও জনপ্রতিনিধিদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত করার আশ্বাস দিয়ে দেশের ৬৪টি জেলায় উপমন্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে জেলা পরিষদে প্রশাসক মনোনীত করে সরকার। এরই মধ্যে এক বছর পার হলেও সেটা করা হয়নি। আবার মনোনীত জেলা প্রশাসকদেরও তেমন কোনো ক্ষমতা নেই। এলাকার উন্নয়ন তদারকিতেও তাঁরা তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারেন না। সর্বশেষ তাঁদের আর্থিক ক্ষমতা পাঁচ লাখ টাকা করার বিধান করেছে সরকার।
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. বদিউল আলম মজুমদার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সরকারের ওয়াদা ছিল, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করা, স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা, কৃষি ও পল্লীজীবনে গতিশীলতা আনা। সেটা তারা করতে পারেনি। বরং দুর্বল করেছে। উপজেলা ব্যবস্থাকে অকার্যকর করে রেখেছে। নির্বাচন না করে জেলা পরিষদে প্রশাসক বসানোর মাধ্যমে সংবিধানকে লঙ্ঘন করেছে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনও তারা করেনি। এমনকি বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গঠিত স্থানীয় সরকার কমিশনকে বাতিল করা হয়েছে। এসবের মাধ্যমে কিভাবে জনস্বার্থের উন্নয়ন ঘটবে, তা বোধগম্য নয়। এখন আমাদের মন্ত্রিরা বলছেন, তাঁরা যেসব অঙ্গীকার পূরণ করতে পারেননি, আগামী টার্মে সেগুলোকে অগ্রাধিকার দেবেন।'
উল্লেখ্য, সংবিধানে বলা হয়েছে, '...প্রশাসনের সকল পর্যায়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হইবে।' সংবিধানে আরো উল্লেখ রয়েছে, 'আইন অনুযায়ী নির্বাচিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠানসমূহের ওপর প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক প্রশাসনিক একাংশের স্থানীয় শাসনের ভার প্রদান করা হবে।' কিন্তু বাস্তবে এসব বিষয়ে তেমন নজর লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
রাজধানীর মানুষকে উন্নত সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে ২০১১ সালের নভেম্বরে ঢাকা সিটি করপোরেশনকে ভেঙে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নামে দুটি পৃথক সেবা সংস্থা করা হলেও সেখানে এখন পর্যন্ত নির্বাচন হয়নি। দুটি করপোরেশনই চলছে মেয়রের পরিবর্তে আমলা প্রশাসক দিয়ে। অথচ বিভাজনের তিন মাসের মধ্যেই নির্বাচন দিয়ে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে মেয়র নির্বাচনের বিধান ছিল। সেটাকে সংশোধন করে প্রশাসকের স্থায়িত্ব তিন মাস নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে প্রতি তিন মাস পর পর প্রশাসকও পরিবর্তন হচ্ছে। এ দুটি সিটি করপোরেশন তৈরির পর থেকে রাজধানীর কোনো ওয়ার্ডে এখন আর কাউন্সিলর নেই। ফলে জনগণ নানাভাবে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। অথচ নাগরিক সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতেই ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দুই ভাগ করা হয়েছিল।
অন্যদিকে ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হলেও নির্বাচিত চেয়ারম্যানদের এক প্রকার ক্ষমতাশূন্য করে রাখা হয়েছে। তাঁরা এলাকার উন্নয়নকাজে তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারেন না। এ নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানরা নানা আন্দোলন করেছেন। ১৭টি দপ্তরের সভাপতি করার দাবি জানালেও তার বাস্তবায়ন করা হয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদেরই সেখানে সভাপতি হিসেবে রাখা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে যারা কেবল আইন প্রণয়নের জন্য নির্বাচিত হন, সেই সংসদ সদস্যরাই সব উন্নয়নকাজ তদারকি করছেন। অথচ এমনও উপজেলা চেয়ারম্যান রয়েছেন, যাঁরা সংসদীয় আসনের চেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষের ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। আবার তিন মাসের মধ্যে ২০১১ সালে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদেরও জনপ্রতিনিধিদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত করার আশ্বাস দিয়ে দেশের ৬৪টি জেলায় উপমন্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে জেলা পরিষদে প্রশাসক মনোনীত করে সরকার। এরই মধ্যে এক বছর পার হলেও সেটা করা হয়নি। আবার মনোনীত জেলা প্রশাসকদেরও তেমন কোনো ক্ষমতা নেই। এলাকার উন্নয়ন তদারকিতেও তাঁরা তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারেন না। সর্বশেষ তাঁদের আর্থিক ক্ষমতা পাঁচ লাখ টাকা করার বিধান করেছে সরকার।
No comments