কোকোর পাচার করা অর্থ সিঙ্গাপুরে বাজেয়াপ্ত by আবুল কাশেম
বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর পাচার করা অর্থ সিঙ্গাপুর সরকার বাজেয়াপ্ত করেছে। সিঙ্গাপুরে দুটি ব্যাংক হিসাবে কোকোর পাচার করা ৯ লাখ ৩২ হাজার ৬৭২ মার্কিন ডলার এবং ২৮ লাখ ৮৪ হাজার ৬০৪ সিঙ্গাপুরি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দেশে ফেরত আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার।
এ ছাড়া খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন আল মামুনসহ অন্যদের বিরুদ্ধেও অর্থপাচারের অভিযোগ রয়েছে। বিদেশে পাচার করা সব অর্থ ও সম্পদ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকার সমন্বিতভাবে কাজ করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্রমতে, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত শিগগরিই সংসদে এসব তথ্য তুলে ধরবেন কুড়িগ্রাম-৩ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম মাইদুল ইসলামের উত্থাপিত তারকাবিহীন প্রশ্ন ৪৪৪-এর জবাব দিতে অর্থমন্ত্রীকে এসব তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট (এফআইইউ)।
সিঙ্গাপুরে অর্থপাচারের অভিযোগে আরাফাত রহমান কোকোর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার রায় হয়েছে গত বছরের ২৩ জুন। এতে কোকো ছাড়াও চারদলীয় জোট আমলের নৌপরিবহনমন্ত্রী প্রয়াত আকবর হোসেনের ছেলে ইসমাইল হোসেন ওরফে সায়মনকে ছয় বছর কারাদণ্ডাদেশ এবং উভয়কে ৩৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশিদের পাচার করা টাকা ফেরত আনা হয়েছে কি না মাইদুল ইসলামের এমন এক প্রশ্নের জবাব দিতে অর্থমন্ত্রীর জন্য প্রতিবেদন তৈরি করে পাঠিয়েছে এফআইইউ। তাতে আরাফাত রহমান কোকোর নাম উল্লেখ না করে বলা হয়েছে, ২০১১ সালের ২৩ জুন মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা একটি মামলার রায় হয়েছে। ওই রায়ে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০০২-এর আওতায় দণ্ডিতদের ছয় বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তাঁরা পাচারের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং করে সিঙ্গাপুরের দুটি ব্যাংক হিসাবে রাখা ৯ লাখ ৩২ হাজার ৬৭২ দশমিক ৮১ মার্কিন ডলার এবং ২৮ লাখ ৮৪ হাজার ৬০৪ দশমিক ১৫ সিঙ্গাপুরি ডলার রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এসব অর্থ দেশে প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় রয়েছে।
সূত্র মতে, অর্থমন্ত্রীর জন্য তৈরি করা প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, 'বর্তমান সরকার পাচার করা সম্পদ দেশে ফেরত আনার বিষয়ে সচেষ্ট ও তৎপর রয়েছে। পাচার করা অর্থ দেশে ফেরত আনার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং কিছু অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। দুদকের দায়ের করা এ ধরনের কিছু মামলা বিচারাধীন রয়েছে।'
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সীমেন্স বাংলাদেশকে একটি কাজ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে ঘুষের অর্থ লেনদেনের অভিযোগে দুদক ২০০৯ সালের ১৭ মার্চ কোকো ও সায়মনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। মামলায় সিঙ্গাপুরে ২৮ লাখ ৮৪ হাজার ৬০৩ সিঙ্গাপুরি ডলার এবং ৯ লাখ ৩২ হাজার ৬৭২ মার্কিন ডলার (সে সময়ের বাজারদর অনুযায়ী ২০ কোটি ৮৫ লাখ ৮৪ হাজার ৫১৮ টাকা) অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ করা হয়।
এ ছাড়া টঙ্গীর বিসিক শিল্প এলাকায় ৮০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হলে গিয়াস উদ্দিন আল মামুন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার তারেক রহমানের মাধ্যমে কার্যাদেশ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে নির্মাণ কনস্ট্রাকশন কম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক খাদিজা ইসলামের কাছ থেকে ২০০৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০০৭ সালের ৩১ মে পর্যন্ত ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা গ্রহণ করে তা বিদেশে পাচার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগে তারেক ও মামুনের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা হয়েছে, যা এখনো বিচারাধীন।
এ ছাড়া বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজ ইব্রাহীম ও তাঁর স্ত্রী মাফরুজার বিরুদ্ধেও অর্থপাচারের মামলা রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে বিটিটিবির টেলিটক প্রকল্পের আওতায় অবৈধভাবে কাজ পাইয়ে দিয়ে সিমেন্স বাংলাদেশ লিমিটেডের কাছ থেকে এক কোটি ৭৫ লাখ টাকা নিয়ে তা পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। তারেক রহমান ও হাফিজ ইব্রাহীমের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের সুপারভাইজরি স্পেশাল এজেন্ট মিস ডেবরা লা প্রিভটিও সাক্ষ্য দিয়েছেন।
সংসদ সদস্য মাইদুল ইসলাম তাঁর প্রশ্নে বলেছেন, 'আমাদের পাশের দেশ ভারতের লোকসভায় অর্থমন্ত্রী শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছেন যে বিদেশে ভারতীয়দের পাচার করা কত টাকা রয়েছে এবং ভারত সরকার বিদেশে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করছে। আমাদের দেশেও এরূপ একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা যায় কি না, যাতে বুঝা যাবে বিদেশে কার কত টাকা আছে, দেশের মোট কী পরিমাণ অর্থ বিদেশে আছে।' অর্থমন্ত্রীর এ প্রশ্নের জবাবের জন্য যে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, শ্বেতপত্র প্রকাশ করার বিষয়টি এফআইইউয়ের কর্মপরিধির আওতাভুক্ত নয়। এ ছাড়া দেশ থেকে মোট কী পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে সে সম্পর্কেও কোনো তথ্য নেই প্রতিবেদনে।
সিঙ্গাপুরে অর্থপাচারের অভিযোগে আরাফাত রহমান কোকোর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার রায় হয়েছে গত বছরের ২৩ জুন। এতে কোকো ছাড়াও চারদলীয় জোট আমলের নৌপরিবহনমন্ত্রী প্রয়াত আকবর হোসেনের ছেলে ইসমাইল হোসেন ওরফে সায়মনকে ছয় বছর কারাদণ্ডাদেশ এবং উভয়কে ৩৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশিদের পাচার করা টাকা ফেরত আনা হয়েছে কি না মাইদুল ইসলামের এমন এক প্রশ্নের জবাব দিতে অর্থমন্ত্রীর জন্য প্রতিবেদন তৈরি করে পাঠিয়েছে এফআইইউ। তাতে আরাফাত রহমান কোকোর নাম উল্লেখ না করে বলা হয়েছে, ২০১১ সালের ২৩ জুন মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা একটি মামলার রায় হয়েছে। ওই রায়ে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০০২-এর আওতায় দণ্ডিতদের ছয় বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তাঁরা পাচারের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং করে সিঙ্গাপুরের দুটি ব্যাংক হিসাবে রাখা ৯ লাখ ৩২ হাজার ৬৭২ দশমিক ৮১ মার্কিন ডলার এবং ২৮ লাখ ৮৪ হাজার ৬০৪ দশমিক ১৫ সিঙ্গাপুরি ডলার রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এসব অর্থ দেশে প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় রয়েছে।
সূত্র মতে, অর্থমন্ত্রীর জন্য তৈরি করা প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, 'বর্তমান সরকার পাচার করা সম্পদ দেশে ফেরত আনার বিষয়ে সচেষ্ট ও তৎপর রয়েছে। পাচার করা অর্থ দেশে ফেরত আনার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং কিছু অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। দুদকের দায়ের করা এ ধরনের কিছু মামলা বিচারাধীন রয়েছে।'
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সীমেন্স বাংলাদেশকে একটি কাজ পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে ঘুষের অর্থ লেনদেনের অভিযোগে দুদক ২০০৯ সালের ১৭ মার্চ কোকো ও সায়মনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। মামলায় সিঙ্গাপুরে ২৮ লাখ ৮৪ হাজার ৬০৩ সিঙ্গাপুরি ডলার এবং ৯ লাখ ৩২ হাজার ৬৭২ মার্কিন ডলার (সে সময়ের বাজারদর অনুযায়ী ২০ কোটি ৮৫ লাখ ৮৪ হাজার ৫১৮ টাকা) অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ করা হয়।
এ ছাড়া টঙ্গীর বিসিক শিল্প এলাকায় ৮০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হলে গিয়াস উদ্দিন আল মামুন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার তারেক রহমানের মাধ্যমে কার্যাদেশ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে নির্মাণ কনস্ট্রাকশন কম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক খাদিজা ইসলামের কাছ থেকে ২০০৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০০৭ সালের ৩১ মে পর্যন্ত ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা গ্রহণ করে তা বিদেশে পাচার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগে তারেক ও মামুনের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা হয়েছে, যা এখনো বিচারাধীন।
এ ছাড়া বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজ ইব্রাহীম ও তাঁর স্ত্রী মাফরুজার বিরুদ্ধেও অর্থপাচারের মামলা রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে বিটিটিবির টেলিটক প্রকল্পের আওতায় অবৈধভাবে কাজ পাইয়ে দিয়ে সিমেন্স বাংলাদেশ লিমিটেডের কাছ থেকে এক কোটি ৭৫ লাখ টাকা নিয়ে তা পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। তারেক রহমান ও হাফিজ ইব্রাহীমের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের সুপারভাইজরি স্পেশাল এজেন্ট মিস ডেবরা লা প্রিভটিও সাক্ষ্য দিয়েছেন।
সংসদ সদস্য মাইদুল ইসলাম তাঁর প্রশ্নে বলেছেন, 'আমাদের পাশের দেশ ভারতের লোকসভায় অর্থমন্ত্রী শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছেন যে বিদেশে ভারতীয়দের পাচার করা কত টাকা রয়েছে এবং ভারত সরকার বিদেশে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করছে। আমাদের দেশেও এরূপ একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা যায় কি না, যাতে বুঝা যাবে বিদেশে কার কত টাকা আছে, দেশের মোট কী পরিমাণ অর্থ বিদেশে আছে।' অর্থমন্ত্রীর এ প্রশ্নের জবাবের জন্য যে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, শ্বেতপত্র প্রকাশ করার বিষয়টি এফআইইউয়ের কর্মপরিধির আওতাভুক্ত নয়। এ ছাড়া দেশ থেকে মোট কী পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে সে সম্পর্কেও কোনো তথ্য নেই প্রতিবেদনে।
No comments