তেল গ্যাস নিয়ে নিউইয়র্কে তেলেসমাতি! by মাহমুদ মেনন
নিউইয়র্কে এখন যা কিছু ঘটছে সবই ইতিহাসে বিরল। ইতিহাসে এতবড় ঝড় কেউ দেখেনি। এতো ক্ষয়ক্ষতি কখনোই হয়নি। ১০৮ বছরে মেট্রোরেল এমন বিপাকে পড়েনি। ১৮৮৮ সালের পর প্রাকৃতিক দুর্যোগে স্টক মার্কেট টানা দুই দিন বন্ধ থাকলো এই প্রথম।
এমন আরো অনেক বিষয়। আর এই বিরল ঘটনার মিছিলে বৃহস্পতিবার যোগ হলো তেল ও গ্যাস ক্রাইসিস। তেল নেই, গ্যাস নেই। অধিকাংশ পাম্পই বন্ধ। তেলের জন্য লাইন ছাড়িয়েছে মাইলের পর মাইল। অপেক্ষার প্রহর দির্ঘায়িত হয়েছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
বৃহস্পতিবার রাতে জ্যাকসনহাইটসে এই নিয়েই জম্পেস আড্ডা জমে। ঢাকা থেকে অনেক সাংবাদিক এসে পৌঁছেছেন সঙ্গে স্থানীয় সাংবাদিক ও এক দুই জন ব্যবসায়ীও ছিলেন। কিন্তু বিষয়টি তার চেয়েও বেশি জমে ওঠে যখন ১০ মিনিটে ছোট্ট ড্রাইভটি শেষ হয় আড়াই ঘণ্টায়।
গাড়ি চালাচ্ছিলেন একসময়ের ছাত্রনেতা বর্তমানে নিউইয়র্কে নামি ব্যবসায়ী বাদল শফিউল্লাহ। সারাদিন ধরে তেল বা গ্যাস নেওয়ার চেষ্টা করেও পারেননি। রাতে তেল না নিলে পরের দিন সকালে বাচ্চাদের স্কুলে দেওয়াই হবে না। আর এ জন্য গাড়িতে আমরা যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত।
যেই গ্যাস বা তেলের পাম্পে যাচ্ছি দেখছি লম্বা লাইন। আগেই বলেছি একেকটি লাইন মাইল ছাড়িয়েছে। তবে একটি লাইন অপেক্ষাকৃত ছোট তা হচ্ছে যারা গাড়ি নয়, হাতে জারিকেন নিয়ে তেল নিচ্ছেন পাম্পগুলো থেকে। সাব্যস্ত হলো বাদলভাইও সেটাই করবেন। এখন শুরু হলো গাড়ি পার্ক করার চেষ্টা। সানি সাইডে ফোর্টি স্ট্রিট থেকে এদিকে থার্টি সেভেন স্ট্রিটে গোটা কয়েক চক্কর দেওয়ার পরেও পার্কিং পাওয়া গেলো না।
এবার শুরু হলো ফোর্টি ওয়ান, ফোর্টি টু থেকে ফোর্টি এইট স্ট্রিট পর্যন্ত পার্কিং খোঁজার চেষ্টা। এর মধ্যে কোনো কোনো স্ট্রিটে একাধিক চক্করও দিতে হলো। অবশেষে ফোর্টি থ্রি স্ট্রিটে কোনো এক দয়ালু ব্যক্তি তার গাড়িটি সরিয়ে নিলে সেখানে পার্ক করা গেলো গাড়ি। এরপর বাদলভাই জারিকেন হাতে ছুটলেন তেলের খোঁজে। ততক্ষণে রাত আড়াইটা। তবে কতক্ষণ পরে তিনি জারিকেনে তেল পেলেন সে খবর আর রাতে নেওয়া হয়নি।
এই হলো নিজের অবস্থা। আর রাস্তায় যা দেখলাম তা হচ্ছে পাম্পে পাম্পে বিশাল লাইন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই দেখা যায় এই ক্রাইসিস। অফিস ডেতে অনেকেই গাড়ি বের করতে পারেননি গ্যাস বা তেলের সঙ্কটে। বাসগুলোতে প্রচণ্ড ভিড়। ঢাকার মুড়ির টিনে ধাক্কাধাক্কি করে বাসে চড়ার যাদের অভ্যাস নেই তারা বা গোবেচারারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও বাসে উঠতে পারেননি। সিটিতে অবশ্য বৃহস্পতিবার বিকেলে আংশিক মেট্রোরেল সার্ভিস চালু হয়। তাতে কিছুটা রক্ষা পাওয়া যায়। কিন্তু গাড়ি যার আছে তার তো তাতে তেল গ্যাস নিতেই হবে।
লাইনগুলোতে দেখা যায় কোনো কোনো গাড়ি দীর্ঘ লাইন পাড়ি দিয়ে শেষ ফোটা তেলটুকুও শেষ করে ফেলেছেন এবার ধাক্কাধাক্কির পালা। অনেকেই এভাবে ধাক্কিয়ে গাড়ি নিয়ে শেষ পর্যন্ত তেল পাচ্ছেন কিংবা গ্যাস ভর্তি করতে পারছেন। এ এক অভিজ্ঞতা, যা নিউইয়র্কবাসী অর্জন করলেন হারিকেন স্যান্ডির প্রভাবে।
তেল বা গ্যাসের সরবরাহ নেই তা কিন্তু নয়, মূল সমস্যা ছিলো তার সঞ্চালন ব্যবস্থায়। বিশেষ করে নিউ জার্সির লিনডেনে ঝুঁকিপূর্ন টার্মিনাল এলাকা থেকে কোনো গ্যাসই আনা যাচ্ছিলো না। ভয়াবহ হারিকেনের আঘাতের পর নিউ জার্সির ওই এলাকা এখনো বিদ্যুৎহীন। আর সেটাই ছিলো সব সঙ্কটের মূলে। কোনো কোনো টার্মিনালে পানি ঢুকে পড়ায় সেগুলোতে এখনো কাজ শুরু করা যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড বৃহস্পতিবার জানিয়েছে গ্যাস ও তেলের সরবরাহ পেতে তারা আংশিক ও সতর্কতার সঙ্গে নিউইয়র্ক ও নিউ জার্সি বন্দর খুলে দিতে যাচ্ছে। ধারনা করা হচ্ছে পুরো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সাত থেকে ১০ দিন সময় লাগবে। হঠাৎ করেই কোনো কিছু করে ফেলা সম্ভব হবে না।
তেলের জন্যই আমেরিকা যুদ্ধবাজ নাম নিয়েছে। বিশ্বের কোথায় তেল আছে, হামলা করো, তেল নিয়ে আসো এই নীতিতে বিশ্বাসী বলে দেশটির সমালোচনা রয়েছে। অথচ নিজের সিস্টেমে গড়বড়ের কারণে তার নাগরিকেরা তেল সঙ্কটে ভুগলো এমনভাবে। জানি না এ থেকে আমেরিকা কী শিক্ষা নেবে।
তবে এত সঙ্কটেও নিউইয়র্কবাসী শান্ত থেকেছে। কোথাও কোনো এতটুকু ঝামেলা হয়নি, লাইনগুলো কথাকাটাকাটি হাতাহাতি দেখা যায়নি। অবশ্য সেগুলো নিয়ন্ত্রণে ব্যাপকহারে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিউইয়র্কে বৃহস্পতিবার মোড়ে মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ দেখা গিয়েছিলো। সিগন্যাল বাতির সঙ্গে গুছিয়ে চলা নগরে এটাও নাকি বিরল ঘটনা বললেন একজন।
গাড়ি চালাচ্ছিলেন একসময়ের ছাত্রনেতা বর্তমানে নিউইয়র্কে নামি ব্যবসায়ী বাদল শফিউল্লাহ। সারাদিন ধরে তেল বা গ্যাস নেওয়ার চেষ্টা করেও পারেননি। রাতে তেল না নিলে পরের দিন সকালে বাচ্চাদের স্কুলে দেওয়াই হবে না। আর এ জন্য গাড়িতে আমরা যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত।
যেই গ্যাস বা তেলের পাম্পে যাচ্ছি দেখছি লম্বা লাইন। আগেই বলেছি একেকটি লাইন মাইল ছাড়িয়েছে। তবে একটি লাইন অপেক্ষাকৃত ছোট তা হচ্ছে যারা গাড়ি নয়, হাতে জারিকেন নিয়ে তেল নিচ্ছেন পাম্পগুলো থেকে। সাব্যস্ত হলো বাদলভাইও সেটাই করবেন। এখন শুরু হলো গাড়ি পার্ক করার চেষ্টা। সানি সাইডে ফোর্টি স্ট্রিট থেকে এদিকে থার্টি সেভেন স্ট্রিটে গোটা কয়েক চক্কর দেওয়ার পরেও পার্কিং পাওয়া গেলো না।
এবার শুরু হলো ফোর্টি ওয়ান, ফোর্টি টু থেকে ফোর্টি এইট স্ট্রিট পর্যন্ত পার্কিং খোঁজার চেষ্টা। এর মধ্যে কোনো কোনো স্ট্রিটে একাধিক চক্করও দিতে হলো। অবশেষে ফোর্টি থ্রি স্ট্রিটে কোনো এক দয়ালু ব্যক্তি তার গাড়িটি সরিয়ে নিলে সেখানে পার্ক করা গেলো গাড়ি। এরপর বাদলভাই জারিকেন হাতে ছুটলেন তেলের খোঁজে। ততক্ষণে রাত আড়াইটা। তবে কতক্ষণ পরে তিনি জারিকেনে তেল পেলেন সে খবর আর রাতে নেওয়া হয়নি।
এই হলো নিজের অবস্থা। আর রাস্তায় যা দেখলাম তা হচ্ছে পাম্পে পাম্পে বিশাল লাইন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই দেখা যায় এই ক্রাইসিস। অফিস ডেতে অনেকেই গাড়ি বের করতে পারেননি গ্যাস বা তেলের সঙ্কটে। বাসগুলোতে প্রচণ্ড ভিড়। ঢাকার মুড়ির টিনে ধাক্কাধাক্কি করে বাসে চড়ার যাদের অভ্যাস নেই তারা বা গোবেচারারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও বাসে উঠতে পারেননি। সিটিতে অবশ্য বৃহস্পতিবার বিকেলে আংশিক মেট্রোরেল সার্ভিস চালু হয়। তাতে কিছুটা রক্ষা পাওয়া যায়। কিন্তু গাড়ি যার আছে তার তো তাতে তেল গ্যাস নিতেই হবে।
লাইনগুলোতে দেখা যায় কোনো কোনো গাড়ি দীর্ঘ লাইন পাড়ি দিয়ে শেষ ফোটা তেলটুকুও শেষ করে ফেলেছেন এবার ধাক্কাধাক্কির পালা। অনেকেই এভাবে ধাক্কিয়ে গাড়ি নিয়ে শেষ পর্যন্ত তেল পাচ্ছেন কিংবা গ্যাস ভর্তি করতে পারছেন। এ এক অভিজ্ঞতা, যা নিউইয়র্কবাসী অর্জন করলেন হারিকেন স্যান্ডির প্রভাবে।
তেল বা গ্যাসের সরবরাহ নেই তা কিন্তু নয়, মূল সমস্যা ছিলো তার সঞ্চালন ব্যবস্থায়। বিশেষ করে নিউ জার্সির লিনডেনে ঝুঁকিপূর্ন টার্মিনাল এলাকা থেকে কোনো গ্যাসই আনা যাচ্ছিলো না। ভয়াবহ হারিকেনের আঘাতের পর নিউ জার্সির ওই এলাকা এখনো বিদ্যুৎহীন। আর সেটাই ছিলো সব সঙ্কটের মূলে। কোনো কোনো টার্মিনালে পানি ঢুকে পড়ায় সেগুলোতে এখনো কাজ শুরু করা যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ড বৃহস্পতিবার জানিয়েছে গ্যাস ও তেলের সরবরাহ পেতে তারা আংশিক ও সতর্কতার সঙ্গে নিউইয়র্ক ও নিউ জার্সি বন্দর খুলে দিতে যাচ্ছে। ধারনা করা হচ্ছে পুরো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সাত থেকে ১০ দিন সময় লাগবে। হঠাৎ করেই কোনো কিছু করে ফেলা সম্ভব হবে না।
তেলের জন্যই আমেরিকা যুদ্ধবাজ নাম নিয়েছে। বিশ্বের কোথায় তেল আছে, হামলা করো, তেল নিয়ে আসো এই নীতিতে বিশ্বাসী বলে দেশটির সমালোচনা রয়েছে। অথচ নিজের সিস্টেমে গড়বড়ের কারণে তার নাগরিকেরা তেল সঙ্কটে ভুগলো এমনভাবে। জানি না এ থেকে আমেরিকা কী শিক্ষা নেবে।
তবে এত সঙ্কটেও নিউইয়র্কবাসী শান্ত থেকেছে। কোথাও কোনো এতটুকু ঝামেলা হয়নি, লাইনগুলো কথাকাটাকাটি হাতাহাতি দেখা যায়নি। অবশ্য সেগুলো নিয়ন্ত্রণে ব্যাপকহারে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিউইয়র্কে বৃহস্পতিবার মোড়ে মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ দেখা গিয়েছিলো। সিগন্যাল বাতির সঙ্গে গুছিয়ে চলা নগরে এটাও নাকি বিরল ঘটনা বললেন একজন।
No comments