ব দ লে যা ও ব দ লে দা ও মি ছি ল- বাড়িভাড়া: চট্টগ্রামে ভাড়াটেদের স্বার্থ রক্ষায় উদ্যোগ by সৈয়দ মামুনূর রশীদ
‘বদলে যাও বদলে দাও মিছিল’ ব্লগে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও নির্বাচিত নয়টি ইস্যু নিয়ে অব্যাহত আলোচনা হচ্ছে। আজ ‘বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ চাই’ ইস্যুতে একটি বিশ্লেষণাত্মক অভিমতসহ আরও দুজন লেখকের নির্বাচিত মন্তব্য ছাপা হলো।
শহরাঞ্চলে বাড়িওয়ালা-ভাড়াটে দ্বন্দ্ব্ব দীর্ঘদিন ধরে চাপাপড়া একটি বিষয়। ভেতরের চিত্রটি যদিও সর্বসাধারণের কাছে পরিষ্কার। অস্বচ্ছ কেবল সরকারের কাছে। অস্বাভাবিক বা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া ভাড়াটেরাই নানাভাবে হয়রানি-বঞ্চনার শিকার। এই নীরব কষ্ট-যাতনার কথা সবার জানা থাকলেও বর্তমানে এর মাত্রা কোন পর্যায়ে, নির্যাতনের স্বরূপ কী, ভয়াবহতা কী রকম এবং ভাড়াটেদের জীবনযাপন ও সুষুম নগরায়ণে কী কী নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, তার কোনো তথ্য-পরিসংখ্যান নেই। ভবিষ্যৎ দিনগুলোতে এর প্রভাব নাগরিক জীবনে কতটুকু পড়তে পারে, সে বিষয়েও আমাদের ধারণা পরিষ্কার নয়। মানবাধিকার ইস্যুতে কর্মরত সংস্থাসমূহ বা তাদের কর্মীদের কাছেও ভাড়াটে নির্যাতন বিষয়ে গবেষণালব্ধ কোনো তথ্য নেই।
বহির্বিশ্বে এই ইস্যু নিয়ে অনেক বড় বড় সংস্থা কাজ করলেও বাংলাদেশে এই ইস্যুতে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে এমন কোনো প্রতিষ্ঠিত সংস্থার নাম এখন পর্যন্ত শোনা যায়নি। ভাড়াটেদের নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর টেনেন্ট (আইইউটি) নামের একটি আন্তর্জাতিক সংস্থাও রয়েছে, যার প্রধান কার্যালয় সুইডেনে অবস্থিত। আইইউটি প্রতিবছর আন্তর্জাতিক ভাড়াটে সম্মেলন করে থাকে। যথাযথ মানের কাজ না থাকার কারণেই সেখানে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি প্রতিনিধিত্ব করেননি বা পারেননি।
সংবাদপত্রে জানা যায়, মাত্র ১০ শতাংশ বাড়িওয়ালার কাছে ৯০ শতাংশ ভাড়াটে জিম্মি। বিশ্ব উন্নয়নের চিত্র পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, পৃথিবীর ছোট-বড় অধিকাংশ শহর সৃষ্টি হয়েছে ভাড়াটেদের মেধা, শ্রম ও অর্থ দিয়ে। মূলত ভাড়াটেদের নিয়েই গড়ে ওঠে নগরায়ণ, শিল্পাঞ্চল, অর্থনীতির অন্যান্য বুনিয়াদ। দুঃখজনক হলেও সত্য, যাদের মেধা ও শ্রমে নয়নাভিরাম নগর গঠিত হয়, ওই তিলোত্তমায় তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই হয় না। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার এই সুবর্ণ যুগে ভাড়াটে নামক বিশাল একটি জনগোষ্ঠী অনন্তকাল ধরে নির্যাতনের জাঁতাকলে পিষ্ট হবে, এই দুরবস্থা কারও কাম্য হতে পারে না।
দূরদূরান্ত থেকে আসা ভাড়াটেরা শহরে বসবাস করতে কী ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে, বাড়িওয়ালা কর্তৃক ভাড়াটেদের ওপর নির্যাতনের প্রকৃতি, মাত্রা, কারণ, স্বরূপ এবং এর ব্যাখ্যা ও ফলাফল নিয়ে কেন গবেষণা হয় না, সেটাও খুব রহস্যময়। আমাদের নগর পরিকল্পনাবিদেরা কি শুধু অবকাঠামো নিয়েই ভাববেন? তাঁরা কাদের জন্য শহর বানান, সেটা বোধে আসে না। তবে আপনারা জেনে খুশি হবেন যে চট্টগ্রামে ভাড়াটিয়া কল্যাণ সংস্থা (ভাক্স) নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। তাদের উদ্যোগে একটি পূর্ণাঙ্গ গবেষণাপত্র প্রকাশের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম শহরে বসবাসরত ভাড়াটেদের ওপর এই জরিপ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী, তৃণমূল গবেষক, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটে প্রতিনিধি এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি দল গঠনের মাধ্যমে কাজটি এগিয়ে যাচ্ছে। গবেষণা প্রতিপাদ্যে ভাড়াটে নির্যাতনের কারণ, ব্যাখ্যা, ফলাফল এবং প্রতিকারের উপায়সমূহ অগ্রাধিকারে রাখা হয়েছে।
নগরভিত্তিক কর্মসংস্থান বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন মৌলিক সেবানির্ভরতার কারণে শহরগুলোতে দিনে দিনে ভাড়াটের সংখ্যা বেড়েই চলেছে এবং এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বাড়িওয়ালাদের বহুমাত্রিক শোষণ-বঞ্চনা, যা সভ্য নগরায়ণে এক কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। সুতরাং, এখনই সময় এই অচলাবস্থা নিরসনে প্রশাসন ও সুশীল সমাজের এগিয়ে আসা; সরকারকে আইনগত বিধিব্যবস্থায় পদক্ষেপ নিতে চাপ প্রয়োগ করা। এ কথাও সত্য, এই বৃহৎ জনগোষ্ঠীর অধিকার নিয়ে কেউ না ভাবলেও ভাড়াটেরা নিজেরাই নিজেদের সমস্যার সমাধান এবং অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষমতা রাখে। স্বল্প আয়ের ভাড়াটে নাগরিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় শুধু প্রয়োজন একটু সচেতনতা এবং সুসংগঠিত হওয়া। ভাড়াটেরা সংঘবদ্ধ হয়ে সম্মিলিত প্রয়াসে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, বিরাজমান সমস্যা সমাধানসহ নিজেদের নানামুখী কল্যাণের মাধ্যমে সুষ্ঠু নগরায়ণেও বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।
চট্টগ্রামে কিছু স্বেচ্ছাসেবী উদ্যোগী ২০০৮ সালে ভাড়াটেদের সংগঠিত করে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, কল্যাণ ও জীবনমান উন্নয়নে কাজ করার মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে গঠন করেন ‘ভাড়াটিয়া কল্যাণ সংস্থা (ভাক্স)’। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ভাক্স একটি আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে শহরের কিছু কিছু এলাকায় বাড়িওয়ালা-ভাড়াটের বিরোধ মীমাংসায় মধ্যস্থতা করে। এসব মধ্যস্থতায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, মসজিদের ইমাম, ব্যবসায়ী, ক্লাবের সভাপতি, মহল্লার সর্দারদের আন্তরিক সহযোগিতা ছিল আশাব্যঞ্জক। এমন একটি সংগঠনের গুরুত্ব ও অপরিহার্যতা পর্যবেক্ষণ করে ২০০৯ সালে ভাক্স একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে এবং সংগঠিত আকারে কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার সিদ্ধান্ত নেয়। সংস্থার অনুসংগঠন বা গণসংগঠন হিসেবে ‘ভাড়াটিয়া অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’-এর (টেনেন্ট রাইটস প্রিজারভেশন কাউন্সিল-টিআরপিসি) ব্যানারে চট্টগ্রাম শহরের সব থানায় থানা কমিটি, ওয়ার্ড কমিটি বা মহল্লা কমিটি গঠনের মাধ্যমে ৪১টি ওয়ার্ডে ভাড়াটেদের সুসংগঠিত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। ভাক্স পেশাদার আধুনিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভাড়াটেদের সংগঠিত করে তাদের (১) অধিকার সংরক্ষণ (২) ভাড়াটেদের পারিবারিক কল্যাণ (৩) স্বল্প আয়ের অভাবগ্রস্ত ভাড়াটেসহ সর্বস্তরের ভাড়াটেদের জীবনমান উন্নয়ন—এই তিনটি ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে তিন স্তরের কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
মূলত ভাক্স সদস্যরা বাড়িওয়ালা-ভাড়াটের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের সুন্দর পরিবেশ তৈরিতে এবং উভয়ের স্বার্থ রক্ষায় যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সরকারকে সহযোগিতা করতে চান। বাড়ির মালিকদের উপলব্ধিতে আনতে হবে যে ভাড়াটেরা আত্মীয়স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিঃসঙ্গ ও অসহায় হয়ে পড়ে শহরের জীবনযাপনে। তারা চোর-ডাকাতসহ অন্যান্য দুষ্কৃতকারীর নির্যাতন ও প্রতারণার মুখোমুখি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আমরা মনে করি, ঢাকাসহ প্রতিটি জেলা শহরে ভাড়াটেদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় নিজেদের উদ্যোগী হয়ে সংগঠন গড়ে তোলা সময়ের চাহিদা।
সৈয়দ মামুনূর রশীদ: বদলে যাও বদলে দাও মিছিল ব্লগের নিয়মিত লেখক।
totalmamun@yahoo.com
ই-মেইল: bjbd@prothom-alo.info
facebook.com/bjbdmichhil
জনমত জরিপের ফলাফল
বদলে যাও বদলে দাও মিছিলের ওয়েবসাইটে নতুন তিনটি জনমত শুরু হয়েছে চলতি সপ্তাহে। আপনিও অংশ নিন জরিপে।
ভেজালমুক্ত খাদ্যের নিশ্চয়তায় প্রতিটি জেলায় খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন গঠন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন?
হ্যাঁ ৮৬% না ৮%
মন্তব্য নেই ৬%
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১২ পর্যন্ত
আপনি কি মনে করেন, বাড়িভাড়া নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণে একটি স্বতন্ত্র কমিশন গঠন অপরিহার্য?
হ্যাঁ ৮৬% না ৯%
মন্তব্য নেই ৫%
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১২ পর্যন্ত
আপনি কি মনে করেন, সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে এখনই সাইবার ট্রাইব্যুনাল গঠন জরুরি?
হ্যাঁ ৮৪% না ১১%
মন্তব্য নেই ৫%
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১২ পর্যন্ত
www.bodlejaobodledao.com
বহির্বিশ্বে এই ইস্যু নিয়ে অনেক বড় বড় সংস্থা কাজ করলেও বাংলাদেশে এই ইস্যুতে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে এমন কোনো প্রতিষ্ঠিত সংস্থার নাম এখন পর্যন্ত শোনা যায়নি। ভাড়াটেদের নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর টেনেন্ট (আইইউটি) নামের একটি আন্তর্জাতিক সংস্থাও রয়েছে, যার প্রধান কার্যালয় সুইডেনে অবস্থিত। আইইউটি প্রতিবছর আন্তর্জাতিক ভাড়াটে সম্মেলন করে থাকে। যথাযথ মানের কাজ না থাকার কারণেই সেখানে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি প্রতিনিধিত্ব করেননি বা পারেননি।
সংবাদপত্রে জানা যায়, মাত্র ১০ শতাংশ বাড়িওয়ালার কাছে ৯০ শতাংশ ভাড়াটে জিম্মি। বিশ্ব উন্নয়নের চিত্র পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, পৃথিবীর ছোট-বড় অধিকাংশ শহর সৃষ্টি হয়েছে ভাড়াটেদের মেধা, শ্রম ও অর্থ দিয়ে। মূলত ভাড়াটেদের নিয়েই গড়ে ওঠে নগরায়ণ, শিল্পাঞ্চল, অর্থনীতির অন্যান্য বুনিয়াদ। দুঃখজনক হলেও সত্য, যাদের মেধা ও শ্রমে নয়নাভিরাম নগর গঠিত হয়, ওই তিলোত্তমায় তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই হয় না। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার এই সুবর্ণ যুগে ভাড়াটে নামক বিশাল একটি জনগোষ্ঠী অনন্তকাল ধরে নির্যাতনের জাঁতাকলে পিষ্ট হবে, এই দুরবস্থা কারও কাম্য হতে পারে না।
দূরদূরান্ত থেকে আসা ভাড়াটেরা শহরে বসবাস করতে কী ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে, বাড়িওয়ালা কর্তৃক ভাড়াটেদের ওপর নির্যাতনের প্রকৃতি, মাত্রা, কারণ, স্বরূপ এবং এর ব্যাখ্যা ও ফলাফল নিয়ে কেন গবেষণা হয় না, সেটাও খুব রহস্যময়। আমাদের নগর পরিকল্পনাবিদেরা কি শুধু অবকাঠামো নিয়েই ভাববেন? তাঁরা কাদের জন্য শহর বানান, সেটা বোধে আসে না। তবে আপনারা জেনে খুশি হবেন যে চট্টগ্রামে ভাড়াটিয়া কল্যাণ সংস্থা (ভাক্স) নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। তাদের উদ্যোগে একটি পূর্ণাঙ্গ গবেষণাপত্র প্রকাশের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম শহরে বসবাসরত ভাড়াটেদের ওপর এই জরিপ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী, তৃণমূল গবেষক, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটে প্রতিনিধি এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি দল গঠনের মাধ্যমে কাজটি এগিয়ে যাচ্ছে। গবেষণা প্রতিপাদ্যে ভাড়াটে নির্যাতনের কারণ, ব্যাখ্যা, ফলাফল এবং প্রতিকারের উপায়সমূহ অগ্রাধিকারে রাখা হয়েছে।
নগরভিত্তিক কর্মসংস্থান বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন মৌলিক সেবানির্ভরতার কারণে শহরগুলোতে দিনে দিনে ভাড়াটের সংখ্যা বেড়েই চলেছে এবং এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বাড়িওয়ালাদের বহুমাত্রিক শোষণ-বঞ্চনা, যা সভ্য নগরায়ণে এক কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। সুতরাং, এখনই সময় এই অচলাবস্থা নিরসনে প্রশাসন ও সুশীল সমাজের এগিয়ে আসা; সরকারকে আইনগত বিধিব্যবস্থায় পদক্ষেপ নিতে চাপ প্রয়োগ করা। এ কথাও সত্য, এই বৃহৎ জনগোষ্ঠীর অধিকার নিয়ে কেউ না ভাবলেও ভাড়াটেরা নিজেরাই নিজেদের সমস্যার সমাধান এবং অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষমতা রাখে। স্বল্প আয়ের ভাড়াটে নাগরিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় শুধু প্রয়োজন একটু সচেতনতা এবং সুসংগঠিত হওয়া। ভাড়াটেরা সংঘবদ্ধ হয়ে সম্মিলিত প্রয়াসে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, বিরাজমান সমস্যা সমাধানসহ নিজেদের নানামুখী কল্যাণের মাধ্যমে সুষ্ঠু নগরায়ণেও বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।
চট্টগ্রামে কিছু স্বেচ্ছাসেবী উদ্যোগী ২০০৮ সালে ভাড়াটেদের সংগঠিত করে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, কল্যাণ ও জীবনমান উন্নয়নে কাজ করার মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে গঠন করেন ‘ভাড়াটিয়া কল্যাণ সংস্থা (ভাক্স)’। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ভাক্স একটি আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে শহরের কিছু কিছু এলাকায় বাড়িওয়ালা-ভাড়াটের বিরোধ মীমাংসায় মধ্যস্থতা করে। এসব মধ্যস্থতায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, মসজিদের ইমাম, ব্যবসায়ী, ক্লাবের সভাপতি, মহল্লার সর্দারদের আন্তরিক সহযোগিতা ছিল আশাব্যঞ্জক। এমন একটি সংগঠনের গুরুত্ব ও অপরিহার্যতা পর্যবেক্ষণ করে ২০০৯ সালে ভাক্স একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে এবং সংগঠিত আকারে কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার সিদ্ধান্ত নেয়। সংস্থার অনুসংগঠন বা গণসংগঠন হিসেবে ‘ভাড়াটিয়া অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’-এর (টেনেন্ট রাইটস প্রিজারভেশন কাউন্সিল-টিআরপিসি) ব্যানারে চট্টগ্রাম শহরের সব থানায় থানা কমিটি, ওয়ার্ড কমিটি বা মহল্লা কমিটি গঠনের মাধ্যমে ৪১টি ওয়ার্ডে ভাড়াটেদের সুসংগঠিত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। ভাক্স পেশাদার আধুনিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভাড়াটেদের সংগঠিত করে তাদের (১) অধিকার সংরক্ষণ (২) ভাড়াটেদের পারিবারিক কল্যাণ (৩) স্বল্প আয়ের অভাবগ্রস্ত ভাড়াটেসহ সর্বস্তরের ভাড়াটেদের জীবনমান উন্নয়ন—এই তিনটি ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে তিন স্তরের কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
মূলত ভাক্স সদস্যরা বাড়িওয়ালা-ভাড়াটের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের সুন্দর পরিবেশ তৈরিতে এবং উভয়ের স্বার্থ রক্ষায় যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সরকারকে সহযোগিতা করতে চান। বাড়ির মালিকদের উপলব্ধিতে আনতে হবে যে ভাড়াটেরা আত্মীয়স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিঃসঙ্গ ও অসহায় হয়ে পড়ে শহরের জীবনযাপনে। তারা চোর-ডাকাতসহ অন্যান্য দুষ্কৃতকারীর নির্যাতন ও প্রতারণার মুখোমুখি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আমরা মনে করি, ঢাকাসহ প্রতিটি জেলা শহরে ভাড়াটেদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় নিজেদের উদ্যোগী হয়ে সংগঠন গড়ে তোলা সময়ের চাহিদা।
সৈয়দ মামুনূর রশীদ: বদলে যাও বদলে দাও মিছিল ব্লগের নিয়মিত লেখক।
totalmamun@yahoo.com
ই-মেইল: bjbd@prothom-alo.info
facebook.com/bjbdmichhil
জনমত জরিপের ফলাফল
বদলে যাও বদলে দাও মিছিলের ওয়েবসাইটে নতুন তিনটি জনমত শুরু হয়েছে চলতি সপ্তাহে। আপনিও অংশ নিন জরিপে।
ভেজালমুক্ত খাদ্যের নিশ্চয়তায় প্রতিটি জেলায় খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন গঠন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন?
হ্যাঁ ৮৬% না ৮%
মন্তব্য নেই ৬%
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১২ পর্যন্ত
আপনি কি মনে করেন, বাড়িভাড়া নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণে একটি স্বতন্ত্র কমিশন গঠন অপরিহার্য?
হ্যাঁ ৮৬% না ৯%
মন্তব্য নেই ৫%
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১২ পর্যন্ত
আপনি কি মনে করেন, সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে এখনই সাইবার ট্রাইব্যুনাল গঠন জরুরি?
হ্যাঁ ৮৪% না ১১%
মন্তব্য নেই ৫%
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১২ পর্যন্ত
www.bodlejaobodledao.com
No comments