পদ্মা সেতু প্রকল্প- তদন্তের জোরালো অগ্রগতি দেখতে চায় বিশ্বব্যাংক
পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি তদন্তে আরও জোরালো অগ্রগতি দেখতে চায় বিশ্বব্যাংকের বিশেষজ্ঞ প্যানেল। দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে তারা। আর তা হলেই মিলবে পদ্মা সেতুর অর্থ।
বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ দলটি গতকাল রোববার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সঙ্গে বৈঠক করেছে। বৈঠক শেষে এ নিয়ে কথা বলেছেন বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ প্রধান অ্যালেন গোল্ডস্টেইন। সাংবাদিকদের তিনি জানান, সবকিছু এখন দুদকের হাতে। দুদক যদি তাদের অনুসন্ধান জোরালো করে এবং প্রয়োজনীয় ও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়, তবে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে সেতু নির্মাণের অন্যান্য কাজও দ্রুত এগিয়ে যাবে।
তবে বৈঠক শেষে দুদকের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদল তাঁদের কাজে মোটামুটি সন্তুষ্ট। তিনি আরও বলেন, আদালতে দাখিল করার মতো কোনো তথ্য বা দালিলিক প্রমাণ এখনো দুদকের হাতে নেই।
বিশ্বব্যাংক গঠিত বিশেষজ্ঞ এ দলের সঙ্গে দুদকের পরবর্তী বৈঠক হবে আজ সোমবার বেলা তিনটায়। এর আগে দুদক একটি তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করবে। আর সেই প্রতিবেদন নিয়েই আলোচনা হবে পরবর্তী এ বৈঠকে। তদন্তের জন্য এর আগে বিশ্বব্যাংক তিনবার দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের নানা তথ্য দিয়েছে।
এদিকে, তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করার ক্ষেত্রে দুদকের অনুসন্ধানী দলের একটি কাজই বাকি রয়েছে বলে জানা গেছে। আর এ জন্য আজ দুদকের অনুসন্ধান দলের তলবে জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হচ্ছেন সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী। এ দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরই প্রতিবেদন চূড়ান্ত করবে দুদক।
গতকাল বিশ্বব্যাংকের বিশেষজ্ঞ প্যানেলটি দুদকে দুই দফা বৈঠক করে। প্রথমে দুদক কর্তৃপক্ষ এবং এর পরে অনুসন্ধান দলের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেয় তারা। দলটির প্রধান আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সাবেক প্রধান আইনজীবী লুই গ্যাব্রিয়েল ওকাম্পো। বাকি দুই সদস্য হলেন হংকংয়ের দুর্নীতিবিরোধী স্বাধীন কমিশনের সাবেক কমিশনার টিমোথি টং ও যুক্তরাজ্যের সিরিয়াস ফ্রড কার্যালয়ের সাবেক পরিচালক রিচার্ড অল্ডারম্যান। দলটি গতকাল রাতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গেও বৈঠক করেছে।
প্রায় দেড় ঘণ্টা দুদকে অবস্থান শেষে গতকাল অ্যালেন গোল্ডস্টেইন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ কমিশনের অনুসন্ধানের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে আলোচনায় বসেছিলাম। এ মুহূর্তে অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের মন্তব্য বা কোনো ধরনের সিদ্ধান্তের কারণে সেতু নির্মাণ সংকটজনক হতে পারে। এ মুহূর্তে আমরা একটি বৈঠক করেছি, এটি আমাদের উৎসাহিত করছে পরবর্তী বৈঠকে অংশ নিতে। আমরা চাই দুদক আরও জোরালো অনুসন্ধান করুক, যা সেতু নির্মাণে দ্রুতগতি আনতে সাহায্য করবে।’
গত মাসে ম্যানিলায় বিভিন্ন দাতা প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের বিশেষজ্ঞ দলের বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি বলেন, ‘দু-তিন দিন আগে ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকটি ছিল প্রারম্ভিক বৈঠক, যেখানে পদ্মা সেতু প্রকল্পের বরাদ্দ কীভাবে পরিমার্জনা বা পরিবর্তন বা প্রয়োজনীয় অন্য কোনো পরামর্শ রয়েছে কি না, এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
গতকাল বৈঠক শেষে দুদকের পক্ষে প্রথমে কথা বলেন দুদকের আইন উপদেষ্টা আনিসুল হক। বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে কিছু তথ্য পেয়ে নতুন দ্বিতীয় দফার অনুসন্ধান শুরু হয়েছে উল্লেখ করে আনিসুল হক বলেন, ‘অনুসন্ধানের এ পর্যন্ত অগ্রগতি বিশেষজ্ঞ প্যানেলকে জানানো হয়েছে। কাল সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এখানে আসবেন। সেই জিজ্ঞাসাবাদের পরে দুই দিনের অগ্রগতি নিয়ে বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সঙ্গে আবারও আলোচনায় বসব।’
দুদককে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে—বিশ্বব্যাংকের এমন বক্তব্য কি দুদককে মামলা করার বিষয়ে সুপারিশ করছে—এ প্রশ্নের জবাবে দুদকের আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘তাঁরা আমাদের অনুসন্ধানের অগ্রগতি আরেকটু জোরালো করতে বলেছেন মাত্র।’ মামলার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের আইনে যদি কোনো অপরাধ না পাই, তাতে কে কী বলল সে বিষয়ে ভাববার অবকাশ নেই।’
মামলার বিষয়ে দুদকের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘মামলার বিষয়টি নির্ভর করছে অনুসন্ধান প্রতিবেদনের ওপর।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনুসন্ধানের বর্তমান অবস্থায় বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিরা মোটামুটি সন্তুষ্ট। তবে অনুসন্ধান এখনো শেষ হয়নি।’
বিশ্বব্যাংকের তথ্য প্রসঙ্গে গোলাম রহমান আরও বলেন, কানাডার কাছ থেকে কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। আর বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য আদালতে গ্রহণযোগ্য হতে হলে আইনানুগ প্রক্রিয়ার ভেতরে আসতে হবে। আদালতের কাছে দাখিল করার মতো এখনো তথ্য বা দালিলিক প্রমাণ দুদকের হাতে নেই বলে জানান তিনি।
অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক: সচিবালয়ে গতকালের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সদ্য বিদায়ী সচিব ইকবাল মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, ‘আজ তাঁদের সঙ্গে প্রথম দেখা। বৈঠকের উদ্দেশ্য হলো পদ্মা সেতু প্রকল্প বিষয়ে তাঁরা কী অবস্থায় আছেন, তা জানা। কারণ, এর আগে টোকিওতে তাঁদের সঙ্গে আমার দেখা হয়নি।’ অর্থমন্ত্রী বলেন, তাঁরা বলেছেন, এটা তাঁদের দ্বিতীয় সফর এবং তাঁরা একটা আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন। সে অনুযায়ী দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) পরামর্শও দিয়েছেন তাঁরা।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এবারের সফরে আশা করছি, আমরা এমন এক অবস্থায় পৌঁছাব, যাতে বাংলাদেশের তদন্তব্যবস্থা সম্পর্কে তাঁরা ভালোভাবে অবগত হবেন। আমাদের তদন্তব্যবস্থা যে বিশ্বাসযোগ্য, সে সম্পর্কেও ইতিবাচক ধারণা পাবেন তাঁরা। এর পরই পদ্মা সেতু প্রকল্পে নতুন করে কিছু হবে।’
ইতিমধ্যে অবশ্য কিছুটা কাজ হয়েছে বলে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাংককে আমরা বলেছিলাম, দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তের বিষয়টি জোরদার করব। তাঁরা আরও তথ্য দেবেন। সে অনুযায়ী আমরাও এগিয়ে যাব এবং তাঁদের একটি প্যানেল কাজ করবে। কিন্তু আমরা চেয়েছিলাম তদন্তওয়ালারা এবং বাস্তবায়নওয়ালারা একসঙ্গে কাজ করুক।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, এবারের বৈঠকের পর বোঝা গেল, বিশ্বব্যাংক নিজেও চায় দ্রুত কাজ শুরু করতে। আর দুদক যে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে, তদন্ত করে দেখা হবে কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কিছু আছে কি না। তদন্তের পর কী হতে পারে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, তদন্ত মানেই তো হলো প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন (এফআইআর), অভিযোগপত্র (চার্জশিট) ইত্যাদি।
তদন্ত ও বাস্তবায়ন একসঙ্গে চলবে কি না, জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রীকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে জবাব দেন ইকবাল মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘এটা একটা প্রক্রিয়ার বিষয়। বিশ্বব্যাংকের প্যানেল মূলত দেখতে চায় আমাদের তদন্ত প্রক্রিয়াটা যথাযথ কি না বা আন্তর্জাতিক মানের কি না। দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে, তাতে যদি প্রমাণযোগ্য কিছু পাওয়া যায়, তখনই আসবে মামলার প্রশ্ন।’
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, তারা (বিশ্বব্যাংকের প্যানেল) দুদককে কিছু তথ্য দিয়েছে। দুদক বলেছে সিদ্ধান্ত নেবে। তদন্ত কবে শেষ হবে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এটা বলতে পারছি না।’
এ সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশে গওহর রিজভী বলেন, ধারণাপ্রসূত কথাবার্তা বলে কোনো লাভ নেই। দয়া করে তা করবেন না। অর্থমন্ত্রী ঠিকই বলেছেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পের সবকিছু যথাযথভাবেই এগোচ্ছে।
তবে বৈঠক শেষে দুদকের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদল তাঁদের কাজে মোটামুটি সন্তুষ্ট। তিনি আরও বলেন, আদালতে দাখিল করার মতো কোনো তথ্য বা দালিলিক প্রমাণ এখনো দুদকের হাতে নেই।
বিশ্বব্যাংক গঠিত বিশেষজ্ঞ এ দলের সঙ্গে দুদকের পরবর্তী বৈঠক হবে আজ সোমবার বেলা তিনটায়। এর আগে দুদক একটি তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করবে। আর সেই প্রতিবেদন নিয়েই আলোচনা হবে পরবর্তী এ বৈঠকে। তদন্তের জন্য এর আগে বিশ্বব্যাংক তিনবার দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের নানা তথ্য দিয়েছে।
এদিকে, তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করার ক্ষেত্রে দুদকের অনুসন্ধানী দলের একটি কাজই বাকি রয়েছে বলে জানা গেছে। আর এ জন্য আজ দুদকের অনুসন্ধান দলের তলবে জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হচ্ছেন সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী। এ দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরই প্রতিবেদন চূড়ান্ত করবে দুদক।
গতকাল বিশ্বব্যাংকের বিশেষজ্ঞ প্যানেলটি দুদকে দুই দফা বৈঠক করে। প্রথমে দুদক কর্তৃপক্ষ এবং এর পরে অনুসন্ধান দলের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেয় তারা। দলটির প্রধান আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সাবেক প্রধান আইনজীবী লুই গ্যাব্রিয়েল ওকাম্পো। বাকি দুই সদস্য হলেন হংকংয়ের দুর্নীতিবিরোধী স্বাধীন কমিশনের সাবেক কমিশনার টিমোথি টং ও যুক্তরাজ্যের সিরিয়াস ফ্রড কার্যালয়ের সাবেক পরিচালক রিচার্ড অল্ডারম্যান। দলটি গতকাল রাতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গেও বৈঠক করেছে।
প্রায় দেড় ঘণ্টা দুদকে অবস্থান শেষে গতকাল অ্যালেন গোল্ডস্টেইন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ কমিশনের অনুসন্ধানের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে আলোচনায় বসেছিলাম। এ মুহূর্তে অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের মন্তব্য বা কোনো ধরনের সিদ্ধান্তের কারণে সেতু নির্মাণ সংকটজনক হতে পারে। এ মুহূর্তে আমরা একটি বৈঠক করেছি, এটি আমাদের উৎসাহিত করছে পরবর্তী বৈঠকে অংশ নিতে। আমরা চাই দুদক আরও জোরালো অনুসন্ধান করুক, যা সেতু নির্মাণে দ্রুতগতি আনতে সাহায্য করবে।’
গত মাসে ম্যানিলায় বিভিন্ন দাতা প্রতিনিধিদের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের বিশেষজ্ঞ দলের বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি বলেন, ‘দু-তিন দিন আগে ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকটি ছিল প্রারম্ভিক বৈঠক, যেখানে পদ্মা সেতু প্রকল্পের বরাদ্দ কীভাবে পরিমার্জনা বা পরিবর্তন বা প্রয়োজনীয় অন্য কোনো পরামর্শ রয়েছে কি না, এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
গতকাল বৈঠক শেষে দুদকের পক্ষে প্রথমে কথা বলেন দুদকের আইন উপদেষ্টা আনিসুল হক। বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে কিছু তথ্য পেয়ে নতুন দ্বিতীয় দফার অনুসন্ধান শুরু হয়েছে উল্লেখ করে আনিসুল হক বলেন, ‘অনুসন্ধানের এ পর্যন্ত অগ্রগতি বিশেষজ্ঞ প্যানেলকে জানানো হয়েছে। কাল সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এখানে আসবেন। সেই জিজ্ঞাসাবাদের পরে দুই দিনের অগ্রগতি নিয়ে বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সঙ্গে আবারও আলোচনায় বসব।’
দুদককে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে—বিশ্বব্যাংকের এমন বক্তব্য কি দুদককে মামলা করার বিষয়ে সুপারিশ করছে—এ প্রশ্নের জবাবে দুদকের আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘তাঁরা আমাদের অনুসন্ধানের অগ্রগতি আরেকটু জোরালো করতে বলেছেন মাত্র।’ মামলার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের আইনে যদি কোনো অপরাধ না পাই, তাতে কে কী বলল সে বিষয়ে ভাববার অবকাশ নেই।’
মামলার বিষয়ে দুদকের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘মামলার বিষয়টি নির্ভর করছে অনুসন্ধান প্রতিবেদনের ওপর।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনুসন্ধানের বর্তমান অবস্থায় বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিরা মোটামুটি সন্তুষ্ট। তবে অনুসন্ধান এখনো শেষ হয়নি।’
বিশ্বব্যাংকের তথ্য প্রসঙ্গে গোলাম রহমান আরও বলেন, কানাডার কাছ থেকে কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। আর বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য আদালতে গ্রহণযোগ্য হতে হলে আইনানুগ প্রক্রিয়ার ভেতরে আসতে হবে। আদালতের কাছে দাখিল করার মতো এখনো তথ্য বা দালিলিক প্রমাণ দুদকের হাতে নেই বলে জানান তিনি।
অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক: সচিবালয়ে গতকালের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সদ্য বিদায়ী সচিব ইকবাল মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, ‘আজ তাঁদের সঙ্গে প্রথম দেখা। বৈঠকের উদ্দেশ্য হলো পদ্মা সেতু প্রকল্প বিষয়ে তাঁরা কী অবস্থায় আছেন, তা জানা। কারণ, এর আগে টোকিওতে তাঁদের সঙ্গে আমার দেখা হয়নি।’ অর্থমন্ত্রী বলেন, তাঁরা বলেছেন, এটা তাঁদের দ্বিতীয় সফর এবং তাঁরা একটা আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন। সে অনুযায়ী দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) পরামর্শও দিয়েছেন তাঁরা।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এবারের সফরে আশা করছি, আমরা এমন এক অবস্থায় পৌঁছাব, যাতে বাংলাদেশের তদন্তব্যবস্থা সম্পর্কে তাঁরা ভালোভাবে অবগত হবেন। আমাদের তদন্তব্যবস্থা যে বিশ্বাসযোগ্য, সে সম্পর্কেও ইতিবাচক ধারণা পাবেন তাঁরা। এর পরই পদ্মা সেতু প্রকল্পে নতুন করে কিছু হবে।’
ইতিমধ্যে অবশ্য কিছুটা কাজ হয়েছে বলে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাংককে আমরা বলেছিলাম, দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তের বিষয়টি জোরদার করব। তাঁরা আরও তথ্য দেবেন। সে অনুযায়ী আমরাও এগিয়ে যাব এবং তাঁদের একটি প্যানেল কাজ করবে। কিন্তু আমরা চেয়েছিলাম তদন্তওয়ালারা এবং বাস্তবায়নওয়ালারা একসঙ্গে কাজ করুক।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, এবারের বৈঠকের পর বোঝা গেল, বিশ্বব্যাংক নিজেও চায় দ্রুত কাজ শুরু করতে। আর দুদক যে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে, তদন্ত করে দেখা হবে কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কিছু আছে কি না। তদন্তের পর কী হতে পারে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, তদন্ত মানেই তো হলো প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন (এফআইআর), অভিযোগপত্র (চার্জশিট) ইত্যাদি।
তদন্ত ও বাস্তবায়ন একসঙ্গে চলবে কি না, জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রীকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে জবাব দেন ইকবাল মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘এটা একটা প্রক্রিয়ার বিষয়। বিশ্বব্যাংকের প্যানেল মূলত দেখতে চায় আমাদের তদন্ত প্রক্রিয়াটা যথাযথ কি না বা আন্তর্জাতিক মানের কি না। দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে, তাতে যদি প্রমাণযোগ্য কিছু পাওয়া যায়, তখনই আসবে মামলার প্রশ্ন।’
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, তারা (বিশ্বব্যাংকের প্যানেল) দুদককে কিছু তথ্য দিয়েছে। দুদক বলেছে সিদ্ধান্ত নেবে। তদন্ত কবে শেষ হবে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এটা বলতে পারছি না।’
এ সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশে গওহর রিজভী বলেন, ধারণাপ্রসূত কথাবার্তা বলে কোনো লাভ নেই। দয়া করে তা করবেন না। অর্থমন্ত্রী ঠিকই বলেছেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পের সবকিছু যথাযথভাবেই এগোচ্ছে।
No comments