মিলন ও সুমাইয়া-একটি বিয়োগান্ত নাটক
বিশ্বখ্যাত নাট্যকার উইলিয়াম শেকসপিয়রের রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট নাটকের কথা সবার জানা। শত শত বছর ধরে এই বিরহ নাটক বিশ্বজুড়ে বহু মানুষের চোখের পানির কারণ হয়েছে। বহু প্রেমিক-প্রেমিকাকে আত্মদানে উৎসাহিত করেছে। দুই বিবদমান গোষ্ঠীর পুত্র ও কন্যা রোমিও ও জুলিয়েট।
পরিবার দুটির পরস্পর-বিরোধিতা রোমিও-জুলিয়েটকে রুখতে পারেনি। নরনারীর স্বাভাবিক আকর্ষণেই তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত প্রেমিক-জুটির মৃত্যুর মধ্য দিয়ে নাটকের করুণ অন্ত ঘটেছে। একটি বাধ্যতামূলক বিয়ে এড়ানোর জন্য জুলিয়েট ওষুধ খায়। যে ওষুধ তাকে ৪২ ঘণ্টা অচেতন করে রাখতে সক্ষম। কথা ছিল, যথাসময়ে বিশ্বস্ত বার্তাবাহক রোমিওকে ছদ্মমৃত্যুর কথা জানাবে। মৃতবৎ জুলিয়েটকে সমাহিত করা হয়। কিন্তু বার্তাবাহক রোমিওর কাছে খবর পেঁৗছাতে পারে না। রোমিও অন্যদের কাছে জুলিয়েটের মৃত্যুসংবাদ পায় এবং বিষ কিনে নিয়ে জুলিয়েটের সমাধির পাশেই আত্মহত্যা করে। অন্যদিকে, যথাসময়ে জুলিয়েটের চেতনা ফিরে এলে সে রোমিওকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। প্রিয়তমের বিয়োগ ব্যথায় শামিল হতে বুকে অস্ত্র হেনে নিজেও তার সহযাত্রী হয়। বাগেরহাটে সম্প্রতি যেন রোমিও-জুলিয়েট নাটকের পুনরাবৃত্তি হলো। তবে কোনো মঞ্চে নয়, বাস্তবে। মিলন ও সুমাইয়া প্রেমে পড়েছিল, কিন্তু দু'জনের পরিবার তাদের প্রেম মেনে নেয়নি। বরং নানাভাবে বাধা দিয়েছে। পরিণতিতে প্রথমে সুমাইয়া কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করে। সুমাইয়ার মৃত্যুর খবর পেয়ে মিলনও আত্মহত্যা করে। পরস্পরের প্রতি প্রেমবোধের এ দৃষ্টান্ত নিশ্চয় রোমিও-জুলিয়েটকেই মনে করিয়ে দেয়। একই সঙ্গে এ কথাও বলতে হবে, এই তরুণ টিনএজারের মৃত্যু অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক। বয়সের চাপল্যে দু'জনে প্রেমে পড়েছে, আর সেটি হওয়া স্বাভাবিক। এমন প্রেমের ঘটনায় সাধারণত পরিবারের মত থাকে না। পরিবারগুলো ছেলেমেয়েদের ফেরাতে নানা চাপ প্রয়োগ করে। আর এই কঠোর চাপের ফলে কিশোর ও তরুণদের মনে নানা প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। তারা অনেক সময় আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। এসব ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের উচিত আলাপ-আলোচনার পথে এগোনো। সম্পর্ক ক্ষতিকর মনে হলে বুঝিয়ে ফেরানো উচিত। কিন্তু এমন পরিস্থিতি তৈরি করা উচিত নয় যাতে ছেলেমেয়েরা আত্মহত্যার মতো পথ বেছে নেয়। প্রেম সুন্দর, অল্প বয়সের প্রেমের সৌন্দর্য হয়তো আরও বেশি।
সে কারণেই হয়তো অনেকের মনেই অল্প বয়সের প্রেমের স্মৃতিই
চিরজাগরূক থাকে। এমন অবুঝ প্রেমের কারণে কারও করুণ মৃত্যু
কখনোই প্রত্যাশিত হতে পারে না।
সে কারণেই হয়তো অনেকের মনেই অল্প বয়সের প্রেমের স্মৃতিই
চিরজাগরূক থাকে। এমন অবুঝ প্রেমের কারণে কারও করুণ মৃত্যু
কখনোই প্রত্যাশিত হতে পারে না।
No comments