রম্য-চিকিৎসা বাণিজ্য by সাইফুল আলম
বড্ড অসময়েই আমার ল্যান্ডফোনটা বিরক্তিকর আওয়াজে চেঁচাতে লাগল। সাধারণত খুব প্রিয়জন ছাড়া এ নম্বরটা তেমন কারও জ্ঞাত নয়। উত্তপ্ত মনটাকে শান্ত করে রিসিভারটা কানে তুলতেই ওপাশ থেকে প্রিয়তম বন্ধু কিশমিশ আলীর বয়স্ক কণ্ঠস্বরটা আমার কানের গর্তটায় যেন হুমড়ি খেয়ে পড়ল। শুধালাম, 'কী বিষয় দোস্ত, এ অবেলায় তোমার গলার আওয়াজটা এত ফুটন্ত কেন। কোনো সমস্যা?'
উত্তর প্রদানের তোয়াক্কা না করে সে পূর্ববৎ ঝাঁজাল স্বরেই পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে বলল, 'আচ্ছা বল তো আমাদের দেহঘড়িটা কি এতই খেলনা, তাই যে যেমন খুশি মেরামত করতে লেগে যাবে।'
'কেন? কে আবার আমাদের দেহঘড়িটায় চাবি ঘোরাতে লেগে গেল স্পষ্ট করেই বল না।' আমি জানতে চাইলাম। দূরালাপনীর ওপাশ থেকে কিশমিশ বলল, 'এর একটা স্থায়ী সমাধান অবশ্য প্রয়োজন। মানুষের জীবন নিয়ে যেন খেলাধুলার অলিম্পিক বসেছে।' আমি খানিকটা শান্ত কণ্ঠে বললাম, 'দোস্ত টেলিফোনে বিষয়টা নিয়ে টানাটুনা না করে বরং সন্ধ্যায় আমার বাসায় চলে এসো, তখন বিষয়টাকে দু'জন মিলে তুলাধোনা করে ছাড়ব।'
সেই ভালো বলে কিশমিশ এবার তার রিসিভারটা বিশ্রাম দিল। নির্ধারিত সময়ের পৌনে ৩ মিনিট আগেই কিশমিশ আমার বাসস্থানে শারীরিকভাবে দেখা দিল। দুই বন্ধু দুই পেয়ালা ধূমায়িত কফি নিয়ে খোলা ছাদটায় মুখোমুখি বসলাম। কিশমিশ তার পেয়ালাটায় ম্যারাথন চুমুক দিয়ে কফিটুকু উদরস্থ করে বলল, 'লক্ষ্য করেছ নিশ্চয় দেশের চারদিকে চিকিৎসার নামে কত ধরনের অপচিকিৎসা আর চিকিৎসা বাণিজ্য চলছে।'
'তা পৃথিবীর অনেক দেশেই তো হাতুড়ে ডাক্তার আর বৈদ্যকবিরাজ আছে। আর চিকিৎসা বাণিজ্যও চলছে।' আমি ওকে আশ্বস্ত করে বললাম।
'কিন্তু সবার আগে নিজের দেশের অবস্থাটা চোখ মেলে দেখ'_ কিশমিশের কণ্ঠে যেন অর্থবহ ইঙ্গিত। আমি এবার ওর হাতের শূন্যগর্ভ পেয়ালাটা আমার হস্তে বদলি করে বললাম, আমাদের দেশের অশিক্ষিত আর সরলপ্রাণ মানুষদের নানা ফন্দিফিকিরে সম্মোহিত করে কিছু টাউট-বাটপার অপচিকিৎসার বাণিজ্য করছে। কিশমিশ অপ্রত্যাশিতভাবেই ব্যাঘ্রগর্জন স্বরে বলল, 'স্টপ! সমাজের সব অপকর্মকে ভিন্নধারায় প্রভাবিত করে জনগণের দুর্বলতাকে কাজে লাগানো আমাদের যেন অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে।'
নরম তুলো তুলো স্বভাবের কিশমিশকে এতটা উত্তেজিত হতে দেখে আমার হাতে ধরা কফির পেয়ালাটা মুহূর্তের জন্য কেঁপে উঠল। নিজেকে সামলে নিয়ে পেয়ালাটা সামনের টেবিলে রেখে ওর মুখপানে চেয়ে রইলাম। ও এবার ত্বরিত নিজেকে সংযত করে খানিকটা কাব্যিক ছন্দে বলল, 'কিন্তু আমরা যেন নাকের ফুটোয় শর্ষে ঘষে, চক্ষু মুদে ঢুলছি কষে।' আমি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে বললাম, তোমার ব্যঙ্গছন্দে কিন্তু সত্যটাকেই ব্যঞ্জনা করেছ দোস্ত। সে বলল_ হ্যাঁ, চোখ মেলে লক্ষ্য করলেই দেখবে দেশের নানা স্থানে প্রকাশ্যে ঝাড়ফুঁক, পানিপড়া, তেলপড়া, তাবিজ বিক্রি। নানা তান্ত্রিক মন্ত্র প্রদান করে রোগীদের চিকিৎসার নামে রমরমা ব্যবসা করছে। আমি বললাম, 'ঝাড়ফুঁক আর তেল-পানিতে যদি রোগ ভালো হতো তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়ত রোগ নিরাময়ের জন্য নিত্যনতুন ওষুধ আবিষ্কারে ডুবে থাকতেন না। ওই ঝাড়ফুঁকওয়ালারাই চিকিৎসায় নোবেল পেত।' আমার সংলাপের রেশটায় যেন ত্বরিত সওয়ার হয়ে কিশমিশ বলল, 'তাছাড়া প্রায়ই শোনা যায়_ ইপিলিপ্সি, প্রচণ্ড জ্বর, জন্ডিস এবং নানা মানসিক রোগাক্রান্তকে লাঠিপেটা, ঝাড়ূপেটা, গোবর খাওয়ানো, নাকে-মুখে ধোঁয়া দেওয়া ইত্যাদি যন্ত্রণা দিয়ে স্থানীয় এক শ্রেণীর কবিরাজ ও ওঝা নামধারী ভণ্ড অনেক সময় পরপারের ভিসা দিয়ে তবে ছাড়ে। কথাগুলো বলে কিশমিশ এবার তার দমের গোড়ায় লম্বা একটা পাম্প দিয়ে নিল। আমি বললাম, কিছুদিন আগে এক চমকপ্রদ ঘটনা দেশের গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছে।
কী সেটা? কিশমিশ আগ্রহে জানতে চাইল। আমি বললাম, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এক শিশু প্রদত্ত সর্বরোগ বিনাশী পানি পড়া সংগ্রহের জন্য হাজারো মানুষের সমাগম ঘটেছে। কিশমিশ বলল, অথচ স্থানীয় প্রশাসন আর স্বাস্থ্য অধিদফতর নির্বিকার। আমি বললাম, যথাযথই বলেছ। তাছাড়া আরও একটি অপরাধীচক্রের চিকিৎসা বাণিজ্য সম্প্রতি কতিপয় জাতীয় দৈনিকে প্রচারিত হয়েছে। তা হলো, অবৈধ কিডনি বেচাকেনা। কিশমিশ বলল, একশ্রেণীর দালালের খপ্পরে পড়ে অনেকে অভাবের তাড়নায় দেহের প্রয়োজনীয় অঙ্গ নামমাত্র দামে বিক্রি করে। এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে কালোবাজারে বছরে আনুমানিক ১০ হাজার কিডনি বিক্রি হয়।
কী সাংঘাতিক! আমি অজান্তেই আমার আতঙ্কিত কণ্ঠের বহিঃপ্রকাশ ঘটালাম।
হাঃ হাঃ হাঃ কিশমিশ এবার আচমকাই একটি অট্টহাসির ফানুস উড়িয়ে উঠে দাঁড়াল। তারপর ধীরপদে তার শীর্ণ দেহের স্কেলিটনটাকে টেনে টেনে ছাদের এক কোণে গিয়ে দাঁড়াল। আমিও তার পাশে অবস্থান নিয়ে তাকে সঙ্গ দিলাম। কিঞ্চিৎ বাদে ও বলল_ দোস্ত, আমার এ ছোট মুখে একটা সত্য উদ্গিরণ করতে চাই, যদিও সেটা দুঃখজনক। আমি ধৈর্য হারিয়ে শুধলাম। কী সেটা? কিশমিশ এবার তার বর্ণহীন ওষ্ঠযুগলকে আমার ডান কানটার প্রতিবেশী করে ফিসফিসিয়ে বলল, রোগীদের অভিযোগ, দেশের অনেক ডাক্তার সাহেব নাকি ইদানীং বেশ মন দিয়ে কমিশন ব্যবসা করছেন।
সেটি কেমন? আমি জানতে চাইলাম। সে বলল, লক্ষ্য করলে দেখা যায় কিছু ডাক্তার সাহেব রোগীর প্রেসক্রিপশনের বামপাশে নাকি অনেক সময় অপ্রয়োজনীয় নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার লম্বা সূচিপত্র লিপিবদ্ধ করে দেন। আমি কোনো উত্তর না দিয়ে ১৫ সেকেন্ড নিশ্চুপ থেকে বললাম, এসব অপবাণিজ্য বন্ধের উপায় কী? কিশমিশ বেশ খানিকটা দরবারি কণ্ঠে বলল, দেশের সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। যারা চিকিৎসার নামে প্রতারণা করছে তাদের সম্পর্কে প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে জনগণকে সচেতন করতে হবে। তাছাড়া অপচিকিৎসাকারীদের জনসমক্ষে শাস্তি দিতে হবে। কথাগুলো শেষ করে কিশমিশ এবার দূরের আকাশের পানে তাকাল। চারদিকটায় তখন আঁধার নেমে এসেছে। আকাশের এক কোণে শুকতারাটা মুখ দেখাতে শুরু করেছে।
আমি বললাম_ দোস্ত, কী দেখছ? উদাসী কণ্ঠে ও বলল, দোস্ত, ওই যে শুকতারাটা দেখছ। ওটাই সব কিছুর সাক্ষী হয়ে রইবে। আচ্ছা চলি। কথামালার ইতি টেনে কিশমিশ এবার প্রস্থানে উদ্যত হলো।
ডা. সাইফুল আলম :ডেন্টাল সার্জন
উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ
হাসপাতাল
'কেন? কে আবার আমাদের দেহঘড়িটায় চাবি ঘোরাতে লেগে গেল স্পষ্ট করেই বল না।' আমি জানতে চাইলাম। দূরালাপনীর ওপাশ থেকে কিশমিশ বলল, 'এর একটা স্থায়ী সমাধান অবশ্য প্রয়োজন। মানুষের জীবন নিয়ে যেন খেলাধুলার অলিম্পিক বসেছে।' আমি খানিকটা শান্ত কণ্ঠে বললাম, 'দোস্ত টেলিফোনে বিষয়টা নিয়ে টানাটুনা না করে বরং সন্ধ্যায় আমার বাসায় চলে এসো, তখন বিষয়টাকে দু'জন মিলে তুলাধোনা করে ছাড়ব।'
সেই ভালো বলে কিশমিশ এবার তার রিসিভারটা বিশ্রাম দিল। নির্ধারিত সময়ের পৌনে ৩ মিনিট আগেই কিশমিশ আমার বাসস্থানে শারীরিকভাবে দেখা দিল। দুই বন্ধু দুই পেয়ালা ধূমায়িত কফি নিয়ে খোলা ছাদটায় মুখোমুখি বসলাম। কিশমিশ তার পেয়ালাটায় ম্যারাথন চুমুক দিয়ে কফিটুকু উদরস্থ করে বলল, 'লক্ষ্য করেছ নিশ্চয় দেশের চারদিকে চিকিৎসার নামে কত ধরনের অপচিকিৎসা আর চিকিৎসা বাণিজ্য চলছে।'
'তা পৃথিবীর অনেক দেশেই তো হাতুড়ে ডাক্তার আর বৈদ্যকবিরাজ আছে। আর চিকিৎসা বাণিজ্যও চলছে।' আমি ওকে আশ্বস্ত করে বললাম।
'কিন্তু সবার আগে নিজের দেশের অবস্থাটা চোখ মেলে দেখ'_ কিশমিশের কণ্ঠে যেন অর্থবহ ইঙ্গিত। আমি এবার ওর হাতের শূন্যগর্ভ পেয়ালাটা আমার হস্তে বদলি করে বললাম, আমাদের দেশের অশিক্ষিত আর সরলপ্রাণ মানুষদের নানা ফন্দিফিকিরে সম্মোহিত করে কিছু টাউট-বাটপার অপচিকিৎসার বাণিজ্য করছে। কিশমিশ অপ্রত্যাশিতভাবেই ব্যাঘ্রগর্জন স্বরে বলল, 'স্টপ! সমাজের সব অপকর্মকে ভিন্নধারায় প্রভাবিত করে জনগণের দুর্বলতাকে কাজে লাগানো আমাদের যেন অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে।'
নরম তুলো তুলো স্বভাবের কিশমিশকে এতটা উত্তেজিত হতে দেখে আমার হাতে ধরা কফির পেয়ালাটা মুহূর্তের জন্য কেঁপে উঠল। নিজেকে সামলে নিয়ে পেয়ালাটা সামনের টেবিলে রেখে ওর মুখপানে চেয়ে রইলাম। ও এবার ত্বরিত নিজেকে সংযত করে খানিকটা কাব্যিক ছন্দে বলল, 'কিন্তু আমরা যেন নাকের ফুটোয় শর্ষে ঘষে, চক্ষু মুদে ঢুলছি কষে।' আমি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে বললাম, তোমার ব্যঙ্গছন্দে কিন্তু সত্যটাকেই ব্যঞ্জনা করেছ দোস্ত। সে বলল_ হ্যাঁ, চোখ মেলে লক্ষ্য করলেই দেখবে দেশের নানা স্থানে প্রকাশ্যে ঝাড়ফুঁক, পানিপড়া, তেলপড়া, তাবিজ বিক্রি। নানা তান্ত্রিক মন্ত্র প্রদান করে রোগীদের চিকিৎসার নামে রমরমা ব্যবসা করছে। আমি বললাম, 'ঝাড়ফুঁক আর তেল-পানিতে যদি রোগ ভালো হতো তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়ত রোগ নিরাময়ের জন্য নিত্যনতুন ওষুধ আবিষ্কারে ডুবে থাকতেন না। ওই ঝাড়ফুঁকওয়ালারাই চিকিৎসায় নোবেল পেত।' আমার সংলাপের রেশটায় যেন ত্বরিত সওয়ার হয়ে কিশমিশ বলল, 'তাছাড়া প্রায়ই শোনা যায়_ ইপিলিপ্সি, প্রচণ্ড জ্বর, জন্ডিস এবং নানা মানসিক রোগাক্রান্তকে লাঠিপেটা, ঝাড়ূপেটা, গোবর খাওয়ানো, নাকে-মুখে ধোঁয়া দেওয়া ইত্যাদি যন্ত্রণা দিয়ে স্থানীয় এক শ্রেণীর কবিরাজ ও ওঝা নামধারী ভণ্ড অনেক সময় পরপারের ভিসা দিয়ে তবে ছাড়ে। কথাগুলো বলে কিশমিশ এবার তার দমের গোড়ায় লম্বা একটা পাম্প দিয়ে নিল। আমি বললাম, কিছুদিন আগে এক চমকপ্রদ ঘটনা দেশের গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছে।
কী সেটা? কিশমিশ আগ্রহে জানতে চাইল। আমি বললাম, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এক শিশু প্রদত্ত সর্বরোগ বিনাশী পানি পড়া সংগ্রহের জন্য হাজারো মানুষের সমাগম ঘটেছে। কিশমিশ বলল, অথচ স্থানীয় প্রশাসন আর স্বাস্থ্য অধিদফতর নির্বিকার। আমি বললাম, যথাযথই বলেছ। তাছাড়া আরও একটি অপরাধীচক্রের চিকিৎসা বাণিজ্য সম্প্রতি কতিপয় জাতীয় দৈনিকে প্রচারিত হয়েছে। তা হলো, অবৈধ কিডনি বেচাকেনা। কিশমিশ বলল, একশ্রেণীর দালালের খপ্পরে পড়ে অনেকে অভাবের তাড়নায় দেহের প্রয়োজনীয় অঙ্গ নামমাত্র দামে বিক্রি করে। এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে কালোবাজারে বছরে আনুমানিক ১০ হাজার কিডনি বিক্রি হয়।
কী সাংঘাতিক! আমি অজান্তেই আমার আতঙ্কিত কণ্ঠের বহিঃপ্রকাশ ঘটালাম।
হাঃ হাঃ হাঃ কিশমিশ এবার আচমকাই একটি অট্টহাসির ফানুস উড়িয়ে উঠে দাঁড়াল। তারপর ধীরপদে তার শীর্ণ দেহের স্কেলিটনটাকে টেনে টেনে ছাদের এক কোণে গিয়ে দাঁড়াল। আমিও তার পাশে অবস্থান নিয়ে তাকে সঙ্গ দিলাম। কিঞ্চিৎ বাদে ও বলল_ দোস্ত, আমার এ ছোট মুখে একটা সত্য উদ্গিরণ করতে চাই, যদিও সেটা দুঃখজনক। আমি ধৈর্য হারিয়ে শুধলাম। কী সেটা? কিশমিশ এবার তার বর্ণহীন ওষ্ঠযুগলকে আমার ডান কানটার প্রতিবেশী করে ফিসফিসিয়ে বলল, রোগীদের অভিযোগ, দেশের অনেক ডাক্তার সাহেব নাকি ইদানীং বেশ মন দিয়ে কমিশন ব্যবসা করছেন।
সেটি কেমন? আমি জানতে চাইলাম। সে বলল, লক্ষ্য করলে দেখা যায় কিছু ডাক্তার সাহেব রোগীর প্রেসক্রিপশনের বামপাশে নাকি অনেক সময় অপ্রয়োজনীয় নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার লম্বা সূচিপত্র লিপিবদ্ধ করে দেন। আমি কোনো উত্তর না দিয়ে ১৫ সেকেন্ড নিশ্চুপ থেকে বললাম, এসব অপবাণিজ্য বন্ধের উপায় কী? কিশমিশ বেশ খানিকটা দরবারি কণ্ঠে বলল, দেশের সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। যারা চিকিৎসার নামে প্রতারণা করছে তাদের সম্পর্কে প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে জনগণকে সচেতন করতে হবে। তাছাড়া অপচিকিৎসাকারীদের জনসমক্ষে শাস্তি দিতে হবে। কথাগুলো শেষ করে কিশমিশ এবার দূরের আকাশের পানে তাকাল। চারদিকটায় তখন আঁধার নেমে এসেছে। আকাশের এক কোণে শুকতারাটা মুখ দেখাতে শুরু করেছে।
আমি বললাম_ দোস্ত, কী দেখছ? উদাসী কণ্ঠে ও বলল, দোস্ত, ওই যে শুকতারাটা দেখছ। ওটাই সব কিছুর সাক্ষী হয়ে রইবে। আচ্ছা চলি। কথামালার ইতি টেনে কিশমিশ এবার প্রস্থানে উদ্যত হলো।
ডা. সাইফুল আলম :ডেন্টাল সার্জন
উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ
হাসপাতাল
No comments