চিরিরবন্দরে জামায়াত-শিবির ও পুলিশের সংঘর্ষে নিহত ১
দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দর এলাকায় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াসহ ব্যাপক সংঘর্ষে মুজহিদুল ইসলাম (১৭) নামে শিবিরের এক সাথী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে শুরু হওয়া ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়ায় ওসিসহ কমপক্ষে ৩৫ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ জামায়াত-শিবিরের ১০ নেতাকর্মীকে আটক করেছে।এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দিনাজপুর-ঢাকা মহাসড়কে অবরোধ করে। এতে ৩ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শতাধিক টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এসময় পুলিশের গুলিতে একজন আহত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, হরতালের সমর্থনে সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা দিনাজপুর-ঢাকা মহাসড়কের চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দর এলাকার সুইহারী বাজারে মিছিল বের করলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়।
এসময় পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে তারা মিছিল করার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে তাদের বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।
এসময় জামায়াতের নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল ও লাঠিসোঠা নিয়ে চড়াও হয়। জামায়াত-শিবিরের হামলায় চিরিরবন্দর থানার ওসি তরিকুল ইসলামসহ প্রায় ১৫ পুলিশ আহত হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দফায় দফায় শতাধিক টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
এসময় পুলিশের গুলিতে খানসামা উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আতাউর রহমানের ছেলে মুজাহিদুল ইসলাম (১৭) গুলিবিদ্ধ হয়।
গুরুতর আহতাবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে পাগলাতি এলাকায় সে মারা যায়।
এদিকে, সংঘর্ষ চলাকালে বিক্ষুব্ধ জামায়াত-শিবির কর্মীরা রানীরবন্দর বাজারের বেশ কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করে। সংঘর্ষের সময় জামায়াত-শিবির কর্মীরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করলে দিনাজপুর-ঢাকা মহাসড়কে যানচলাচল প্রায় ৩ ঘণ্টা বন্ধ থাকে।
অপরদিকে, সংঘর্ষ চলাকালে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ওই এলাকার বিদ্যুতের লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর পর অন্ধকারের মধ্যেই চলে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া।
পরে দিনাজপুর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।
সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ জামায়াত-শিবিরের ১০ নেতাকর্মীকে আটক করেছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত দু’দিন ধরে ওই এলাকায় সৈয়দপুর, নীলফামারী, চিরিরবন্দর ও খানসামাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা জড়ো হচ্ছিল।
এ ব্যাপারে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার ময়নুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। সংঘর্ষে জামায়াত-শিবিরের ২০ জন আহত হয়েছে।
যে কোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় ওই এলাকায় ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনাস্থলে ২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আবু সালেহ মো. ইয়াহিয়া বাংলানিউজকে জানান, খানসামা উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আতাউর রহমানের ছেলে মুজাহিদুল ইসলাম শিবিরের সাথী ছিল। সে এবারের এসএসসি পরিক্ষার্থী।
No comments