কেরানীগঞ্জে শিশু ছিনতাই-সর্বোচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ চাই

মাকে গুলি করে তার হাত থেকে স্কুলগামী শিশুপুত্রকে অপহরণের মর্মস্পর্শী দৃশ্য কি কল্পনা করা যায়! অথচ রোববার সে ধরনের ঘটনারই সাক্ষী হলো কেরানীগঞ্জের পশ্চিম শুভাঢ্যার মানুষ। মা যখন তার তিন শিশুপুত্র-কন্যাকে স্কুলে পাঠানোর জন্য বাড়ির অদূরে রাখা গাড়িতে তুলে দিতে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা গুলি চালিয়ে মা, এক মেয়ে ও ড্রাইভারকে আহত করে ছয় বছরের শিশুপুত্র পরাগকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।


ঘটনার আকস্মিকতা ও ভয়াবহতায় হতভাগ্য পরিবারটি এবং তাদের আত্মীয়-স্বজনের বিপর্যস্ত অবস্থা কল্পনাও করা যায় না। এটি কি শুধু অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা, নাকি এর পেছনে লুকিয়ে আছে দীর্ঘমেয়াদি দুরভিসন্ধি? এমন ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটাতে প্রকাশ্য দিবালোকে সন্ত্রাসীরা কীভাবে সাহস পেল, সে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। এ থেকে এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির চিত্র স্পষ্ট। ঘটনাটির সঙ্গে ভূমিদস্যু ও প্রভাবশালী মহল জড়িত রয়েছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে যে দাবি করা হয়েছে, এটা সত্যি হলে শঙ্কার মাত্রা আরও বাড়বে। কোনো মহল অপহৃত শিশুর পিতা বিমল মণ্ডলকে সপরিবারে উচ্ছেদে বাধ্য করার মতলবে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে, এমন আশঙ্কা ইতিমধ্যে ব্যক্ত হয়েছে। এতে ওই এলাকার অন্য সংখ্যালঘুরা জীবন ও মানসম্মান খোয়ানোর ভয়ে গণহারে এলাকা ত্যাগের চিন্তা করলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আমরা চাই, সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে ঘটনাটির পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হোক। অপহরণকারীদের গডফাদার খুঁজে বের করার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হোক। তবে প্রথম ও জরুরি কাজ হচ্ছে অপহৃত শিশু পরাগকে অপহরণকারীদের কবল থেকে মুক্ত করা। অপহৃতের পিতা শিশুপুত্রকে উদ্ধারের জন্য সঙ্গত কারণেই প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সন্ত্রাসীদের অ্যাকশন দেখে মনে হয়, এরা সবাই এ ধরনের কাজে পারদর্শী। দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির জন্য একটি মহল চেষ্টা চালাচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী বারবার অভিযোগ করছেন। এ ধরনের ঘটনা কি ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের সুযোগ করে দেবে না? তাই এ ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টিকারী অপহরণ ঘটনাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রতিরোধের জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।

No comments

Powered by Blogger.