হল-মার্ক কেলেঙ্কারি- পর্ষদকে ‘ম্যানেজ’ করতে ঘুষ নেন পরিচালক by অনিকা ফারজানা
সোনালী ব্যাংকের একাধিক পরিচালক হল-মার্ক গ্রুপের অর্থ জালিয়াতির খবর জানতেন। তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে সেই তথ্য পর্ষদকে জানাননি, বরং ঘুষ খেয়ে আরও জালিয়াতির সুযোগ করে দিয়েছেন।
হল-মার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন, তিনি নিজ হাতে একজন পরিচালককে ঘুষ দিয়েছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও আদালত সূত্র জানায়, ঘুষ নেওয়া পরিচালকদের মধ্যে একজন হচ্ছেন সাইমুম সরওয়ার ওরফে কমল। ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা এখন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। গত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে লড়ে হেরে যান তিনি। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সেপ্টেম্বর থেকে তিনি আর পরিচালক নেই।
তানভীর মাহমুদ আদালতে জবানবন্দিতে বলেছেন, ‘পর্ষদকে ম্যানেজ’ করতে তিন কোটি টাকা লাগবে এবং এই অর্থ দিতে হবে সাইমুম সরওয়ারকে। সোনালী ব্যাংকের বারান্দায় ঘুষের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলেও তিনি জবানবন্দি দিয়েছেন।
তানভীর মাহমুদ একজন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে এই জবানবন্দি দেন গত ১৮ অক্টোবর। এ সময় তানভীর মাহমুদ অর্থ জালিয়াতিতে যেসব ব্যাংক কর্মকর্তা তাঁকে সহায়তা করেছেন, তাঁদের নাম বলেছেন। দুদক এই জবানবন্দি অনুযায়ী এরই মধ্যে তিনজন ব্যাংক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু কোনো পরিচালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং বারবার বলা হচ্ছে, সোনালি ব্যাংকের পর্ষদ হল-মার্ক কেলেঙ্কারির দায় এড়াতে পারে না। তবে পর্ষদ প্রত্যক্ষভাবে দায়ী নয়। কারণ, পর্ষদের অনুমোদন নিয়ে হল-মার্ককে অর্থ দেওয়া হয়নি, অর্থ নেওয়ার তথ্য পর্ষদ জানত না। অর্থ মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনেও পর্ষদ নিয়ে একই ধরনের কথা বলা হয়েছে। অথচ পর্ষদের একজন সদস্যের ঘুষ নেওয়ার তথ্য দুদকের কাছেই আছে।
সোনালী ব্যাংকের সাবেক পর্ষদের পাঁচজন পরিচালক (মেয়াদ শেষ হওয়ায় এখন নতুন পর্ষদ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে) সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে সরওয়ার কামাল পর্ষদকে ‘ম্যানেজ’ করতে অর্থ নিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে আরও পরিচালক অর্থ নিয়েছেন বলে জানা গেছে। রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণেই পর্ষদের ভূমিকাকে আড়াল করা হচ্ছে বলে ব্যাংক ও দুদক সূত্র জানায়।
তবে দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান এ বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুরো বিষয়টি তদন্তাধীন। এখনো চূড়ান্ত কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে কারও সংশ্লিষ্টতা তদন্তকালে পাওয়া গেলে তাঁর বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সোনালী ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, একাধিক পরিচালক যে হল-মার্ক গ্রুপকে সহায়তা দিচ্ছিলেন, তা ব্যাংকের অনেকেই জানতেন। এ ব্যাপারে সাইমুম সরওয়ারের ভূমিকা প্রসঙ্গে ব্যাংক সূত্রটি জানায়, তিনিসহ কয়েকজন পর্ষদ সদস্য সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখার ব্যবস্থাপক এ কে এম আজিজুর রহমানকে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়েছেন। পর্ষদ সভায় তাঁরা আজিজুর রহমানের প্রশংসা করতেন। তিনি যেন রূপসী বাংলা শাখার দায়িত্বে থেকে যান, সে ব্যবস্থাও তাঁরা করেছেন। পর্ষদের সিদ্ধান্তেই একজন ‘প্রতিভাবান ব্যাংকার’ হিসেবে নিয়ম ভেঙে তাঁকে বিদেশ সফরে পাঠানো হয়। এসব কারণে পর্ষদ থেকে আজিজুর রহমানের জন্য কখনো কোনো সমস্যা হয়নি।
রূপসী বাংলা (সাবেক শেরাটন) শাখা থেকে হল-মার্ক গ্রুপ ব্যাংকের সহায়তায় জালিয়াতি করে দুই হাজার ৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেছে। শাখা ব্যবস্থাপক আজিজুর রহমান এ কাজে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন বলে তানভীর মাহমুদ জবানবন্দিতে বলেছেন।
৪ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংক রূপসী বাংলা শাখা পরিদর্শন করতে গেলে হল-মার্ক কেলেঙ্কারির তথ্য সোনালী ব্যাংকে জানাজানি হয়। তানভীরের জবানবন্দি অনুযায়ী, এর পরও তাঁরা ওই শাখা থেকে অর্থ নিয়েছেন এবং এপ্রিল মাসেই তিনি সাইমুম সরওয়ারকে ‘পর্ষদ ম্যানেজ’ করতে ঘুষ দিয়েছেন।
তবে ঘুষ নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন সাইমুম সরওয়ার। গতকাল প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কুৎসা রটানোর জন্য এ কথা বলা হচ্ছে। একটি মহল আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার চেষ্টা করছে।’
এ বিষয়ে তানভীর মাহমুদ জবানবন্দিতে বলেছেন, ‘২০১২ সালের সম্ভবত এপ্রিলে তসলিম (টি অ্যান্ড ব্রাদার্স গ্রুপের পরিচালক তসলিম হাসান), মালেক (নকশী নীট কম্পোজিটের মালিক ও হল-মার্কের সাবেক পরিচালক আবদুল মালেক), রাজা (প্যারাগন গ্রুপের মালিক ও হল-মার্কের সাবেক জিএম সাইফুল ইসলাম রাজা), ম্যানেজার আজিজ সাহেব (এ কে এম আজিজুর রহমান) ও ডিএনএ স্পোর্টসের মালিক (জবানবন্দির অন্য জায়গায় তাঁর নাম শিখা বলা হয়েছে) আমাকে ব্যাংকের বারান্দায় ডেকে নিয়ে বলে, ব্যাংকের পরিচালনা পর্যদ ম্যানেজ করতে তিন কোটি টাকা লাগবে। এবং এটা বোর্ড সদস্য সাইমুম সরোয়ার কমলকে দিতে হবে।’
জবানবন্দিতে তানভীর মাহমুদ এ বিষয়ে আরও বলেছেন, ‘আমি একপর্যায়ে রাগারাগি করলাম। তাঁরা আমাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। তসলিম সাহেব বলে, “আমি নিজে দেব এক কোটি ২০ লাখ টাকা, হল-মার্ক দেবে এক কোটি এবং বাকি ৮০ লাখ টাকা মালেক, রাজা ও শিখা দেবে।” আমি রাগারাগি করে চলে আসি। আজিজ সাহেবসহ সবাই আমাকে ফোন করে টাকার বিষয়ে খুব বিরক্ত করতে থাকেন। তসলিম বলে, সে নাকি ইতিমধ্যে কমলকে (সাইমুম সরওয়ার) এক কোটি ২০ লাখ টাকা দিয়ে দিয়েছে। আমাকে চাপ দেওয়ার একপর্যায়ে তুষারকে বলি কমলকে ৫০ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য।’
কীভাবে টাকা দেওয়া হয়েছে এবং সাইমুম সরওয়ার যে তাঁকেও ফোন করে টাকা চাইতেন, সে কথাও বলেছেন তানভীর মাহমুদ। তাঁর ভাষায়, ‘এটা এপ্রিল মাসের ঘটনা। তুষার (তুষার আহমেদ, হল-মার্ক গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক, এখন গ্রেপ্তার অবস্থায় আছেন) একদিন তসলিম সাহেবের সামনে ব্যাংকের বারান্দায় কমলকে ৫০ লাখ টাকা দেয়। কমলও আমাকে ফোন দিয়ে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিত। কয়দিন পর তসলিম ও তাঁর এক পরিচালক (ডাইরেক্টর) আমার বাসায় গিয়ে বাকি ৫০ লাখ টাকা চায়। আমি রাগারাগি করে দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তসলিম অজ্ঞান হয়ে যান। আমার জিএম তুষার ও তসলিমের পরিচালক আতিকুর রহমান তখন তসলিমকে অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে যান।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য তসলিম হাসান, আবদুল মালেক বা সাইফুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি। তাঁরা পলাতক বলে জানা গেছে।
দুদক হল-মার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় ১১টি মামলা করেছে। তানভীর মাহমুদ ১৬৪ ধারায় এই জবানবন্দি দেন ৮ নং মামলায়। মামলাটি করা হয়েছিল গত ৪ অক্টোবর।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও আদালত সূত্র জানায়, ঘুষ নেওয়া পরিচালকদের মধ্যে একজন হচ্ছেন সাইমুম সরওয়ার ওরফে কমল। ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা এখন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। গত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে লড়ে হেরে যান তিনি। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সেপ্টেম্বর থেকে তিনি আর পরিচালক নেই।
তানভীর মাহমুদ আদালতে জবানবন্দিতে বলেছেন, ‘পর্ষদকে ম্যানেজ’ করতে তিন কোটি টাকা লাগবে এবং এই অর্থ দিতে হবে সাইমুম সরওয়ারকে। সোনালী ব্যাংকের বারান্দায় ঘুষের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলেও তিনি জবানবন্দি দিয়েছেন।
তানভীর মাহমুদ একজন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে এই জবানবন্দি দেন গত ১৮ অক্টোবর। এ সময় তানভীর মাহমুদ অর্থ জালিয়াতিতে যেসব ব্যাংক কর্মকর্তা তাঁকে সহায়তা করেছেন, তাঁদের নাম বলেছেন। দুদক এই জবানবন্দি অনুযায়ী এরই মধ্যে তিনজন ব্যাংক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু কোনো পরিচালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং বারবার বলা হচ্ছে, সোনালি ব্যাংকের পর্ষদ হল-মার্ক কেলেঙ্কারির দায় এড়াতে পারে না। তবে পর্ষদ প্রত্যক্ষভাবে দায়ী নয়। কারণ, পর্ষদের অনুমোদন নিয়ে হল-মার্ককে অর্থ দেওয়া হয়নি, অর্থ নেওয়ার তথ্য পর্ষদ জানত না। অর্থ মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনেও পর্ষদ নিয়ে একই ধরনের কথা বলা হয়েছে। অথচ পর্ষদের একজন সদস্যের ঘুষ নেওয়ার তথ্য দুদকের কাছেই আছে।
সোনালী ব্যাংকের সাবেক পর্ষদের পাঁচজন পরিচালক (মেয়াদ শেষ হওয়ায় এখন নতুন পর্ষদ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে) সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে সরওয়ার কামাল পর্ষদকে ‘ম্যানেজ’ করতে অর্থ নিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে আরও পরিচালক অর্থ নিয়েছেন বলে জানা গেছে। রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণেই পর্ষদের ভূমিকাকে আড়াল করা হচ্ছে বলে ব্যাংক ও দুদক সূত্র জানায়।
তবে দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান এ বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুরো বিষয়টি তদন্তাধীন। এখনো চূড়ান্ত কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে কারও সংশ্লিষ্টতা তদন্তকালে পাওয়া গেলে তাঁর বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সোনালী ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, একাধিক পরিচালক যে হল-মার্ক গ্রুপকে সহায়তা দিচ্ছিলেন, তা ব্যাংকের অনেকেই জানতেন। এ ব্যাপারে সাইমুম সরওয়ারের ভূমিকা প্রসঙ্গে ব্যাংক সূত্রটি জানায়, তিনিসহ কয়েকজন পর্ষদ সদস্য সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখার ব্যবস্থাপক এ কে এম আজিজুর রহমানকে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়েছেন। পর্ষদ সভায় তাঁরা আজিজুর রহমানের প্রশংসা করতেন। তিনি যেন রূপসী বাংলা শাখার দায়িত্বে থেকে যান, সে ব্যবস্থাও তাঁরা করেছেন। পর্ষদের সিদ্ধান্তেই একজন ‘প্রতিভাবান ব্যাংকার’ হিসেবে নিয়ম ভেঙে তাঁকে বিদেশ সফরে পাঠানো হয়। এসব কারণে পর্ষদ থেকে আজিজুর রহমানের জন্য কখনো কোনো সমস্যা হয়নি।
রূপসী বাংলা (সাবেক শেরাটন) শাখা থেকে হল-মার্ক গ্রুপ ব্যাংকের সহায়তায় জালিয়াতি করে দুই হাজার ৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেছে। শাখা ব্যবস্থাপক আজিজুর রহমান এ কাজে প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন বলে তানভীর মাহমুদ জবানবন্দিতে বলেছেন।
৪ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংক রূপসী বাংলা শাখা পরিদর্শন করতে গেলে হল-মার্ক কেলেঙ্কারির তথ্য সোনালী ব্যাংকে জানাজানি হয়। তানভীরের জবানবন্দি অনুযায়ী, এর পরও তাঁরা ওই শাখা থেকে অর্থ নিয়েছেন এবং এপ্রিল মাসেই তিনি সাইমুম সরওয়ারকে ‘পর্ষদ ম্যানেজ’ করতে ঘুষ দিয়েছেন।
তবে ঘুষ নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন সাইমুম সরওয়ার। গতকাল প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কুৎসা রটানোর জন্য এ কথা বলা হচ্ছে। একটি মহল আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার চেষ্টা করছে।’
এ বিষয়ে তানভীর মাহমুদ জবানবন্দিতে বলেছেন, ‘২০১২ সালের সম্ভবত এপ্রিলে তসলিম (টি অ্যান্ড ব্রাদার্স গ্রুপের পরিচালক তসলিম হাসান), মালেক (নকশী নীট কম্পোজিটের মালিক ও হল-মার্কের সাবেক পরিচালক আবদুল মালেক), রাজা (প্যারাগন গ্রুপের মালিক ও হল-মার্কের সাবেক জিএম সাইফুল ইসলাম রাজা), ম্যানেজার আজিজ সাহেব (এ কে এম আজিজুর রহমান) ও ডিএনএ স্পোর্টসের মালিক (জবানবন্দির অন্য জায়গায় তাঁর নাম শিখা বলা হয়েছে) আমাকে ব্যাংকের বারান্দায় ডেকে নিয়ে বলে, ব্যাংকের পরিচালনা পর্যদ ম্যানেজ করতে তিন কোটি টাকা লাগবে। এবং এটা বোর্ড সদস্য সাইমুম সরোয়ার কমলকে দিতে হবে।’
জবানবন্দিতে তানভীর মাহমুদ এ বিষয়ে আরও বলেছেন, ‘আমি একপর্যায়ে রাগারাগি করলাম। তাঁরা আমাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। তসলিম সাহেব বলে, “আমি নিজে দেব এক কোটি ২০ লাখ টাকা, হল-মার্ক দেবে এক কোটি এবং বাকি ৮০ লাখ টাকা মালেক, রাজা ও শিখা দেবে।” আমি রাগারাগি করে চলে আসি। আজিজ সাহেবসহ সবাই আমাকে ফোন করে টাকার বিষয়ে খুব বিরক্ত করতে থাকেন। তসলিম বলে, সে নাকি ইতিমধ্যে কমলকে (সাইমুম সরওয়ার) এক কোটি ২০ লাখ টাকা দিয়ে দিয়েছে। আমাকে চাপ দেওয়ার একপর্যায়ে তুষারকে বলি কমলকে ৫০ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য।’
কীভাবে টাকা দেওয়া হয়েছে এবং সাইমুম সরওয়ার যে তাঁকেও ফোন করে টাকা চাইতেন, সে কথাও বলেছেন তানভীর মাহমুদ। তাঁর ভাষায়, ‘এটা এপ্রিল মাসের ঘটনা। তুষার (তুষার আহমেদ, হল-মার্ক গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক, এখন গ্রেপ্তার অবস্থায় আছেন) একদিন তসলিম সাহেবের সামনে ব্যাংকের বারান্দায় কমলকে ৫০ লাখ টাকা দেয়। কমলও আমাকে ফোন দিয়ে টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিত। কয়দিন পর তসলিম ও তাঁর এক পরিচালক (ডাইরেক্টর) আমার বাসায় গিয়ে বাকি ৫০ লাখ টাকা চায়। আমি রাগারাগি করে দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তসলিম অজ্ঞান হয়ে যান। আমার জিএম তুষার ও তসলিমের পরিচালক আতিকুর রহমান তখন তসলিমকে অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে যান।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য তসলিম হাসান, আবদুল মালেক বা সাইফুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি। তাঁরা পলাতক বলে জানা গেছে।
দুদক হল-মার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় ১১টি মামলা করেছে। তানভীর মাহমুদ ১৬৪ ধারায় এই জবানবন্দি দেন ৮ নং মামলায়। মামলাটি করা হয়েছিল গত ৪ অক্টোবর।
No comments