সবকিছুই ভুলে যাচ্ছে মানুষ- পদক্ষেপ নেওয়ার এখনই সময়

মানুষ খুব দ্রুত ভুলে যায়। এটা একটা আন্তর্জাতিক মানের সমস্যা। আমাদের দেশের মানুষের কথাই ধরুন। আমরাও খুব সহজেই সহজ বিষয়গুলো ভুলে যাই। মোট ইলিশের একটা বিরাট অংশ যেমন নদীতে এসে জালে আটকা পড়ে, তেমনি এ দেশের মোট জনসংখ্যার একটা বিরাট অংশ ঢাকা শহরে এসে আটকা পড়েন নানা ঝামেলায়।


ঝামেলা-বিপদে তাঁদের আশ্রয় দেয় রাজধানী ঢাকা। সারা বছর তাঁরা ঢাকায় থাকেন। অথচ ছুটি পেলেই তাঁরা ভুলে যান ঢাকাকে। শুধু তা-ই না, টিভির সাক্ষাৎকারেও বলেন, ‘জ্যামের শহর ঢাকা ছেড়ে গ্রামে যেতে আমাদের খুব ভালো লাগছে।’ দুঃখের সময় ঢাকায় থাকবেন, আর আনন্দে ঢাকা ছেড়ে চলে যাবেন, এটা কেমন কথা? আর চলেই যদি যাবেন, তবে আবার আসার দরকারটা কী? ছুটি শেষ, ব্যস; গাঁট্টি-বোঁচকা নিয়ে আবার ঢাকায় এসে উপস্থিত! এভাবেই চলছে দেশ! এ তো গেল ‘গ্রামে ফিরে যাও এবং শহরে ফিরে আসো’ নীতিতে বিশ্বাসী মানুষের কথা। যাঁরা সব সময় ঢাকায় থাকেন, তাঁরাও ঢাকার কথা, ঢাকাকে রক্ষার কথা ভুলে যান। কোরবানির বিভিন্ন বর্জ্য জায়গামতো ফেলে কোথায় আরও শহরটাকে সুন্দর করে রাখবেন, তা না! আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব স্লোগানের মতো সবাই ‘আমার বর্জ্য আমি ফেলব, যেখানে ইচ্ছা সেখানে ফেলব’ এই নীতিতে বিশ্বাসী হয়ে শহরের অলিগলি আবর্জনায় ভরিয়ে ফেলেছে। অথচ, চাইলেই যে আমরা শহরটাকে সুন্দর রাখতে পারি তা সবাই ভুলেই গেল। রাজধানী ঢাকার প্রতি কারও রেসপেক্টই নাই! হাউ স্ট্রেঞ্জ! অবশ্য যেখানে মানুষের প্রতি মানুষের রেসপেক্ট অর্থাৎ সম্মান নাই, সেখানে শহরের কথা ভাবার সময় কোথায়? কবি-লেখকেরাও কিন্তু ঢাকা তথা নগরকে খুব একটা ভালোবাসেননি। তাই তো লেখা হয়েছে অরণ্য ফিরিয়ে দিয়ে এই নগর লওয়ার কথা। কিন্তু এই ঢাকা নগর লইয়া আমরা কোথায় যাব? কোথাও যাওয়ার জায়গা নাই বলেই আমরা আবার সবাই এই নগরেই ফিরে এসেছি। ফিরে এসে ফিরিয়ে এনেছি ট্রাফিক জ্যাম, গিজগিজে মানুষের ভিড়।
যাই হোক, এত কথা না বলে আর দুইটা কথা বলে বিদায় নিই। এ সংখ্যায় অন্যান্য আইটেমের পাশাপাশি ছাপা হলো পাঠকেরও কিছু লেখা। এখন থেকে প্রতি সংখ্যাতেই পাঠকের লেখা নিয়মিত ছাপা হবে বলে আশা করছি। কাজেই ভালো ভালো লেখা পাঠান আর কম কম মাংস খেয়ে সুস্থ থাকুন সবাই।

No comments

Powered by Blogger.