'মম ইন চিফ' by রেহানা পারভীন রুমা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামাকে নিজের সম্পর্কে কিছু বলতে বলা হলে তিনি যে কথাটা সবচেয়ে আগে বলেন তা হলো, সবকিছুর আগে তিনি মালিয়া ও সাশার মা। বলাবাহুল্য 'মম ইন চিফ' ভূমিকা আগের চেয়ে তাকে অনেক বেশি জনপ্রিয় করে তুলেছে আজকের প্রেক্ষাপটে। মমতাময়ী মা এবং স্বামীর প্রতি নিবেদিতপ্রাণ স্ত্রী_ নারীর এরকম ভূমিকা খোদ মার্কিনিদের কাছেও যে বেশ পছন্দের, তা বোঝা যায় মিশেল ওবামার বদলে ফেলা ইমেজের দিকে তাকালে।
মানুষের জন্য কাজ করা, সেবা দেওয়া বরাবরই তার কাজের একটা বড় অংশজুড়ে ছিল। ২০১০ সালে প্রথম মেয়াদে ফার্স্ট লেডি থাকার সময় শুরু করেন তার 'লেটস মুভ' নামের একটি উদ্যোগ। যার উদ্দেশ্য ছিল দেশজুড়ে মহামারী আকারে বেড়ে যাওয়া শিশুদের স্থূলতা প্রতিরোধে সমাজের নেতা, শিক্ষক, চিকিৎসক, নার্স, মা-বাবা সবাইকে একত্রিত করে কাজ করা।
একসময় সিনেটর এবং পরে প্রেসিডেন্টের স্ত্রী হলেও মিশেল নারীদের মধ্যে ফ্যাশন আইকন হিসেবে যেমন সুপরিচিত, তেমনি দারিদ্র্য দূরীকরণ, পুষ্টি, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস তৈরিতে সচেতনতা সৃষ্টিতে তার ভূমিকা অনেকটাই প্রশংসিত। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পত্রিকার সেরা অনুকরণীয় নারীর মর্যাদা যেমন তিনি পেয়েছেন, তেমনি পেয়েছেন সেরা পোশাকধারীর খেতাবও। আফ্রো-আমেরিকান মিশেল অনেকের কাছেই 'চিরায়ত এবং আত্মবিশ্বাসী' এক নারী।
ফার্স্ট লেডি হিসেবে তিনিই প্রথম ২০০৯ সালে হোয়াইট হাউসে গড়ে তোলেন অর্গানিক বাগান, যেখান থেকে হোয়াইট হাউসের হেঁশেলের সবজি, ফলমূল আর ভেষজের জোগান দেওয়া শুরু হয়। সেই সঙ্গে তৈরি হয় মৌচাকও, যেখান থেকে টাটকা এবং খাঁটি মধু আসে বাড়িতে। বাগান করার প্রয়োজনীয়তা এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে মিশেল লিখে ফেলেন তার প্রথম বই 'আমেরিকান গ্রোন'।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাতের খাবার খান তিনি। শুতেও যান অনেকটা তাড়াতাড়ি। ভোর সাড়ে ৪টায় দিন শুরু হয় মিশেল ওবামার। ফিটনেস বিষয়ে সচেতনতা তার সৌন্দর্যের আসল উৎস। আর সেটা ধরে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম সারেন মেয়েদের ঘুম ভাঙার আগেই। প্রতিদিন তার সঙ্গে যোগ দেন স্বামী বারাক ওবামা। কোনো অবস্থাতেই ৩০ মিনিট ব্যায়ামের রুটিনে হেরফের হয় না তার। এরপর প্রতিদিন আসা ই-মেইলের জবাব দেন। মেয়েরা উঠলে তাদের স্কুলের জন্য তৈরি হতে সাহায্য করেন। দুই মেয়ের লালনপালন সংক্রান্ত বিষয়েও বরাবরই সচেতন মিশেল। মায়ের হুকুমে মেয়েদের নিজেদের কাজ নিজেদের করতে হয়। টেলিভিশন দেখার জন্য এক ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন তিনি। নানা নিয়মকানুনের পাশাপাশি তাদের স্বাস্থ্যকর জীবনধারা তৈরিতে খেলাধুলার বিষয়ে ভীষণ সচেতন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে ফার্স্ট লেডি বলেছেন, বারাক এবং আমি মেয়েদের সব সময় যে কথাটা বলি তা হলো_ তোমরা স্মার্ট, সুন্দর হতে পারো। কিন্তু তোমরা যদি কীভাবে মানুষের সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে, কীভাবে কাউকে হ্যালো বলতে হবে, ধন্যবাদ জানাতে হবে; তা না জানো, তাহলে তোমরা কিছুই নও। একইভাবে কীভাবে প্রতিযোগিতা করতে হবে, কীভাবে ঘাম ঝরিয়ে জিততে হবে, কীভাবে সম্মানের সঙ্গে হারতে হবে_ এসবও শেখাচ্ছেন সন্তানদের।
স্বামীর নির্বাচনী প্রচার কাজের সহযোগিতায় প্রথমবার ততটা দৃষ্টি আকর্ষণ না করলেও এবার অনেক সপ্রতিভ ছিলেন মিশেল। ২০০৮ এবং ২০১২ ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কনভেনশনেও মূল বক্তা ছিলেন তিনি। ২০০৮ সালের তুলনায় এবার নির্বাচনের আগে অনেকটাই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছিলেন মিশেল ওবামা। একসময় স্বামী বারাক ওবামার নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বিষয়ে নিজের যুক্তিতর্ক তুলে ধরতেন তিনি। কিন্তু তা ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করতে পারেনি মার্কিনিরা। ধীরে ধীরে নিজের ভূমিকা বদলে নেন তিনি। মমতাময়ী মা, যোগ্য স্ত্রীর ভূমিকায় একসময় এতটাই সফল হন মিশেল যে, তা ওবামার জনপ্রিয়তাকেও ছাড়িয়ে যায়। ২০১২ সালের মে মাসে গ্যালপ পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, বারাক ওবামার জনপ্রিয়তা ৫২ শতাংশ হলেও তার স্ত্রী ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামার জনপ্রিয়তা ৬২ শতাংশ। এর প্রধান কারণ রাষ্ট্র পরিচালনার কাজ স্বামীর ওপর ছেড়ে দিয়ে নিজেকে অন্য প্রেক্ষাপটে উপস্থাপন করা। আর তাই ওবামার প্রতিদ্বন্দ্বী মিট রমনির স্ত্রী অ্যান রমনি যখন স্বামীর সমর্থনের সপক্ষে তাত্তি্বক কথাবার্তা বলছিলেন, তখন মিশেল বলেছেন নারী-শিশু ও দরিদ্র নারীর কল্যাণের কথা। এবার ওবামাকে ক্ষমতায় আনতে মিশেলের এই ভূমিকাকে অনেকে আগে থেকেই গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছিলেন। হ
একসময় সিনেটর এবং পরে প্রেসিডেন্টের স্ত্রী হলেও মিশেল নারীদের মধ্যে ফ্যাশন আইকন হিসেবে যেমন সুপরিচিত, তেমনি দারিদ্র্য দূরীকরণ, পুষ্টি, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস তৈরিতে সচেতনতা সৃষ্টিতে তার ভূমিকা অনেকটাই প্রশংসিত। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পত্রিকার সেরা অনুকরণীয় নারীর মর্যাদা যেমন তিনি পেয়েছেন, তেমনি পেয়েছেন সেরা পোশাকধারীর খেতাবও। আফ্রো-আমেরিকান মিশেল অনেকের কাছেই 'চিরায়ত এবং আত্মবিশ্বাসী' এক নারী।
ফার্স্ট লেডি হিসেবে তিনিই প্রথম ২০০৯ সালে হোয়াইট হাউসে গড়ে তোলেন অর্গানিক বাগান, যেখান থেকে হোয়াইট হাউসের হেঁশেলের সবজি, ফলমূল আর ভেষজের জোগান দেওয়া শুরু হয়। সেই সঙ্গে তৈরি হয় মৌচাকও, যেখান থেকে টাটকা এবং খাঁটি মধু আসে বাড়িতে। বাগান করার প্রয়োজনীয়তা এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে মিশেল লিখে ফেলেন তার প্রথম বই 'আমেরিকান গ্রোন'।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাতের খাবার খান তিনি। শুতেও যান অনেকটা তাড়াতাড়ি। ভোর সাড়ে ৪টায় দিন শুরু হয় মিশেল ওবামার। ফিটনেস বিষয়ে সচেতনতা তার সৌন্দর্যের আসল উৎস। আর সেটা ধরে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম সারেন মেয়েদের ঘুম ভাঙার আগেই। প্রতিদিন তার সঙ্গে যোগ দেন স্বামী বারাক ওবামা। কোনো অবস্থাতেই ৩০ মিনিট ব্যায়ামের রুটিনে হেরফের হয় না তার। এরপর প্রতিদিন আসা ই-মেইলের জবাব দেন। মেয়েরা উঠলে তাদের স্কুলের জন্য তৈরি হতে সাহায্য করেন। দুই মেয়ের লালনপালন সংক্রান্ত বিষয়েও বরাবরই সচেতন মিশেল। মায়ের হুকুমে মেয়েদের নিজেদের কাজ নিজেদের করতে হয়। টেলিভিশন দেখার জন্য এক ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন তিনি। নানা নিয়মকানুনের পাশাপাশি তাদের স্বাস্থ্যকর জীবনধারা তৈরিতে খেলাধুলার বিষয়ে ভীষণ সচেতন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে ফার্স্ট লেডি বলেছেন, বারাক এবং আমি মেয়েদের সব সময় যে কথাটা বলি তা হলো_ তোমরা স্মার্ট, সুন্দর হতে পারো। কিন্তু তোমরা যদি কীভাবে মানুষের সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে, কীভাবে কাউকে হ্যালো বলতে হবে, ধন্যবাদ জানাতে হবে; তা না জানো, তাহলে তোমরা কিছুই নও। একইভাবে কীভাবে প্রতিযোগিতা করতে হবে, কীভাবে ঘাম ঝরিয়ে জিততে হবে, কীভাবে সম্মানের সঙ্গে হারতে হবে_ এসবও শেখাচ্ছেন সন্তানদের।
স্বামীর নির্বাচনী প্রচার কাজের সহযোগিতায় প্রথমবার ততটা দৃষ্টি আকর্ষণ না করলেও এবার অনেক সপ্রতিভ ছিলেন মিশেল। ২০০৮ এবং ২০১২ ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কনভেনশনেও মূল বক্তা ছিলেন তিনি। ২০০৮ সালের তুলনায় এবার নির্বাচনের আগে অনেকটাই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছিলেন মিশেল ওবামা। একসময় স্বামী বারাক ওবামার নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বিষয়ে নিজের যুক্তিতর্ক তুলে ধরতেন তিনি। কিন্তু তা ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করতে পারেনি মার্কিনিরা। ধীরে ধীরে নিজের ভূমিকা বদলে নেন তিনি। মমতাময়ী মা, যোগ্য স্ত্রীর ভূমিকায় একসময় এতটাই সফল হন মিশেল যে, তা ওবামার জনপ্রিয়তাকেও ছাড়িয়ে যায়। ২০১২ সালের মে মাসে গ্যালপ পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, বারাক ওবামার জনপ্রিয়তা ৫২ শতাংশ হলেও তার স্ত্রী ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামার জনপ্রিয়তা ৬২ শতাংশ। এর প্রধান কারণ রাষ্ট্র পরিচালনার কাজ স্বামীর ওপর ছেড়ে দিয়ে নিজেকে অন্য প্রেক্ষাপটে উপস্থাপন করা। আর তাই ওবামার প্রতিদ্বন্দ্বী মিট রমনির স্ত্রী অ্যান রমনি যখন স্বামীর সমর্থনের সপক্ষে তাত্তি্বক কথাবার্তা বলছিলেন, তখন মিশেল বলেছেন নারী-শিশু ও দরিদ্র নারীর কল্যাণের কথা। এবার ওবামাকে ক্ষমতায় আনতে মিশেলের এই ভূমিকাকে অনেকে আগে থেকেই গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছিলেন। হ
No comments