সীমান্তে মৃত্যু বন্ধ হবে তো? by নাজমুল হক
ভারত বাংলাদেশের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। বাংলাদেশের ৩০টি সীমান্তবর্তী জেলা ভারতের সঙ্গে রয়েছে। এসব জেলা দিয়ে প্রতিদিন দুই দেশের হাজার হাজার মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করে পরিবার-পরিজন বা নিকট আত্মীয়-স্বজনের কাছে যাচ্ছে। কিন্তু ভারতীয় বিএসএফ সীমান্তে নির্যাতন চালাচ্ছে।
চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনাজপুর সীমান্তে মিজানুর রহমানের চোখ উপড়ে হত্যা করা হয়েছে। ৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরা সীমান্তে বিএসএফ ৩ জন বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে যায়। ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠকে আটককৃতদের হাজির করা হয়। কিন্তু তারপরও আটককৃতদের ফেরত না দিয়ে ভারতীয় থানায় হস্তান্তর করে। কয়েক মাস আগে বাংলাদেশের কুমিল্লার একটি সীমান্তে বিনা উস্কানিতে এক বাংলাদেশিকে যেভাবে বিবস্ত্র ও নির্যাতন করে, তা ভারতীয় টেলিভিশনের ভিডিও ফুটেজ দেখে হতবাক হয়েছে সারাবিশ্ব। বাংলাদেশের নিরীহ নাগরিককে বিবস্ত্র করে ৯ ডিসেম্বর ২০১১ যেভাবে পিটিয়েছে, অথচ সেই ঘটনা আমাদের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কিংবা কোনো গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে কখনও কোনো ইঙ্গিত দেওয়া হয়নি। চলতি বছরে এক হিসাবে ৩১ জনকে বিনাবিচারে হত্যা করেছে বিএসএফ। কিন্তু তারপরও যেন কোনো প্রতিকার নেই। তাদের সর্বশেষ শিকার ঝিনাইদহে।
সীমান্ত চোরাচালান হয় এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। দুই দেশের মানুষ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। তবে এর সঙ্গে বাংলাদেশ ও ভারতের বড়মাপের মানুষ জড়িত। বাংলাদেশের নিরীহ মানুষ যারা দু'বেলা দু'মুঠো খাবারের জন্য গরু আনতে ভারতে যায় তাদের হত্যা করা হয়। বাংলাদেশকে মাদকের আখড়ায় পরিণত করতে বাংলাদেশি সীমান্তে ১৫০-এর অধিক ফেনসিডিন কারখানা, দুই শতাধিক মদের কারখানা রয়েছে। যেখান দিয়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় বড় বড় চালানের মাধ্যমে ভারতীয় মাদক ব্যবসায়ীরা ঠেলে দিচ্ছে। কিন্তু সেখানে তারা আঘাত হানতে পারে না।
বাংলাদেশ ও ভারতে চোরাচালান প্রতিরোধে আইন আছে। আমি স্বীকার করি, গরু আনতে ভারতে যায় বাংলার মানুষ। কিন্তু গরু চোরাচালানের অপরাধে কাউকে গুলি করে হত্যা করা হবে এমন আইন দু্ই দেশে নেই। ভারত থেকে গরুসহ মাদক আমাদের দেশে আসে। কিন্তু এখনও কোনো মাদক ব্যবসায়ীকে সীমান্তে হত্যা করা হয়নি। অথচ গরুর রাখালদের হত্যা করা হচ্ছে। আর এমনটা হচ্ছে আমাদের রাষ্ট্রীয় দুর্বলতার কারণে। প্রতিবারই আলোচনার পড়ে লাশ পড়ছে, নিঃস্ব হচ্ছে সীমান্তের কোনো না কোনো গরিব, দিন আনা দিন খাওয়া মায়ের কোল। সংসার তছনছ হয়ে পড়ছে। কিন্তু কোনো প্রতিকার নেই। এ ব্যাপারে কথা বলে না সরকার। তীব্র প্রতিবাদের ভাষা তাদের জানা নেই। কারণ, এসব মানুষ যে গরিব। তারা নেতা নির্বাচন করতে ভোট দিতে পারে, কিন্তু কাউকে প্রভাবিত করতে পারে না। ফলে কেউ তাদের দিকে তাকায় না।
রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হলে প্রথমে আনতে হবে পররাষ্ট্রনীতিতে। বাংলাদেশকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে হবে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কাছে। নতজানু পররাষ্ট্রনীতি পরিহার করে কঠোর ভাষায় প্রতিবাদ করতে হবে।
nazmulrover@gmail.com
সীমান্ত চোরাচালান হয় এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। দুই দেশের মানুষ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। তবে এর সঙ্গে বাংলাদেশ ও ভারতের বড়মাপের মানুষ জড়িত। বাংলাদেশের নিরীহ মানুষ যারা দু'বেলা দু'মুঠো খাবারের জন্য গরু আনতে ভারতে যায় তাদের হত্যা করা হয়। বাংলাদেশকে মাদকের আখড়ায় পরিণত করতে বাংলাদেশি সীমান্তে ১৫০-এর অধিক ফেনসিডিন কারখানা, দুই শতাধিক মদের কারখানা রয়েছে। যেখান দিয়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় বড় বড় চালানের মাধ্যমে ভারতীয় মাদক ব্যবসায়ীরা ঠেলে দিচ্ছে। কিন্তু সেখানে তারা আঘাত হানতে পারে না।
বাংলাদেশ ও ভারতে চোরাচালান প্রতিরোধে আইন আছে। আমি স্বীকার করি, গরু আনতে ভারতে যায় বাংলার মানুষ। কিন্তু গরু চোরাচালানের অপরাধে কাউকে গুলি করে হত্যা করা হবে এমন আইন দু্ই দেশে নেই। ভারত থেকে গরুসহ মাদক আমাদের দেশে আসে। কিন্তু এখনও কোনো মাদক ব্যবসায়ীকে সীমান্তে হত্যা করা হয়নি। অথচ গরুর রাখালদের হত্যা করা হচ্ছে। আর এমনটা হচ্ছে আমাদের রাষ্ট্রীয় দুর্বলতার কারণে। প্রতিবারই আলোচনার পড়ে লাশ পড়ছে, নিঃস্ব হচ্ছে সীমান্তের কোনো না কোনো গরিব, দিন আনা দিন খাওয়া মায়ের কোল। সংসার তছনছ হয়ে পড়ছে। কিন্তু কোনো প্রতিকার নেই। এ ব্যাপারে কথা বলে না সরকার। তীব্র প্রতিবাদের ভাষা তাদের জানা নেই। কারণ, এসব মানুষ যে গরিব। তারা নেতা নির্বাচন করতে ভোট দিতে পারে, কিন্তু কাউকে প্রভাবিত করতে পারে না। ফলে কেউ তাদের দিকে তাকায় না।
রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হলে প্রথমে আনতে হবে পররাষ্ট্রনীতিতে। বাংলাদেশকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে হবে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কাছে। নতজানু পররাষ্ট্রনীতি পরিহার করে কঠোর ভাষায় প্রতিবাদ করতে হবে।
nazmulrover@gmail.com
No comments