বাদুড় ও ডলফিনের ডিএনএ একই ধরনের- জুবায়ের বারি
বিজ্ঞানীরা বাদুড় ও ডলফিনের ডিএনএর মধ্যে বিস্ময়কর সাদৃশ্য খুঁজে পেয়েছেন। যে জিন থেকে এট দুই প্রাণী উচ্চ শব্দতরঙ্গ শনাক্ত করার ৰমতা পায় তা থেকে একেবারে একই ধরনের এমিনো এ্যাসিড নিঃসৃত হয়। উভয় প্রাণীর ৰেত্রেই তা সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হয়ে থাকে।
গবেষকগণ 'কারেন্ট বায়োলজি' সাময়িকীতে এ বিষয়টি তুলে ধরেছেন। সম্ভবত এই প্রথম সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটি সত্তার মধ্যে বিবর্তনজনিত বৈশিষ্ট্য তুলে ধরতে জিনগত সাদৃশ্য প্রাধান্য পেয়েছে। প্রকৃতিতে বিবর্তনের যে ঘটনা ঘটেছে তা একই শ্রেণীর বা গোত্রের প্রাণীদের ৰেত্রেই হয়েছে। বৈচিত্র্যময় প্রাণী গোষ্ঠীর ৰেত্রে স্বতন্ত্রভাবে বিবর্তনের এই ধারা বিকশিত হয়েছে। দৃষ্টানত্ম হিসেবে হাতি ও ওয়ালরাশের দাঁতের সাদৃশ্য কিংবা জোনাকি ও জেলিফিশের মধ্যে জৈবিকভাবে সৃষ্ট আলোর বিষয়টি উলেস্নখ করা যায়। কুটন মেরিজ স্কুল অব বায়োলজিক্যাল এ্যান্ড কেমিক্যাল সায়েন্সেসের ড. স্টিফেন রোসিটাব বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, এটা অঙ্গ সংস্থানগত মাত্রায় সাধারণই বলা চলে। কিন্তু ডিএনএ পর্যায়ে এমনটা ঘটেনি। কেননা একই ধরনের সমাধানে পেঁৗছার জন্য ভিন্ন ভিন্ন উপায় রয়েছে।তিনি বলেন, ডিএনএর সমধর্মিতার যোগসূত্র স্থাপনের এই ঘটনা আমি মনে করি অনন্য এবং বিশেষ করে একটি জটিল ফেনোটাইপের ৰেত্রে বহু বাদুড় এবং দাঁতওয়ালা তিমি ডলফিনের মতো ব্যতিক্রমী শ্রবণ শক্তির অধিকারী। তারা উচ্চ তরঙ্গ বিশিষ্ট শব্দ সৃষ্টি করে এবং এর ফিরে আসা প্রতিধ্বনি শুনে শিকার ধরে থাকে। এৰেত্রে তাদের অনত্মঃকর্ণের ৰুদ্র ৰুদ্র রোম প্রতিধ্বনি চিহ্নিতকরণের মাধ্যমে শিকারের অবস্থান নির্ণয়ে গুরম্নত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। অনত্মঃকর্ণের এই ৰুদ্র ৰুদ্র রোম শব্দ দ্বারা সৃষ্ট প্রতিধ্বনি শনাক্ত করতে নড়াচড়া করে থাকে।
তাদের সূক্ষ্ম তৎপরতা প্রেস্টিন নামক একটি নির্দিষ্ট প্রোটিন দ্বারা তাড়িত হয় যা প্রেস্টিন নামেই একটি জিন দ্বারা পালাক্রমে ক্রিয়াশীল।
কারেন্ট বায়োলজিতে প্রকাশিত দুটি গবেষণা থেকে দেখা যায়, বাদুড় ও ডলফিনের জিন সময়ের ধারায় একইভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। এ সম্পর্কে ড. রোসিটার বলেন, আমরা এমিনো এ্যাসিড পরিবর্তনের এক ৰেত্রের সন্ধান পেয়েছি যা দুটি প্রম্নপের জন্য অভিন্ন। সমানত্মরাল ও সমধমর্ী হিসেবে এটা বিকশিত হয়েছে।
উভয় গবেষক দল প্রেস্টিনে এসব পরিবর্তনের প্রমাণ পেয়েছেন যা প্রতিধ্বনির মাধ্যমে প্রাণীদের শিকার চিহ্নিত করতে পারে।
গবেষণায় নেতৃত্ব দানকারী যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান ইউনিভার্সিটির প্রফেসর জিয়ানঝি ঝাং বলেন, গবেষণার এই ফল থেকে বোঝা যায় উচ্চ-শব্দতরঙ্গ শোনার জন্য কোন সত্মন্যপায়ী প্রাণীর একটি না হলেও খুবই সীমিত উপায় রয়েছে।
এ ধরনের গবেষণা মানুষের জিনগত তাৎপর্য অনুধাবনের যে ব্যাপক প্রচেষ্টা চলছে সেৰেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।
No comments