ড্রোন হামলা- যুক্তরাষ্ট্রকে চুক্তি করার পরামর্শ

পাকিস্তানের অভ্যন্তরে চালকবিহীন বিমান (ড্রোন) হামলার আগে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত দেশটির সঙ্গে এ ব্যাপারে একটি চুক্তি সম্পাদন করা। মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট গত শুক্রবার প্রকাশিত সম্পাদকীয় নিবন্ধে এই মন্তব্য করেছে।


পত্রিকাটি বলেছে, পাকিস্তানে ড্রোন হামলা চালানোর আগে যুক্তরাষ্ট্রকে রাজনৈতিক জবাবদিহি, সংযম ও ভারসাম্য নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রকে মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা আরও বাড়াতে হবে।
ড্রোন হামলায় সামরিক বাহিনীর পরিবর্তে সিআইএর মতো গোয়ন্দা সংস্থার সংশ্লিষ্টতা অনুচিত। যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে ড্রোন হামলার ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে। এ ধরনের উদ্যোগ কংগ্রেসে পর্যালোচনা ও অনুমোদনের জন্য ভোটাভুটির ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে।
বিশ্বজুড়ে জঙ্গিদের ওপর ড্রোন হামলাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া মার্কিন স্বার্থের পরিপন্থী এবং এ ধরনের তৎপরতা অব্যাহত রাখা অসম্ভব।
পত্রিকাটিতে আগে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলা হয় যে লিবিয়া, মালিসহ অন্য যেসব দেশে জিহাদি তৎপরতা রয়েছে, সেই সব স্থানেও ড্রোন হামলার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে নতুন করে আইনি ও রাজনৈতিক জটিলতা তৈরি হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র এ পর্যন্ত অন্তত ৪০০ জনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।
মার্কিন বাহিনীর হামলায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহতদের মধ্যে বেসামরিক লোকজনও রয়েছে। আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হলেও ওবামা প্রশাসন সেখানে আরও লোকজনকে বন্দী অথবা হত্যা করার পরিকল্পনা করছে। এসব কর্মকাণ্ড মার্কিন নাগরিক ও যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের অস্বস্তি বাড়াবে। ড্রোন হামলার ঘটনাগুলো যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশ উভয়ের ক্ষতি করছে। এসব হামলার বৈধতা ও নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় গোপন রাখার যৌক্তিকতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলো প্রশ্ন তুলছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থ হুমকির মুখে পড়ছে।
ওবামা প্রশাসনের এই রণকৌশল মার্কিন নির্বাচনী প্রচার কার্যক্রমে আরও বেশি গুরুত্ব পেতে পারত। মার্কিন ড্রোন হামলার সমালোচনা করেন ন্যাটোয় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত কার্ট ভলকার। তিনি বলেন, রাশিয়া যদি চেচনিয়ায় এবং চীন যদি তিব্বতে ড্রোন হামলা শুরু করে, তখন যুক্তরাষ্ট্র কী বলবে? ডন।

No comments

Powered by Blogger.