লাইপসিশে সাড়া জাগালো ‘শুনতে কি পাও!’ by আরাফাতুল ইসলাম
‘শুনতে কি পাও!’ নামের মাঝেই লুকিয়ে আছে কিছু একটা শোনানোর, বোঝানোর আকাঙ্ক্ষা৷ কিংবা এমন কোনো কিছুর প্রতি ইঙ্গিত যা ঘটে যাচ্ছে আমাদের আশেপাশে, অথচ আমরা হয়ত সেটা খেয়ালই করছি না৷
এমন নাম তাই বাঙালি-অবাঙালি নির্বিশেষে সবাইকে খানিকটা উৎসুক করে তুলবে, সেটাই স্বাভাবিক৷
হয়েছেও তেমন৷ প্রামাণ্যচিত্র বিষয়ক পৃথিবীর প্রাচীনতম উৎসব ডক-লাইপসিশের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জায়গা করে নিয়েছে ছবিটি৷ এই প্রথম কোনো বাংলাদেশি ছবি ডক-লাইপসিশে উদ্বোধনী ছবি হিসেবে প্রদর্শন করা হলো৷ এবং তা ছিল ছবিটির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার! সেখানে বাঙালি পাঁচজন বাদে বাকি ৭৫০ অতিথির সবাই আবার ভিনদেশি৷
বাংলাদেশি পাঁচজনের মধ্যে দু’জন হচ্ছেন- ছবিটির পরিচালক কামার আহমাদ সাইমন এবং প্রযোজক সারা আফরীন। উৎসবে আরো কয়েকটি বিদেশি ছবির সঙ্গে মূল প্রতিযোগিতায়ও রয়েছে ‘শুনতে কি পাও!’
প্রশ্ন জাগতে পারে, ‘শুনতে কি পাও!’ দেখার পর বিদেশিদের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল? দর্শকদের অনেকেই বলেছেন, ছবিটির প্রতিটি দৃশ্য অনুভব করেছেন তারা৷ বিশেষ করে বর্ষার দৃশ্যগুলো বেশি আলোড়িত করেছে ভিনদেশি দর্শকদের৷ আবার ঝড়বৃষ্টির মধ্যেই ছবিটি শেষ করে দেওয়ায় খানিকটা আক্ষেপও ছিল কারো কারো মাঝে৷
ডক-লাইপসিশের পরিচালক ক্লাস ডানিয়েলসেন অকপটে স্বীকার করলেন, এরকম একটি ছবি উদ্বোধনীতে রাখতে পেরে তারা গর্বিত৷ এবং ভবিষ্যতেও প্রত্যাশামত বাংলা ছবি পেলে উৎসবে জায়গা দেবেন তিনি৷
‘শুনতে কি পাও!” ছবিটি সুতরখালি গ্রামের একটি পরিবারের রোজকার গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে৷ সুন্দরবনের কোলঘেষে বয়ে চলা ভদ্রা নদীর পাড়ে এই গ্রামের অবস্থান৷ ২০০৯ সালে সাইক্লোন আইলার আঘাতে গ্রামটি লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়৷ মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছে৷ কিন্তু জীবন থেমে থাকেনা৷ শুরু হয় নতুন আবাসের সন্ধান, আবারো সংসার গোছানোর লড়াই, একইসঙ্গে গ্রামটাকে রক্ষায় বাঁধ নির্মাণের কাজ৷
ছবিটির দৃশ্যায়ন এককথায় অসাধারণ। পরিচালক ছবির চরিত্রগুলোকে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং তাদের আবেগ-অনুভূতি চমৎকারভাবে ক্যামেরাবন্দি করেছেন৷ বার্লিনপ্রবাসী প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা শাহীন দিল-রিয়াজ যথার্থই বলেছেন, ‘‘ছবির চরিত্রগুলোর সঙ্গে তারা (নির্মাতারা) রীতিমত জীবনযাপন করেছেন৷ না করলে এরকম মুহূর্তগুলো ক্যামেরায় ধরা যেত না৷”
জার্মানির লাইপসিশ শহরে শুনতে কি পাও!’র প্রথম প্রদর্শনীর পরের দিন মঙ্গলবার দুপুরে একান্তে পাওয়া গেলে কামার ও সারাকে৷ আগের রাতে দর্শকদের ভূয়সী প্রশংসায় ডুবে ছিলেন তারা৷ ফলে সাক্ষাৎকার ছাড়া আড্ডা দেওয়ার মতো সময় তাদের ছিল না৷
কামারের অবশ্য একটি বড় আফসোসও রয়েছে৷ গত বছর সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদকে ছবিটি দেখাতে পারেননি তিনি৷ তারেক মাসুদকে গুরু মানেন কামার৷ সেটা তাঁর ছবি দেখেও বোঝা গেছে৷ তাঁর এই সৃষ্টিকে তুলনা করা যেতে পারে তারেক মাসুদের ‘রানওয়ে’ ছবির সঙ্গে৷ দুটো ছবির প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন৷ কিন্তু কাজের ধরনে মিল অনেক৷
বলা যেতে পারে, চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে একটি ভিন্ন ধারা সৃষ্টি করছে ‘রানওয়ে”, ‘শুনতে কি পাও!’র মতো ছবিগুলো৷ তারেক মাসুদের অকাল প্রয়াণ এই ধারাকে বাধাগ্রস্ত করেছে, সেটা মানতেই হবে৷ তবে একইসঙ্গে আশা জাগাচ্ছেন কামাররা৷ তারেক মাসুদের দেখানো পথে এগিয়ে যাবে একাত্তর পরবর্তী প্রজন্ম, কামারের কাজ দেখে সেই আশা করাই যায়৷
লাইপসিশের পর কামারের পরবর্তী গন্তব্য নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম৷ সেখানে ইডফা উৎসবে নিজেদের সৃষ্টি নিয়ে হাজির থাকবেন এই নির্মাতা জুটি৷ ইডফা হচ্ছে প্রামাণ্যচিত্র বিষয়ক বিশ্বের সবচেয়ে বড় উৎসব৷
বাংলাদেশি পাঁচজনের মধ্যে দু’জন হচ্ছেন- ছবিটির পরিচালক কামার আহমাদ সাইমন এবং প্রযোজক সারা আফরীন। উৎসবে আরো কয়েকটি বিদেশি ছবির সঙ্গে মূল প্রতিযোগিতায়ও রয়েছে ‘শুনতে কি পাও!’
প্রশ্ন জাগতে পারে, ‘শুনতে কি পাও!’ দেখার পর বিদেশিদের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল? দর্শকদের অনেকেই বলেছেন, ছবিটির প্রতিটি দৃশ্য অনুভব করেছেন তারা৷ বিশেষ করে বর্ষার দৃশ্যগুলো বেশি আলোড়িত করেছে ভিনদেশি দর্শকদের৷ আবার ঝড়বৃষ্টির মধ্যেই ছবিটি শেষ করে দেওয়ায় খানিকটা আক্ষেপও ছিল কারো কারো মাঝে৷
ডক-লাইপসিশের পরিচালক ক্লাস ডানিয়েলসেন অকপটে স্বীকার করলেন, এরকম একটি ছবি উদ্বোধনীতে রাখতে পেরে তারা গর্বিত৷ এবং ভবিষ্যতেও প্রত্যাশামত বাংলা ছবি পেলে উৎসবে জায়গা দেবেন তিনি৷
‘শুনতে কি পাও!” ছবিটি সুতরখালি গ্রামের একটি পরিবারের রোজকার গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে৷ সুন্দরবনের কোলঘেষে বয়ে চলা ভদ্রা নদীর পাড়ে এই গ্রামের অবস্থান৷ ২০০৯ সালে সাইক্লোন আইলার আঘাতে গ্রামটি লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়৷ মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছে৷ কিন্তু জীবন থেমে থাকেনা৷ শুরু হয় নতুন আবাসের সন্ধান, আবারো সংসার গোছানোর লড়াই, একইসঙ্গে গ্রামটাকে রক্ষায় বাঁধ নির্মাণের কাজ৷
ছবিটির দৃশ্যায়ন এককথায় অসাধারণ। পরিচালক ছবির চরিত্রগুলোকে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং তাদের আবেগ-অনুভূতি চমৎকারভাবে ক্যামেরাবন্দি করেছেন৷ বার্লিনপ্রবাসী প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা শাহীন দিল-রিয়াজ যথার্থই বলেছেন, ‘‘ছবির চরিত্রগুলোর সঙ্গে তারা (নির্মাতারা) রীতিমত জীবনযাপন করেছেন৷ না করলে এরকম মুহূর্তগুলো ক্যামেরায় ধরা যেত না৷”
জার্মানির লাইপসিশ শহরে শুনতে কি পাও!’র প্রথম প্রদর্শনীর পরের দিন মঙ্গলবার দুপুরে একান্তে পাওয়া গেলে কামার ও সারাকে৷ আগের রাতে দর্শকদের ভূয়সী প্রশংসায় ডুবে ছিলেন তারা৷ ফলে সাক্ষাৎকার ছাড়া আড্ডা দেওয়ার মতো সময় তাদের ছিল না৷
কামারের অবশ্য একটি বড় আফসোসও রয়েছে৷ গত বছর সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদকে ছবিটি দেখাতে পারেননি তিনি৷ তারেক মাসুদকে গুরু মানেন কামার৷ সেটা তাঁর ছবি দেখেও বোঝা গেছে৷ তাঁর এই সৃষ্টিকে তুলনা করা যেতে পারে তারেক মাসুদের ‘রানওয়ে’ ছবির সঙ্গে৷ দুটো ছবির প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন৷ কিন্তু কাজের ধরনে মিল অনেক৷
বলা যেতে পারে, চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে একটি ভিন্ন ধারা সৃষ্টি করছে ‘রানওয়ে”, ‘শুনতে কি পাও!’র মতো ছবিগুলো৷ তারেক মাসুদের অকাল প্রয়াণ এই ধারাকে বাধাগ্রস্ত করেছে, সেটা মানতেই হবে৷ তবে একইসঙ্গে আশা জাগাচ্ছেন কামাররা৷ তারেক মাসুদের দেখানো পথে এগিয়ে যাবে একাত্তর পরবর্তী প্রজন্ম, কামারের কাজ দেখে সেই আশা করাই যায়৷
লাইপসিশের পর কামারের পরবর্তী গন্তব্য নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম৷ সেখানে ইডফা উৎসবে নিজেদের সৃষ্টি নিয়ে হাজির থাকবেন এই নির্মাতা জুটি৷ ইডফা হচ্ছে প্রামাণ্যচিত্র বিষয়ক বিশ্বের সবচেয়ে বড় উৎসব৷
No comments