কূটনীতিকদের সঙ্গে সাক্ষাতে অনীহা দেখাননি নাফিস!-মা-বাবাকে আবার ফোন by মেহেদী হাসান
বাংলাদেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে সাক্ষাতে অনীহা প্রকাশের কথা অস্বীকার করেছেন সন্ত্রাসী হামলা-চেষ্টার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে বিচারাধীন বাংলাদেশি যুবক কাজী মোহাম্মদ রেজওয়ানুল আহসান নাফিস (২১)।
স্টিং অপারেশনে গত ১৭ অক্টোবর নিউ ইয়র্ক পুলিশ ও এফবিআই নাফিসকে গ্রেপ্তারের পর থেকেই তাঁর সঙ্গে একান্তে সাক্ষাতের (কনস্যুলার অ্যাকসেস) সুযোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রকে একাধিকবার অনুরোধ জানায় বাংলাদেশ। তবে যুক্তরাষ্ট্র বরাবর বলে আসছে, নাফিস সাক্ষাতে আগ্রহী নন। গ্রেপ্তারের এক মাসেরও বেশি সময় পর গত বুধবার ভোরে (যুক্তরাষ্ট্র সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায়) নাফিসকে নিউ ইয়র্কের আদালতে আনা হলে বাংলাদেশের দুজন কূটনীতিক তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। ওই সময় নাফিস সাক্ষাতে অনীহার বিষয়টি অস্বীকার করেন। কূটনৈতিক সূত্রগুলো কালের কণ্ঠকে এ তথ্য জানায়।
নাফিসের সঙ্গে কূটনীতিকদের কথোপকথন সম্পর্কে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, আটক যুবকের সঙ্গে কথা বলার পর বাংলাদেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতে অনীহা প্রকাশ বিষয়ে কিছুটা সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ এ বিষয়ে খোঁজখবর নিবে।
নাফিস সত্যিই সাক্ষাতে অনীহা প্রকাশ করেছিলেন কি না জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, "আমরা তাঁর (নাফিস) সঙ্গে বাংলায় কথা বলতে চেষ্টা করেছি। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা চাইছিলেন, কথাবার্তা ইংরেজিতেই হোক। বাংলা, ইংরেজি মিলিয়েই কথা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র যে অনীহার কথা জানিয়েছে সে ব্যাপারে জানতে চাইলে নাফিস বলেছেন, 'না তো'! এ কারণেই আমাদের মনে সন্দেহ দেখা দিয়েছে!"
আদালতে নাফিস তাঁর আইনজীবীর মাধ্যমে সন্ত্রাসী হামলা পরিকল্পনার অভিযোগ অস্বীকার করেন।
অনীহার কথা নাফিসের মুখ থেকেই শুনতে চেয়েছিল বাংলাদেশ : কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, নাফিস গ্রেপ্তার হওয়ার পরদিনই যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদের দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাঁর পাসপোর্টের প্রতিলিপি ও অভিযোগ সম্পর্কিত তথ্যসংবলিত নথি দেওয়া হয়। নাগরিকত্ব বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর পরই বাংলাদেশ তাঁর জন্য কনস্যুলার অ্যাকসেস চায়। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, নাফিস বাংলাদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে সাক্ষাতে আগ্রহী নন। জবাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদের বলেছিলেন, সাক্ষাতে অনীহার বিষয়টি বাংলাদেশ নাফিসের মুখ থেকেই শুনতে চায়। এরপর বাংলাদেশ কনস্যুলার অ্যাকসেস চেয়ে একাধিকবার তাগিদ দিলেও যুক্তরাষ্ট্র তাতে সাড়া দেয়নি। সর্বশেষ গত বুধবার শুনানির জন্য নাফিসকে নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিন ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে আনা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে মামলার শুনানির সময় ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনস্টার (কনস্যুলার) শামসুল হক ও নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল মো. শাহেদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। শুনানির আগে নাফিসের সঙ্গে তাঁদের দেখা হয়েছে এবং কথাও হয়েছে।
উল্লেখ্য কনস্যুলার-বিষয়ক ভিয়েনা সনদ অনুযায়ী, বিদেশে আটক হওয়া কোনো ব্যক্তি তাঁর দেশের কর্মকর্তা এমনকি নিজ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও সাক্ষাতে অনীহা প্রকাশ করতে পারেন। তবে কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, নাফিসের বিরুদ্ধে যে ধরনের কাজের অভিযোগ আনা হয়েছে তা বাংলাদেশেও অপরাধ। তাই এসব বিষয়ে জানতেও বাংলাদেশি কর্মকর্তারা নাফিসের সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন বলে মনে করেন।
বাবাকে দ্বিতীয় দফায় ফোন : নিউ ইয়র্কের আদালতে শুনানির দিনই (গত বুধবার) বাবা কাজী মো. আহসান উল্লাহর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন নাফিস। কাজী মো. আহসান উল্লাহ গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে এ কথা জানান। তিনি বলেন, 'মামলা বা অভিযোগ নিয়ে কোনো কথা হয়নি। নাফিস জানতে চেয়েছে, আমরা কেমন আছি? আমরা এখন তাঁর কণ্ঠ শুনেই বেঁচে আছি।'
আহসান উল্লাহ আরো বলেন, নিউ ইয়র্ক থেকে টেলিফোনে কথা বলার খরচ অনেক। তাই খুব বেশি কথা হয়নি।
কাজী মো. আহসান উল্লাহ বলেন, নাফিসের জন্য সাহায্য-সহযোগিতা চেয়ে তিনি বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৬ নভেম্বর নাফিস প্রথমবার তাঁর বাবা-মায়ের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছিলেন।
৯ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানি : কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের গ্র্যান্ড জুরি নাফিসকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করার পর গত ১৫ নভেম্বর নিউ ইয়র্কের ইস্টার্ন ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। গত বুধবার নিউ ইয়র্কের আদালতে নাফিস নিজেকে তাঁর যুক্তরাষ্ট্র সরকার নিযুক্ত আইনজীবীর মাধ্যমে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং আগামী ৯ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেন।
নাফিসের বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ভবন বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। অপরাধ প্রমাণ হলে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
নাফিসের সঙ্গে কূটনীতিকদের কথোপকথন সম্পর্কে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, আটক যুবকের সঙ্গে কথা বলার পর বাংলাদেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতে অনীহা প্রকাশ বিষয়ে কিছুটা সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ এ বিষয়ে খোঁজখবর নিবে।
নাফিস সত্যিই সাক্ষাতে অনীহা প্রকাশ করেছিলেন কি না জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, "আমরা তাঁর (নাফিস) সঙ্গে বাংলায় কথা বলতে চেষ্টা করেছি। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা চাইছিলেন, কথাবার্তা ইংরেজিতেই হোক। বাংলা, ইংরেজি মিলিয়েই কথা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র যে অনীহার কথা জানিয়েছে সে ব্যাপারে জানতে চাইলে নাফিস বলেছেন, 'না তো'! এ কারণেই আমাদের মনে সন্দেহ দেখা দিয়েছে!"
আদালতে নাফিস তাঁর আইনজীবীর মাধ্যমে সন্ত্রাসী হামলা পরিকল্পনার অভিযোগ অস্বীকার করেন।
অনীহার কথা নাফিসের মুখ থেকেই শুনতে চেয়েছিল বাংলাদেশ : কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, নাফিস গ্রেপ্তার হওয়ার পরদিনই যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদের দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাঁর পাসপোর্টের প্রতিলিপি ও অভিযোগ সম্পর্কিত তথ্যসংবলিত নথি দেওয়া হয়। নাগরিকত্ব বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর পরই বাংলাদেশ তাঁর জন্য কনস্যুলার অ্যাকসেস চায়। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, নাফিস বাংলাদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে সাক্ষাতে আগ্রহী নন। জবাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদের বলেছিলেন, সাক্ষাতে অনীহার বিষয়টি বাংলাদেশ নাফিসের মুখ থেকেই শুনতে চায়। এরপর বাংলাদেশ কনস্যুলার অ্যাকসেস চেয়ে একাধিকবার তাগিদ দিলেও যুক্তরাষ্ট্র তাতে সাড়া দেয়নি। সর্বশেষ গত বুধবার শুনানির জন্য নাফিসকে নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিন ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে আনা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে মামলার শুনানির সময় ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনস্টার (কনস্যুলার) শামসুল হক ও নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল মো. শাহেদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। শুনানির আগে নাফিসের সঙ্গে তাঁদের দেখা হয়েছে এবং কথাও হয়েছে।
উল্লেখ্য কনস্যুলার-বিষয়ক ভিয়েনা সনদ অনুযায়ী, বিদেশে আটক হওয়া কোনো ব্যক্তি তাঁর দেশের কর্মকর্তা এমনকি নিজ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও সাক্ষাতে অনীহা প্রকাশ করতে পারেন। তবে কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, নাফিসের বিরুদ্ধে যে ধরনের কাজের অভিযোগ আনা হয়েছে তা বাংলাদেশেও অপরাধ। তাই এসব বিষয়ে জানতেও বাংলাদেশি কর্মকর্তারা নাফিসের সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন বলে মনে করেন।
বাবাকে দ্বিতীয় দফায় ফোন : নিউ ইয়র্কের আদালতে শুনানির দিনই (গত বুধবার) বাবা কাজী মো. আহসান উল্লাহর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন নাফিস। কাজী মো. আহসান উল্লাহ গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে এ কথা জানান। তিনি বলেন, 'মামলা বা অভিযোগ নিয়ে কোনো কথা হয়নি। নাফিস জানতে চেয়েছে, আমরা কেমন আছি? আমরা এখন তাঁর কণ্ঠ শুনেই বেঁচে আছি।'
আহসান উল্লাহ আরো বলেন, নিউ ইয়র্ক থেকে টেলিফোনে কথা বলার খরচ অনেক। তাই খুব বেশি কথা হয়নি।
কাজী মো. আহসান উল্লাহ বলেন, নাফিসের জন্য সাহায্য-সহযোগিতা চেয়ে তিনি বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৬ নভেম্বর নাফিস প্রথমবার তাঁর বাবা-মায়ের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছিলেন।
৯ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানি : কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের গ্র্যান্ড জুরি নাফিসকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করার পর গত ১৫ নভেম্বর নিউ ইয়র্কের ইস্টার্ন ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। গত বুধবার নিউ ইয়র্কের আদালতে নাফিস নিজেকে তাঁর যুক্তরাষ্ট্র সরকার নিযুক্ত আইনজীবীর মাধ্যমে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং আগামী ৯ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেন।
নাফিসের বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ভবন বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। অপরাধ প্রমাণ হলে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
No comments