জেলহত্যা মামলা- আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতা হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সারসংক্ষেপ (কনসাইজ স্টেটমেন্ট) সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। আসামিদের খালাস করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল ও বিচারিক আদালতের দেওয়া সাজা বহাল রাখার আরজি জানিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার এই সারসংক্ষেপ জমা দেওয়া হয়।


গত বছরের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) মঞ্জুর করেন।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি আনিসুল হক ২৫ পৃষ্ঠার এই সারসংক্ষেপ প্রস্তুত করে গত বুধবার অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে জমা দেন। গতকাল দুপুরে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড সুফিয়া খাতুন আপিলের সারসংক্ষেপ সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দেন। যোগাযোগ করা হলে আনিসুল হক প্রথম আলোকে বলেন, আপিলের সারসংক্ষেপ সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আপিল শুনানির জন্য প্রস্তুত হয়ে গেল। অবকাশ শেষে ৪ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট খোলার পর শুনানির দিন ধার্য করতে যত শিগগির সম্ভব আবেদন জানানো হবে।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতা—সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে। এ ঘটনায় পরদিন তৎকালীন উপ কারা মহাপরিদর্শক (ডিআইজি-প্রিজন) কাজী আবদুল আউয়াল লালবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন। ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত এ মামলার রায় দেন। রায়ে পলাতক আসামি রিসালদার মোসলেম উদ্দিন, দফাদার মারফত আলী শাহ ও দফাদার মো. আবুল হাশেম মৃধাকে মৃত্যুদণ্ড ও ১২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
২০০৮ সালের ২৮ আগস্ট হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি মারফত আলী শাহ ও আবুল হাশেম মৃধাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয় রিসালদার মোসলেহ উদ্দিনের। এ ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া চারজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। অপর আট আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল থাকে। এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগে পৃথক লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। গত বছরের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে হাইকোর্টের রায়ে অব্যাহতি পাওয়া মারফত আলী ও আবুল হাশেম মৃধাকে অবিলম্বে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়। জেলহত্যা মামলায় হাইকোর্টে অব্যাহতি পাওয়া চারজন—সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, বজলুল হুদা ও এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদের ইতিমধ্যে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.