পবিত্র কোরআনের আলো-অবাধ্য ও বদ লোক পার্থিব জীবনে বেশি সুযোগ-সুবিধা পায়
২১০. হাল ইয়ানযুরূনা ইল্লা- আঁইয়্যা'তিয়াহুমু ল্লা-হু ফি যুলালিম্ মিনাল গামা-মি ওয়ালমালা-ইকাতু ওয়া ক্বুদ্বিইয়াল আমর; ওয়াইলাল্লা-হি তুরজাউল উমূর। ২১১. ছাল বানী- ইসরা-ঈলা কাম আ-তাইনা-হুম্ মিন আ-ইয়াতিম্
বায়্যিনাত; ওয়ামাইয়্যুবাদ্দিল নি'মাতা ল্লা-হি মিম্ বা'দি মা- জা-আতহু ফাইন্নাল্লা-হা শাদিদুল ই'ক্বাব। ২১২. যুয়্যিনা লিল্লাযিনা কাফারুল হাইয়া-তুদ্ দুনইয়া ওয়াইয়াছখারূনা মিনাল্লাযিনা আ-মানূ ওয়াল্লাযিনাত্ ত্তাক্বাও ফাওক্বাহুম ইয়াওমাল কি্বয়ামাত; ওয়াল্লা-হু ইয়ারযুক্বু মাঁইয়্যাশা-উ বিগাইরি হিছাব। [সুরা বাকারা, আয়াত : ২১০-২১২]
অনুবাদ : ২১০. তারা কি সেদিনের অপেক্ষা করছে, যখন আল্লাহ স্বয়ং তাঁর ফেরেশতাসহ মেঘের ছায়া দিয়ে আসবেন, তখন সব কিছুর ফয়সালা হয়ে যাবে; সব বিষয়ের ফয়সালা তো তাঁর কাছেই ফিরে আসবে।
২১১. আপনি বনি ইসরাইলদের জিজ্ঞেস করুন কী পরিমাণ স্পষ্ট নিদর্শন আমি তাদের দান করেছি; যাদের কাছে পথপ্রদর্শনের মতো নেয়ামত আসার পর তারা নিজেরা তা বদলে ফেলে (তাদের জন্য) আল্লাহ কঠোর শাস্তিদানকারী।
২১২. যারা অবাধ্য, তাদের জন্য এ পার্থিব জীবনটা বেশ লোভনীয় করে দেওয়া হয়েছে, এরা ইমানদার মানুষদের বিদ্রূপ করে; এসব ইমানদার মানুষ, যারা আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠ, শেষ বিচারের দিন তাদের মর্যাদা অনেক বেশি হবে। আল্লাহ তায়ালা যাকে চান তাকে অপরিমিত সৌভাগ্য দান করেন।
ব্যাখ্যা : ২১২ নম্বর আয়াতের শানেনুজুল এ রকম : ইসলামের প্রাথমিক অবস্থায় যাঁরা মুসলমান হয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই ছিলেন আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও দরিদ্র। তাঁদের মধ্যে হাবশি ক্রীতদাসরাও ছিলেন। হজরত বেলাল, আম্বার (রা.) প্রমুখ দরিদ্র ব্যক্তি অত্যন্ত উঁচু দরজার মুসলমান ছিলেন এবং রাসুল (সা.) তাঁদের বেশ সমীহ করতেন। এঁদের দেখে কাফের ধনাঢ্য ব্যক্তি ও গোত্রপ্রধানরা বলত, 'মুহাম্মদ বলে থাকে যে আমি এসব দরিদ্র লোকদের সহযোগিতায় আমার কাজ সম্পন্ন করছি এবং তথাকথিত ধনাঢ্য সেসব কাফের গোত্রপ্রধানদের দর্পচূর্ণ করছি- এটা মুহাম্মদ (সা.)-এর মিথ্যা আস্ফালন।' তাঁর ধর্ম সত্য হলে তিনি অবশ্যই আরব গোত্রপ্রধানদের সহযোগিতা পেতেন। এদের এসব কথার জবাবে আল্লাহ তায়ালা এ আয়াতটি নাজিল করেন।
এর আগের ২১০ ও ২১১ নম্বর আয়াত মূলত বনি ইসরাইলদের উদ্দেশ্য করেই নাজিল করা হয়েছে। বনি ইসরাইলদের দোদুল্যমানতার আর পরিসমাপ্তি হলো না, তারা নিজেদের জাত্যাভিমান ছেড়ে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিতে পারল না। তাদের দোদুল্যমানতার পরিপ্রেক্ষিতেই শেষ বিচারের দিনের ফয়সালার কথা বলা হয়েছে। ২১১ নম্বর আয়াতে আবার তাদের মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাদের সঠিক পথের দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালা তাদের জন্য কত স্পষ্ট নিদর্শন অতীতে সামনে এনেছিলেন। কিন্তু এসবের বদৌলতে বনি ইসরাইলরা অর্জন করেছে কেবল জাত্যভিমান। ২১২ নম্বর আয়াতটি কাফের আরব গোত্রপ্রধানদের উদ্দেশে নাজিল হলেও এর সরাসরি প্রাসঙ্গিকতা চিরন্তন। অবাধ্য ও বদ লোকেরাই ইহজাগতিক জীবনে অনেক ক্ষেত্রে বেশি সুখ ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকে। তারা সৎ লোকদের বিদ্রূপ করে মনে মনে অথবা প্রকাশ্যে। কিন্তু তাদের এই সুখ-সুবিধা খুবই ক্ষণস্থায়ী। যাঁরা আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠ, তাঁরাই প্রকৃত সৌভাগ্যবান।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ : ২১০. তারা কি সেদিনের অপেক্ষা করছে, যখন আল্লাহ স্বয়ং তাঁর ফেরেশতাসহ মেঘের ছায়া দিয়ে আসবেন, তখন সব কিছুর ফয়সালা হয়ে যাবে; সব বিষয়ের ফয়সালা তো তাঁর কাছেই ফিরে আসবে।
২১১. আপনি বনি ইসরাইলদের জিজ্ঞেস করুন কী পরিমাণ স্পষ্ট নিদর্শন আমি তাদের দান করেছি; যাদের কাছে পথপ্রদর্শনের মতো নেয়ামত আসার পর তারা নিজেরা তা বদলে ফেলে (তাদের জন্য) আল্লাহ কঠোর শাস্তিদানকারী।
২১২. যারা অবাধ্য, তাদের জন্য এ পার্থিব জীবনটা বেশ লোভনীয় করে দেওয়া হয়েছে, এরা ইমানদার মানুষদের বিদ্রূপ করে; এসব ইমানদার মানুষ, যারা আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠ, শেষ বিচারের দিন তাদের মর্যাদা অনেক বেশি হবে। আল্লাহ তায়ালা যাকে চান তাকে অপরিমিত সৌভাগ্য দান করেন।
ব্যাখ্যা : ২১২ নম্বর আয়াতের শানেনুজুল এ রকম : ইসলামের প্রাথমিক অবস্থায় যাঁরা মুসলমান হয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই ছিলেন আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও দরিদ্র। তাঁদের মধ্যে হাবশি ক্রীতদাসরাও ছিলেন। হজরত বেলাল, আম্বার (রা.) প্রমুখ দরিদ্র ব্যক্তি অত্যন্ত উঁচু দরজার মুসলমান ছিলেন এবং রাসুল (সা.) তাঁদের বেশ সমীহ করতেন। এঁদের দেখে কাফের ধনাঢ্য ব্যক্তি ও গোত্রপ্রধানরা বলত, 'মুহাম্মদ বলে থাকে যে আমি এসব দরিদ্র লোকদের সহযোগিতায় আমার কাজ সম্পন্ন করছি এবং তথাকথিত ধনাঢ্য সেসব কাফের গোত্রপ্রধানদের দর্পচূর্ণ করছি- এটা মুহাম্মদ (সা.)-এর মিথ্যা আস্ফালন।' তাঁর ধর্ম সত্য হলে তিনি অবশ্যই আরব গোত্রপ্রধানদের সহযোগিতা পেতেন। এদের এসব কথার জবাবে আল্লাহ তায়ালা এ আয়াতটি নাজিল করেন।
এর আগের ২১০ ও ২১১ নম্বর আয়াত মূলত বনি ইসরাইলদের উদ্দেশ্য করেই নাজিল করা হয়েছে। বনি ইসরাইলদের দোদুল্যমানতার আর পরিসমাপ্তি হলো না, তারা নিজেদের জাত্যাভিমান ছেড়ে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিতে পারল না। তাদের দোদুল্যমানতার পরিপ্রেক্ষিতেই শেষ বিচারের দিনের ফয়সালার কথা বলা হয়েছে। ২১১ নম্বর আয়াতে আবার তাদের মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাদের সঠিক পথের দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালা তাদের জন্য কত স্পষ্ট নিদর্শন অতীতে সামনে এনেছিলেন। কিন্তু এসবের বদৌলতে বনি ইসরাইলরা অর্জন করেছে কেবল জাত্যভিমান। ২১২ নম্বর আয়াতটি কাফের আরব গোত্রপ্রধানদের উদ্দেশে নাজিল হলেও এর সরাসরি প্রাসঙ্গিকতা চিরন্তন। অবাধ্য ও বদ লোকেরাই ইহজাগতিক জীবনে অনেক ক্ষেত্রে বেশি সুখ ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকে। তারা সৎ লোকদের বিদ্রূপ করে মনে মনে অথবা প্রকাশ্যে। কিন্তু তাদের এই সুখ-সুবিধা খুবই ক্ষণস্থায়ী। যাঁরা আল্লাহর প্রতি দায়িত্বনিষ্ঠ, তাঁরাই প্রকৃত সৌভাগ্যবান।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments