শাহবাগ আন্ডারপাস-চিঠি চালাচালি না চলাচলের পথ?
রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে গত আগস্টে গাড়িচাপায় এক শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর বিক্ষোভের মুখে ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রশাসক যখন '১৫ দিনের মধ্যে' আন্ডারপাস নির্মাণ শুরুর ঘোষণা দিয়েছিলেন, এর বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল তখনই।
তারপরও আশপাশের উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে এমন ঘোষণার প্রয়োজনীয়তা হয়তো কেউ অস্বীকার করবে না। তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশে নাগরিক নির্মাণকাজের আয়োজনে ১৫ দিনের জায়গায় এক মাস সময়ও মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা মোটেই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেননি। শুক্রবার সমকালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, নির্মাণকাজ দূরে থাক_ আন্ডারপাস না ফুট ওভারব্রিজ হবে, সেটাই এখনও ঠিক করা যায়নি। এ নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এবং ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) মধ্যে বৈঠক আর চিঠি চালাচালিতেই দুই মাস কেটে গেছে। সরকারি কাজে দীর্ঘসূত্রতা নতুন নয়; কিন্তু প্রকল্পটিতে একটি সংস্থার অনাপত্তি পেতেই দুই মাস কাটিয়ে দেওয়া মেনে নেওয়া যায় না। সামান্য প্রস্তুতি কাজেই যদি এত সময় লাগে, তাহলে নকশা, অর্থায়ন, দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ করে নির্মাণ করতে আরও কত সময় কেটে যাবে? ১৫ দিনের মধ্যে নির্মাণ কাজ শুরুর প্রতিশ্রুতি দেড়শ' দিনে পালিত হয় কি-না আমাদের সন্দেহ হচ্ছে। এই সন্দেহও অমূলক নয় যে, ডিএসসিসি কিংবা ডিটিসিএ বোধ হয় প্রকল্পটির স্পর্শকাতরতা অনুধাবনে ব্যর্থ হচ্ছে। আমরা দেখেছি, শাহবাগ মোড়ে নিয়মিতভাবেই গাড়িচাপায় শিক্ষার্থী এবং অন্য পথচারীদের মৃত্যু হয়েছে আর চলাচল নিরাপদ করার প্রতিশ্রুতিও তাৎক্ষণিক মিলছে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। এবার তার পুনরাবৃত্তি হবে না বলেই বিশ্বাস জন্মেছিল। কিন্তু আন্ডারপাস নির্মাণের অতি বিলম্ব যে শিক্ষার্থীদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটাতে পারে এবং তারা ফের রাস্তায় নেমে আসতে পারে, সেটা কারও ভুলে যাওয়া উচিত হবে না। আর চিঠি চালাচালি নয়, যত দ্রুত সম্ভব আমরা শাহবাগ মোড়ে পথচারীদের নিরাপদ পারাপারের ব্যবস্থা দেখতে চাই।
No comments