সাভার-আশুলিয়ার ২৩২ কারখানা পরিদর্শন- ২৩% কারখানার অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা খুবই নাজুক by গোলাম মর্তুজা ও অরূপ রায়
সাভার-আশুলিয়া এলাকার এক-চতুর্থাংশ পোশাক কারখানার অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা খুবই নাজুক। তিন দিন ধরে ২৩২টি পোশাক কারখানা পরিদর্শন শেষে ফায়ার সার্ভিস এই চিত্র পেয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের তথ্যানুযায়ী, ২৩ দশমিক ২৮ শতাংশ কারখানার অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা খুবই নাজুক। ৩৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ কারখানার মোটামুটি, আর ৩৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ কারখানার অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থা ভালো।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, গত বুধবার ও শনিবার এবং গতকাল রোববার ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা সাভার ও আশুলিয়া এলাকার ২৩২টি কারখানা পরিদর্শন করেন। তাঁরা কারখানার অগ্নিনিরাপত্তা-সম্পর্কিত ২৬টি শর্ত যাচাই করেন। এই এলাকায় পাঁচ শতাধিক পোশাক কারখানা রয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (প্রশাসন) আবদুস সালাম প্রথম আলোকে জানান, পরিদর্শন শেষে কারখানাগুলোর অগ্নিনিরাপত্তার গলদ সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। এক মাস পর ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, সাভার-আশুলিয়ায় তিন দিনে ২৩২টি কারখানা পরিদর্শন করেছেন কর্মকর্তারা। পরিদর্শন শেষে কারখানাগুলোকে ভালো (এ), মোটামুটি (বি) ও খুব খারাপ (সি)—এই তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ২৬টি শর্তের মধ্যে যেসব কারখানা দুই-তৃতীয়াংশ শর্ত পূরণ করেছে, সেগুলোকে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে, অর্ধেকের বেশি শর্ত পূরণকারীদের ‘বি’ ক্যাটাগরিতে আর অর্ধেকের কম শর্ত পূরণকারীদের ‘সি’ ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করা হয়েছে। ২৩২টির মধ্যে ৯০টি ‘এ’, ৮৮টি ‘বি’ ও ৫৪টি ‘সি’ ক্যাটাগরির মধ্যে পড়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক (ওয়্যারহাউস) শামসুজ্জোহা বলেন, বুধ ও শনিবার ১৫টি করে দল কাজ করেছে। প্রতি দলে ছিলেন চারজন করে কর্মকর্তা। আর রোববার তিনজন করে ১৪টি দল কাজ করেছে।
শামসুজ্জোহা বলেন, অনেক কারখানার কোনো ফায়ার লাইসেন্সই নেই। আবার লাইসেন্স পেলেও অনেক কারখানা শর্ত পূরণ করেনি। তিনি বলেন, বেশির ভাগ কারখানায় অগ্নিনির্বাপণ উপকরণ ছিল। তবে সেগুলোতে অযত্নের ছাপ স্পষ্ট। প্রায় সব কারখানার অগ্নিনির্বাপণ নলে (ফায়ার হোস) পানির চাপ খুবই কম, পানি বের হয় খুব ধীরে। কারখানার ছাদে বসানো সাধারণ পানির ট্যাংক থেকে এসব পাইপে পানি সরবরাহ করা হয়। অগ্নিকাণ্ডের সময় এগুলো কোনো কাজেই আসবে না। কতগুলোর ফায়ার হোসে ছিদ্র পাওয়া গেছে। পাইপে ওয়াসার নেই অনেকগুলোর। এগুলো নিয়মিত পরীক্ষা করা হয় না। কারখানাগুলোকে পৃথক ফায়ার পাম্প বসাতে বলা হয়েছে। অনেক কারখানায় ফায়ার এক্সটিংগুইশার ঝোলানো থাকলেও এগুলো ব্যবহারের কোনো প্রশিক্ষণ নেই শ্রমিকদের। এ ছাড়া অনেক কারখানার গুদামে বৈদ্যুতিক সংযোগ ছিল। সেগুলোতে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে হাতবাতি (টর্চ বা চার্জার) ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। কারখানার বিভিন্ন তলা থেকে বের হওয়ার দরজাগুলো এমনভাবে তৈরি করতে বলা হয়েছে, যেন ভেতর থেকে ধাক্কা দিলে সহজে খোলা যায়। আর অনেক কারখানার ছাদের ওপর টিন দিয়ে ছাউনি দিয়ে খাবারঘর বা অন্য কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে অগ্নিকাণ্ডের সময় শ্রমিকেরা যে ছাদে দাঁড়িয়ে জীবন রক্ষা করবেন, সে পথও বন্ধ হয়ে যায়। কারখানাগুলোকে ছাদের ওপরের স্থাপনা সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে।
কর্মকর্তারা বলেন, বেশির ভাগ কারখানার জরুরি নির্গমন সিঁড়ি ভবনের ভেতর দিয়ে। ভবনের নিচতলায় অগ্নিকাণ্ড হলে এসব পথ ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যাবে, শ্রমিকেরা এগুলো দিয়ে নিচে নামতে পারবেন না। যেমনটি হয়েছিল তাজরীনের ক্ষেত্রে। কারখানাগুলোকে ভবনের বাইরের দিকে দেয়ালঘেরা নির্গমন সিঁড়ি করতে বলা হয়েছে, যাতে অগ্নিকাণ্ডের সময় সেগুলো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন না হতে পারে।
গতকাল সাভার ফায়ার স্টেশন-সংলগ্ন আল মুসলিম গ্রুপের কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, এর ফায়ার হোসে পানির চাপ একেবারেই কম, গুদামে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে। কারখানাটির ছাদে টিন দিয়ে ঘিরে খাবারের ঘর করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা এসব ত্রুটি দূর করার পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।
আল মুসলিম গ্রুপের সহকারী মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ মো. ফেরদৌস জানান, এক মাসের মধ্যে কারখানার এসব ত্রুটি দূর করা হবে। কারখানায় সার্বক্ষণিক অগ্নিনির্বাপণকারী দল নিয়োগের চিন্তা চলছে বলেও জানান তিনি।
যোগাযোগ করা হলে বিজিএমইএর সহসভাপতি ফারুক হাসান অগ্নি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে পোশাক কারখানাগুলোর প্রস্তুতিতে দুঃখ প্রকাশ করেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, বিজিএমইএ আসলে শুধু সদস্যপদ দেয়। এগুলো নিয়মিত দেখভাল করার দায়িত্ব ঠিক বিজিএমইএর নয়। বিদেশি ক্রেতারা বরং কারখানাগুলোতে সব সময় তাদের একটা নজরদারি করে। তবে তাজরীনে অগ্নিকাণ্ডের পর বিজিএমইএ খুব কঠিন অবস্থান নিয়েছে। ক্রেতাদেরও বলা হয়েছে, তারা কাজ দেওয়ার আগে যেন নিশ্চিত হয়ে কাজ দেয়।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, গত বুধবার ও শনিবার এবং গতকাল রোববার ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা সাভার ও আশুলিয়া এলাকার ২৩২টি কারখানা পরিদর্শন করেন। তাঁরা কারখানার অগ্নিনিরাপত্তা-সম্পর্কিত ২৬টি শর্ত যাচাই করেন। এই এলাকায় পাঁচ শতাধিক পোশাক কারখানা রয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (প্রশাসন) আবদুস সালাম প্রথম আলোকে জানান, পরিদর্শন শেষে কারখানাগুলোর অগ্নিনিরাপত্তার গলদ সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। এক মাস পর ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, সাভার-আশুলিয়ায় তিন দিনে ২৩২টি কারখানা পরিদর্শন করেছেন কর্মকর্তারা। পরিদর্শন শেষে কারখানাগুলোকে ভালো (এ), মোটামুটি (বি) ও খুব খারাপ (সি)—এই তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ২৬টি শর্তের মধ্যে যেসব কারখানা দুই-তৃতীয়াংশ শর্ত পূরণ করেছে, সেগুলোকে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে, অর্ধেকের বেশি শর্ত পূরণকারীদের ‘বি’ ক্যাটাগরিতে আর অর্ধেকের কম শর্ত পূরণকারীদের ‘সি’ ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করা হয়েছে। ২৩২টির মধ্যে ৯০টি ‘এ’, ৮৮টি ‘বি’ ও ৫৪টি ‘সি’ ক্যাটাগরির মধ্যে পড়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক (ওয়্যারহাউস) শামসুজ্জোহা বলেন, বুধ ও শনিবার ১৫টি করে দল কাজ করেছে। প্রতি দলে ছিলেন চারজন করে কর্মকর্তা। আর রোববার তিনজন করে ১৪টি দল কাজ করেছে।
শামসুজ্জোহা বলেন, অনেক কারখানার কোনো ফায়ার লাইসেন্সই নেই। আবার লাইসেন্স পেলেও অনেক কারখানা শর্ত পূরণ করেনি। তিনি বলেন, বেশির ভাগ কারখানায় অগ্নিনির্বাপণ উপকরণ ছিল। তবে সেগুলোতে অযত্নের ছাপ স্পষ্ট। প্রায় সব কারখানার অগ্নিনির্বাপণ নলে (ফায়ার হোস) পানির চাপ খুবই কম, পানি বের হয় খুব ধীরে। কারখানার ছাদে বসানো সাধারণ পানির ট্যাংক থেকে এসব পাইপে পানি সরবরাহ করা হয়। অগ্নিকাণ্ডের সময় এগুলো কোনো কাজেই আসবে না। কতগুলোর ফায়ার হোসে ছিদ্র পাওয়া গেছে। পাইপে ওয়াসার নেই অনেকগুলোর। এগুলো নিয়মিত পরীক্ষা করা হয় না। কারখানাগুলোকে পৃথক ফায়ার পাম্প বসাতে বলা হয়েছে। অনেক কারখানায় ফায়ার এক্সটিংগুইশার ঝোলানো থাকলেও এগুলো ব্যবহারের কোনো প্রশিক্ষণ নেই শ্রমিকদের। এ ছাড়া অনেক কারখানার গুদামে বৈদ্যুতিক সংযোগ ছিল। সেগুলোতে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে হাতবাতি (টর্চ বা চার্জার) ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। কারখানার বিভিন্ন তলা থেকে বের হওয়ার দরজাগুলো এমনভাবে তৈরি করতে বলা হয়েছে, যেন ভেতর থেকে ধাক্কা দিলে সহজে খোলা যায়। আর অনেক কারখানার ছাদের ওপর টিন দিয়ে ছাউনি দিয়ে খাবারঘর বা অন্য কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে অগ্নিকাণ্ডের সময় শ্রমিকেরা যে ছাদে দাঁড়িয়ে জীবন রক্ষা করবেন, সে পথও বন্ধ হয়ে যায়। কারখানাগুলোকে ছাদের ওপরের স্থাপনা সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে।
কর্মকর্তারা বলেন, বেশির ভাগ কারখানার জরুরি নির্গমন সিঁড়ি ভবনের ভেতর দিয়ে। ভবনের নিচতলায় অগ্নিকাণ্ড হলে এসব পথ ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যাবে, শ্রমিকেরা এগুলো দিয়ে নিচে নামতে পারবেন না। যেমনটি হয়েছিল তাজরীনের ক্ষেত্রে। কারখানাগুলোকে ভবনের বাইরের দিকে দেয়ালঘেরা নির্গমন সিঁড়ি করতে বলা হয়েছে, যাতে অগ্নিকাণ্ডের সময় সেগুলো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন না হতে পারে।
গতকাল সাভার ফায়ার স্টেশন-সংলগ্ন আল মুসলিম গ্রুপের কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, এর ফায়ার হোসে পানির চাপ একেবারেই কম, গুদামে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে। কারখানাটির ছাদে টিন দিয়ে ঘিরে খাবারের ঘর করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা এসব ত্রুটি দূর করার পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।
আল মুসলিম গ্রুপের সহকারী মহাব্যবস্থাপক সৈয়দ মো. ফেরদৌস জানান, এক মাসের মধ্যে কারখানার এসব ত্রুটি দূর করা হবে। কারখানায় সার্বক্ষণিক অগ্নিনির্বাপণকারী দল নিয়োগের চিন্তা চলছে বলেও জানান তিনি।
যোগাযোগ করা হলে বিজিএমইএর সহসভাপতি ফারুক হাসান অগ্নি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে পোশাক কারখানাগুলোর প্রস্তুতিতে দুঃখ প্রকাশ করেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, বিজিএমইএ আসলে শুধু সদস্যপদ দেয়। এগুলো নিয়মিত দেখভাল করার দায়িত্ব ঠিক বিজিএমইএর নয়। বিদেশি ক্রেতারা বরং কারখানাগুলোতে সব সময় তাদের একটা নজরদারি করে। তবে তাজরীনে অগ্নিকাণ্ডের পর বিজিএমইএ খুব কঠিন অবস্থান নিয়েছে। ক্রেতাদেরও বলা হয়েছে, তারা কাজ দেওয়ার আগে যেন নিশ্চিত হয়ে কাজ দেয়।
No comments