ক্লিনিকে চিকিৎসা বাণিজ্য by শাকিল মাহ্মুদ,ইয়াসমিন হেমায়েত সোনিয়া ও মো. তামিম এহসান

গত দুই দশকে আমাদের দেশে চিকিৎসা সেবার একটা অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষের হাতের নাগালে চলে এসেছে বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা। মাত্র এক-দেড় যুগ আগেও সামান্য কোনো


অপারেশনের জন্য গ্রামের দরিদ্র-অসহায় কিংবা বিত্তবানদের যেতে হতো ঢাকা কিংবা দেশের বাইরের কোনো হাসপাতালে। অল্প সময়ের ব্যবধানে এই চিকিৎসাসেবা দেশের বিভিন্ন মফস্বল শহর ছাড়িয়ে এখন প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জে এসে পেঁৗছেছে।
দেশের প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসকরা মফস্বল এলাকায় হাসপাতাল বা ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করে মানুষকে নির্ভেজাল চিকিৎসা দিতে শুরু করেন। সেই সঙ্গে হতে থাকেন অর্থনৈতিকভাবে লাভবান। কিন্তু হঠাৎ করেই গ্রামের বিশাল জনগোষ্ঠীর অসহায়ত্বকে পুঁজি করে ব্যাঙের ছাতার মতো গজাতে থাকে নামে-বেনামে নানা হাসপাতাল-ক্লিনিক। প্রথম দিকে সেবার মান ভালো থাকলেও ক্রমশ তা দুর্বল হয়ে এখন এমন এক পর্যায়ে এসেছে যে ওই ক্লিনিকগুলোতে গিয়ে ভুল চিকিৎসায় কেউ কেউ বরণ করছেন পঙ্গুত্ব। সর্বরোগ সারানোর নামে ক্লিনিকগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণীয় নানা প্রচার-প্রচারণায় আকৃষ্ট হয়ে প্রতিদিন নিম্নমানের সেবাই নিচ্ছেন রোগীরা। প্রত্যেক ক্লিনিকেই চুক্তিভিত্তিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আসেন প্রতিদিন। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও দুর্গন্ধময় ক্লিনিকে (কোনো কোনো ক্লিনিক) বা চেম্বারের সামনে ডাক্তারের জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর প্রয়োজন হোক আর না হোক প্রথমেই ডাক্তার সাহেব রোগীকে দেন ১০-১২টি পরীক্ষা। বাধ্য হয়ে পরীক্ষাগুলো করতে হয় তাদের।
একজন রোগীর জন্য সবচেয়ে জরুরি হলো তার রোগ নির্ণয় এবং সঠিক চিকিৎসা। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, ওইসব ক্লিনিকের মালিক কিংবা ডাক্তাররা সাধারণ রোগীদের প্রত্যাশা বা চাওয়াটাই বোঝেন না। একজন রোগী চায় তার যত টাকাই খরচ হোক সঠিক চিকিৎসাটা যেন হয়। হাসপাতাল বা ক্লিনিকগুলো তাদের খরচ প্রয়োজনে আরও বাড়িয়ে তা রোগীর কাছ থেকে আদায় করুক। তাদের যেন হয়রানির শিকার না হতে হয়। একই রোগের চিকিৎসার জন্য যেন ৫-৬ হাসপাতালে দৌড়াতে না হয় রোগীকে। শুধু সেবার মান বাড়িয়েই ক্লিনিকগুলো আরও অনেক বেশি লাভবান হতে পারবে।
সরকারের সংশিল্গষ্ট বিভাগ যদি এই ক্লিনিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর না হয় তাহলে সাধারণ রোগীরা তাদের প্রত্যাশিত চিকিৎসাসেবা থেকে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত হতেই থাকবেন।
য় শিক্ষার্থী, এমবিএ
ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, ঢাকা

No comments

Powered by Blogger.